রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-লক্ষাধিক শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ হচ্ছে আজ
দুই দশক ধরে আন্দোলনের পর রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে আজ বুধবার। রাজধানীর জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত এক লাখ তিন হাজার ৮৪৫ জন শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেবেন।
শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ করা হবে তিন ধাপে। এর মধ্যে এমপিওভুক্ত রেজিস্টার্ড ২২ হাজার ৯৮১টি বিদ্যালয়ের ৯১ হাজার ২৪ জন শিক্ষক চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে জাতীয়করণের সুবিধা পাবেন। দ্বিতীয় ধাপে চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে স্থায়ী-অস্থায়ী নিবন্ধনপ্রাপ্ত, পাঠদানের অনুমতিপ্রাপ্ত, কমিউনিটি এবং সরকারি অর্থায়নে এনজিও পরিচালিত দুই হাজার ২৫২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯ হাজার ২৫ শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ হবে। এরপর তৃতীয় ও শেষ ধাপে আগামী বছরের ১ জানুয়ারি জাতীয়করণের সুবিধা দেওয়া হবে পাঠদানের অনুমতির সুপারিশপ্রাপ্ত এবং পাঠদানের অনুমতির অপেক্ষাধীন ৯৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন হাজার ৭৯৬ শিক্ষকের চাকরি। উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৬৭২টি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই প্রাথমিক বিদ্যালয় (অধিগ্রহণ) অধ্যাদেশ-১৯৭৩-এর আওতায় ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কর্মরত এক লাখ ৫৫ হাজার ২৩ জন শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করেন। দীর্ঘ ৪০ বছর পর প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করতে যাচ্ছে মহাজোট সরকার। বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ২৭ মে তাঁদের চাকরি জাতীয়করণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আজ সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।
এদিকে মহাসমাবেশ সামনে রেখে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ডা. মো. আফছারুল আমীন গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এর মধ্যদিয়ে শিক্ষক সমাজের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মধ্যদিয়ে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক লাখ তিন হাজার ৮৪৫ জন শিক্ষকের চাকরি সরকারীকরণ হবে। পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ করা হবে তিন ধাপে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেনও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন বলেন, সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বৈষম্য ছিল। বেসরকারি বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণার মধ্যদিয়ে এটা দূর হবে। ফলে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত হবে বলেও তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রথম ধাপে জাতীয়করণের সুবিধা পাওয়া ২২ হাজার ৯৮১টি বিদ্যালয়ের ৯১ হাজার ২৪ জন শিক্ষকের জন্য ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাড়তি খরচ হবে ১০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় ধাপে দুই হাজার ২৫২টি বিদ্যালয়ের ৯ হাজার ২৫ জন শিক্ষককে আগামী ১ জুলাই থেকে জাতীয়করণের আওতায় নিয়ে আসার পর ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাড়তি ৩৭১ কোটি টাকা খরচ হবে। শেষ ধাপে ৯৬০টি বিদ্যালয়ের তিন হাজার ৭৯৬ জন শিক্ষককে জাতীয়করণের সুবিধা দেওয়ার পর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে খরচ হবে ৬৫১ কোটি টাকা।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের নেতা আমিনুল ইসলাম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে ১৯৯১ সাল থেকে আন্দোলন শুরু করেন। এ দাবিতে ১৯৯৭ সালে ঢাকার ওসমানী উদ্যানে শিক্ষকরা আমরণ অনশন করেন। শিক্ষকদের কর্মসূচির নবম দিনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া তাঁদের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে সেই অনশন ভাঙান। এরপর ২০০০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ওসমানী উদ্যানে শিক্ষকরা মহাসমাবেশ আয়োজন করেন। ওই সমাবেশেও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া উপস্থিত থেকে শিক্ষকদের দাবি তাঁদের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দেন। কিন্তু শিক্ষকদের চাকরি আর জাতীয়করণ হয়নি। তবে শিক্ষকদের আন্দোলন চলতে থাকে। এর মধ্যে ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে মহাজোট সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী আফছারুল আমীন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই। এ বক্তব্যের পর শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ তীব্র হয়। গত বছরের ১৫ ও ১৬ জানুয়ারি দেশের সব বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে ধর্মঘট পালন করেন তাঁরা। ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন। এর পর গত বছরের ১৩ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা, স্মারকলিপি দেওয়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা। এসব কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশের পিটুনিতে আহত এক শিক্ষক মারা যান। এরপর গত বছরের ২৭ মে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষকদের ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দেন, শিগগিরই বেসরকারি প্রাথমিকের শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ করা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালের ১ জুলাই প্রাথমিক বিদ্যালয় (অধিগ্রহণ) অধ্যাদেশ-১৯৭৩-এর আওতায় ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কর্মরত এক লাখ ৫৫ হাজার ২৩ জন শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করেন। দীর্ঘ ৪০ বছর পর প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করতে যাচ্ছে মহাজোট সরকার। বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ২৭ মে তাঁদের চাকরি জাতীয়করণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আজ সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে।
এদিকে মহাসমাবেশ সামনে রেখে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ডা. মো. আফছারুল আমীন গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এর মধ্যদিয়ে শিক্ষক সমাজের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মধ্যদিয়ে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক লাখ তিন হাজার ৮৪৫ জন শিক্ষকের চাকরি সরকারীকরণ হবে। পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ করা হবে তিন ধাপে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেনও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব এম এম নিয়াজ উদ্দিন বলেন, সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে বৈষম্য ছিল। বেসরকারি বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণার মধ্যদিয়ে এটা দূর হবে। ফলে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত হবে বলেও তিনি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রথম ধাপে জাতীয়করণের সুবিধা পাওয়া ২২ হাজার ৯৮১টি বিদ্যালয়ের ৯১ হাজার ২৪ জন শিক্ষকের জন্য ২০১২-১৩ অর্থবছরে বাড়তি খরচ হবে ১০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় ধাপে দুই হাজার ২৫২টি বিদ্যালয়ের ৯ হাজার ২৫ জন শিক্ষককে আগামী ১ জুলাই থেকে জাতীয়করণের আওতায় নিয়ে আসার পর ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাড়তি ৩৭১ কোটি টাকা খরচ হবে। শেষ ধাপে ৯৬০টি বিদ্যালয়ের তিন হাজার ৭৯৬ জন শিক্ষককে জাতীয়করণের সুবিধা দেওয়ার পর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে খরচ হবে ৬৫১ কোটি টাকা।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের নেতা আমিনুল ইসলাম চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে ১৯৯১ সাল থেকে আন্দোলন শুরু করেন। এ দাবিতে ১৯৯৭ সালে ঢাকার ওসমানী উদ্যানে শিক্ষকরা আমরণ অনশন করেন। শিক্ষকদের কর্মসূচির নবম দিনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া তাঁদের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে সেই অনশন ভাঙান। এরপর ২০০০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর ওসমানী উদ্যানে শিক্ষকরা মহাসমাবেশ আয়োজন করেন। ওই সমাবেশেও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া উপস্থিত থেকে শিক্ষকদের দাবি তাঁদের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দেন। কিন্তু শিক্ষকদের চাকরি আর জাতীয়করণ হয়নি। তবে শিক্ষকদের আন্দোলন চলতে থাকে। এর মধ্যে ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে মহাজোট সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী আফছারুল আমীন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই। এ বক্তব্যের পর শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ তীব্র হয়। গত বছরের ১৫ ও ১৬ জানুয়ারি দেশের সব বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে ধর্মঘট পালন করেন তাঁরা। ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন। এর পর গত বছরের ১৩ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা, স্মারকলিপি দেওয়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা। এসব কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশের পিটুনিতে আহত এক শিক্ষক মারা যান। এরপর গত বছরের ২৭ মে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষকদের ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দেন, শিগগিরই বেসরকারি প্রাথমিকের শিক্ষকদের চাকরি জাতীয়করণ করা হবে।
No comments