স্কুল পরীক্ষায় একি প্রতারণা!
পরীক্ষায় ভালো ফলের জন্য দোয়া মাহফিলে অংশ নেওয়ার পর ইন্দোনেশিয়ার
জাকার্তা স্কুলের একদল শিক্ষার্থী তাদের মুঠোফোনে একটি বার্তা পেল:
‘পরীক্ষার ৯০ মিনিট আগে ক্লাসে আসো। প্রশ্ন ও উত্তর বলে দেওয়া হবে।’ মনে
হতে পারে, দোয়া করার পর সৃষ্টিকর্তা ওই বার্তা পাঠিয়েছেন। আদতে তা নয়।
বার্তাটি পাঠান স্কুলটিরই একজন শিক্ষক, যিনি ওই দোয়া মাহফিল পরিচালনা
করেছিলেন। কথামতো চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থীরা সেখানে যায়। এ সময় তাদের
জানিয়ে দেওয়া হয়, উত্তরগুলো পেতে তিন ডলার করে দিতে হবে। প্রতারণার এই
ঘটনা প্রকাশ করেছে ইন্দোনেশিয়া করাপশন ওয়াচ নামের একটি অলাভজনক সংস্থা।
সংস্থাটির পাবলিক সার্ভিস পর্যবেক্ষণ ইউনিটের প্রধান ফাবরি হেনদ্রি বলেন,
ওই শিক্ষার্থীদের শিক্ষকেরা জানান, তাদের প্রত্যেকের দেওয়া তিন ডলার
স্থানীয় মসজিদের সংস্কারকাজে ব্যয় করা হবে। ইন্দোনেশিয়ার স্কুলগুলোর
বার্ষিক পরীক্ষাগুলোতে অবাধে যেসব প্রতারণা ও জালিয়াতি হয় তার মধ্যে এটি
একটি মাত্র ঘটনা। সমালোচকদের মতে, এর মাধ্যমে ব্যাপক দুর্নীতিগ্রস্ত এই
দেশটির শিক্ষার্থীসহ তরুণ সমাজকে শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এ ধরনের অবৈধ
লেনদেন অনৈতিক নয়। পরীক্ষায় কৃতকার্য হতে শিক্ষার্থীরা নিত্যনতুন
ফন্দিফিকির বের করছে প্রতিনিয়ত। পরীক্ষার সময় তারা ফেসবুকসহ
অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন চ্যাট গ্রুপ এবং উত্তর কিনতে পাওয়া যায় এমন
ওয়েবসাইটগুলোকে ব্যবহার করে থাকে। দেশটির স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলে
প্রচারিত ভিডিওফুটেজে সম্প্রতি দেখানো হয়, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা চলাকালে
তাদের টেবিলের নিচে মুঠোফোন থেকে উত্তর বের করছে, পাশের জনের খাতায় উঁকি
মারছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, চলতি বছরের পরীক্ষার সময় ইন্দোনেশিয়ার
স্কুলগুলোর অবস্থা ছিল করুণ। এবারের পরীক্ষার কাগজপত্র কিছু প্রদেশে
পৌঁছাতে দেরি হয়। ফলে সেখানে পরে পরীক্ষা নেওয়া হয়। এতে করে পরীক্ষায়
কী প্রশ্ন থাকছে এবং তার উত্তর কী হবে, তা পরীক্ষায় বসার আগেই অন্য এলাকার
পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে জেনে যায় শিক্ষার্থীরা। গত সপ্তাহে ওই পরীক্ষার
যে ফল প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা যায়, ৯৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ শিক্ষার্থীই পাস
করেছে। জালিয়াতির কারণে পাসের হার বাড়ছে বলে সমালোচনা উঠলেও সরকার তা
অস্বীকার করে আসছে। এএফপি।
No comments