পিছু ছাড়ছে না খাদ্যসংকট, বরং প্রকট হয়ে উঠছে by হাসিব মাহমুদ
২০০৭-০৮ সময়ের খাদ্যসংকট এখনো স্মৃতিতে ঝাপসা হয়ে যায়নি। সাম্প্রতিক ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব খাদ্যসংকটের মুখে পড়েছিল তখন পুরো বিশ্ব। জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান চাপ, পশ্চিমা বিশ্বের বায়োফুয়েলে বিশাল ভর্তুকি, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ অনেক কারণ একত্রে খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়িয়ে সংকট তৈরি করেছিল। ৩০টির বেশি দেশে তখন এ নিয়ে দাঙ্গা হয়।
২০০৮ সালের শেষ দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমা, বায়োফুয়েল উত্পাদনে ভর্তুকি হ্রাস ইত্যাদি কারণে খাদ্যদ্রব্যের দাম কমতে শুরু করায় সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল। তবে সেই স্বস্তি ছিল সাময়িক। বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা খাদ্য নিয়ে নতুন করে চিন্তিত হতে শুরু করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে অন্যতম বৃহত্ ধান ও অন্যান্য কৃষিপণ্য উত্পাদক ভারতে প্রলম্বিত খরা ও বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক ফিলিপাইনে টাইফুন খাদ্যদ্রব্যের বিশ্ববাজারকে নতুন করে হুমকির মুখে ফেলেছে।
ফিলিপাইনের কৃষিসচিব আরথার ইয়াপ সম্প্রতি এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এই হুমকির দিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে ২০০৮-এর সংকটের পুনরাবৃত্তি থেকে বিশ্ব বেশি দূরে নয় বলে মত দিয়েছেন। তিনি একটি আন্তর্জাতিক খাদ্য মজুদের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন।
ফিলিপাইন এর মধ্যেই তাদের হিসাবে ১০ শতাংশ ঘাটতি পুষিয়ে নিতে চাল আমদানি করতে বাধ্য হয়েছে। কারণ হিসেবে সাম্প্র্রতিক মৌসুমে পর পর বেশ কয়েকটি ঝড়ের কথা বলা হয়। এ কারণে সাড়ে আট লাখ মেট্রিক টন চাল নষ্ট হয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা প্রথম পর্যায়ে চাল আমদানির কথা উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
এ ছাড়া অন্যতম বৃহত্ চাল উত্পাদনকারী দেশ থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম সমপ্রতি তাদের চাল রপ্তানিতে লাগাম দিয়েছে। ফিলিপাইনে ভর্তুকি দিয়ে কমানো নিম্নমানের চাল কিনতে অসংখ্য লোক লাইন দিচ্ছে। সঙ্গে মজুদদারেরাও আরও দাম বাড়ার আশায় চাল মজুদ করছে।
পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে ফিলিপাইনের পাশাপাশি ভারত বিশ্ববাজারে বৃহত্ চাল উত্পাদক ও রপ্তানিকারক। সেই ভারত ২০১০ সাল নাগাদ চাল আমদানিকারক দেশে পরিণত হবে। ফিলিপাইনভিত্তিক আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ সমরেন্দু মোহান্তি এ প্রসঙ্গে বলেন, এই পরিস্থিতিতে যেকোনো দেশের বাজারে হঠাত্ করে আগুন লাগতে পারে।
ভারতে সাম্প্রতিক খরায় ঠিক কতটা শস্যহানি হয়েছে, তার কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। তবে ২০০২ সালে একই রকম খরায় ২১ মিলিয়ন মেট্রিক টন শস্যহানির ইতিহাস আছে। সে হিসাবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ভারতে নিদেনপক্ষে ২০ মিলিয়ন কম উত্পাদনের আশঙ্কা করাই যায়। সমরেন্দু মোহান্তি ভারতের বিশাল খাদ্য মজুদের কথা উল্লেখ করলেও সেই সঙ্গে এও স্মরণ করিয়ে দেন যে, এই মজুদের বেশির ভাগই ব্যয় হয় ক্ষুধাপীড়িত দরিদ্র জনগণের ভর্তুকি হিসেবে। এই রিজার্ভ ঘাটতি পুষিয়ে দেবে এমন আশা না করাই ভালো।
গোটা বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত। ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা মেটাতে প্রতিবছর এর জন্য ১ দশমিক ২ থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ চাল উত্পাদন প্রবৃদ্ধির দরকার পড়ে। এই মুহূর্তে এই বৃদ্ধির হার এক শতাংশেরও কম। মোহান্তি এর জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ, পানির দুষ্প্রাপ্যতা, বায়োফুয়েলের কাঁচামালের জন্য উত্পাদিত কৃষিপণ্যের চাষ বৃদ্ধি, আবহাওয়ার গুণগত পরিবর্তন ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন।
এশিয়ার প্রধান উত্পাদকদের ছাড়াও ল্যাটিন আমেরিকার উরুগুয়ে, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাও খরার কারণে পাঁচ শতাংশ কম খাদ্যশস্য সরবরাহ করবে। এর মধ্যে ব্রাজিল তাদের আমদানি বাড়িয়ে আট লাখ থেকে নয় লাখ মেট্রিক টন করবে।
