ভোজ্য তেলের বাজার চড়া

স্টাফ রিপোর্টার: জ্বালানি তেলের দামের প্রভাব পড়েছে ভোজ্য তেলের বাজারেও। এছাড়া কাঁচাবাজারেও পড়েছে এর রেশ। প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৫ টাকা। ব্যবসায়ীরা   পৃষ্ঠা ৫ কলাম ৫
নিজ উদ্যোগেই এ দাম বাড়িয়েছেন। তারা বলেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে পরিবহন ব্যয়ও রাতারাতি বেড়েছে। রাজধানীর বাইরে থেকে যেসব সবজি বা কাঁচামাল আনা হচ্ছে তার দাম শুক্রবার থেকেই বাড়ানো হয়েছে। এজন্য খুচরা কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন। আগামী কয়েক দিনে বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম আরও বাড়বে বলেও তারা আশঙ্কা করছেন। এদিকে কাঁচাবাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ায় ক্রেতারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের বক্তব্য এভাবে দাম বাড়তে থাকলে তাদের পক্ষে জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়বে। গতকাল সরজমিন রাজধানীর কাওরান বাজার, হাতিরপুল বাজার ও বাড্ডা শাহজাদপুরের কাঁচাবাজারে গিয়ে এসব তথ্য পাওয়া যায়। বিক্রেতারা জানান, বাজারে বর্তমানে শিমের দাম ৩৫ টাকা কেজি। দু’দিন আগেও তা বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকায়। ১৮ টাকার বেগুন বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৪ টাকায়। শীতকালীন সবজি ফুলকপি প্রতিটি ১২ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা। ২০ টাকার শসা ২৪ টাকা। শুক্রবার একটি লাউ ২৫ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল থেকে দাম হয়েছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা। এদিকে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে কাঁচামরিচের। ব্যবসায়ীরা জানান, শুক্রবার তারা এক পাল্লা (৫ কেজি) কাঁচামরিচ কিনেছেন ২৪৫ থেকে ২৫০ টাকায়। শনিবার তা কিনতে হয়েছে ২৮০ টাকায়। এজন্য বাজারে কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে। আগামী কয়েক দিনে এসব পণ্যের দাম আরও বাড়বে বলে তারা জানান। কাওরান বাজারের ব্যবসায়ী হুমায়ুন কবির বলেন, আপাতত কাঁচামরিচ বিক্রি করা বন্ধ। যেভাবে এর দাম বাড়ছে তাতে বিক্রেতারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছেন। দোকানের কিছু নির্দিষ্ট ক্রেতার সঙ্গে গতকাল এ নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। প্রায় একই মন্তব্য পাশের ব্যবসায়ী হাসানেরও। তিনি বলেন, এমনিতেই কিছুদিন ধরে বাজারের অবস্থা খারাপ। এরপর তেলের দাম বাড়ানোয় কাঁচাবাজারের দামও বেড়েছে।। কিন্তু ক্রেতারা এসব মানতে নারাজ। তারা সরকারকে পায় না আমাদের পায়। সব ধরনের রাগারাগি, গালাগালি আমাদের সইতে হয়। ক্রেতা মাহফুজ বলেন, বাজারে আগুন এ কথা নিয়ে আমরা অনেক রসিকতা করেছি। এখন দেখছি সত্যি সত্যি বাজারে আাগুন লেগেছে। কম দামে শীতকালীন সবজি পাওয়া যাবে ভেবেছিলাম। এখন দেখছি তাতেও দামের উত্তাপ। এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ডাল, আটা, ময়দা ও মসলার দাম বাড়েনি। গত কয়েক দিন ধরে এসব পণ্য অপরিবর্তিতত দামেই বিক্রি হচ্ছে। চাল ও ভোজ্যতেলের দাম কিছুটা বেড়েছে। চিনিগুঁড়া পোলাওয়ের চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা। ৬০ টাকার চাল এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। বোতলভেদে সয়াবিন তেল বেড়েছে লিটারে ২-৩ টাকা। ৫ লিটারের মুসকান সয়াবিনের বোতল ৬১০ টাকার জায়গায় এখন বিক্রি হচ্ছে ৬২০-৬২৫ টাকা। রূপচাঁদা’র একই দাম। পুষ্টি সয়াবিন ৫ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৬১৫ টাকা। আগে ছিল ৬০০-৬০৫ টাকা। হাতিরপুল কাঁচাবাজার সংলগ্ন ফারুক স্টোরের দোকানি বাহার জানান, প্রায় প্রতিটি জিনিসেরই দাম কমবেশি  বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কেরোসিন তেল, সয়াবিন তেল, আদা ও রসুনের। তিনি বলেন, আদা ও রসুন এক লাফে ৫ টাকা বেড়েছে। একই বাজারের রাজু স্টোরের রিপন বলেন- রাতারাতি বেড়েছে কেরোসিনের দাম। এক রাতের ব্যবধানে কি কারণে দাম এত বেড়ে গেল বুঝতে পারলাম না। গত শুক্রবার রাতেই লিটারে ৫ টাকা বেড়ে যাওয়ায় ৬০ টাকা লিটারের কেরোসিন বিক্রি করতে হচ্ছে ৬৫ টাকায়। তিনি বলেন, কেবল তেল আর আদা-রসুনই নয়, ডালের দামও বেড়েছে বস্তা (৫০ কেজি) প্রতি ১০০ টাকা। এদিকে সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারে এসব পণ্য আবার বর্ধিত দামের চেয়ে আরও ৫ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। তারা এমন বর্ধিত দামের কারণ হিসেবে বলছেন, দোকান ভাড়া বেশি। মুদি দোকানি আবুল খায়ের জানান, এই বাজারে রূপচাঁদা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটারের বোতল ৬২৫ টাকা। আর কেরোসিন ৭০ টাকা। দোকানিরা পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সব কিছুর দামই সাধারেণ মানুষের আয়ত্তের বাইরে। আবুল খায়ের স্টোরের একজন কর্মচারী জানান, সব কিছুর দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি ডিমের দামও বেড়েছে। এক ডজন ডিম আগে যেখানে বিক্রি হতো ৭৫ টাকা, এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা।

No comments

Powered by Blogger.