রাজউক কি জেগে জেগে ঘুমাচ্ছে?-বিপন্ন উত্তরা লেকপাড়

রাজধানীর উত্তরা লেকের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)। কিন্তু সংস্থাটি এই দায়িত্ব কতটা গুরুত্বের সঙ্গে পালন করছে, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সর্বশেষ খবর হলো, উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর সড়কের পশ্চিম পাশের জমিতে লেকপাড়ের সবুজ বেষ্টনীর ক্ষতি করে স্থায়ী পাকা স্থাপনা গড়ে তুলছে ৯ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতি। ইতিমধ্যে ১৪টি ফলদ গাছ কাটা হয়েছে। গাছগুলো যখন কাটা হচ্ছিল, তখন রাজউকের স্থানীয় কার্যালয়কে তা জানানো


হয়েছিল। কিন্তু এই অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সোমবারের প্রথম আলোয় প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজউক বলেছে, গাছ কাটার অভিযোগ তাঁরা পাননি। ঘটনা সত্য হলে তা অবশ্যই গুরুতর। এটা আশ্চর্যজনক কথা; কারণ, লেকটির তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব খোদ রাজউকেরই। কেউ তাদের কাছে অভিযোগ জানাবে, তারপর তারা তৎপর হবে—বিষয়টি এমন হওয়া উচিত নয়। গাছগুলো যেন কেউ কাটতে না পারে, লেকপাড়ের সবুজ বেষ্টনীর ক্ষতি করে কেউ যাতে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্বও রাজউকের। গাছ কেটে ফেলার পর তদন্ত করে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? এটাকে কি লেকের তত্ত্বাবধান বলা যায়?
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, রাজউক কেন লেকপাড়-সংলগ্ন জমি বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংগঠনকে বরাদ্দ দেয়। কারণ, বরাদ্দপ্রাপ্তদের মধ্যে দখলদারির প্রবৃত্তি যে প্রত্যক্ষভাবে লক্ষ করা যায়, তারা যে বরাদ্দের বিভিন্ন শর্ত লঙ্ঘন করে নানা রকমের কর্মকাণ্ড করে, এটা তো অভিজ্ঞতা থেকে অনেক দেখেছে রাজউক। উত্তরা লেকপাড়ের সবুজ বেষ্টনীর ক্ষতি করে কোনো কিছু করা যাবে না, সেখানে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না—এই দুটি শর্ত সাপেক্ষে রাজউক উল্লিখিত জমি উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতিকে বরাদ্দ দিয়েছিল। সমিতি দুটি শর্তই ভঙ্গ করেছে। তাই এখনই বরাদ্দ বাতিল করে তাদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করা রাজউকের একান্ত কর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে উত্তরা লেকপাড়ে আরও যেসব অনিয়ম ঘটেছে, সেগুলোর প্রতিকারের উদ্যোগ রাজউককেই নিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.