‘ক্লান্ত’ সিটিই ধসিয়ে দিল রেডদের

সুয়ারেজ-ধাক্কায় শুরু লিভারপুলের শেষটা হলো ম্যানচেস্টার সিটির কাছে ৩-০ গোলে হেরে লিভারপুল সমর্থকদের জন্য দিনটা যেন ছিল অপয়া, অশুভ এক মঙ্গলবার। ম্যাচের শুরুতেই ধাক্কা। একাদশে নেই লুইস সুয়ারেজ, যাঁকে নিয়ে রীতিমতো লড়াই-আন্দোলনেই নেমে পড়তে যাচ্ছিল লিভারপুল, সেই সুয়ারেজ বাদ। একটু পরই পরিষ্কার হয়ে গেল কারণটা। এফএর (ইংলিশ ফুটবল সংস্থা) সর্বশেষ বিবৃতির পর সুয়ারেজের আট ম্যাচের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আবেদন না


করারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে লিভারপুল। এ কারণেই ‘সাজা’ কার্যকর হয়ে গেছে সুয়ারেজের। পরের সাত ম্যাচেও খেলা হবে না তাঁর। এই ধাক্কা দিয়ে শুরু লিভারপুলের শেষটা হলো ম্যানচেস্টার সিটির কাছে ৩-০ গোলে হেরে। ১০ মিনিটে লিগে তাঁর ১৩তম গোলটি করে শুরু করেছিলেন সার্জিও আগুয়েরো। ৩৩ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান ইয়া তোরে। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া হয়ে ওঠে লিভারপুল। ৭২ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে গ্যারেথ ব্যারি মাঠ ছাড়লে সেটি অলরেডদের জন্য শুভ বার্তা বয়ে আনবে বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু দুই মিনিটের মধ্যেই পেনাল্টি থেকে গোল করে লিভারপুলের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন জেমস মিলনার।
এই জয়ে ২০ ম্যাচে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের চেয়ে ৩ পয়েন্ট এগিয়ে গিয়েছিল সিটি। অবশ্য গতকাল রাতে ব্যবধানটি ঘুচিয়ে ফেলার জন্য নিউক্যাসলের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল ইউনাইটেড। ওদিকে টটেনহাম কিন্তু নীরবে-নিভৃতে নিজেদের কাজটা ঠিকই করে যাচ্ছে। পরশু ৬৩ মিনিটে করা জার্মেইন ডিফোর একমাত্র গোলে তারা হারিয়েছে ওয়েস্টব্রমকে। ১৯ ম্যাচে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে অবস্থান শুধু পোক্তই করেনি স্পাররা, শিরোপা লড়াইয়ে হুমকি হয়ে দাঁড়ানোর আভাসও দিচ্ছে ম্যানচেস্টারের দুই ক্লাবকে।
আগের ম্যাচে সান্ডারল্যান্ডের কাছে হেরে যাওয়ার পরও এই ম্যাচে সিটি কিন্তু ফেবারিটই ছিল। শুধু শক্তির বিচারে নয়, নিজেদের মাঠে খেলা বলেও। সিটির ক্ষেত্রে দ্বিতীয়টি অনেক বড় কারণ, কারণ ২০১১ সালে স্বাগতিক হিসেবে সম্ভাব্য ৫৪ পয়েন্টের ৫২-ই তুলে নিয়েছিল তারা! এই জয় আরেক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। লিগ কাপের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে ১১ জানুয়ারি লিভারপুলের সঙ্গেই খেলা। ফলে মানসিকভাবে এগিয়ে থাকবে তারা। অবশ্য ওই ম্যাচের আগে এফএ কাপে হয়ে যাচ্ছে ‘ম্যানচেস্টার ডার্বি’। ৮ জানুয়ারি তৃতীয় রাউন্ডে মুখোমুখি দুই নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী।
এই ম্যাচে একটা দুশ্চিন্তাও দূর হলো। ১ জানুয়ারি লিগে খেলেই আবার ৩ তারিখ ম্যাচ। মাঝখানে মাত্র এক দিনের বিশ্রাম। এই সূচি নিয়ে রীতিমতো গলা ফাটিয়েছেন রবার্তো মানচিনি। বড় জয় পেলেও ম্যাচ শেষে আরেক দফা ঝাল মেটালেন, ‘লিভারপুল সর্বশেষ ম্যাচটা খেলেছিল চার দিন আগে, আমরা মাত্র দুই দিন আগে। এটা তো আমাদের জন্য ভয়াবহ!’
দ্বিতীয়ার্ধে এ কারণেই দল ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল বলে দাবি তাঁর। না হলে? বড় লজ্জা নিয়ে ফিরতে হতো লিভারপুলকে! এএফপি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.