যেভাবে স্বপ্নভঙ্গ অনীকের
রাজনীতির
ভাল-মন্দ বোঝার বয়স হয়নি তার। এখনও কিশোর। সামনে এসএসসি পরীক্ষা। পড়াশোনা
নিয়ে ব্যস্ত ছিল ১৫ বছরের অনীক। ফেনীর সরকারি পাইলট স্কুলের এসএসসি
পরীক্ষার্থী সে। টেস্ট পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। ফাইনালে আরও ভাল ফলাফলের
আশায় কঠোর পরিশ্রমও করছিল। তাই ৫ই জানুয়ারির উত্তাল দিনেও স্কুলের স্যারের
কাছে গণিত পড়তে গিয়েছিল অনীক। সঙ্গে আরও তিন বন্ধু। বিকাল ৪টায় পড়া শেষে
দুই বন্ধু তাদের বাসার দিকে চলে গেছে। অনীক আর হৃদয়ের বাসা পাশাপাশি হওয়ায়
একসঙ্গে ফিরছিল তারা। ফেরার পথে হয়তো ভবিষ্যতের রঙিন স্বপ্নে বিভোর হয়ে ছিল
সে। কিন্তু মুহূর্তেই সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। ফেনী সদরের
ডাক্তারপাড়ায়- দুর্বৃত্তদের ছোড়া ককটেলে গুরুতর আহত হয়ে অনীক এখন
হাসপাতালের বিছানায়। অসহ্য যন্ত্রণায় পার হচ্ছে প্রতিটা মুহূর্ত। হৃদয়ের
অবস্থাও একই। অনীকের চিকিৎসা চলছে ঢাকা মেডিকেলে আর হৃদয়কে ভর্তি করা হয়েছে
চট্টগ্রাম মেডিকেলে। এবছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়াটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে
তাদের।
গতকাল বিকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, মুমূর্ষু রোগীদের জন্য বরাদ্দ ৬ নম্বর বেডে শুয়ে আছে অনীক। কপাল, চোখ ও নাকের ওপর ব্যান্ডেজ বাঁধা। পায়ের শিরায় চলছে স্যালাইন। শিয়রে বসা মা জেসমীন রহমান। পায়ের কাছে বসা মামা আবদুল্লাহ আল মামুন। দু’জনের চোখেই পানি। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে অনীক। মাঝে-মধ্যে পানি খেতে চাইছে। কিন্তু চিকিৎসক বেশি পানি খাওয়াতে নিষেধ করেছেন। মা তাই আধা কাপ পানি তুলে দিলেন সন্তানের মুখে। কাপের পানিতে মায়ের দু’ফোঁটা অশ্রুও মিশে গেল। হৃদয় বিদারক এ দৃশ্যে যেন বিষাদ নেমে এলো পুরো ওয়ার্ডে।
জেসমীন রহমান বলেন, তার স্বামী মিজান রহমান ওমানপ্রবাসী। দুই সন্তান তাদের। অনীক বড়, ফেনীর সরকারি পাইলট স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী সে। ছোট মেয়ে ফাহমিদা আফরিন সেন্ট্রাল স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে। সন্তানের লেখাপড়ার জন্যই তিনি গ্রামের বাড়ি দাগনভূঞা থেকে জেলা শহরের আড্ডাবাড়ি এলাকার হাজেরা ম্যানসনের ষষ্ঠ তলায় থাকছেন। দুই সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তারা দিনরাত পরিশ্রম করছিলেন। স্কুলের গণিতের শিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়েছিল সুস্থ শরীরে। কিন্তু সেভাবে তার আর ফেরা হয়নি। ফিরতে দেরি হওয়ায় সন্তানের খোঁজ করার এক পর্যায়ে তিনি ছুটে যান হাসপাতালে। গিয়ে দেখেন অনীকের মর্মান্তিক পরিণতি। আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, অনীক ও হৃদয়ের সামনেই ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এতে দু’জন মারাত্মক আহত হয়। এ সময় কয়েক মিনিট তারা রাস্তাতেই পড়ে ছিল। পরে পথচারীরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এর আগে অনীকের সঙ্গে থাকা দামি একটি মোবাইল সেট কে বা কারা নিয়ে গেছে। মামুন