শিল্পবর্জ্যে মৃতপ্রায় বংশী by পার্থ শঙ্কর সাহা
সাভারের নয়ারহাট থেকে বংশী নদী ধরে
স্রোতের বিপরীতে উত্তরের দিকে গেলে ইঞ্জিনচালিত নৌকার ধীরগতিতে স্রোতের বেগ
ঠিকই টের পাওয়া যায়।
এখানে নদীর পানি ঘোলা হলেও
দুর্গন্ধ নেই তাতে কিন্তু নয়ারহাট থেকে মাইল চারেক দূরে, নলাম গ্রামের
কাছে গেলেই পাল্টায় নদীর চেহারা। সেখান থেকে ডান দিকে আবছা দেখা যায় ঢাকা
রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ডিইপিজেড) শিল্পকারখানাগুলো। একটি খাল ধরে
সেদিকে এগোলে ঝাঁজাল গন্ধ এসে নাকে লাগে। পানি কিছুটা কালচে থেকে একেবারে
কালো হয়ে যায়। নৌকাচালক ছাপন মাঝি বলে ওঠেন, ‘এ আর কী দেখতাছেন! শুকনার
সময় পানি কালা হয়া যায় নয়ারহাট ছাইড়া আরও ভাটিতে।’
নৌকা একবারে ডিইপিজেডের পাশ ঘেঁষে দাঁড়ালে, চারপাশে বিস্তীর্ণ মিশমিশে কালো জলরাশি চোখে পড়ে, সঙ্গে দুর্গন্ধ। খালের পাশেই কন্ডা গ্রাম। গ্রামের পাশের কন্ডার খাল এখন ‘রপ্তানির খাল’ নামে পরিচিত। এখানকার অধিবাসীরা জানান, ডিইপিজেড কারখানার পানি পড়ে এই খালে। খালের মুখে যেসব শিল্পকারখানার পাইপ এসে মিশেছে, সেগুলো শুকনা। গ্রামবাসীর একজন বললেন, ‘দিনে কুনু খারাপ পানি আহে না। সব ঢালে রাইতে।’
ডিইপিজেডসহ হেমায়েতপুর, কর্ণপাড়া এলাকার সব শিল্পকারখানার বর্জ্য নিয়ে বংশী এখন বর্জ্যের আধারে পরিণত হয়েছে। ঢাকার নদী ও জলাধারের দখল ও দূষণ রোধ করতে গঠিত নদীদূষণ ও অবৈধ জমি দখলসংক্রান্ত সংসদীয় উপকমিটির ২০১০ সালের এক প্রতিবেদন ঢাকা ইপিজেডকে বংশী নদীর সবচেয়ে বড় দূষণকারী বলে চিহ্নিত করে।
নলামের গ্রামে নদীর কাছে মাছ ধরছিলেন ভাদাইল গ্রামের তোরাব আলী। জাত জেলে তোরাব পেশা ছেড়ে এখন দিনমজুরি করেন। কারণ জানালেন, ‘এখন আর মাছ নাই। সকাল থিকা দুপুর পন্ত বইলে এক কেজি মাছ মেলে। আইজ খাওয়ার জন্য ধরতে আইছি।’ শিল্পবর্জ্যে বংশী আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই তোরাবের মতো বংশীপাড়ের হাজার জেলে এভাবে ছেড়েছেন পেশা।
বংশীর দূষণে নদীপাড়ের অনেকে এলাকা ছেড়েও চলে গেছে। বংশীর পাড়ঘেঁষা নলাম ব্যাপারীপাড়ার ১৩টি পরিবার চলে গেছে এনায়েতপুর ও পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায়। গ্রামের ছোট ব্যবসায়ী মোয়জ্জেম হোসেনের দুই হাতে দাগ। চিকিৎসক দেখিয়েছেন, তবু সারে না। বংশীর দূষিত পানি সম্পদও নষ্ট করেছে। গ্রামের কাছে ইটঘোনার পাশে যে পাঁচ বিঘা জমি আছে, তা এখন পানিতে ডুবে আছে। পানি শুকালে বেশির ভাগ জমিতেই থিকথিকে কালো কাদা জমে থাকে, সেখানে রাসায়নিকের গন্ধ। সে জমিতে আর ফসল হয় না।
