জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি মাইনুল হোসেন আর নেই
জাতীয় স্মৃতিসৌধের স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেন আর নেই। সোমবার দুপুরে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। মাইনুল হোসেন কবি গোলাম মোস্তফার দৌহিত্র।
হাসপাতালের পরিচালক আবদুল্লাহ আল শাফি মজুমদার সাংবাদিকদের জানান, স্থপতি মাইনুল হোসেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোববার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার ডায়বেটিস ছিল অনিয়ন্ত্রিত। রক্তচাপও ছিল খুব কম। অনেক চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো যায়নি।মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির স্মরণার্থে ঢাকার অদূরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয় ১৯৭৮ সালে। এজন্য নকশাবিদদের কাছ থেকে নকশা আহ্বান করে সরকার। ৫৭টি নকশা জমা পড়ে। তখন ২৬ বছরের তরুণ স্থপতি মাইনুল হোসেনের নকশা অনুমোদন করে সরকার।তার নকশা অনুযায়ী স্মৃতিসৌধের বেদীমূল থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে সাতটি ত্রিকোণ কলাম, এর মধ্যে বড়টির উচ্চতা ১৫০ ফুট। সাতটি কলামের বিষয়ে স্থপতি মাইনুল গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলে গেছেন, ’৫২ থেকে ’৭১ পর্যন্ত সাতটি বৃহত্তর আন্দোলন হয়েছিল দেশে। স্মৃতিসৌধের সবচেয়ে নিচের খাঁজটা বায়ান্ন আর উঁচুটা একাত্তর।স্থপতি ও কবি রবিউল হুসাইন সাংবাদিকদের জানান, জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট থেকে মাইনুল হোসেনের মরদেহ নেয়া হবে শান্তিনগরের বাসায়। রাতে রাখা হবে বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে। আর মাইনুল হোসেনের বন্ধু স্থপতি বদরুল হায়দার সাংবাদিকদের জানান, আমার বন্ধু মাইনুল হোসেনের দুই মেয়ে। বড় মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। সে দেশে ফিরলেই তার দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।স্থপতি মাইনুলের আত্মীয়স্বজনরা জানান, জীবনের শেষ দিনগুলোতে মানসিকভাবেও পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন না তিনি। মনে ছিল ক্ষোভ। একাকী জীবন বেছে নিয়েছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগে তার ব্যাখ্যাও তিনি দিয়ে গেছেন। গণমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছিলেন, স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পর বেনামি চিঠি দিয়ে তাকে খুন করতে চাওয়া হয়েছিল। আর স্মৃতিসৌধ উদ্বোধনের দিনও তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।২২ বছরের কর্মজীবনে ভোকেশনাল টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট ও ভোকেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (১৯৭৭), বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ভবন (১৯৭৮), চট্টগ্রাম ইপিজেড কার্যালয় (১৯৮০), জাতীয় জাদুঘর (১৯৮২) ও উত্তরা মডেল টাউনের (১৯৮৫) নকশা করে গেছেন মাইনুল হোসেন।১৯৫২ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ীতে জন্ম নেন গুণী এ স্থপতি। পড়াশোনা করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭৬ সালে স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। কর্মজীবন শুরু করেন ইএএইচ কনসালটেন্ট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। পরে যোগ দেন বাংলাদেশ কনসালট্যান্ট লিমিটেডে। আর ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নকশকার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক।শোক : এ স্থপতির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থপতি মাইনুল হোসেনের নকশায় নির্মিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাংলা ও বাঙালি জাতির সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে চির ভাস্মর হয়ে থাকবে। এ মহান কীর্তির স্বীকৃতিস্বরূপ জাতি চিরদিন তার নাম গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুসহ বিভিন্ন সংগঠন শোক প্রকাশ করেছেন।
হাসপাতালের পরিচালক আবদুল্লাহ আল শাফি মজুমদার সাংবাদিকদের জানান, স্থপতি মাইনুল হোসেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোববার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার ডায়বেটিস ছিল অনিয়ন্ত্রিত। রক্তচাপও ছিল খুব কম। অনেক চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো যায়নি।মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির স্মরণার্থে ঢাকার অদূরে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয় ১৯৭৮ সালে। এজন্য নকশাবিদদের কাছ থেকে নকশা আহ্বান করে সরকার। ৫৭টি নকশা জমা পড়ে। তখন ২৬ বছরের তরুণ স্থপতি মাইনুল হোসেনের নকশা অনুমোদন করে সরকার।তার নকশা অনুযায়ী স্মৃতিসৌধের বেদীমূল থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে সাতটি ত্রিকোণ কলাম, এর মধ্যে বড়টির উচ্চতা ১৫০ ফুট। সাতটি কলামের বিষয়ে স্থপতি মাইনুল গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলে গেছেন, ’৫২ থেকে ’৭১ পর্যন্ত সাতটি বৃহত্তর আন্দোলন হয়েছিল দেশে। স্মৃতিসৌধের সবচেয়ে নিচের খাঁজটা বায়ান্ন আর উঁচুটা একাত্তর।স্থপতি ও কবি রবিউল হুসাইন সাংবাদিকদের জানান, জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট থেকে মাইনুল হোসেনের মরদেহ নেয়া হবে শান্তিনগরের বাসায়। রাতে রাখা হবে বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে। আর মাইনুল হোসেনের বন্ধু স্থপতি বদরুল হায়দার সাংবাদিকদের জানান, আমার বন্ধু মাইনুল হোসেনের দুই মেয়ে। বড় মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে থাকে। সে দেশে ফিরলেই তার দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।স্থপতি মাইনুলের আত্মীয়স্বজনরা জানান, জীবনের শেষ দিনগুলোতে মানসিকভাবেও পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন না তিনি। মনে ছিল ক্ষোভ। একাকী জীবন বেছে নিয়েছিলেন তিনি। মৃত্যুর আগে তার ব্যাখ্যাও তিনি দিয়ে গেছেন। গণমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছিলেন, স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পর বেনামি চিঠি দিয়ে তাকে খুন করতে চাওয়া হয়েছিল। আর স্মৃতিসৌধ উদ্বোধনের দিনও তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।২২ বছরের কর্মজীবনে ভোকেশনাল টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট ও ভোকেশনাল ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (১৯৭৭), বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ভবন (১৯৭৮), চট্টগ্রাম ইপিজেড কার্যালয় (১৯৮০), জাতীয় জাদুঘর (১৯৮২) ও উত্তরা মডেল টাউনের (১৯৮৫) নকশা করে গেছেন মাইনুল হোসেন।১৯৫২ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ীতে জন্ম নেন গুণী এ স্থপতি। পড়াশোনা করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭৬ সালে স্থাপত্যবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। কর্মজীবন শুরু করেন ইএএইচ কনসালটেন্ট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। পরে যোগ দেন বাংলাদেশ কনসালট্যান্ট লিমিটেডে। আর ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দেশের বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নকশকার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন একুশে পদক।শোক : এ স্থপতির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থপতি মাইনুল হোসেনের নকশায় নির্মিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাংলা ও বাঙালি জাতির সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে চির ভাস্মর হয়ে থাকবে। এ মহান কীর্তির স্বীকৃতিস্বরূপ জাতি চিরদিন তার নাম গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুসহ বিভিন্ন সংগঠন শোক প্রকাশ করেছেন।
No comments