সবুজে অকুতোভয় বিজয়
শুধু ভারত কেন, ব্রিসবেনে যে কোনো দলের বিপক্ষেই অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড দুর্দান্ত। এ মাঠে গত ২৬ বছরে কোনো টেস্ট হারেনি স্বাগতিকরা। গ্যাবার দুর্গে অস্ট্রেলিয়ান পেস ও বাউন্সের বিপক্ষে সর্বশেষ পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী। ২০০৩ সলের ডিসেম্বরে সৌরভের ১৪৪ রানের সেই দুর্দান্ত ইনিংসের সুবাদে ব্রিসবেন টেস্ট ড্র করেছিল ভারত। প্রায় ১১ বছর পর গ্যাবার সবুজ উইকেটে অস্ট্রেলিয়াকে একটি দুঃসহ দিন উপহার দিলেন আরেক ভারতীয় ব্যাটসম্যান। ওপেনার মুরালি বিজয়ের ঝলমলে এক সেঞ্চুরিতে কাল শুরু হওয়া ব্রিসবেন টেস্টের প্রথম দিনটা নিজেদের করে নিয়েছে ভারত। কাকতালীয়ভাবে সৌরভের মতোই ঠিক ১৪৪ রানে থেমেছে বিজয়ের দুর্দান্ত ইনিংসটি। দিন শেষে ভারতের সংগ্রহ চার উইকেটে ৩১১। বিজয়ের বিদায়ের পর দলকে পথ দেখাচ্ছেন সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে চলা আজিংকা রাহানে। প্রথম সেশনেই প্রথম ভারতীয় ওপেনার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টানা তিন ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি কারার কীর্তি গড়েন বিজয়।
কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি, এরপর তুলে নেন অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি। অস্ট্রেলিয়া বরাবরই তার প্রিয় প্রতিপক্ষ। টেস্টে বিজয়ের পাঁচ সেঞ্চুরির চারটিই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। অ্যাডিলেডে সিরিজের প্রথম টেস্টেই নিজের দুর্দান্ত ফর্মের নমুনা দেখিয়েছিলেন বিজয়। দুই ইনিংসে তার ব্যাট থেকে এসেছিল যথাক্রমে ৫৩ ও ৯৯ রান। কিন্তু বিরাট কোহলির জোড়া শতকে ঢাকা পড়ে গিয়েছিল তার কীর্তি। এবার কোহলিকে ছাপিয়ে আলোটা নিজের দিকে টেনে নিলেন বিজয়। ব্রিসবেনের বাউন্স উইকেটে সারা দিন বল করে মাত্র চার উইকেট পাওয়া স্বাগতিকদের জন্য যথেষ্ট হতাশার। অস্ট্রেলিয়ার ৪৫তম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক দিনটা মোটেও ভালো কাটেনি স্টিভেন স্মিথের। আটজন বোলার ব্যবহার করেও ভারতকে চাপে ফেলতে পারেননি। অভিষিক্ত হ্যাজেলউড দুটি উইকেটের সঙ্গে চোটও পেয়েছেন।
আলরাউন্ডার মিচেল মার্শ লাঞ্চের পর আর মাঠেই নামতে পারেননি। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়ায় এ টেস্টে তার খেলা নিয়েই দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। বোলিংয়ের মতো ফিল্ডিংও হয়েছে বাজে। মিচেল জনসনের বলে দু’বার বিজয়ের ক্যাচ ফেলেছেন শন মার্শ। শেষ পর্যন্ত প্রথম দিনের হিরো বিজয়ের উইকেটটি নিয়েছেন অ্যাডিলেডে ভারতকে শেষ করে দেয়া নাথান লায়ন। সকালে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয়া ভারতের শুরুটাও হয় ভালো। শিখর ধাওয়ানের (২৪) বিদায়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে ৫৬ রানে। দলীয় ১০০ রানে ইংলিশ অ্যাম্পয়ার ইয়ান গোল্ডের ভুল সিদ্ধান্তের বলি হন চেতেশ্বর পূজারা (১৮)। অ্যাডিলেডের ট্রাজিক হিরো কোহলি মাত্র ১৯ রানেই সাজঘরের পথ ধরেন। এরপর স্বাগতিকদের হতাশায় ডুবিয়ে ১২৪ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়েন বিজয় ও রাহানে। দিন শেষে ৭৫ রানে অপরাজিত রাহানে। ২৬ রান নিয়ে তাকে সঙ্গ দিচ্ছেন রোহিত শর্মা। এএফপি।
ভারত প্রথম ইনিংস
রান বল ৪ ৬
বিজয় ক হ্যাডিন ব লায়ন ১৪৪ ২১৩ ২২ ০
ধাওয়ান ক হ্যাডিন ব মার্শ ২৪ ৩৯ ০ ০
পূজারা ক হ্যাডিন ব হ্যাজলউড ১৮ ৬৪ ১ ০
কোহলি ক হ্যাডিন ব হ্যাজলইড ১৯ ২৭ ১ ০
রাহানে নটআউট ৭৫ ১২২ ৭ ০
রোহিত শর্মা নটআউট ২৬ ৩৪ ২ ১
অতিরিক্ত ৫
মোট (৪ উইকেটে, ৮৩ ওভারে) ৩১১
উইকেট পতন : ১/৫৬, ২/১০০, ৩/১৩৭, ৪/২৬১।
বোলিং : জনসন ১৫-২-৬৪-০, হ্যাজলউড ১৫.২-৫-৪৪-২, স্টার্ক ১৪-১-৫৬-০, মার্শ ৬-১-১৪-১, লায়ন ২০-১-৮৭-১, ওয়াটসন ১০.৪-৫-২৯-০, ওয়ার্নার ১-০-৯-০, স্মিথ ১-০-৪-০।
ভারত প্রথম ইনিংস
রান বল ৪ ৬
বিজয় ক হ্যাডিন ব লায়ন ১৪৪ ২১৩ ২২ ০
ধাওয়ান ক হ্যাডিন ব মার্শ ২৪ ৩৯ ০ ০
পূজারা ক হ্যাডিন ব হ্যাজলউড ১৮ ৬৪ ১ ০
কোহলি ক হ্যাডিন ব হ্যাজলইড ১৯ ২৭ ১ ০
রাহানে নটআউট ৭৫ ১২২ ৭ ০
রোহিত শর্মা নটআউট ২৬ ৩৪ ২ ১
অতিরিক্ত ৫
মোট (৪ উইকেটে, ৮৩ ওভারে) ৩১১
উইকেট পতন : ১/৫৬, ২/১০০, ৩/১৩৭, ৪/২৬১।
বোলিং : জনসন ১৫-২-৬৪-০, হ্যাজলউড ১৫.২-৫-৪৪-২, স্টার্ক ১৪-১-৫৬-০, মার্শ ৬-১-১৪-১, লায়ন ২০-১-৮৭-১, ওয়াটসন ১০.৪-৫-২৯-০, ওয়ার্নার ১-০-৯-০, স্মিথ ১-০-৪-০।
No comments