‘আটকে রাখা অদূরদর্শী পদক্ষেপ’
অনর্থক
বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে আটকে রাখার অদূরদর্শী পদক্ষেপ নিয়েছে
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। এতে প্রতিবাদের আরও উপলক্ষ তৈরি হয়েছে।
ক্ষমতাসীনরা সংবেদনশীল একটি বোমার ওপর বসে আছেন। মধ্যরাতে বিরোধী নেতাদের
বাড়িতে হানা দিয়ে গ্রেপ্তারের সংবাদ শুভ লক্ষণের পূর্বাভাস নয়। খালিজ
টাইমসের এক সম্পাদকীয়তে গতকাল এ কথা বলা হয়। এতে আরও বলা হয়, বিরোধীদের
বর্জন করা বিতর্কিত নির্বাচনের এক বছর পর প্রতিবাদকারীরা রাজপথে তাদের
অবস্থান জানাতে নেমেছে। এতগুলো বছরে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যকার
দ্বন্দ্ব ইতিমধ্যে অনেক প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। আজকের দিন পর্যন্ত রাজনৈতিক
অস্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা অব্যাহত রয়েছে। নির্বাচনের প্রথম বছর
পূর্তির প্রাক্কালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অনর্থক বিরোধী নেতা খালেদা
জিয়াকে আটকে রাখার যে অদূরদর্শী পদক্ষেপ নিয়েছে তা আরও প্রতিবাদের উপলক্ষ
তৈরি করে দিয়েছে। সরকার যদিও বলছে, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে এটা ছিল
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা। রাজনৈতিকভাবে ক্রিয়াশীল দেশটির চিরাচরিত রীতি থেকে
ইঙ্গিত মিলছে আরও ঝঞ্ঝাট ঘনীভূত হচ্ছে। বিরোধী নেতৃস্থানীয় নেতাদের বাড়িতে
মধ্যরাতে হানা দিয়ে গ্রেপ্তারের সংবাদ শুভ লক্ষণের পূর্বাভাস নয়। বিএনপি
এবং শক্ত অবস্থানে না থাকা অন্য রাজনৈতিক শক্তিগুলো এ অভিযানকে সুযোগ
হিসেবে কাজে লাগিয়ে তাদের প্রতিবাদ প্রচারণা বাড়াতে পারে। সহিংসতা চলাকালে
মানুষের মৃত্যুর সংবাদে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। ক্ষমতাসীনদের
এটা উপলব্ধি করতে হবে যে, তারা সংবেদনশীল একটি বোমার ওপর বসে রয়েছেন,
যেখানে সংসদে প্রায় কোন বিরোধী নেই আর বিএনপি ও তাদের ইসলামপন্থি জোট
শরিকদের আরও ধাক্কা দিয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দিলে পরিণতি অফলপ্রসূ হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ নির্বাচনের বছরপূর্তিতে গণতন্ত্র আর
সংবিধানের জয় উদযাপন করছেন। তার উচিত, বিরোধীদের প্রতি শান্তি প্রতিষ্ঠার
লক্ষ্যে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করা। দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করতে
তাদের আমন্ত্রণ জানানো। উপযোগী একটি পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের কাছ থেকে
ন্যূনতম এতটুকু প্রয়োজন। একইসঙ্গে বিরোধীদের রাজনৈতিক কর্মকান্ডের ওপর থেকে
নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে দেয়া উচিত। বাংলাদেশের অংশগ্রহণমূলক রাজনীতি প্রয়োজন,
এমন রাজনীতি নয় যেটা একদলীয়।
No comments