গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের দুই-তৃতীয়াংশ ধ্বংস
নজিরবিহীন ক্ষতির শিকার হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ। ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে এখানকার প্রবাল। মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে প্রাণবৈচিত্র্যের। স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য মিলেছে। জরুরি উদ্যোগ না নিলে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান পাওয়া বিশ্বের দীর্ঘতম এ প্রবাল প্রাচীর রক্ষা করা কঠিন হবে বলে বিশেষজ্ঞদের মত। বিজ্ঞানীদের হিসাবে, রিফের প্রায় ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার (৯০০ মাইল) এলাকা মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছে, যা এর মোট দৈর্র্ঘ্যরে দুই-তৃতীয়াংশ। গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের ক্ষতির জন্য বিজ্ঞানীরা জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন। খবর বিবিসির। জেমস কুক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টেরি হিউজেস বলেন, ‘সরকারের জরুরিভিত্তিতে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে উদ্যোগ নিতে হবে। নতুবা গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের ধ্বংস ঠেকানো সম্ভব হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানো ও জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের বদলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রচলন রিফ রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ হতে পারে।’ অস্ট্রেলিয়ান রিসার্চ কাউন্সিলের কোরাল রিফ স্টাডিজ সেন্টার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ ও সংলগ্ন ৮ হাজার কিলোমিটার এলাকায় বিশদ জরিপ চালিয়েছে।
এতে দেখা গেছে, বিশাল এ এলাকার শুধু দক্ষিণ অংশ এখনও অক্ষত আছে। বাকি পুরোটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গবেষক ড. জেমস কেরির মতে, এ ক্ষতি ‘নজিরবিহীন ও অপূরণীয়।’ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে জরুরি উদ্যোগ না নিলে এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠা অসম্ভব বলেও তিনি মনে করেন। গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ পৃথিবীর সর্ববৃহৎ প্রবাল প্রাচীর। অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কুইন্সল্যান্ডের উপকূলীয় এলাকার সমুদ্রে এর অবস্থান। এটি প্রায় ৯০০টি ছোট-বড় দ্বীপ ও ৩ হাজারের বেশি প্রবাল প্রাচীর নিয়ে গঠিত। ২ হাজার কিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে এর বিস্তৃতি। এ প্রবাল প্রাচীর পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিত। ১৯৮১ সালে ইউনেস্কো রিফটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ ঘোষণা করে। একই সঙ্গে এটি একটি সমৃদ্ধ বৈজ্ঞানিক নিদর্শন। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পরিবেশগত ও মানবসৃষ্ট সংকটে সেখানকার প্রাকৃতিক ভারসাম্য ক্রমশ ভেঙে পড়ছে।
No comments