কোটি কোটি ডলার খরচ করেও ব্যর্থ ইসরাইল
অপপ্রচারের
জন্য কোটি কোটি ডলার খরচ করেও ব্যর্থ হলো ইসরাইল। বৃহস্পতিবার জেরুজালেমকে
ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের
একগুঁয়ে ও একক সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যানের পক্ষে ভোট দিয়েছে জাতিসংঘের
সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। জেরুজালেম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত অকার্যকর ঘোষণা
করার জন্য জাতিসংঘের এক সাধারণ অধিবেশনে উত্থাপিত প্রস্তাবের পক্ষে ভোট
দিয়েছে সংস্থাটির ১২৮ সদস্য দেশ। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ৯টি দেশ। আর ভোটদানে
বিরত ছিল ৩৫টি দেশ। সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও একই প্রস্তাব
উত্থাপিত হয়েছিল।
সে প্রস্তাবের পক্ষে পরিষদের ১৫ সদস্যের ১৪ সদস্য ভোট দিলে তাতে ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর বৃহস্পতিবার এক সাধারণ অধিবেশনে একই প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। বিশ্বজুড়ে অবস্থিত ইসরাইল ও ইহুদিপন্থি সংগঠনগুলো ফিলিস্তিনের পক্ষে যাওয়া এই জয়ের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, এটি ফিলিস্তিনিদের কোনো কাজে আসবে না। অর্থহীন হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা ঠিক, এই জয় বাস্তব অর্থে ফিলিস্তিনিদের তেমন কোনো সাহায্যে আসবে না। কিন্তু এটা কি অপ্রয়োজনীয় ও অর্থহীন? না, বরঞ্চ এটি তার উল্টোটা।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের এই জয় উদযাপন করার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যেমন প্রথমত- এর মাধ্যমে পুরো বিশ্বকে জানিয়ে দেয়া হলো যে, বিশ্ব সমপ্রদায়ে ইসরাইলের কোনো নীতিগত বা রাজনৈতিক অবস্থান নেই। আরো বুঝিয়ে দেয়া হলো যে, এটি বিশ্ব সমপ্রদায়ের গলার ভেতর ঢুকিয়ে দেয়া একটি ইউরোপীয় বসতি স্থাপনকারী কলোনি। এর প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশটি অপপ্রচার ছড়ানোর জন্য কোটি কোটি ডলার খরচ করেছে। কিন্তু তবুও নিজের নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। দ্বিতীয়ত- এই ভোটের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে ট্রাম্পের শাসনামলে একটি নির্যাতনকারী দেশে পরিণত হয়েছে। এই ভোটের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা ব্যবহার করে অন্য রাষ্ট্রকে শাস্তি দেয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তৃতীয়ত- এই ভোটের মাধ্যমে ১২৮টি দেশ, জেরুজালেমকে যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দের সামরিক ঘাঁটির রাজধানী হওয়ার ফরমান বাতিল বলে ঘোষণা করেছে। মাত্র ৯টি ছোট ও দুর্বল রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ নিয়েছে। এর মানে হচ্ছে, ওই ৯টি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল দেশগুলো ছাড়া বিশ্ব সমপ্রদায়ের আর কোনো দেশের যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরাইলকে সমীহ করে চলার কোনো প্রয়োজন নেই। কেননা এই দেশ দুটি নীতিগত দিক থেকে দেউলিয়া হয়ে আছে। রাজনৈতিকভাবে এরা নির্বুদ্ধ। পুরো বিশ্বকে এরা শুধু সামরিক শক্তির ভয়ই দেখাতে পারে। আর কিছু নয়।
চতুর্থত- এই ভোটের মাধ্যমে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালির কূটনীতিক অক্ষমতা প্রকাশ পেয়ছে। এটা প্রকাশ পেয়েছে যে, হ্যালি ও জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন কেবল এসব বলে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়কে ভয়ই দেখাতে পারেন যে, তাদের কথার বিরুদ্ধে কোনো দেশ গেলে সে দেশকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।
