ঢাকায় মানব পাচার সিন্ডিকেটের ফাঁদ by রুদ্র মিজান
রাজধানীর
আরামবাগ এলাকার কয়েকটি হোটেলে মালয়েশিয়াগামীদের ভিড় থাকে প্রায়ই। দেশের
বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো করা হয় তাদের। তুলনামূলক অল্প টাকায় বিদেশে যাওয়ার
এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না তারা। তাই সহজেই দালালদের খপ্পরে পড়েন
সহজ-সরল মানুষগুলো। চট্টগ্রাম থেকে নৌপথে মালয়েশিয়া পৌঁছে দেয়ার দায়িত্ব
দালালের। তার নাম কার্তিক চন্দ্র মল্লিক। মানব পাচার নিয়ে তোলপাড় শুরু
হওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছেন তিনি। শুধু কার্তিক চন্দ্র নয়। মানব পাচারে
জড়িত রয়েছে রাজধানীর শতাধিক দালাল। জালের মতো দেশব্যাপী ছড়িয়ে আছে তাদের
কর্মীরা। ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া, দুবাই, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পাচার হচ্ছে
নারী-পুরুষ। দালালদের খপ্পরে পড়ে পাচার হওয়া ব্যক্তিদের অনেকেরই খোঁজ পান
না স্বজনরা। মানব পাচারের অভিযোগে মামলা হলেও প্রভাবশালী দালালরা থাকেন
ধরাছোঁয়ার বাইরে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই
ঘটছে মানব পাচারের ঘটনা। জড়িত আছেন ট্রাভেলস এজেন্সির মালিকদের অনেকে।
সূত্রে জানা গেছে, গত বছরে মানব পাচার আইনে সারা দেশে মামলা হয়েছে ৩৯২টি। অপহরণের শিকার হয়েছেন ১হাজার, ৬২৫ জন। এর মধ্যে উদ্ধার হয়েছেন মাত্র ৫১২ জন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫১৭ জনকে। তার আগের বছর এই আইনে মামলা হয়েছে ৩৭৭টি। এসব মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে ১হাজার ৫শ’ ৯ জনকে। অপহরণের শিকার হয়েছেন ১ হাজার ৩৫৩ জন। এর মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে ১ হাজার ১২৫ জনকে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৭২ জনকে। শুধু রাজধানীতে ২০১৪ সাল থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত মানব পাচার আইনে মামলা হয়েছে ৩৬০টি। এর মধ্যে ২৫৫টি মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশের তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১০৫টি মামলারই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীতে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। শতাধিক দালালের এই সিন্ডিকেট বিভিন্ন দেশে মানব পাচারে জড়িত রয়েছে। কার্তিক চন্দ্র মল্লিক, কবির গাজী, হায়দার, পনির, সোহেল, নাজমা, মঞ্জু বেগমের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে। এই গ্রুপের সঙ্গে রয়েছে ভারতীয় নাগরিক বর্তমানে ডেমরার বাসিন্দা তানভীর রাজা চৌধুরী। সূত্রমতে, এই চক্রটি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া করে অফিস ও বাসা করে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী ও পুরুষদের এসব অফিসে ও বাসায় এনে রাখা হয়। তারপর বিভিন্ন দেশের দালালদের কাছে তাদের বিক্রি করে দেয়া হয়। এই গ্রুপের দালাল কার্তিক চন্দ্র মল্লিক নৌপথে মালয়েশিয়ায় মানব পাচার করে থাকে। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে শ্যামপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা রয়েছে।
সারা দেশ থেকে বিদেশগামীদের মতিঝিলের আরামবাগের কয়েকটি হোটেলে জড়ো করার পরে সুযোগমতো চট্টগ্রামে থেকে নৌপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়। এই চক্রের কবল থেকে এ পর্যন্ত অনেককে উদ্ধার করা হয়েছে। এই চক্রের কবল থেকে আইরিন নামে এক কিশোরীকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। চক্রের গাজীপুরের কাপাসিয়ার রানীগঞ্জের সোহেল ও পটুয়াখালীর হাওলাদার বাড়ির লিটন মিলে আইরিনকে অপহরণ করে। ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ফরিদপুরের রথখোলার নাজমা বেগমের বাসায় রাখা হয় তাকে। খবর পেয়ে হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড হেলথ ফাউন্ডেশনের কর্মীরা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর আইরিন জানায়, তাকে ত্রিশ হাজার টাকায় নাজমার কাছে বিক্রি করে দেয় সোহেল ও লিটন। সেখান থেকে ভারতের এক দালালের কাছে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রির পাঁয়তারা চলছিল। শুধু আইরিন নয় এরকম শ’ শ’ নারীকে এভাবেই পাচার করা হয় ভারতে।
সূত্রমতে, এয়ারপোর্ট রোডের নিউ শেরাটন, মগবাজার ও বংশাল এলাকার কয়েকটি বাসা নিয়ন্ত্রণ করে হায়দার, মঞ্জু ও সাথী। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায় দালাল চক্রটি অবাধে মানব পাচারে লিপ্ত রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ রয়েছে যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, মতিঝিল ও পল্টন থানার কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে গত বছরের ২৮শে ফেব্রুয়ারিতে মানব পাচার মামলার আসামি নাজমাসহ কয়েক জনকে আটকের পরও ছেড়ে দেয় যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। যদিও যাত্রাবাড়ী থানার ওসি অবনি শঙ্কর কর এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। একই ভাবে শ্যামপুর থানায় দায়েরকৃত একটি মামলায় তদন্ত না করেই প্রতিবেদন দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আইয়ূব হোসেন। এ বিষয়ে হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড হেলথ ফাউন্ডেশনের অর্ডিনেটর মিয়াজী সেলিম জানান, আসামিদেরর রক্ষা করার জন্য ওই প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। যদিও এতে উল্লেখ করা হয়েছে এসব এলাকা থেকে আগে মানব পাচার হতো। ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দিয়েছেন মামলার বাদী নুরুল ইসলাম। এসব বিষয়ে আইজিপি একেএম শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, মানব পাচার রোধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এতে কোন পুলিশ সদস্য জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