বলেন, চিকিৎসকরা জানান, তার নাকের ওপরের হাড়ে গর্ত হয়ে গেছে। এছাড়া কপালে অনেক জায়গায় ঝলসে গেছে। তবে অনীকের চোখ দু’টি ফুলে গেলেও বড় ক্ষতি হয়নি বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। ঢামেক হাসপাতালের ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার রাসেল মাহমুদ বলেন, কপালে প্লাস্টিক সার্জারি করতে হবে। এদিকে হৃদয়ের স্বজন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন রয়েছে হৃদয়। তার একটি চোখ মারাত্মক জখম হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
গতকাল বিকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, মুমূর্ষু রোগীদের জন্য বরাদ্দ ৬ নম্বর বেডে শুয়ে আছে অনীক। কপাল, চোখ ও নাকের ওপর ব্যান্ডেজ বাঁধা। পায়ের শিরায় চলছে স্যালাইন। শিয়রে বসা মা জেসমীন রহমান। পায়ের কাছে বসা মামা আবদুল্লাহ আল মামুন। দু’জনের চোখেই পানি। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে অনীক। মাঝে-মধ্যে পানি খেতে চাইছে। কিন্তু চিকিৎসক বেশি পানি খাওয়াতে নিষেধ করেছেন। মা তাই আধা কাপ পানি তুলে দিলেন সন্তানের মুখে। কাপের পানিতে মায়ের দু’ফোঁটা অশ্রুও মিশে গেল। হৃদয় বিদারক এ দৃশ্যে যেন বিষাদ নেমে এলো পুরো ওয়ার্ডে।
জেসমীন রহমান বলেন, তার স্বামী মিজান রহমান ওমানপ্রবাসী। দুই সন্তান তাদের। অনীক বড়, ফেনীর সরকারি পাইলট স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী সে। ছোট মেয়ে ফাহমিদা আফরিন সেন্ট্রাল স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে। সন্তানের লেখাপড়ার জন্যই তিনি গ্রামের বাড়ি দাগনভূঞা থেকে জেলা শহরের আড্ডাবাড়ি এলাকার হাজেরা ম্যানসনের ষষ্ঠ তলায় থাকছেন। দুই সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তারা দিনরাত পরিশ্রম করছিলেন। স্কুলের গণিতের শিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়েছিল সুস্থ শরীরে। কিন্তু সেভাবে তার আর ফেরা হয়নি। ফিরতে দেরি হওয়ায় সন্তানের খোঁজ করার এক পর্যায়ে তিনি ছুটে যান হাসপাতালে। গিয়ে দেখেন অনীকের মর্মান্তিক পরিণতি। আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, অনীক ও হৃদয়ের সামনেই ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এতে দু’জন মারাত্মক আহত হয়। এ সময় কয়েক মিনিট তারা রাস্তাতেই পড়ে ছিল। পরে পথচারীরা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেছে। এর আগে অনীকের সঙ্গে থাকা দামি একটি মোবাইল সেট কে বা কারা নিয়ে গেছে। মামুন বলেন, চিকিৎসকরা জানান, তার নাকের ওপরের হাড়ে গর্ত হয়ে গেছে। এছাড়া কপালে অনেক জায়গায় ঝলসে গেছে। তবে অনীকের চোখ দু’টি ফুলে গেলেও বড় ক্ষতি হয়নি বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। ঢামেক হাসপাতালের ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার রাসেল মাহমুদ বলেন, কপালে প্লাস্টিক সার্জারি করতে হবে। এদিকে হৃদয়ের স্বজন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন রয়েছে হৃদয়। তার একটি চোখ মারাত্মক জখম হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
No comments