হাওয়ার সাইকেল!

লে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে উইড়া উইড়া'_ জনপ্রিয় এ গানটির সঙ্গে বাস্তবতার কোনোই মিল নেই। বাতাসে কোনোভাবেই সাইকেল উড়িয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু যদি বলা হয়, পেট্রোলের বদলে বাতাসেই চলবে মোটরসাইকেল_ এমন শুনলে তবু একটু মেনে নেওয়া যায়। একটু নয়, পুরোপুরিই আপনাকে মানতে হবে। কেননা, সম্প্রতি এমনই একটি মোটরসাইকেলের ডিজাইন করেছে অস্ট্রেলিয়ার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনের শিক্ষার্থী ডিন বেনস্টেড। তার এ


মোটরসাইকেলটি চলবে সম্পূর্ণ বাতাস দিয়ে!। প্রোটোটাইপ এ মোটরসাইকেলটির নাম দেওয়া হয়েছে '০২ পারস্যুট'। ২০১১ সালের ২৫ নভেম্বর সিডনিতে অনুষ্ঠিত 'মোটরসাইকেল অ্যান্ড স্কুটার শো'-তে বায়ুচালিত এ মোটরসাইকেলটি প্রদর্শিত হয়। প্রশংসাও পায় ব্যাপক। মজার ব্যাপার হলো, এটির শক্তি যোগাবে কমপ্রেসড এয়ার। ২৫০ সিসির বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ডাইপেট্রো এয়ার ইঞ্জিন। পরীক্ষামূলক পর্যায়ে এটি ঘণ্টায় ৬২ মাইল গতি তুলতে সক্ষম হয়েছে।
চমক লাগানো এ মোটরসাইকেলটির পার্টস তৈরি করার আগে বেনস্টেড নিজেই এটির ডিজাইন করে নিয়েছিলেন। পরে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যন্ত্রাংশ সেট তৈরি করেন। উদ্ভাবক ডিন বেনস্টেড আশা করছেন, প্রযুক্তিটির উন্নয়ন ঘটানো গেলে আরও দ্রুতগতিতে চলতে পারবে। এ নিয়ে বেনস্টেড গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার পরবর্তী প্রজেক্ট 'হেভি ডিউটি মাউন্টেন বাইক' নির্মাণ। তবে জাপানের গবেষকরা ইতিমধ্যে আরেক প্রযুক্তির বাইক উদ্ভাবনে চমক লাগিয়ে দিয়েছেন। তারা এমন একটি বাইক তৈরি করেছেন, যা চলবে সম্পূর্ণভাবে মানব বর্জ্য দিয়ে! শুধু তাই নয়, বাইক চালাতে নিজের অথবা অন্য কারও প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হলে বাইকটিতেই বসেই সে কর্ম সম্পাদন করা যাবে। কারণ, বাইকটিতে আছে টয়লেটেরও ব্যবস্থা। এটি নির্মাণ করেছেন জাপানের শীর্ষস্থানীয় টয়লেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টোটো। তিন চাকার এ মোটর বাইকটির নাম দেওয়া হয়েছে 'টয়লেট বাইক নিউ'। মজার ব্যাপার হলো, এটি চালাতে আলাদা কোনো জ্বালানি প্রয়োজন হবে না। মানুষের বর্জ্য থেকে যে জৈব জ্বালানি তৈরি হবে, তাতেই ঘণ্টায় ৫০ মাইল বেগে চলতে পারবে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলেও সত্যি, ইতিমধ্যে বাইকটি টোটোর প্রধান কার্যালয় থেকে যাত্রা শুরু করে ৬শ' মাইল পথ পাড়ি দিয়েছে। তিন চাকার এ টয়লেট বাইকটি এখন পরীক্ষামূলকভাবে জাপানের শহরগুলোতেই ব্যবহৃত হচ্ছে।
প্রযুক্তির কল্যাণে মানবজীবন দিনদিন আরও আরামদায়ক ও সহজতর হচ্ছে। ভবিষ্যতে তা হয়ত আরও বৃদ্ধি পাবে। আমরা বসে আছি, থাকব সেই বিস্ময়কর সৃষ্টি দেখার জন্য।
প্রদীপ সাহা

No comments

Powered by Blogger.