জঙ্গি রিপনের ফাঁসির চিঠি সিলেট কারাগারে
মুফতি হান্নানের সহযোগী দেলোয়ার হোসেন রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করার পর সেই চিঠি সিলেট কারাগারে পৌঁছেছে। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার ছগির মিয়া জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠি হাতে পান। এর আগে হরকাতুল জিহাদের শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নান, তার সহযোগী রিপন ও শরীফ শাহেদুল বিপুলের মৃত্যুদণ্ডের রায় হলে তারা রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। সেই আবেদন নাকচ হয়েছে বলে রোববার সাংবাদিকদের জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এদিকে রিপনকে এখন সিলেট কারাগারের কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। রোববার রিপনের সঙ্গে তার পরিবারের ১২ সদস্য দেখা করেছেন। সোমবার সন্ধ্যায় সিলেট কারাগার সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সিলেটে হযরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় ২০০৪ সালের ২১ মে কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৭ জুন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, তার ভাই মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ ওরফে অভি, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার ওরফে রিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। যথাযথ ঠিকানা না থাকায় মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ ওরফে খাজার নাম প্রথমে বাদ দেয়া হলেও পরে তাকে যুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। একই বছরের নভেম্বরে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। ৫৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারক শামীম মো. আফজাল রায় ঘোষণা করেন। আসামিদের মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের আবেদন) শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও আমির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন। পরে আসামিপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। ২০১৬ সালের ৭ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়েও ওই তিন আসামির সর্বোচ্চ সাজা বহাল থাকে। আপিল বিভাগের রায় হাইকোর্ট হয়ে নিম্ন আদালতে যাওয়ার পর বিচারিক আদালত মৃত্যুপরোয়ানা জারি করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রিপন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছে। সেখানে তাকে ৩ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুপরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়। অন্যদিকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে হান্নান ও বিপুলকে মৃত্যুপরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়। এরপর ২৩ ফেব্রুয়ারি রিভিউ আবেদন করে ৩ আসামি। শুনানি শেষে ১৯ মার্চ আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। পরে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করলে শনিবার রাষ্ট্রপতি তা নাকচ করে দেন।
No comments