বংশীর বুকে এখনো বেদেদের বহর আছে। কিন্তু একসময় ঝিনুক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বেদেরা পেশা হারিয়েছে। নদীর পাশঘেঁষা সৈয়দপুর বেদে গ্রামের কামাল মিয়া বলছিলেন, ‘পচা পানিতে ঝিনুক হয় না। মিলের পানি আইসা সব শ্যাষ কইর্যা দিছে।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারিতে বংশীর পানির দ্রবীভূত অক্সিজেনের (ডিও) পরিমাণ ছিল শূন্য মিলিগ্রাম। পরিবেশ আইন বলছে, পানিতে জীবের অস্তিত্ব থাকতে হলে প্রতি লিটার পানিতে ন্যূনতম ৫ মিলিগ্রাম ডিও দরকার। অর্থাৎ দূষণের কারণে এখানে অক্সিজেনও তৈরি হতে পারছে না।
জামালপুরের শরীফপুর থেকে সৃষ্টি হওয়া এই বংশীর প্রবাহ দিনের পর দিন কমছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সাভারের নয়ারহাট পয়েন্টে ২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বরে পানির প্রবাহের পরিমাণ ভরা জোয়ারে ছিল ৪.৬১ মিটার। অথচ ২০০৮ সালেও এখানে একই তারিখে প্রবাহ ছিল ৬.৪০ মিটার।
তীব্র দূষণের সঙ্গে এই কম প্রবাহ নদীর তলদেশে মেশা নানা বর্জ্য বহন করতে পারছে না। বংশীর পাড়ের কাকরান পালপাড়া গ্রামের কুমারদের এখন তাই মাটির সন্ধানে ডিইপিজেডের আরও উজানে ডগরতলী, শিমুলিয়া এলাকা থেকে মাটি নিয়ে আসতে হয় বলে জানান গ্রামের ষাটোর্ধ্ব দ্বিজেন্দ্র পাল। তিনি জানালেন, শুকনা মৌসুমে কালী বা সরস্বতী পূজার পর মূর্তিও সেই নোংরা পানিতে তাঁরা বিসর্জন দেন না।
ডিইপিজেডের শিল্পকারখানায় বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি) নিয়মমতো চালু না করা পর্যন্ত শিল্পকারখানার জন্য দরকারি ইউনিয়ন পরিষদের সনদ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন ধামসোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল গফুর। এই ইউনিয়নের মধ্যে পড়েছে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল বা ডিইপিজেড। ‘এরপর তো আমার চেয়ারম্যানগিরি যায়গা’ বললেন আবদুল গফুর। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চাপ দিয়ে তাঁকে বাধ্য করা হয় সার্টিফিকেট দিতে।
সাভার-ধামরাইয়ের মানুষ একাধিকবার দূষণের প্রতিকার পেতে এই দুই এলাকার সাংসদ তৌহিদ জং মুরাদ ও বেনজীর আহমেদের শরণাপন্ন হয়েছেন। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, শিল্পমালিকদের সঙ্গে এই দুজনের বিশেষ সম্পর্কের কারণেই সমস্যার সমাধান হয় না। সরকারদলীয় সাংসদ বেনজীর এই অভিযোগ অস্বীকার করে এই দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের নজরদারির অভাবকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ডিইপিজেডে ঠিকমতো ইটিপি চালু রাখা হয় না।
এই অভিযোগ মানতে রাজি নন ডিইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক আশরাফুল কবীর। কেন্দ্রীয় ইটিপি থাকায় বর্জ্য নদীতে ফেলার প্রশ্নই আসে না বলে দাবি করেন তিনি। ডিইপিজেডের পাশে পানির এমন অবস্থা কেন? এর জবাবে তাঁর উত্তর, ‘এখানে অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বর্জ্যও আসে। কেবল আমাদের দোষ হয় কেন?’
