প্রেস ক্লাব থেকে বের হয়েই গ্রেপ্তার
প্রায়
২৭ ঘণ্টা জাতীয় প্রেস ক্লাবে অবস্থানের পর গ্রেপ্তার হয়েছেন বিএনপির
ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বিকাল সোয়া ৪টায়
প্রেস ক্লাব থেকে বের হতে চাইলে গেটেই আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। আজ তাকে
আদালতে হাজির করা হবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এদিকে মির্জা
আলমগীরকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম
খালেদা জিয়া। গত সোমবার দুপুর সোয়া ১টায় সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের একটি
সমাবেশে যোগ দিতে প্রেস ক্লাবে প্রবেশ করেন মির্জা আলমগীর। সমাবেশে বক্তব্য
দেয়া শেষে বেলা ২টার দিকে প্রেস ক্লাব থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।
এসময় প্রেস ক্লাব চত্বরে আওয়ামীপন্থি সাংবাদিকদের একটি সমাবেশ চলছিল। এই
সুযোগে প্রেস ক্লাবে ঢুকে পড়েন আওয়ামী প্রজন্ম লীগের নেতাকর্মীরা। মির্জা
আলমগীর বের হওয়ার সময় প্রজন্ম লীগ নেতাকর্মী ও আওয়ামীপন্থি সাংবাদিকদের
তোপের মুখে পড়েন। এসময় তাদের সঙ্গে পেশাজীবী পরিষদের নেতাকর্মীদের
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তার জন্য মির্জা আলমগীরকে প্রেস
ক্লাবের দোতলায় নিয়ে যান পেশাজীবী পরিষদের নেতারা। মির্জা আলমগীরের সঙ্গে
আটকা পড়েন জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান। এদিকে বিকাল থেকেই মির্জা
আলমগীরকে গ্রেপ্তার করার জন্য প্রেস ক্লাবের তিনটি প্রবেশমুখে অবস্থান নেয়
পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। প্রেস ক্লাবের প্রধান ফটকে রাখা হয়
জলকামান, রায়ট কার, পুলিশ ভ্যান। এতে প্রেস ক্লাবেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন
মির্জা আলমগীর ও শফিউল আলম প্রধান। রাত কাটান সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে।
ওদিকে তাদের অবস্থানকে ঘিরে গতকাল সকাল থেকেই প্রেস ক্লাব চত্বরে উত্তেজনা
বিরাজ করে। আওয়ামী প্রজন্ম লীগে কর্মীরা সকালে লাটিসোটা হাতে প্রেস ক্লাবের
সামনে অবস্থান নেয়। দুপুরের পর কয়েক দফায় তারা লাঠিসোটা নিয়ে প্রেস
ক্লাবের ফটক টপকে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ নিয়ে দফায় দফায় উত্তেজনা
ছড়ায়। ওদিকে মির্জা আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করবেন-এ খবরে সকাল থেকেই ভিড় করেন
সাংবাদিকরা। দুপুরের দিকে প্রেস ক্লাবে দোতলায় আসেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য
উপদেষ্টা ইকবাল সোহবান চৌধুরী, সরকারি সংবাদ সংস্থা বাসসের ব্যবস্থাপনা
পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, বিএফইউজের সভাপতি
মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, আওয়ামী লীগপন্থি সাংবাদিক নেতা শাবান মাহমুদসহ
অর্ধশতাধিক সাংবাদিক। এসময় জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে শাবান মাহমুদের নেতৃত্বে
বেশ কয়েকজন সাংবাদিক মিছিল করেন। কয়েক দফা মিছিল নিয়ে প্রেস ক্লাবের সাধারণ
সম্পাদকের রুমে অবস্থান করা মির্জা আলমগীরের রুমের সামনে যান এবং
বহিরাগতদের বের করে দেয়ার দাবি জানান। উপস্থিত সিনিয়র সাংবাদিকরা তাদের
নিবৃত করেন। দুপুর দেড়টার দিকে প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে সাংবাদ
সম্মেলন করেন আওয়ামী লীগপন্থি সাংবাদিক নেতারা। এসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত
মহাসচিবকে বেলা ২টার মধ্যে প্রেস ক্লাব ত্যাগ করার আলটিমেটাম দেন
প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোহবান চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রেস ক্লাব
রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অবস্থানের জায়গা নয়। ক্লাব সাংবাদিকদের পবিত্র জায়গা।
এখানে ক্লাবের নির্বাহী পরিষদের সদস্যরা রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয় দিয়ে
রাজনৈতিক আস্তানায় পরিণত করেছেন। আমি বেলা ২টার মধ্যে বহিরাগতদের প্রেস
ক্লাব ত্যাগ করার অনুরোধ করছি। একইসঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য
প্রস ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদত্যাগ দাবি করছি। এই আলটিমেটামে
প্রেস ক্লাবের ভেতরে উত্তেজনা বিরাজ করে। এরপর বেলা সোয়া ৩টার দিকে ভিআইপি
লাউঞ্জে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপিপন্থি সাংবাদিক নেতারা। বিএফইউজের
(একাংশ) সভাপতি শওকত মাহমুদ বলেন, যে কোন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজনৈতিক
নেতাদের প্রেস ক্লাবে আশ্রয় দেয়া একটি ঐতিহ্য। দেশ আজ গভীর সংকটে। জাতীয়
নেতারা আজ কোথাও নিরাপদ নয়। তাই এই জাতীয় নেতাকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। এসময়
বিএনপিপন্থি সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত
আহ্বায়ক রুহুল আমীন গাজী, ডিইউজে (একাংশ) সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার,
সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধানসহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপিপন্থি সাংবাদিকদের সংবাদ সম্মেলন চলাকালে ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশ করেন
মির্জা আলমগীর। এসময় তিনি প্রেস ক্লাবে অবস্থান করার কারণ ব্যাখ্যা করেন।
বিকাল সোয়া ৪টার দিকে সংবাদ সম্মেলন শেষ করেই নিজের ব্যক্তিগত গাড়িতে চড়ে
প্রেস ক্লাবের প্রধান ফটক দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় তার গাড়ি ঘিরে
‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিতে থাকেন আওয়ামী লীগপন্থি সাংবাদিক নেতারা। তারা
‘খালেদার আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও, ‘ধর ধর ফখরুল ধর’ ‘ফখরুল তুই
রাজাকার এই মুহূর্তে বাংলা ছাড়’ বলে আপত্তিকর স্লোগান দিতে থাকেন। প্রেস
ক্লাবের প্রধান ফটক দিয়ে বের হওয়া মাত্রই মির্জা আলমগীরের গাড়ি ঘিরে ধরে
গোয়েন্দা পুলিশ। সেখানে আগে থেকেই গোয়েন্দা পুলিশের একটি মাইক্রোবাস, একটি
প্রিজন ভ্যান, একটি রায়ট কার, জলকামান ও একটি পুলিশ ভ্যান অবস্থান করছিল।
এসময় মিনিট পাঁচেক বিএনপিপন্থি সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি হয়।
একপর্যায়ে গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা সাংবাদিকদের লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেয়।
এসময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য মির্জা আলমগীরের গাড়িতে উঠে পড়েন। তারপর গাড়িটি
মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ের দিকে রওনা হয়। মির্জা আলমগীরের
গাড়িকে সামনে-পেছনে ডিবির মাইক্রোবাস, প্রিজন ভ্যান ও পুলিশ ভ্যান কর্ডন
করে নিয়ে যায়। মির্জা আলমগীরকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় জাতীয় ঈদগাহ মাঠে
মোড়ে দুটি ককটেলের বিক্ষোরণ ঘটে। এদিকে সম্প্রতি রাজধানীর বকশীবাজারে
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের
ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ তাকে আদালতে
হাজির করা হতে পারে।
সংগ্রামে সবাইকে শরিক হওয়ার আহ্বান ফখরুলের
সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন দেয়ার দাবিতে বিরোধী জোটের শীর্ষনেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে আন্দোলন-সংগ্রামের ডাক দিয়েছেন তাতে সবাইকে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বিকালে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দেশবাসীকে এ আহ্বান জানান। মির্জা আলমগীর বলেন, ৫ই জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন হওয়ায় ওইদিনটিকে স্মরণ করার জন্য ২০ দল থেকে রাজধানীতে একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার আমাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি। সমাবেশকে প করতে সরকার রাজধানীতে ১৪৪ ধারা জারি করে। নয়াপল্টন থেকে বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর নয়াপল্টন কার্যালয় ও গুলশান কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে পুলিশ। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তার কার্যালয়ের সামনে ১৩টি বালু ও ইটভর্তি ট্রাক দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। ঢাকামুখী দূরপাল্লার সকল যানবাহন বন্ধ করে দেয় সরকার। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, আমাদের কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ। সরকারের বাধা সত্ত্বে দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা কর্মসূচি পালন করেছে ২০ দলের নেতাকর্মীরা। এসময় পুলিশের গুলিতে ৪ জন নিহত ও সহস্রাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে সমাবেশ করার জন্য ২০ দলকে অনুমতি দিয়েছিল প্রশাসন। তারপরও সমাবেশ পন্ড করার জন্য বিনা উস্কানিতে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আওয়ামী লীগ এভাবে সারা দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। গুম-হত্যা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে দমননীতি চালিয়ে যাচ্ছে তারা। সারা দেশে এক অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইটিভির চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, ক্যাবল অপারেটরদের চাপ দিয়ে একুশে টিভির সমপ্রচার করা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। চ্যানেলটির চেয়ারম্যান আবদুস সালামকে গ্রেপ্তার করেছে। এর কারণ চ্যানেলটি সত্য কথা প্রচার করতো। সরকার একের পর এক মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের জন্য দেশের মানুষ শতবছর সংগ্রাম করেছে। সেই গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে একদলীয় বাক কায়েমের পথে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার। দেশবাসীকে চলমান সংগ্রামে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সংগ্রামের ডাক দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার সেই ডাকে