প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ-আবাহনী-মোহামেডানের প্রথম জয়
প্রথম ম্যাচে হারলেও আবাহনী পুরোনো বড় দল। শেখ জামাল নতুন শক্তি। প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে কাল জয় হলো পুরোনোরই। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে শেখ জামালকে ২ উইকেটে হারিয়ে এবারের লিগে প্রথম জয় পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দিনের অন্য দুই ম্যাচেও জিতেছে ফেবারিটরা। বিকেএসপিতে গতবারের রানার্সআপ মোহামেডান ৩৩ রানে জিতেছে প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে। ফতুল্লায় গাজী ট্যাঙ্ক ৮২ রানে হারিয়েছে সূর্যতরুণকে।
আগের ম্যাচে ব্রাদার্সের দেওয়া ২২৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারেনি আবাহনী। কাল শেখ জামাল আবাহনীর সামনে লক্ষ্য দিল আরও ১ রান বেশি। ১১০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে এদিনও চাপে পড়ে গেল আকাশি-নীলেরা। শেষ রক্ষা দশ নম্বরে ব্যাট করতে নামা একাডেমির বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলামের (অপু) ব্যাটে। শেষ ৩ ওভারে ১৭ রান দরকার ছিল, হাতে উইকেট ছিল মাত্র দুটি। তবে ৪৬.৪ ওভারে ভারতীয় ব্যাটসম্যান মিঠুন মানহাস আউট হওয়ার পর আর বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি আবাহনীকে। পরের ছয় বলের মধ্যেই এসে গেছে কাঙ্ক্ষিত জয়।
৪৮তম ওভারে বল করতে আসেন শেখ জামালের অফ স্পিনার মাহমুদুল হাসান। নাজমুল ব্যাটসম্যান হয়ে উঠলেন তখনই! প্রথম বলেই চার, দ্বিতীয় বলে ছক্কা, পরের দুই বলে আরও দুই চার—স্নায়ুচাপে ভুগতে থাকা আবাহনী শিবিরে তখন বিজয়োল্লাস। ড্রেসিংরুমের সামনে সতীর্থ, সমর্থক আর কর্মকর্তাদের উৎসবের মধ্যমণি হয়ে উঠলেন নাজমুল।
আবাহনীর জয়ে অবশ্য অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর ৮৪ বলে অপরাজিত ৫১ রানের অবদানও কম নয়। ধীরলয়ের ব্যাটিংয়ের জন্য সমর্থকদের দুয়ো শুনেছেন, তবে ওই সময় ওই ব্যাটিংটাই দরকার ছিল। দলের ১০২ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে পিটার ট্রেগো আউট হওয়ার পর উইকেটে আসেন অধিনায়ক। এরপর ৮ রানের মধ্যে ফরহাদ হোসেন আর নারিন্দার সিংকেও ফিরতে দেখার পর মাহমুদউল্লাহর খোলসবদ্ধ ব্যাটিং ছাড়া আর উপায় ছিল কী!
তবে শেখ জামালের রান আরও বেশি না হওয়ার একটা কারণ হতে পারে ওপেনার শামসুর রহমানের ৯৪ বলে করা ৫০ রানের ইনিংসটা। পাঁচ নম্বরে নেমে জিহান মুবারকের ৫৯ বলে ৫০ রানও সেই ক্ষতি পোষাতে পারেনি। বরং দলের ২০২ রানের মাথায় জিহান আউট হতেই মড়ক লেগে যায় শেখ জামালের ইনিংসে। অলআউট না হলেও শেষ ৪ উইকেট পড়েছে মাত্র ১২ রানে।
বিকেএসপিতে বোলাররা ম্যাচ জেতালেও শুরুতেই বিপদে পড়ে গিয়েছিল মোহামেডান। পাকিস্তানি বাঁহাতি স্পিনার কায়সার আব্বাসের বোলিং তোপে মাত্র ৬৭ রানে পড়ে ৩ উইকেট। রাজিন সালেহর (৫৯) সঙ্গে অধিনায়ক নাঈম ইসলামের (৩৮) ৮১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটিতে এড়ানো গেছে আরও বড় বিপর্যয়। লিগে মোহামেডানের প্রথম জয়েরও ভিত ওটা।
