সফলভাবে ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাল ইরান

রান সফলভাবে মাঝারিপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। গতকাল রোববার নৌবাহিনীর সামরিক মহড়া চলাকালে হরমুজ প্রণালির কাছে ওই পরীক্ষা চালানো হয়। সংবাদ সংস্থা আইআরএনও এ কথা জানিয়েছে। ওই প্রণালিতে গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে নৌবাহিনীর সামরিক মহড়া শুরু হয়। এদিকে ইরানের ওপর নতুন করে অবরোধ আরোপের লক্ষ্যে গত শনিবার ৬৬ হাজার ২০০ কোটি ডলারের প্রতিরক্ষা বিলে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এ পদক্ষেপের


ফলে ইরান পারস্য উপসাগরে চলা সামরিক ক্ষমতা প্রদর্শনের মহড়া আরও জোরদার করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নৌবাহিনীর কর্মকর্তা মাহমুদ মৌসাভির উদ্ধৃতি দিয়ে আইআরএনএ জানায়, রাডার ফাঁকি দিতে মাঝারিপাল্লার ওই ক্ষেপণাস্ত্রটিতে আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ইরান এই প্রথম নিজেদের তৈরি করা ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাল।
মৌসাভি আরও বলেন, ১০ দিনব্যাপী চলা নৌবাহিনীর মহড়া আজ সোমবার শেষ হবে। ওই প্রণালি বন্ধে নতুন কৌশলের অংশ হিসেবে এ মহড়া চালানো হয়। মহড়ায় দেশটির সব যুদ্ধজাহাজ ও ডুবোজাহাজ অংশ নেয়।
ক্ষেপণাস্ত্রটি জাহাজ থেকে, নাকি ভূমি থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। এ ছাড়া ক্ষেপণাস্ত্রটি কতটুকু দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম, সে ব্যাপারেও কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
যখন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা অন্য দেশগুলো পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দেশটির ওপর চাপ প্রয়োগের মাত্রা বাড়াচ্ছে, ঠিক তখন সামরিক ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য ইরান সামরিক মহড়া এবং ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাল।
সম্প্রতি পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অবরোধের আওতা বাড়ানো হলে হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয় ইরান। এর মাত্র কয়েক দিন পর ইরান এ পরীক্ষা চালাল। হরমুজ প্রণালি দিয়ে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশের বেশি তেলের জাহাজ চলাচল করে। যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জাহাজের মাধ্যমে বিশ্বের ২০ শতাংশ তেল সংকীর্ণ এ প্রণালি দিয়ে বিভিন্ন দেশে যায়। প্রতিদিন প্রায় ১৪টি অপরিশোধিত তেলবাহী ট্যাংকার ওই প্রণালি দিয়ে চলাচল করে। চলতি বছর ওই প্রণালি দিয়ে বিশ্বের ৩৫ শতাংশ তেল বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়। হরমুজ প্রণালি পারস্য উপসাগর ও সংলগ্ন তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোকে ভারত মহাসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।
হরমুজ প্রণালি বন্ধের হুমকি সত্ত্বেও শনিবার ইরানের আর্থিক খাতকে উদ্দেশ করে নতুন করে অবরোধ আরোপ-সম্পর্কিত প্রতিরক্ষা বিলে স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এতে বিলটি আইনে পরিণত হলো। নতুন আইন অনুযায়ী ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কযুক্ত বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক ব্যবস্থার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখতে পারবে না।
ইরানের তেল-বাণিজ্য ও আর্থিক ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই বিলটিতে স্বাক্ষর করলেন ওবামা। এর ফলে তেল আমদানি-রপ্তানিতে ইরানের সঙ্গে যেসব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পর্ক রয়েছে, সেগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। এতে করে রাশিয়া এবং চীনের মতো দেশ যাদের সঙ্গে ইরানের ব্যাবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে, তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শনিবার হাওয়াইয়ে ওবামা বিলটিতে স্বাক্ষর করেন। অবকাশযাপনের জন্য তিনি বর্তমানে ওই অঙ্গরাজ্যে অবস্থান করছেন।

No comments

Powered by Blogger.