দক্ষিণ যেন ঢাকা পড়ে না যায় উত্তরে! by খ. আলম
শহর
হিসেবে ঢাকার বয়স ৪০০ কিংবা ৮০০ বছর যা-ই হোক না কেন, এ দীর্ঘ সময়ে ঢাকা
বিবর্তিত হয়েছে বিচিত্র আঙ্গিকে। একসময়ের ঢাকার প্রাণকেন্দ্র লালবাগ কিংবা
সদরঘাট এখন পড়ে আছে পুরান ঢাকার তকমা নিয়ে। পুরান কেবল বয়স অর্থেই নয়,
সেকেলে অর্থেও। এটাই নিয়তি! সময় পরিক্রমায় কেবল বুড়িয়ে নয়, ফুরিয়েও যায়
অনেক ঐতিহাসিক স্থান-স্থাপনার আবেদন। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হতে পারে কলকাতা
কিংবা দিল্লির অভিজ্ঞতা। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে ঢাকা শহরের জৌলুশ
বেড়েছে, আবার কখনো কখনো কিছুটা ভাটাও পড়েছে। শহরের বিকাশ কিংবা
সম্প্রসারণ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। তবে একজন নাগরিক হিসেবে আমার
পর্যবেক্ষণ বলছে, ঢাকার সাম্প্রতিক সম্প্রসারণ পর্বের সূচনা হয়েছে মধ্য
নব্বই দশক থেকে। এবং এই সম্প্রসারণ–প্রক্রিয়া অধিকতর বেগবান হয়েছে শূন্য
দশকের গোড়া থেকে, যা এখনো অব্যাহত। নগর সম্প্রসারণ মানে নাগরিক চৌহদ্দি
বেড়ে যাওয়া। ফলে ঢাকাকে দুই ভাগে ভাগ করার একটি বাস্তবতা তৈরি হয়েছে
বইকি।
বিভক্তির পর এটাই প্রথম ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। সুতরাং কিছু অভিজ্ঞতা সবার জন্যই নতুন। কিন্তু পুরান ও নতুন ঢাকার দৃশ্যমান বৈষম্যমূলক বিকাশ নিয়ে ব্যক্তিগত পরিসরে অনেকেই ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন। শহরের তুলনামূলক ধনী, গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষমতাশালী অংশের বাস নতুন ঢাকায়। বিদেশি দূতাবাস থেকে শুরু করে বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বিমানবন্দর, নামীদামি হাসপাতাল, শপিংমল, গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি প্রায় সবকিছুই ঠাঁই পেয়েছে শহরের উত্তর ভাগে। উত্তরের জৌলুশ ও চাকচিক্যের বিপরীতে ক্রমেই মলিন হয়ে উঠছে পুরান ঢাকা। এ অসম বিকাশ পুরান ঢাকাবাসী ব্যক্তিবিশেষের মাঝে হীনম্মন্যতার বোধ সৃষ্টি করে। তুলনামূলক মলিন পুরান ঢাকার মলিনত্ব আরও প্রকট হয়ে উঠেছে ঢাকার মেয়র নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হওয়ার পর থেকে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের বিভাজনটি স্পষ্ট বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমের বৈষম্যমূলক প্রচারণায়।
বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে দৃশ্যত বৈষম্যমূলক প্রচার-সম্প্রচার চলছে। প্রচারণা-প্রদীপে ঝলমলে করছে ঢাকা উত্তর আর প্রদীপের নিচে পড়ে থাকছে ঢাকা দক্ষিণ। গণমাধ্যম গবেষণায় ‘নিউজ ট্রিটমেন্ট’ ‘নিউজ কাভারেজ’ ‘ফ্রেমিং’ ‘ফোকাস’ ‘এজেন্ডা সেটিং’ ইত্যাদি অতিপরিচিত বিষয়। সম্প্রচার ও মুদ্রণ মাধ্যমভেদে ভিন্ন ভিন্ন উপাদান শনাক্ত করে এসব গবেষণা করা হয়। সম্প্রচারমাধ্যমের ক্ষেত্রে সম্প্রচার-সময়, সম্প্রচার-সময়সীমা, সম্প্রচার-সংখ্যা, লিডের তর–তম সম্প্রচারকালে অ/ব্যবহৃত ভিডিও ফুটেজ, ক্যামেরার ব্যবহার, দৃশ্যভাষা (ভিজ্যুয়ালস), শব্দ ইত্যাদি প্রসঙ্গ বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে, মুদ্রণমাধ্যমের বেলায় লিডের তর-তম, সংবাদটির পৃষ্ঠাগত অবস্থান, কলাম-সংখ্যা, রঙের ব্যবহার, আলোকচিত্রের উপস্থিতি-সংখ্যা, ফোল্ডারের ওপর-নিচ অবস্থান, সংবাদ শিরোনামের ফন্ট, সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয় ইত্যাদি বিষয় আমলে নেওয়া হয়।