এসব খবরই জানান দেয় যে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের পড়তি দাম খুব বেশি দিন থাকবে না। বাড়তি আমদানির চাপ গত বছরের মতো এ বছরও খাদ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে, যা নতুনভাবে জনগণের বিক্ষোভ উসকে দিতে পারে।
২০০৮ সালের শেষ দিকে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমা, বায়োফুয়েল উত্পাদনে ভর্তুকি হ্রাস ইত্যাদি কারণে খাদ্যদ্রব্যের দাম কমতে শুরু করায় সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল। তবে সেই স্বস্তি ছিল সাময়িক। বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা খাদ্য নিয়ে নতুন করে চিন্তিত হতে শুরু করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে অন্যতম বৃহত্ ধান ও অন্যান্য কৃষিপণ্য উত্পাদক ভারতে প্রলম্বিত খরা ও বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক ফিলিপাইনে টাইফুন খাদ্যদ্রব্যের বিশ্ববাজারকে নতুন করে হুমকির মুখে ফেলেছে।
ফিলিপাইনের কৃষিসচিব আরথার ইয়াপ সম্প্রতি এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এই হুমকির দিকে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে ২০০৮-এর সংকটের পুনরাবৃত্তি থেকে বিশ্ব বেশি দূরে নয় বলে মত দিয়েছেন। তিনি একটি আন্তর্জাতিক খাদ্য মজুদের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন।
ফিলিপাইন এর মধ্যেই তাদের হিসাবে ১০ শতাংশ ঘাটতি পুষিয়ে নিতে চাল আমদানি করতে বাধ্য হয়েছে। কারণ হিসেবে সাম্প্র্রতিক মৌসুমে পর পর বেশ কয়েকটি ঝড়ের কথা বলা হয়। এ কারণে সাড়ে আট লাখ মেট্রিক টন চাল নষ্ট হয়েছে। যদিও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা প্রথম পর্যায়ে চাল আমদানির কথা উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
এ ছাড়া অন্যতম বৃহত্ চাল উত্পাদনকারী দেশ থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম সমপ্রতি তাদের চাল রপ্তানিতে লাগাম দিয়েছে। ফিলিপাইনে ভর্তুকি দিয়ে কমানো নিম্নমানের চাল কিনতে অসংখ্য লোক লাইন দিচ্ছে। সঙ্গে মজুদদারেরাও আরও দাম বাড়ার আশায় চাল মজুদ করছে।
পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে ফিলিপাইনের পাশাপাশি ভারত বিশ্ববাজারে বৃহত্ চাল উত্পাদক ও রপ্তানিকারক। সেই ভারত ২০১০ সাল নাগাদ চাল আমদানিকারক দেশে পরিণত হবে। ফিলিপাইনভিত্তিক আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ সমরেন্দু মোহান্তি এ প্রসঙ্গে বলেন, এই পরিস্থিতিতে যেকোনো দেশের বাজারে হঠাত্ করে আগুন লাগতে পারে।
ভারতে সাম্প্রতিক খরায় ঠিক কতটা শস্যহানি হয়েছে, তার কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। তবে ২০০২ সালে একই রকম খরায় ২১ মিলিয়ন মেট্রিক টন শস্যহানির ইতিহাস আছে। সে হিসাবে গত বছরের তুলনায় এ বছর ভারতে নিদেনপক্ষে ২০ মিলিয়ন কম উত্পাদনের আশঙ্কা করাই যায়। সমরেন্দু মোহান্তি ভারতের বিশাল খাদ্য মজুদের কথা উল্লেখ করলেও সেই সঙ্গে এও স্মরণ করিয়ে দেন যে, এই মজুদের বেশির ভাগই ব্যয় হয় ক্ষুধাপীড়িত দরিদ্র জনগণের ভর্তুকি হিসেবে। এই রিজার্ভ ঘাটতি পুষিয়ে দেবে এমন আশা না করাই ভালো।
গোটা বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত। ক্রমবর্ধমান খাদ্যের চাহিদা মেটাতে প্রতিবছর এর জন্য ১ দশমিক ২ থেকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ চাল উত্পাদন প্রবৃদ্ধির দরকার পড়ে। এই মুহূর্তে এই বৃদ্ধির হার এক শতাংশেরও কম। মোহান্তি এর জন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ, পানির দুষ্প্রাপ্যতা, বায়োফুয়েলের কাঁচামালের জন্য উত্পাদিত কৃষিপণ্যের চাষ বৃদ্ধি, আবহাওয়ার গুণগত পরিবর্তন ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন।
এশিয়ার প্রধান উত্পাদকদের ছাড়াও ল্যাটিন আমেরিকার উরুগুয়ে, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাও খরার কারণে পাঁচ শতাংশ কম খাদ্যশস্য সরবরাহ করবে। এর মধ্যে ব্রাজিল তাদের আমদানি বাড়িয়ে আট লাখ থেকে নয় লাখ মেট্রিক টন করবে।
এসব খবরই জানান দেয় যে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যের পড়তি দাম খুব বেশি দিন থাকবে না। বাড়তি আমদানির চাপ গত বছরের মতো এ বছরও খাদ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে, যা নতুনভাবে জনগণের বিক্ষোভ উসকে দিতে পারে।
No comments