তবে আটকানো যায়নি কায়সারকে। প্রথম তিন উইকেটসহ ম্যাচে মোট ৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি ৩৬ রান দিয়ে। সুযোগ তৈরি করেছিলেন হ্যাটট্রিকেরও। কায়সারের বোলিংয়ে মোহামেডানকে ২১৫ রানে আটকানো গেলেও ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় জয়ের দেখা পায়নি প্রাইম দোলেশ্বর। অলআউট হয় ১৮২ রানেই।
দলবদলে দল না পেলেও শেষ পর্যন্ত সূর্যতরুণে ঠাঁই হয়েছে শফিউল ইসলামের। ফতুল্লায় কাল গতবারের তৃতীয় দল গাজী ট্যাঙ্ককে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন জাতীয় দলের এই পেসার। মাত্র ৩৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল গাজী, এর মধ্যে প্রথম চার ব্যাটসম্যানই শফিউলের শিকার। শুরুর এই চাপ গাজী কাটিয়ে ওঠে অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন (৮২) ও আইয়ুব দোগারের (৩৮) ১০৪ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে। এই জুটির সৌজন্যে আসা ২২৯ রানই শেষ পর্যন্ত বেশি হয়ে গেছে সূর্যতরুণের জন্য। ৪৬.৪ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ১৪৭ রান। ব্যাটিংয়ের সময় হাতে ব্যথা পাওয়া শফিউল আলম অবশ্য পরে আর ব্যাটই করতে পারেননি। আঙুলে চিড় ধরায় তিন সপ্তাহের বিশ্রামে থাকতে হবে তাঁকে।
সং ক্ষি প্ত স্কো র
শেখ জামাল: ৫০ ওভারে ২২৫/৮ (জিহান ৫৫, শামসুর ৫০, মেহরাব ৩৪, সুজিত ২৬। ফরহাদ ৩/৪০, ট্রেগো ২/৫০)। আবাহনী: ৪৭.৪ ওভারে ২২৭/৮ (মাহমুদউল্লাহ ৫১*, ট্রেগো ৪২, ইলিয়াস ৩৯, আনামুল ২৬। সোহরাওয়ার্দী ২/৩০, সুজিত ২/৩৩)। ফল: আবাহনী ২ উইকেটে জয়ী।
মোহামেডান: ৪৯.৪ ওভারে ২১৫ (রাজিন ৫৯, নাঈম ৩৮, ইমতিয়াজ ৩৭, ইয়াসিম ২৬। কায়সার ৬/৩৬)। প্রাইম দোলেশ্বর: ৪৭.৪ ওভারে ১৮২ (মানবিন্দর ৪৪, মিজানুর ৩২, মনির ২৫, নাদিফ ২৩। নাঈম ৩/৩৫, ইমতিয়াজ ২/১৪, নূর হোসেন ২/৩০, ইয়াসিম ২/৩৬)। ফল: মোহামেডান ৩৩ রানে জয়ী।
গাজী ট্যাঙ্ক: ৫০ ওভারে ২২৯/৯ (মিঠুন ৮২, আইয়ুব ৩৮, সামি ৩১, আলাউদ্দিন ২৯*, শফিউল ৪/৩৯, রাজা ২/৩৫)। সূর্যতরুণ: ৪৬.৪ ওভারে ১৪৭ (রাজা ৪২, ইমরান ৩৯, সাদিদ ২২*, আলাউদ্দিন ৩/২৭, সামি ২/১৪)। ফল: গাজী ট্যাঙ্ক ৮২ রানে জয়ী।
৪৮তম ওভারে বল করতে আসেন শেখ জামালের অফ স্পিনার মাহমুদুল হাসান। নাজমুল ব্যাটসম্যান হয়ে উঠলেন তখনই! প্রথম বলেই চার, দ্বিতীয় বলে ছক্কা, পরের দুই বলে আরও দুই চার—স্নায়ুচাপে ভুগতে থাকা আবাহনী শিবিরে তখন বিজয়োল্লাস। ড্রেসিংরুমের সামনে সতীর্থ, সমর্থক আর কর্মকর্তাদের উৎসবের মধ্যমণি হয়ে উঠলেন নাজমুল।
আবাহনীর জয়ে অবশ্য অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর ৮৪ বলে অপরাজিত ৫১ রানের অবদানও কম নয়। ধীরলয়ের ব্যাটিংয়ের জন্য সমর্থকদের দুয়ো শুনেছেন, তবে ওই সময় ওই ব্যাটিংটাই দরকার ছিল। দলের ১০২ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে পিটার ট্রেগো আউট হওয়ার পর উইকেটে আসেন অধিনায়ক। এরপর ৮ রানের মধ্যে ফরহাদ হোসেন আর নারিন্দার সিংকেও ফিরতে দেখার পর মাহমুদউল্লাহর খোলসবদ্ধ ব্যাটিং ছাড়া আর উপায় ছিল কী!