গত দুই সপ্তাহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রচার পর্যবেক্ষণ করলে স্পষ্টভাবেই ঢাকা উত্তরের ব্যাপক প্রাধান্য চোখে পড়ে। প্রতিযোগিতারত মেয়র প্রার্থী ও তাঁদের ক্যারিশমা প্রদর্শন, প্রার্থীদের সমর্থনদানকারী বিভিন্ন সংগঠন (কোনো বেসরকারি সংগঠন আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো একজন প্রার্থীকে সমর্থন দিতে পারা উচিত কি না, যদিও তা প্রশ্নসাপেক্ষ), জনসমর্থন আদায়ে ব্যবহৃত সংস্কৃতিজগতের তারকা, প্রচারণার অভিনবত্ব ও বিচিত্র কলাকৌশল, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক, প্রার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন গোলটেবিল আলোচনা, প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার, ইশতেহার, প্রতিশ্রুতি, সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের প্রবল উপস্থিতি ইত্যাদি জড়ো করলে বিপরীতে ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থীদের চিরুনি অভিযানে খুঁজে পেতে হবে। তা ছাড়া টিভি টক শোতে উত্তরের প্রার্থী-সমর্থকদের সরব উপস্থিতির বিপরীতে দক্ষিণের প্রার্থী-সমর্থকদের প্রায় অনুপস্থিতি প্রচারণা বৈষম্যের অভিযোগকে অধিকতর জোরালো করে। ঢাকা উত্তরে যেখানে প্রায় রোজ প্রার্থী-সৃষ্ট নিত্যনতুন স্টোরির (সাংবাদিকদের সঙ্গে দৌড়ে অংশ নেওয়া কিংবা ঝাড়ুদান কর্মসূচি) জন্ম হয়, সেখানে ঢাকা দক্ষিণের প্রধান একজন প্রার্থী আইনের বৈতরণি ভেদ করে দৃশ্যপটে সশরীরে অনুপ্রবেশই করতে পারছেন না। এমনকি বাম-বলয় থেকে উঠে আসা প্রার্থীরা ছোট দল বলে যেখানে এত দিন মূলধারার গণমাধ্যমের আনুকূল্য খুব একটা পাননি, সেখানে এবারের ঢাকা উত্তরের চিত্রটা বিরল-ব্যতিক্রম। অন্যদিকে, ওই একই বলয়ের ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থীদের অনেকের নামই এখন পর্যন্ত অনেকের কাছে অজানা। ঢাকা উত্তরের বাড়তি প্রচার পাওয়ার নিশ্চয়ই কিছু ন্যায্য কারণও রয়েছে। কিন্তু গণমাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ বৈষম্যমূলক প্রচারণার শিকার হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণের নাগরিকদের প্রধান সমস্যাগুলো, তাদের দাবিদাওয়া, প্রার্থীদের ইশতেহার, প্রতিশ্রুতি, জনসম্পৃক্ততা ইত্যাদি যদি মিডিয়ায় তুলনামূলক স্বল্প পরিসরে উঠে আসে, তবে প্রার্থীদের মধ্যে যেমন দায়দায়িত্ববোধ ও জবাবদিহি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে, তেমনি বসবাসরত নাগরিকদের মাঝেও অধিকারবোধ, সচেতনতা ও আত্মবিশ্বাস তৈরি হওয়া কষ্টকর।
আধুনিক, গতিশীল, স্মার্ট, ঢাকা উত্তরের বিপরীতে বিপরীত জোড় (বাইনারি অপজিশন) হিসেবে আমরা যেন অনাধুনিক, স্থবির, সেকেলে ঢাকা দক্ষিণ প্রতিষ্ঠা না করি। কারণ, গণমাধ্যমের অমনোযোগের শিকার হলে ঢাকা দক্ষিণে বসবাসকারী জনগণের নাগরিক সুবিধা যেমন সংকুচিত হয়ে পড়বে, তেমনি রাজধানী ঢাকার সামগ্রিক উন্নয়নও অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাতে ঢাকার অভ্যন্তরীণ বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠবে। বিশ্বরাজনীতি