দেশবাসীকে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রেস ক্লাবে অবস্থানের বিষয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, ৫ই জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত একটি সমাবেশে যোগ দিতে প্রেস ক্লাবে এসেছিলাম। সমাবেশ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। এসময় দেখি, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা প্রেস ক্লাব থেকে বের হওয়ার সবগুলো পথ বন্ধ করে রেখেছে। এরপর সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত কারণে আর বাইরে যাইনি। সাংবাদিকদের আতিথেতার কারণে প্রেস ক্লাবেই রাত যাপন করি। তারা যে আন্তরিকতা ও সহযোগিতা করেছেন এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। সংবাদ সম্মেলনের পরপরই প্রেস ক্লাব থেকে বের হলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
সংগ্রামে সবাইকে শরিক হওয়ার আহ্বান ফখরুলের
সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন দেয়ার দাবিতে বিরোধী জোটের শীর্ষনেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে আন্দোলন-সংগ্রামের ডাক দিয়েছেন তাতে সবাইকে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বিকালে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি দেশবাসীকে এ আহ্বান জানান। মির্জা আলমগীর বলেন, ৫ই জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন হওয়ায় ওইদিনটিকে স্মরণ করার জন্য ২০ দল থেকে রাজধানীতে একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার আমাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেয়নি। সমাবেশকে প করতে সরকার রাজধানীতে ১৪৪ ধারা জারি করে। নয়াপল্টন থেকে বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপর নয়াপল্টন কার্যালয় ও গুলশান কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে পুলিশ। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তার কার্যালয়ের সামনে ১৩টি বালু ও ইটভর্তি ট্রাক দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। ঢাকামুখী দূরপাল্লার সকল যানবাহন বন্ধ করে দেয় সরকার। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, আমাদের কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ। সরকারের বাধা সত্ত্বে দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা কর্মসূচি পালন করেছে ২০ দলের নেতাকর্মীরা। এসময় পুলিশের গুলিতে ৪ জন নিহত ও সহস্রাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে সমাবেশ করার জন্য ২০ দলকে অনুমতি দিয়েছিল প্রশাসন। তারপরও সমাবেশ পন্ড করার জন্য বিনা উস্কানিতে গুলি চালিয়েছে পুলিশ। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আওয়ামী লীগ এভাবে সারা দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। গুম-হত্যা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে দমননীতি চালিয়ে যাচ্ছে তারা। সারা দেশে এক অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ইটিভির চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, ক্যাবল অপারেটরদের চাপ দিয়ে একুশে টিভির সমপ্রচার করা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। চ্যানেলটির চেয়ারম্যান আবদুস সালামকে গ্রেপ্তার করেছে। এর কারণ চ্যানেলটি সত্য কথা প্রচার করতো। সরকার একের পর এক মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের জন্য দেশের মানুষ শতবছর সংগ্রাম করেছে। সেই গণতন্ত্র আজ বিপন্ন। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে একদলীয় বাক কায়েমের পথে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার। দেশবাসীকে চলমান সংগ্রামে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, মানুষের ভোটের অধিকার ও মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য সব দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সংগ্রামের ডাক দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার সেই ডাকে দেশবাসীকে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রেস ক্লাবে অবস্থানের বিষয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, ৫ই জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস উপলক্ষে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ আয়োজিত একটি সমাবেশে যোগ দিতে প্রেস ক্লাবে এসেছিলাম। সমাবেশ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। এসময় দেখি, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা প্রেস ক্লাব থেকে বের হওয়ার সবগুলো পথ বন্ধ করে রেখেছে। এরপর সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত কারণে আর বাইরে যাইনি। সাংবাদিকদের আতিথেতার কারণে প্রেস ক্লাবেই রাত যাপন করি। তারা যে আন্তরিকতা ও সহযোগিতা করেছেন এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই। সংবাদ সম্মেলনের পরপরই প্রেস ক্লাব থেকে বের হলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
No comments