তবে শেখ জামালের রান আরও বেশি না হওয়ার একটা কারণ হতে পারে ওপেনার শামসুর রহমানের ৯৪ বলে করা ৫০ রানের ইনিংসটা। পাঁচ নম্বরে নেমে জিহান মুবারকের ৫৯ বলে ৫০ রানও সেই ক্ষতি পোষাতে পারেনি। বরং দলের ২০২ রানের মাথায় জিহান আউট হতেই মড়ক লেগে যায় শেখ জামালের ইনিংসে। অলআউট না হলেও শেষ ৪ উইকেট পড়েছে মাত্র ১২ রানে।
বিকেএসপিতে বোলাররা ম্যাচ জেতালেও শুরুতেই বিপদে পড়ে গিয়েছিল মোহামেডান। পাকিস্তানি বাঁহাতি স্পিনার কায়সার আব্বাসের বোলিং তোপে মাত্র ৬৭ রানে পড়ে ৩ উইকেট। রাজিন সালেহর (৫৯) সঙ্গে অধিনায়ক নাঈম ইসলামের (৩৮) ৮১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটিতে এড়ানো গেছে আরও বড় বিপর্যয়। লিগে মোহামেডানের প্রথম জয়েরও ভিত ওটা।
তবে আটকানো যায়নি কায়সারকে। প্রথম তিন উইকেটসহ ম্যাচে মোট ৬ উইকেট নিয়েছেন তিনি ৩৬ রান দিয়ে। সুযোগ তৈরি করেছিলেন হ্যাটট্রিকেরও। কায়সারের বোলিংয়ে মোহামেডানকে ২১৫ রানে আটকানো গেলেও ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় জয়ের দেখা পায়নি প্রাইম দোলেশ্বর। অলআউট হয় ১৮২ রানেই।
দলবদলে দল না পেলেও শেষ পর্যন্ত সূর্যতরুণে ঠাঁই হয়েছে শফিউল ইসলামের। ফতুল্লায় কাল গতবারের তৃতীয় দল গাজী ট্যাঙ্ককে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন জাতীয় দলের এই পেসার। মাত্র ৩৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়েছিল গাজী, এর মধ্যে প্রথম চার ব্যাটসম্যানই শফিউলের শিকার। শুরুর এই চাপ গাজী কাটিয়ে ওঠে অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন (৮২) ও আইয়ুব দোগারের (৩৮) ১০৪ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে। এই জুটির সৌজন্যে আসা ২২৯ রানই শেষ পর্যন্ত বেশি হয়ে গেছে সূর্যতরুণের জন্য। ৪৬.৪ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে করতে পেরেছে ১৪৭ রান। ব্যাটিংয়ের সময় হাতে ব্যথা পাওয়া শফিউল আলম অবশ্য পরে আর ব্যাটই করতে পারেননি। আঙুলে চিড় ধরায় তিন সপ্তাহের বিশ্রামে থাকতে হবে তাঁকে।
সং ক্ষি প্ত স্কো র
শেখ জামাল: ৫০ ওভারে ২২৫/৮ (জিহান ৫৫, শামসুর ৫০, মেহরাব ৩৪, সুজিত ২৬। ফরহাদ ৩/৪০, ট্রেগো ২/৫০)। আবাহনী: ৪৭.৪ ওভারে ২২৭/৮ (মাহমুদউল্লাহ ৫১*, ট্রেগো ৪২, ইলিয়াস ৩৯, আনামুল ২৬। সোহরাওয়ার্দী ২/৩০, সুজিত ২/৩৩)। ফল: আবাহনী ২ উইকেটে জয়ী।
মোহামেডান: ৪৯.৪ ওভারে ২১৫ (রাজিন ৫৯, নাঈম ৩৮, ইমতিয়াজ ৩৭, ইয়াসিম ২৬। কায়সার ৬/৩৬)। প্রাইম দোলেশ্বর: ৪৭.৪ ওভারে ১৮২ (মানবিন্দর ৪৪, মিজানুর ৩২, মনির ২৫, নাদিফ ২৩। নাঈম ৩/৩৫, ইমতিয়াজ ২/১৪, নূর হোসেন ২/৩০, ইয়াসিম ২/৩৬)। ফল: মোহামেডান ৩৩ রানে জয়ী।
গাজী ট্যাঙ্ক: ৫০ ওভারে ২২৯/৯ (মিঠুন ৮২, আইয়ুব ৩৮, সামি ৩১, আলাউদ্দিন ২৯*, শফিউল ৪/৩৯, রাজা ২/৩৫)। সূর্যতরুণ: ৪৬.৪ ওভারে ১৪৭ (রাজা ৪২, ইমরান ৩৯, সাদিদ ২২*, আলাউদ্দিন ৩/২৭, সামি ২/১৪)। ফল: গাজী ট্যাঙ্ক ৮২ রানে জয়ী।
No comments