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শন দল ইপিজেডের গেটে গেলেই ভেতরে খবর পেয়ে যায়, তখন ইটিপি ব্যবহার করে, বলেন অধিদপ্তরের পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট ও মনিটরিং) মো. আলমগীর।
বংশীর পানিতে দূষণের ফলে সেচের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপও বাড়ছে। ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুস সালাম জানালেন, আট বছর আগেও সেচের কাজে নদী থেকে পানি তোলা পাম্প ছিল (এলএলপি) ৮৫টি। দূষিত পানি ব্যবহার না করতে পারায় গত বছর মাত্র ২৮টি পাম্প সচল ছিল। বললেন, নদীর দূষণ যে হারে বাড়ছে, তাতে খুব বেশি দিন এগুলো ব্যবহার করা যাবে না।
ঢাকার আশপাশের প্রায় সব নদীর সঙ্গে বংশীর যোগাযোগ। সাভারের কর্ণতলী নদীর সঙ্গে মিলে বংশী আমিনবাজারে এসে মিশেছে তুরাগে। তুরাগ আবার বুড়িগঙ্গায়। পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক ইনামুল হক বলেন, বুড়িগঙ্গার দূষণের ৫০ ভাগের বেশি আসে বংশী থেকে। এর দূষণ নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে ঢাকার কোনো নদীর দূষণ কমানো যাবে না।
‘বংশী সুরক্ষা আন্দোলন’ নামে ধামরাইয়ে তরুণদের একটি সংগঠনও বলছে, ‘বংশী বাঁচলে ঢাকা বাঁচবে।’ আন্দোলনের সম্পাদক মাহমুদুর রশীদ বললেন, ‘বংশী আমাদের প্রাণ, এর রক্ষায় আমরা বড় আন্দোলনে নামছি।’
নৌকা একবারে ডিইপিজেডের পাশ ঘেঁষে দাঁড়ালে, চারপাশে বিস্তীর্ণ মিশমিশে কালো জলরাশি চোখে পড়ে, সঙ্গে দুর্গন্ধ। খালের পাশেই কন্ডা গ্রাম। গ্রামের পাশের কন্ডার খাল এখন ‘রপ্তানির খাল’ নামে পরিচিত। এখানকার অধিবাসীরা জানান, ডিইপিজেড কারখানার পানি পড়ে এই খালে। খালের মুখে যেসব শিল্পকারখানার পাইপ এসে মিশেছে, সেগুলো শুকনা। গ্রামবাসীর একজন বললেন, ‘দিনে কুনু খারাপ পানি আহে না। সব ঢালে রাইতে।’
ডিইপিজেডসহ হেমায়েতপুর, কর্ণপাড়া এলাকার সব শিল্পকারখানার বর্জ্য নিয়ে বংশী এখন বর্জ্যের আধারে পরিণত হয়েছে। ঢাকার নদী ও জলাধারের দখল ও দূষণ রোধ করতে গঠিত নদীদূষণ ও অবৈধ জমি দখলসংক্রান্ত সংসদীয় উপকমিটির ২০১০ সালের এক প্রতিবেদন ঢাকা ইপিজেডকে বংশী নদীর সবচেয়ে বড় দূষণকারী বলে চিহ্নিত করে।
নলামের গ্রামে নদীর কাছে মাছ ধরছিলেন ভাদাইল গ্রামের তোরাব আলী। জাত জেলে তোরাব পেশা ছেড়ে এখন দিনমজুরি করেন। কারণ জানালেন, ‘এখন আর মাছ নাই। সকাল থিকা দুপুর পন্ত বইলে এক কেজি মাছ মেলে। আইজ খাওয়ার জন্য ধরতে আইছি।’ শিল্পবর্জ্যে বংশী আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই তোরাবের মতো বংশীপাড়ের হাজার জেলে এভাবে ছেড়েছেন পেশা।
বংশীর দূষণে নদীপাড়ের অনেকে এলাকা ছেড়েও চলে গেছে। বংশীর পাড়ঘেঁষা নলাম ব্যাপারীপাড়ার ১৩টি পরিবার চলে গেছে এনায়েতপুর ও পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায়। গ্রামের ছোট ব্যবসায়ী মোয়জ্জেম হোসেনের দুই হাতে দাগ। চিকিৎসক দেখিয়েছেন, তবু সারে না। বংশীর দূষিত পানি সম্পদও নষ্ট করেছে। গ্রামের কাছে ইটঘোনার পাশে যে পাঁচ বিঘা জমি আছে, তা এখন পানিতে ডুবে আছে। পানি শুকালে বেশির ভাগ জমিতেই থিকথিকে কালো কাদা জমে থাকে, সেখানে রাসায়নিকের গন্ধ। সে জমিতে আর ফসল হয় না।
বংশীর বুকে এখনো বেদেদের বহর আছে। কিন্তু একসময় ঝিনুক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বেদেরা পেশা হারিয়েছে। নদীর পাশঘেঁষা সৈয়দপুর বেদে গ্রামের কামাল মিয়া বলছিলেন, ‘পচা পানিতে ঝিনুক হয় না। মিলের পানি আইসা সব শ্যাষ কইর্যা দিছে।’
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারিতে বংশীর পানির দ্রবীভূত অক্সিজেনের (ডিও) পরিমাণ ছিল শূন্য মিলিগ্রাম। পরিবেশ আইন বলছে, পানিতে জীবের অস্তিত্ব থাকতে হলে প্রতি লিটার পানিতে ন্যূনতম ৫ মিলিগ্রাম ডিও দরকার। অর্থাৎ দূষণের কারণে এখানে অক্সিজেনও তৈরি হতে পারছে না।