ও অর্থনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করছে উত্তর গোলার্ধ। দক্ষিণ গোলার্ধের একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে সে বৈশ্বিক বৈষম্য মোকাবিলা করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বাংলাদেশ যেন তা পুনরাবৃত্তি করে ঢাকায় একটি স্থায়ী অভ্যন্তরীণ বৈষম্য পাকাপোক্ত না করে, গণমাধ্যমকে অতি অবশ্যই সে বিষয়ে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
খ. আলম: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
alam_du07@yahoo.co.in
বিভক্তির পর এটাই প্রথম ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। সুতরাং কিছু অভিজ্ঞতা সবার জন্যই নতুন। কিন্তু পুরান ও নতুন ঢাকার দৃশ্যমান বৈষম্যমূলক বিকাশ নিয়ে ব্যক্তিগত পরিসরে অনেকেই ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছেন। শহরের তুলনামূলক ধনী, গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষমতাশালী অংশের বাস নতুন ঢাকায়। বিদেশি দূতাবাস থেকে শুরু করে বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বিমানবন্দর, নামীদামি হাসপাতাল, শপিংমল, গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি প্রায় সবকিছুই ঠাঁই পেয়েছে শহরের উত্তর ভাগে। উত্তরের জৌলুশ ও চাকচিক্যের বিপরীতে ক্রমেই মলিন হয়ে উঠছে পুরান ঢাকা। এ অসম বিকাশ পুরান ঢাকাবাসী ব্যক্তিবিশেষের মাঝে হীনম্মন্যতার বোধ সৃষ্টি করে। তুলনামূলক মলিন পুরান ঢাকার মলিনত্ব আরও প্রকট হয়ে উঠেছে ঢাকার মেয়র নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হওয়ার পর থেকে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের বিভাজনটি স্পষ্ট বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমের বৈষম্যমূলক প্রচারণায়।
বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে দৃশ্যত বৈষম্যমূলক প্রচার-সম্প্রচার চলছে। প্রচারণা-প্রদীপে ঝলমলে করছে ঢাকা উত্তর আর প্রদীপের নিচে পড়ে থাকছে ঢাকা দক্ষিণ। গণমাধ্যম গবেষণায় ‘নিউজ ট্রিটমেন্ট’ ‘নিউজ কাভারেজ’ ‘ফ্রেমিং’ ‘ফোকাস’ ‘এজেন্ডা সেটিং’ ইত্যাদি অতিপরিচিত বিষয়। সম্প্রচার ও মুদ্রণ মাধ্যমভেদে ভিন্ন ভিন্ন উপাদান শনাক্ত করে এসব গবেষণা করা হয়। সম্প্রচারমাধ্যমের ক্ষেত্রে সম্প্রচার-সময়, সম্প্রচার-সময়সীমা, সম্প্রচার-সংখ্যা, লিডের তর–তম সম্প্রচারকালে অ/ব্যবহৃত ভিডিও ফুটেজ, ক্যামেরার ব্যবহার, দৃশ্যভাষা (ভিজ্যুয়ালস), শব্দ ইত্যাদি প্রসঙ্গ বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে, মুদ্রণমাধ্যমের বেলায় লিডের তর-তম, সংবাদটির পৃষ্ঠাগত অবস্থান, কলাম-সংখ্যা, রঙের ব্যবহার, আলোকচিত্রের উপস্থিতি-সংখ্যা, ফোল্ডারের ওপর-নিচ অবস্থান, সংবাদ শিরোনামের ফন্ট, সম্পাদকীয়, উপসম্পাদকীয় ইত্যাদি বিষয় আমলে নেওয়া হয়।
