‘নির্বাচন কমিশন বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে’
বিএনপি
চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপর হামলার দায় সরকার এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য
করেছেন বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের আলোচকরা। একইসঙ্গে সেনা মোতায়েনের
সিদ্ধান্ত নিয়ে একদিন পর সেটা পরিবর্তনের ফলে নির্বাচন কমিশন
বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে বলে মতপ্রকাশ করেছেন তারা। এ ছাড়া তিন সিটিতেই
সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন রয়েছে বলে দাবি জানান তারা। গতকাল চট্টগ্রাম নগরীর
কে স্কোয়ার মিলনায়তনে আয়োজিত বিবিসি সংলাপে এসব কথা বলেন আলোচকরা। সংলাপে
অতিথি হিসেবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আওয়ামী লীগের
প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাসান মাহমুদ, চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার অব
কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আইরিন হাসান ও চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রওশন সোমা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিবিসির সাংবাদিক আকবর হোসেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই
এক দর্শক প্রশ্ন করেন- বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ওপর হামলার দায় কি
সরকার এড়াতে পারে? এর জবাবে রওশন সোমা বলেন, আমাকে যেমন নিরাপত্তা দেয়ার
দায়িত্ব সরকারের, তেমনি খালেদা জিয়ারও নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের।
তবে তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় বেরিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন কিনা সেটাও
দেখতে হবে। এ বিষয়ে আইরিন সুলতানা বলেন, সরকার কোনভাবেই এর দায় এড়াতে পারে
না। তিনি সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। তাকে নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব
সরকারের। এ প্রশ্নের জবাবে হাসান মাহমুদ বলেন, গত তিন মাসের আন্দোলনে
পেট্রলবোমা দিয়ে খালেদা জিয়া সারা দেশে ১৭০ জন লোককে হত্যা করেছেন। বহু
মানুষকে আহত করেছেন। তিনি জঙ্গি নেত্রী। খালেদা জিয়া এখন আতঙ্কের নাম। একটি
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, মহল্লায় ডাকাত পড়লে তাদের আক্রমণকে প্রতিহত করার
অধিকার যেমন মহল্লাবাসীর রয়েছে, ঠিক তেমনি খালেদা জিয়ার নিরাপত্তারক্ষীর
গুলির পরিপ্রেক্ষিতে কাওরান বাজারে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা চালিয়েছে। তিনি
বলেন, খালেদা জিয়াকে তার বাড়ি ও গাড়িতে নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে। এ সময় এক
দর্শক বলেন, এ হামলার দৃশ্য টেলিভিশনে যারা দেখেছে তাদের ৯০ ভাগ লোক
ন্যক্কারজনক ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছে। পেট্রলবোমা হামলার বিচার তো আর
ইটপাটকেল নিক্ষেপ হতে পারে না। এ বিষয়ে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, খালেদা
জিয়ার ওপর আক্রমণের পর সারা দেশের মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। তারা এখন
নিজের বাড়িতেও নিরাপদবোধ করছেন না। খালেদা জিয়ার কি হয়- এ নিয়েও তারা
আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের ওপর যেদিন হামলার ঘটনা ঘটে সেদিন
সকালে তার বাড়ি থেকে প্রটোকলের পুলিশ প্রত্যাহার করা হয়। পরিকল্পিতভাবে
ছাত্রলীগের ছেলেরা তার ওপর হামলা চালিয়েছে। এর জবাবে হাসান মাহমুদ বলেন,
খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা যেমন প্রয়োজন, তেমনি সারা দেশের সাধারণ মানুষেরও
নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব সরকারের। এ সময় হাসান মাহমুদের উদ্দেশে এক দর্শক
প্রশ্ন রাখেন- সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা যেখানে সরকার দিতে
পানে না, সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দেবে কিভাবে। একদিন পর নির্বাচন
কমিশনের সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের প্রশ্ন করলে হাসান মাহমুদ
বলেন, এটা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত। এখানে সরকারের কোন ভূমিকা নেই। তবে
সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়ে একদিন পর সেটা পরিবর্তনের ফলে নির্বাচন
কমিশন বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে বলে মত দেন অন্য আলোচক ও দর্শকরা। এ
মুহূর্তে তিন সিটিতে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন রয়েছে বলে দাবি জানান তারা।
No comments