সূত্রে জানা গেছে, গত বছরে মানব পাচার আইনে সারা দেশে মামলা হয়েছে ৩৯২টি। অপহরণের শিকার হয়েছেন ১হাজার, ৬২৫ জন। এর মধ্যে উদ্ধার হয়েছেন মাত্র ৫১২ জন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫১৭ জনকে। তার আগের বছর এই আইনে মামলা হয়েছে ৩৭৭টি। এসব মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে ১হাজার ৫শ’ ৯ জনকে। অপহরণের শিকার হয়েছেন ১ হাজার ৩৫৩ জন। এর মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে ১ হাজার ১২৫ জনকে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৭২ জনকে। শুধু রাজধানীতে ২০১৪ সাল থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত মানব পাচার আইনে মামলা হয়েছে ৩৬০টি। এর মধ্যে ২৫৫টি মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশের তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১০৫টি মামলারই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীতে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। শতাধিক দালালের এই সিন্ডিকেট বিভিন্ন দেশে মানব পাচারে জড়িত রয়েছে। কার্তিক চন্দ্র মল্লিক, কবির গাজী, হায়দার, পনির, সোহেল, নাজমা, মঞ্জু বেগমের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে। এই গ্রুপের সঙ্গে রয়েছে ভারতীয় নাগরিক বর্তমানে ডেমরার বাসিন্দা তানভীর রাজা চৌধুরী। সূত্রমতে, এই চক্রটি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট ভাড়া করে অফিস ও বাসা করে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী ও পুরুষদের এসব অফিসে ও বাসায় এনে রাখা হয়। তারপর বিভিন্ন দেশের দালালদের কাছে তাদের বিক্রি করে দেয়া হয়। এই গ্রুপের দালাল কার্তিক চন্দ্র মল্লিক নৌপথে মালয়েশিয়ায় মানব পাচার করে থাকে। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে শ্যামপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা রয়েছে।
সারা দেশ থেকে বিদেশগামীদের মতিঝিলের আরামবাগের কয়েকটি হোটেলে জড়ো করার পরে সুযোগমতো চট্টগ্রামে থেকে নৌপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়। এই চক্রের কবল থেকে এ পর্যন্ত অনেককে উদ্ধার করা হয়েছে। এই চক্রের কবল থেকে আইরিন নামে এক কিশোরীকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। চক্রের গাজীপুরের কাপাসিয়ার রানীগঞ্জের সোহেল ও পটুয়াখালীর হাওলাদার বাড়ির লিটন মিলে আইরিনকে অপহরণ করে। ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে ফরিদপুরের রথখোলার নাজমা বেগমের বাসায় রাখা হয় তাকে। খবর পেয়ে হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড হেলথ ফাউন্ডেশনের কর্মীরা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর আইরিন জানায়, তাকে ত্রিশ হাজার টাকায় নাজমার কাছে বিক্রি করে দেয় সোহেল ও লিটন। সেখান থেকে ভারতের এক দালালের কাছে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রির পাঁয়তারা চলছিল। শুধু আইরিন নয় এরকম শ’ শ’ নারীকে এভাবেই পাচার করা হয় ভারতে।
সূত্রমতে, এয়ারপোর্ট রোডের নিউ শেরাটন, মগবাজার ও বংশাল এলাকার কয়েকটি বাসা নিয়ন্ত্রণ করে হায়দার, মঞ্জু ও সাথী। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। অসাধু পুলিশ কর্মকর্তাদের ছত্রছায়ায় দালাল চক্রটি অবাধে মানব পাচারে লিপ্ত রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ রয়েছে যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, মতিঝিল ও পল্টন থানার কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এর মধ্যে গত বছরের ২৮শে ফেব্রুয়ারিতে মানব পাচার মামলার আসামি নাজমাসহ কয়েক জনকে আটকের পরও ছেড়ে দেয় যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। যদিও যাত্রাবাড়ী থানার ওসি অবনি শঙ্কর কর এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। একই ভাবে শ্যামপুর থানায় দায়েরকৃত একটি মামলায় তদন্ত না করেই প্রতিবেদন দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আইয়ূব হোসেন। এ বিষয়ে হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড হেলথ ফাউন্ডেশনের অর্ডিনেটর মিয়াজী সেলিম জানান, আসামিদেরর রক্ষা করার জন্য ওই প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। যদিও এতে উল্লেখ করা হয়েছে এসব এলাকা থেকে আগে মানব পাচার হতো। ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দিয়েছেন মামলার বাদী নুরুল ইসলাম। এসব বিষয়ে আইজিপি একেএম শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, মানব পাচার রোধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এতে কোন পুলিশ সদস্য জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
No comments