জামালপুরের শরীফপুর থেকে সৃষ্টি হওয়া এই বংশীর প্রবাহ দিনের পর দিন কমছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, সাভারের নয়ারহাট পয়েন্টে ২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বরে পানির প্রবাহের পরিমাণ ভরা জোয়ারে ছিল ৪.৬১ মিটার। অথচ ২০০৮ সালেও এখানে একই তারিখে প্রবাহ ছিল ৬.৪০ মিটার।
তীব্র দূষণের সঙ্গে এই কম প্রবাহ নদীর তলদেশে মেশা নানা বর্জ্য বহন করতে পারছে না। বংশীর পাড়ের কাকরান পালপাড়া গ্রামের কুমারদের এখন তাই মাটির সন্ধানে ডিইপিজেডের আরও উজানে ডগরতলী, শিমুলিয়া এলাকা থেকে মাটি নিয়ে আসতে হয় বলে জানান গ্রামের ষাটোর্ধ্ব দ্বিজেন্দ্র পাল। তিনি জানালেন, শুকনা মৌসুমে কালী বা সরস্বতী পূজার পর মূর্তিও সেই নোংরা পানিতে তাঁরা বিসর্জন দেন না।
ডিইপিজেডের শিল্পকারখানায় বর্জ্য শোধনাগার (ইটিপি) নিয়মমতো চালু না করা পর্যন্ত শিল্পকারখানার জন্য দরকারি ইউনিয়ন পরিষদের সনদ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন ধামসোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল গফুর। এই ইউনিয়নের মধ্যে পড়েছে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল বা ডিইপিজেড। ‘এরপর তো আমার চেয়ারম্যানগিরি যায়গা’ বললেন আবদুল গফুর। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চাপ দিয়ে তাঁকে বাধ্য করা হয় সার্টিফিকেট দিতে।
সাভার-ধামরাইয়ের মানুষ একাধিকবার দূষণের প্রতিকার পেতে এই দুই এলাকার সাংসদ তৌহিদ জং মুরাদ ও বেনজীর আহমেদের শরণাপন্ন হয়েছেন। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, শিল্পমালিকদের সঙ্গে এই দুজনের বিশেষ সম্পর্কের কারণেই সমস্যার সমাধান হয় না। সরকারদলীয় সাংসদ বেনজীর এই অভিযোগ অস্বীকার করে এই দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের নজরদারির অভাবকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ডিইপিজেডে ঠিকমতো ইটিপি চালু রাখা হয় না।
এই অভিযোগ মানতে রাজি নন ডিইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক আশরাফুল কবীর। কেন্দ্রীয় ইটিপি থাকায় বর্জ্য নদীতে ফেলার প্রশ্নই আসে না বলে দাবি করেন তিনি। ডিইপিজেডের পাশে পানির এমন অবস্থা কেন? এর জবাবে তাঁর উত্তর, ‘এখানে অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বর্জ্যও আসে। কেবল আমাদের দোষ হয় কেন?’
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শন দল ইপিজেডের গেটে গেলেই ভেতরে খবর পেয়ে যায়, তখন ইটিপি ব্যবহার করে, বলেন অধিদপ্তরের পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট ও মনিটরিং) মো. আলমগীর।
বংশীর পানিতে দূষণের ফলে সেচের জন্য ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপও বাড়ছে। ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুস সালাম জানালেন, আট বছর আগেও সেচের কাজে নদী থেকে পানি তোলা পাম্প ছিল (এলএলপি) ৮৫টি। দূষিত পানি ব্যবহার না করতে পারায় গত বছর মাত্র ২৮টি পাম্প সচল ছিল। বললেন, নদীর দূষণ যে হারে বাড়ছে, তাতে খুব বেশি দিন এগুলো ব্যবহার করা যাবে না।
ঢাকার আশপাশের প্রায় সব নদীর সঙ্গে বংশীর যোগাযোগ। সাভারের কর্ণতলী নদীর সঙ্গে মিলে বংশী আমিনবাজারে এসে মিশেছে তুরাগে। তুরাগ আবার বুড়িগঙ্গায়। পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক ইনামুল হক বলেন, বুড়িগঙ্গার দূষণের ৫০ ভাগের বেশি আসে বংশী থেকে। এর দূষণ নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে ঢাকার কোনো নদীর দূষণ কমানো যাবে না।
‘বংশী সুরক্ষা আন্দোলন’ নামে ধামরাইয়ে তরুণদের একটি সংগঠনও বলছে, ‘বংশী বাঁচলে ঢাকা বাঁচবে।’ আন্দোলনের সম্পাদক মাহমুদুর রশীদ বললেন, ‘বংশী আমাদের প্রাণ, এর রক্ষায় আমরা বড় আন্দোলনে নামছি।’
No comments