মগা যেন গোলমেশিন!

কাঞ্চনের ক্রসে দর্শনীয় হেডে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করলেন। আগের দুটি গোলও সুদানি স্ট্রাইকারকে আলাদা করে চিনিয়েছে। ঢাকার মাঠে জেমস মগা মানেই এখন গোল। মুক্তিযোদ্ধাকে তাই পেছনে ফিরে তাকাতে হচ্ছে না।
আগের দিন ঝড়-বৃষ্টি আর বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আরামবাগের বিপক্ষে ৩-০ এগিয়ে থাকা ম্যাচ পরিত্যক্ত। কাল সেই কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে ম্যাচটা আবার নতুন করে হলো এবং আগের দিনের ‘পরিত্যক্ত’ স্কোরলাইনের মতোই বা তার চেয়েও উজ্জ্বল দেখাল মুক্তিযোদ্ধার স্কোর।
ঔজ্জ্বল্য দিলেন আসলে জেমস মগা। তাঁর হ্যাটট্রিকের আগে লাল-সাদার গোলের খাতা খুলেছিলেন নাসির। শেষ পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধার কাছে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত আরামবাগ। পেনাল্টি থেকে রেজাউল করিম করেছেন আরামবাগের একমাত্র গোলটি (৩-১)। কিন্তু গোলের আর তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি একসময় বড় দলকে নিয়মিতই আটকে দেওয়া মতিঝিলের দলটি।
তারই ফল—খুব সহজেই দ্বিতীয় ম্যাচটা জিতে ‘সি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে স্বাধীনতা কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে গেল মুক্তিযোদ্ধা। আরামবাগকে গোল গড়ে পেছনে ফেলে শেষ আটে তাদের গ্রুপসঙ্গী ফেনী সকার। সকার-আরামবাগ ম্যাচ ড্র হয়েছিল। সকারকে মুক্তিযোদ্ধা হারিয়েছিল ২-১ গোলে। শেষ আটে যাওয়ার জন্য কাল অন্তত ড্র দরকার ছিল আরামবাগের। কিন্তু কোথায় কী, মাঠে যেন নামল গোল খেতে।
এক মগাকে আটকানোর পথই খুঁজে পায়নি আরামবাগ। স্কিল, ফিটনেস, গোলের ক্ষুধা—সব মিলে ঢাকার ফুটবলে ‘বড়’ স্ট্রাইকারই এই মগা। ফেডারেশন কাপে হ্যাটট্রিক করে চোখ কেড়েছিলেন প্রথম। তারপর দেশে রাজনৈতিক অশান্তির কারণে ফিরে যান। পরিবারের সঙ্গে কটা দিন কাটিয়ে ফিরে আসেন বাংলাদেশ লিগ শুরু হয়ে যাওয়ার বেশ পরে। পাঁচটা ম্যাচ খেলে এক হ্যাটট্রিকসহ করেছেন ৮ গোল। এই ফেডারেশন কাপে দুই ম্যাচে চার গোল—গোলমেশিন তো বলাই যায় ছয় ফুটেরও বেশি উচ্চতার মগাকে।
তাঁকে পেয়েই এবার অপ্রতিরোধ্য দেখাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাকে। বাংলাদেশ লিগের প্রথম পর্ব শেষে সবার ওপরে থাকা মুক্তিযোদ্ধা এখন স্বপ্ন দেখছে দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা কাপ ঘরে তুলতে।
স্বাধীনতা কাপে ‘গরম ব্যাধি’: আজ শুরু কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব। বিকেল পাঁচটায় শেখ জামাল-ব্রাদার্স, রাত আটটায় আবাহনী-ফরাশগঞ্জ—দুটি ম্যাচই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। কাল একই সময়ে কমলাপুরে খেলবে শেখ রাসেল-ফেনী সকার, এরপর মুক্তিযোদ্ধা-মোহামেডান।
রাত ৮টায় খেলা শুরু মানে টাইব্রেকার হলে রাত ১১টা। বিদ্যুৎ চলে গেলে আরও দেরি। বিদ্যুতের যা অবস্থা, তাতে সরবরাহে গড়বড় হবে না নিশ্চয়তা নেই। জানা গেছে, শেখ জামাল অনুরোধ করেছে আজ ম্যাচটা যাতে রোদের তেজ কমার পর দেওয়া হয়। অনুরোধে ঢেঁকি না গিলে উপায় ছিল না বাফুফের!
তবে খেলার সময় পেছানোর সিদ্ধান্ত কারা নিচ্ছেন প্রশ্ন আছে। বাংলাদেশ লিগের চেয়ারম্যান সালাম মুর্শেদী প্রথমে অবাক হয়ে বললেন, ‘রাত ৮টায় তো খেলা শুরু হওয়ার কথা নয়। এটা কে করল খবর নিচ্ছি।’ একটু পরে বললেন, ‘সিদ্ধান্তটা আমিই দিয়েছি।’ বাংলাদেশ লিগ কমিটির কো চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদের কথা, ‘ক্লাবের অনুরোধে খেলা পেছাতে হয়। তবে রাত ৮টায় খেলা দেওয়ার ব্যাপারটা আমার জানা নেই।’
হায় বাফুফে। এটি এখন এমন সংগঠন হয়ে পড়েছে, কমিটির বড় কর্তারা অনেক বিষয়ই জানেন না!

No comments

Powered by Blogger.