গত দুই সপ্তাহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রচার পর্যবেক্ষণ করলে স্পষ্টভাবেই ঢাকা উত্তরের ব্যাপক প্রাধান্য চোখে পড়ে। প্রতিযোগিতারত মেয়র প্রার্থী ও তাঁদের ক্যারিশমা প্রদর্শন, প্রার্থীদের সমর্থনদানকারী বিভিন্ন সংগঠন (কোনো বেসরকারি সংগঠন আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো একজন প্রার্থীকে সমর্থন দিতে পারা উচিত কি না, যদিও তা প্রশ্নসাপেক্ষ), জনসমর্থন আদায়ে ব্যবহৃত সংস্কৃতিজগতের তারকা, প্রচারণার অভিনবত্ব ও বিচিত্র কলাকৌশল, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক, প্রার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন গোলটেবিল আলোচনা, প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার, ইশতেহার, প্রতিশ্রুতি, সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের প্রবল উপস্থিতি ইত্যাদি জড়ো করলে বিপরীতে ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থীদের চিরুনি অভিযানে খুঁজে পেতে হবে। তা ছাড়া টিভি টক শোতে উত্তরের প্রার্থী-সমর্থকদের সরব উপস্থিতির বিপরীতে দক্ষিণের প্রার্থী-সমর্থকদের প্রায় অনুপস্থিতি প্রচারণা বৈষম্যের অভিযোগকে অধিকতর জোরালো করে। ঢাকা উত্তরে যেখানে প্রায় রোজ প্রার্থী-সৃষ্ট নিত্যনতুন স্টোরির (সাংবাদিকদের সঙ্গে দৌড়ে অংশ নেওয়া কিংবা ঝাড়ুদান কর্মসূচি) জন্ম হয়, সেখানে ঢাকা দক্ষিণের প্রধান একজন প্রার্থী আইনের বৈতরণি ভেদ করে দৃশ্যপটে সশরীরে অনুপ্রবেশই করতে পারছেন না। এমনকি বাম-বলয় থেকে উঠে আসা প্রার্থীরা ছোট দল বলে যেখানে এত দিন মূলধারার গণমাধ্যমের আনুকূল্য খুব একটা পাননি, সেখানে এবারের ঢাকা উত্তরের চিত্রটা বিরল-ব্যতিক্রম। অন্যদিকে, ওই একই বলয়ের ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থীদের অনেকের নামই এখন পর্যন্ত অনেকের কাছে অজানা। ঢাকা উত্তরের বাড়তি প্রচার পাওয়ার নিশ্চয়ই কিছু ন্যায্য কারণও রয়েছে। কিন্তু গণমাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ বৈষম্যমূলক প্রচারণার শিকার হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণের নাগরিকদের প্রধান সমস্যাগুলো, তাদের দাবিদাওয়া, প্রার্থীদের ইশতেহার, প্রতিশ্রুতি, জনসম্পৃক্ততা ইত্যাদি যদি মিডিয়ায় তুলনামূলক স্বল্প পরিসরে উঠে আসে, তবে প্রার্থীদের মধ্যে যেমন দায়দায়িত্ববোধ ও জবাবদিহি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে, তেমনি বসবাসরত নাগরিকদের মাঝেও অধিকারবোধ, সচেতনতা ও আত্মবিশ্বাস তৈরি হওয়া কষ্টকর।
আধুনিক, গতিশীল, স্মার্ট, ঢাকা উত্তরের বিপরীতে বিপরীত জোড় (বাইনারি অপজিশন) হিসেবে আমরা যেন অনাধুনিক, স্থবির, সেকেলে ঢাকা দক্ষিণ প্রতিষ্ঠা না করি। কারণ, গণমাধ্যমের অমনোযোগের শিকার হলে ঢাকা দক্ষিণে বসবাসকারী জনগণের নাগরিক সুবিধা যেমন সংকুচিত হয়ে পড়বে, তেমনি রাজধানী ঢাকার সামগ্রিক উন্নয়নও অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাতে ঢাকার অভ্যন্তরীণ বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠবে। বিশ্বরাজনীতি ও অর্থনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করছে উত্তর গোলার্ধ। দক্ষিণ গোলার্ধের একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে সে বৈশ্বিক বৈষম্য মোকাবিলা করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বাংলাদেশ যেন তা পুনরাবৃত্তি করে ঢাকায় একটি স্থায়ী অভ্যন্তরীণ বৈষম্য পাকাপোক্ত না করে, গণমাধ্যমকে অতি অবশ্যই সে বিষয়ে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
খ. আলম: সহকারী অধ্যাপক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
alam_du07@yahoo.co.in
No comments