পঞ্চমত- এই ভোট, এটাও প্রমাণ করেছে যে, ফিলিস্তিনিদের লড়াই নিয়ে উদ্বেগ শুধু আরব ও মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। পুরো বিশ্বই ওই ইস্যু নিয়ে চিন্তিত।
ষষ্ঠত- ট্রামেপর জামাতা জ্যারেড কুশনার ও ইসরাইলের অর্থায়নকারীরাই মূলত ইসরাইল সমর্থকদের মধ্যে নৈতিক বিচ্যুতি সৃষ্টির জন্য দায়ী। তারাই এটা নিশ্চিত করে দিয়েছে যে, প্রত্যেক মার্কিন নাগরিক ও ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারী উপনিবেশবাদীরা আয়নায় নিজদের চেহারা দেখবে ও নিঃসন্দেহে সেখান থেকে চোখ ফিরিয়ে নেবে।
সপ্তমত- ট্রামেপর ঘোষণা প্রত্যাখ্যানকারী জাতিসংঘের এই আহ্বান দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রকে আর কখনো শান্তির কোনো ন্যায্য ও যথাযথ মধ্যস্থকারী হিসেবে মেনে নেয়া হবে না।
অষ্টমত- জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ অধিবেশনের ভোটদান উভয় জায়গায় শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছেন। আর এতে করে, অসলো শান্তি চুক্তি নামের প্রহেলিকার সমাপ্তি ঘটতে চলেছে। তার সঙ্গে শেষ হতে চলেছে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান নামের বিভ্রমেরও। নবমত- ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু এই ভোটকে হাউজ অফ লাইস (মিথ্যার ঘর) হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। অন্যকথায়, তিনি পুরো বিশ্বকে ভ্রমাত্মক ঘোষণা করেছেন। এ থেকে তার মানসিক অবস্থা বোঝা যায়, একটি বসতি স্থাপনকারী উপনিবেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি সমপূর্ণ আলাদা একটি ব্রহ্মাণ্ডে বসবাস করেন।
আর সর্বশেষ বিষয়টি হচ্ছে- জাতিসংঘে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রাপ্য অপমানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র একটি উঠতি ফিলিস্তিনপন্থি চিন্তাধারার সম্মুখীন- এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেও দেশটিকে এর মোকাবিলা করতে হবে।
(আল জাজিরার মতামত অংশে প্রকাশিত হামিদ দাবাসি’র লেখা প্রতিবেদন অবলম্বনে। হামিদ দাবাসি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইরানিয়ান স্টাডিস অ্যান্ড কমপারেটিভ লিটারেচার বিষয়ক হাগপ কেভরকিয়ান অধ্যাপক)
সে প্রস্তাবের পক্ষে পরিষদের ১৫ সদস্যের ১৪ সদস্য ভোট দিলে তাতে ভেটো দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর বৃহস্পতিবার এক সাধারণ অধিবেশনে একই প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। বিশ্বজুড়ে অবস্থিত ইসরাইল ও ইহুদিপন্থি সংগঠনগুলো ফিলিস্তিনের পক্ষে যাওয়া এই জয়ের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, এটি ফিলিস্তিনিদের কোনো কাজে আসবে না। অর্থহীন হিসেবে বর্ণনা করেছে। তারা ঠিক, এই জয় বাস্তব অর্থে ফিলিস্তিনিদের তেমন কোনো সাহায্যে আসবে না। কিন্তু এটা কি অপ্রয়োজনীয় ও অর্থহীন? না, বরঞ্চ এটি তার উল্টোটা।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের এই জয় উদযাপন করার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যেমন প্রথমত- এর মাধ্যমে পুরো বিশ্বকে জানিয়ে দেয়া হলো যে, বিশ্ব সমপ্রদায়ে ইসরাইলের কোনো নীতিগত বা রাজনৈতিক অবস্থান নেই। আরো বুঝিয়ে দেয়া হলো যে, এটি বিশ্ব সমপ্রদায়ের গলার ভেতর ঢুকিয়ে দেয়া একটি ইউরোপীয় বসতি স্থাপনকারী কলোনি। এর প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশটি অপপ্রচার ছড়ানোর জন্য কোটি কোটি ডলার খরচ করেছে। কিন্তু তবুও নিজের নিরাপদ অবস্থান নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। দ্বিতীয়ত- এই ভোটের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র, বিশেষ করে ট্রাম্পের শাসনামলে একটি নির্যাতনকারী দেশে পরিণত হয়েছে। এই ভোটের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা ব্যবহার করে অন্য রাষ্ট্রকে শাস্তি দেয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তৃতীয়ত- এই ভোটের মাধ্যমে ১২৮টি দেশ, জেরুজালেমকে যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দের সামরিক ঘাঁটির রাজধানী হওয়ার ফরমান বাতিল বলে ঘোষণা করেছে। মাত্র ৯টি ছোট ও দুর্বল রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ নিয়েছে। এর মানে হচ্ছে, ওই ৯টি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল দেশগুলো ছাড়া বিশ্ব সমপ্রদায়ের আর কোনো দেশের যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরাইলকে সমীহ করে চলার কোনো প্রয়োজন নেই। কেননা এই দেশ দুটি নীতিগত দিক থেকে দেউলিয়া হয়ে আছে। রাজনৈতিকভাবে এরা নির্বুদ্ধ। পুরো বিশ্বকে এরা শুধু সামরিক শক্তির ভয়ই দেখাতে পারে। আর কিছু নয়।
চতুর্থত- এই ভোটের মাধ্যমে জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালির কূটনীতিক অক্ষমতা প্রকাশ পেয়ছে। এটা প্রকাশ পেয়েছে যে, হ্যালি ও জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন কেবল এসব বলে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়কে ভয়ই দেখাতে পারেন যে, তাদের কথার বিরুদ্ধে কোনো দেশ গেলে সে দেশকে শাস্তি ভোগ করতে হবে।
পঞ্চমত- এই ভোট, এটাও প্রমাণ করেছে যে, ফিলিস্তিনিদের লড়াই নিয়ে উদ্বেগ শুধু আরব ও মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। পুরো বিশ্বই ওই ইস্যু নিয়ে চিন্তিত।
ষষ্ঠত- ট্রামেপর জামাতা জ্যারেড কুশনার ও ইসরাইলের অর্থায়নকারীরাই মূলত ইসরাইল সমর্থকদের মধ্যে নৈতিক বিচ্যুতি সৃষ্টির জন্য দায়ী। তারাই এটা নিশ্চিত করে দিয়েছে যে, প্রত্যেক মার্কিন নাগরিক ও ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারী উপনিবেশবাদীরা আয়নায় নিজদের চেহারা দেখবে ও নিঃসন্দেহে সেখান থেকে চোখ ফিরিয়ে নেবে।
সপ্তমত- ট্রামেপর ঘোষণা প্রত্যাখ্যানকারী জাতিসংঘের এই আহ্বান দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রকে আর কখনো শান্তির কোনো ন্যায্য ও যথাযথ মধ্যস্থকারী হিসেবে মেনে নেয়া হবে না।
অষ্টমত- জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ও সাধারণ অধিবেশনের ভোটদান উভয় জায়গায় শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছেন। আর এতে করে, অসলো শান্তি চুক্তি নামের প্রহেলিকার সমাপ্তি ঘটতে চলেছে। তার সঙ্গে শেষ হতে চলেছে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান নামের বিভ্রমেরও। নবমত- ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু এই ভোটকে হাউজ অফ লাইস (মিথ্যার ঘর) হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। অন্যকথায়, তিনি পুরো বিশ্বকে ভ্রমাত্মক ঘোষণা করেছেন। এ থেকে তার মানসিক অবস্থা বোঝা যায়, একটি বসতি স্থাপনকারী উপনিবেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি সমপূর্ণ আলাদা একটি ব্রহ্মাণ্ডে বসবাস করেন।
আর সর্বশেষ বিষয়টি হচ্ছে- জাতিসংঘে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রাপ্য অপমানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র একটি উঠতি ফিলিস্তিনপন্থি চিন্তাধারার সম্মুখীন- এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেও দেশটিকে এর মোকাবিলা করতে হবে।
(আল জাজিরার মতামত অংশে প্রকাশিত হামিদ দাবাসি’র লেখা প্রতিবেদন অবলম্বনে। হামিদ দাবাসি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইরানিয়ান স্টাডিস অ্যান্ড কমপারেটিভ লিটারেচার বিষয়ক হাগপ কেভরকিয়ান অধ্যাপক)
No comments