‘স্ত্রী হারানোর কষ্ট ভুলে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি’
কষ্টের মধ্যেও শান্তি পেয়েছি। নিজ
পরিবারের সদস্য হারিয়েছি। বুকে অনেক কষ্ট আছে। কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে
অনেক মানুষকে জীবিত উদ্ধার করতে পেরে নিজেকে মানবতার প্রতীক মনে করছি। আজও
আমার স্ত্রী হাসনাকে পাইনি। রানা প্লাজার পঞ্চম তলায় গার্মেন্টে কাজ করতো
সে।
নাতি সাইদুরের লাশ নিয়েছি কাঁধে করে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে
এমনই কথাগুলো বলেছেন মানিকগঞ্জের ইউসুফ বাবুর্চি। বললেন, উদ্ধার কাজ করেছি
নিজের চেতনা থেকে। কোন কিছু লাভের আশায় নয়। আজও পর্যন্ত সরকার থেকে কোন
কিছুই পাইনি। রানার কঠোর শাস্তি চান এ স্বজনহারা উদ্ধারকর্মী। গতকাল
রাজধানীর কাঁটাবনস্থ জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমীর মিলনায়তনে
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি উদ্যোগে আয়োজিত রানা প্লাজা ভবন ধসের উদ্ধার
কর্মীদের সম্মান জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বললেন
উদ্ধার কর্মী ইউসুফ। আরেক উদ্ধার কর্মী প্রভাতী আইডিয়াল স্কুলে নবম
শ্রেণীতে অধ্যয়নরত মনোয়ার হোসেন তুষার। অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করতে গিয়ে
তিনি বলেছেন নিজের জীবনের ঝুঁকিকে তখন কিছুই মনে করিনি। ২২ দিন উদ্ধার কাজে
শুধু মনে করেছি প্রত্যেককে জীবিত উদ্ধার করবো। জীবিত কাউকে উদ্ধার করতে
পারলে কতো যে ভাল লেগেছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। লাশকে পচা-গলা
কিছুই মনে করিনি। মনে একটিই চিন্তা ছিল- মানুষ। উদ্ধারকর্মী আসমা আক্তার
লিজা অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, তার
উদ্ধার কাজ এখনও শেষ হয়নি। চলছে। এজন্য অনেকে তাকে মানসিক রোগী বলেছেন।
তাদের কথাকে উপেক্ষা করে তিনি তাদের বলেছেন, আমরা মানুষ। সবার উপরে মানুষ।
এটাই মনে রাখতে হবে। গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী রওশন জাহান লিসা বলেন, আমাদের
সমাজে খারাপ মানুষের চেয়ে ভাল মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। মানুষ আন্তরিকতা
নিয়ে এগিয়ে আসলে সবকিছু সম্ভব।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সভাপতির বক্তব্যে রানা প্লাজা ধসের ঘটনা মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ মন্তব্য করে বলেছেন, এ ঘটনার পেছনে মানুষের অতি লোভ, লালসা ও দুর্নীতি কাজ করেছে। এর হাত থেকে জাতিকে বাঁচাতে হবে। লোভমুক্ত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যদিকে ভবন ধসের পর উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিয়ে সাধারণ মানুষ অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এর মাধ্যমে তারা ‘মানবতার জয়’ অনিবার্য তা প্রমাণ করেছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বৈশিষ্ট্য হলো মানুষের পাশে দাঁড়ানো। অতীতেও মানুষ বিভিন্ন জাতীয় দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এর প্রমাণ করেছে। এমনকি মহান মুক্তিযুদ্ধেও এর প্রমাণ রেখেছে সাধারণ মানুষ। মেনন বলেন, রানা প্লাজার মতো দুঃখের মধ্যেও অনন্য দৃষ্টান্ত ছিল মানবতার জয়। সাধারণ মানুষ যে যেভাবে পেরেছে সেভাবে উদ্ধার কাজে এগিয়ে এসেছে। সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত মন্তব্য করে বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, বিদ্যমান যে আইন আছে তা দুর্বল। তাতে কাউকে চরম শাস্তি দেয়া যাবে না। তাই প্রয়োজনে আইনের সংশোধ করা যেতে পারে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সেদিকে সংশ্লিষ্টদের খেয়াল রাখতে হবে। এ ঘটনার জন্য বিজিএমইএ-কে পুরোপরি দায়িত্ব নিতে হবে। শ্রমিকের মঙ্গলের জন্য তাদেরকে হতে হবে নিবেদিত। রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় টাকা ও প্রশাসন বেশি প্রভাবিত করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক, ওয়ার্কার্স পার্টির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান এনামুল হক এমরান, পলিট ব্যুরোর সদস্য নুর আহমদ বকুল, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সেক্রেটারি জেনারেল বি এম এম মোযহারুল হক, এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনামুর রহমান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) আবদুস সালাম, উপ-পরিচালক ভরত চন্দ্র বিশ্বাস, অধর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ইউসুফ হারুন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ওয়াজেদুল ইসলাম খান, ঢাকার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ২০০ জন উদ্ধারকর্মী ও ১০টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা হিসেবে ক্রেস্ট ও মেডেল দেয়া হয়।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সভাপতির বক্তব্যে রানা প্লাজা ধসের ঘটনা মনুষ্য সৃষ্ট দুর্যোগ মন্তব্য করে বলেছেন, এ ঘটনার পেছনে মানুষের অতি লোভ, লালসা ও দুর্নীতি কাজ করেছে। এর হাত থেকে জাতিকে বাঁচাতে হবে। লোভমুক্ত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যদিকে ভবন ধসের পর উদ্ধার তৎপরতায় অংশ নিয়ে সাধারণ মানুষ অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এর মাধ্যমে তারা ‘মানবতার জয়’ অনিবার্য তা প্রমাণ করেছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বৈশিষ্ট্য হলো মানুষের পাশে দাঁড়ানো। অতীতেও মানুষ বিভিন্ন জাতীয় দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এর প্রমাণ করেছে। এমনকি মহান মুক্তিযুদ্ধেও এর প্রমাণ রেখেছে সাধারণ মানুষ। মেনন বলেন, রানা প্লাজার মতো দুঃখের মধ্যেও অনন্য দৃষ্টান্ত ছিল মানবতার জয়। সাধারণ মানুষ যে যেভাবে পেরেছে সেভাবে উদ্ধার কাজে এগিয়ে এসেছে। সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত মন্তব্য করে বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, বিদ্যমান যে আইন আছে তা দুর্বল। তাতে কাউকে চরম শাস্তি দেয়া যাবে না। তাই প্রয়োজনে আইনের সংশোধ করা যেতে পারে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সেদিকে সংশ্লিষ্টদের খেয়াল রাখতে হবে। এ ঘটনার জন্য বিজিএমইএ-কে পুরোপরি দায়িত্ব নিতে হবে। শ্রমিকের মঙ্গলের জন্য তাদেরকে হতে হবে নিবেদিত। রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় টাকা ও প্রশাসন বেশি প্রভাবিত করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক, ওয়ার্কার্স পার্টির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান এনামুল হক এমরান, পলিট ব্যুরোর সদস্য নুর আহমদ বকুল, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সেক্রেটারি জেনারেল বি এম এম মোযহারুল হক, এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনামুর রহমান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) আবদুস সালাম, উপ-পরিচালক ভরত চন্দ্র বিশ্বাস, অধর চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ইউসুফ হারুন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ওয়াজেদুল ইসলাম খান, ঢাকার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারুক হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ২০০ জন উদ্ধারকর্মী ও ১০টি প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা হিসেবে ক্রেস্ট ও মেডেল দেয়া হয়।
No comments