তুরস্কে প্রশাসন পদ্ধতির ২০০ বছরের বিরোধের অবসান ঘটল : এরদোগান
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান গণভোটের রায়কে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বলে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এ পদক্ষেপ ভবিষ্যতে জাতিকে সুরক্ষা প্রদান করবে। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার চালু করার পক্ষে রোববারের গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ভোটে দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থার ২০০ বছরের বিরোধের অবসান ঘটেছে। ইস্তাম্বুলের হুবার প্রাসাদ থেকে দেয়া গণভোট-পরবর্তী ভাষণে এরদোগান বলেন, এটি দেশের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার এক বিরাট প্রতীক হয়ে থাকবে। এটি কোনো সাধারণ সিদ্ধান্ত নয়। আজ ছিল পরিবর্তনের দিন যাতে দেশের প্রশাসনিক পদ্ধতির গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। তিনি বলেন, বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী হ্যাঁ’র পক্ষে আড়াই কোটি মানুষ ভোট দিয়েছেন এবং ১৩ লাখ ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছে। এরদোগান বলেন, আমি এ জন্য দেশের সব নাগরিককে ধন্যবাদ জানাতে চাই, তারা কে কোন পক্ষে ভোট দিয়েছেন তা দেখার বিষয় নয়, কারণ তারা জাতিকে সুরক্ষা দিতে নির্বাচন কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়েছেন। তিনি বলেন, সব সমস্যা, প্রতিকূলতা ও সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার ক্ষমতা তুুরস্কের আছে, তার সর্বশেষ স্পষ্ট উদাহরণ হলো জুলাই মাসের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান। এরদোগান বলেন, প্রজাতন্ত্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অসামরিক উপায়ে জনগণ ও জাতীয় পরিষদের দ্বারা দেশের সরকার পদ্ধতির পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হলো। এর আগে অতীতে আমাদের সব সাংবিধানিক পরিবর্তন করা হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ বা সামরিক অভ্যুত্থানের মতো অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এরদোগান বলেন, নতুন প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির শাসন ব্যবস্থায় পৃথক পৃথক নির্বাহী পরিষদ, আইন পরিষদ ও বিচার বিভাগ থাকবে। এই তিন বিভাগ এক ও অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে অর্থাৎ এক জাতি, পতাকা ও রাষ্ট্রের জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করবে। তিনি বলেন, ১৬ এপ্রিলের এ বিজয় ‘সব ‘হ্যাঁ’ ও ‘না’ সমর্থকের বিজয়, তুরস্কের সাত লাখ ৮০ হাজার বর্গকিলোমিটার আয়তনে বসবাসকারী আট কোটি জনগণের বিজয়। বিদেশে বসবাসকারী আমাদের নাগরিকেরাও এ বিজয়ের বড় শরিক। এরদোগান বলেন, এ নতুন পদ্ধতির সরকার ২০১৯ সালের নির্বাচনের পর কার্যকর হবে। সংবিধানের যেসব ধারার পরিবর্তন করা হবে তা শিগগিরই কার্যকর হবে না। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সাথে সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের পর কার্যকর হবে। এরদোগান বলেন, ওই সময়ের আগে অনেক কাজ করতে হবে। যারা দেশ শাসনের দায়িত্বে আসতে চান তাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেই জনগণের সামনে হাজির হতে হবে। তিনি নির্বাচনের ফলাফলের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে অন্যান্য দেশের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, অন্যান্য দেশ ও প্রতিষ্ঠান আমাদের জাতির সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। বিশেষ করে আমাদের মিত্ররা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ ও আমাদের স্পর্শকাতরতার প্রতি খেয়াল রেখে আমাদের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবে।
প্রবাসী ভোটারদের রেকর্ড উপস্থিতি
তুরস্কের সংবিধান সংশোধন প্রশ্নে অনুষ্ঠিত গণভোটে বিদেশে বসবাসরত তুর্কি নাগরিকদের রেকর্ডসংখ্যক অংশগ্রহণ ছিল বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে) বৈদেশিক নির্বাচন সমন্বয়কারী। গতকাল সোমবার তিনি এ মন্তব্য করেন। মুস্তফা ইয়েনেরোগলু এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গণভোটে বিদেশী ভোটাররা শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেছেন। হিসাব করলে এ সংখ্যা হবে দেশের বাইরে বসবাসরত মোট জনসংখ্যার ৪৮ শতাংশ। ইয়েনেরোগলু বলেন, ‘দেশের চলমান পার্লামেন্টারি পদ্ধতির শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন করে প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতি চালু করতে সংবিধান সংশোধন প্রশ্নে অনুষ্ঠিত গণভোটে প্রবাসী ভোটারদের শতকরা ৫৯ শতাংশ পক্ষে ভোট দিয়েছে। বেলজিয়ামে বসবাসরত প্রায় ৭৭ শতাংশ তুর্কি, নেদারল্যান্ডের ৭৩ শতাংশ, ফ্রান্সের ৬৫ শতাংশ এবং জার্মানির ৬৩ শতাংশ ভোটার ‘হ্যাঁ’-এর পক্ষে রায় দিয়েছেন।
এরদোগানকে বিভিন্ন দেশের অভিনন্দন
গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হওয়ার পর বিশ্বনেতারা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় প্রকাশিত বেসরকারি ফলাফলে সংবিধান পরিবর্তনের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়েছে ৫১.৪১ শতাংশ আর ‘না’ ভোট পড়েছে ৪৮.৫৯ শতাংশ। ফলাফল প্রকাশের পর রোববার রাতে প্রথম বিদেশী নেতা হিসেবে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এরদোগানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। টেলিফোনে কথা বলার পর এরদোগানকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন আলিয়েভ। তাতে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ব দরবারে তুরস্কের মর্যাদা আরো বৃদ্ধি পাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নিজেদের দেশকে শক্তিশালী করার যে আকাক্সক্ষা তুরস্কের জনগণ লালন করেন তারই বাস্তবায়ন হয়েছে এ গণভোটের ফলাফলের মাধ্যমে।’ তারা আরো আশা প্রকাশ করেন, গত ১৫ বছরে তুরস্কে যে স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি হয়েছে তা একত্রীকরণের মাধ্যমে ভবিষ্যতেও যাতে তুরস্কের অগ্রগতির পথ ঠিক থাকে তার একটি ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে। পাকিস্তানের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের একটি জামায়েতে ইসলামীর পক্ষ থেকে, এটাকে তুরস্কের জনগণের ঐতিহাসিক বিজয় বর্ণনা করে এরদোগানকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।’ জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মারকেল বলেছেন, তিনি তুরস্কের জনগণের সিদ্ধান্তকে সম্মান করবেন এবং প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির ব্যাপারে ইউরোপীয়দের উদ্বেগ নিয়ে তুর্কি-ইইউ রাজনৈতিক সংলাপ শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে এক যৌথ বিবৃতিতে মারকেল বলেন, তিনি তুর্কি জনগণের সংবিধান পারিবর্তন করার অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাবেন। তুরস্কের প্রেসিডেনশিয়াল সূত্র জানায়, এ ছাড়া কাতারের আমি শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস অভিনন্দন জানিয়ে এরদোগানকে বার্তা পাঠিয়েছেন। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, জার্মানি, হাঙ্গেরি, মেসিডোনিয়া,
প্রবাসী ভোটারদের রেকর্ড উপস্থিতি
তুরস্কের সংবিধান সংশোধন প্রশ্নে অনুষ্ঠিত গণভোটে বিদেশে বসবাসরত তুর্কি নাগরিকদের রেকর্ডসংখ্যক অংশগ্রহণ ছিল বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে) বৈদেশিক নির্বাচন সমন্বয়কারী। গতকাল সোমবার তিনি এ মন্তব্য করেন। মুস্তফা ইয়েনেরোগলু এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গণভোটে বিদেশী ভোটাররা শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেছেন। হিসাব করলে এ সংখ্যা হবে দেশের বাইরে বসবাসরত মোট জনসংখ্যার ৪৮ শতাংশ। ইয়েনেরোগলু বলেন, ‘দেশের চলমান পার্লামেন্টারি পদ্ধতির শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন করে প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতি চালু করতে সংবিধান সংশোধন প্রশ্নে অনুষ্ঠিত গণভোটে প্রবাসী ভোটারদের শতকরা ৫৯ শতাংশ পক্ষে ভোট দিয়েছে। বেলজিয়ামে বসবাসরত প্রায় ৭৭ শতাংশ তুর্কি, নেদারল্যান্ডের ৭৩ শতাংশ, ফ্রান্সের ৬৫ শতাংশ এবং জার্মানির ৬৩ শতাংশ ভোটার ‘হ্যাঁ’-এর পক্ষে রায় দিয়েছেন।
এরদোগানকে বিভিন্ন দেশের অভিনন্দন
গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়যুক্ত হওয়ার পর বিশ্বনেতারা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় প্রকাশিত বেসরকারি ফলাফলে সংবিধান পরিবর্তনের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়েছে ৫১.৪১ শতাংশ আর ‘না’ ভোট পড়েছে ৪৮.৫৯ শতাংশ। ফলাফল প্রকাশের পর রোববার রাতে প্রথম বিদেশী নেতা হিসেবে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ এরদোগানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। টেলিফোনে কথা বলার পর এরদোগানকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন আলিয়েভ। তাতে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ব দরবারে তুরস্কের মর্যাদা আরো বৃদ্ধি পাবে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নিজেদের দেশকে শক্তিশালী করার যে আকাক্সক্ষা তুরস্কের জনগণ লালন করেন তারই বাস্তবায়ন হয়েছে এ গণভোটের ফলাফলের মাধ্যমে।’ তারা আরো আশা প্রকাশ করেন, গত ১৫ বছরে তুরস্কে যে স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি হয়েছে তা একত্রীকরণের মাধ্যমে ভবিষ্যতেও যাতে তুরস্কের অগ্রগতির পথ ঠিক থাকে তার একটি ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে। পাকিস্তানের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের একটি জামায়েতে ইসলামীর পক্ষ থেকে, এটাকে তুরস্কের জনগণের ঐতিহাসিক বিজয় বর্ণনা করে এরদোগানকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।’ জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মারকেল বলেছেন, তিনি তুরস্কের জনগণের সিদ্ধান্তকে সম্মান করবেন এবং প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির ব্যাপারে ইউরোপীয়দের উদ্বেগ নিয়ে তুর্কি-ইইউ রাজনৈতিক সংলাপ শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে এক যৌথ বিবৃতিতে মারকেল বলেন, তিনি তুর্কি জনগণের সংবিধান পারিবর্তন করার অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাবেন। তুরস্কের প্রেসিডেনশিয়াল সূত্র জানায়, এ ছাড়া কাতারের আমি শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস অভিনন্দন জানিয়ে এরদোগানকে বার্তা পাঠিয়েছেন। কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, জার্মানি, হাঙ্গেরি, মেসিডোনিয়া,
সৌদি আরব, সুদান ও কেনিয়ার নেতারাও টেলিফোনে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাবুসওগলুর কাছে অভিনন্দনবার্তা পাঠিয়েছেন। ইরাকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওসামা আল নুজাইফি একটি অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়ে লিখেছেন, ‘জনাব প্রেসিডেন্ট, সংবিধান পরিবর্তনের গণভোটে বিজয়ী হওয়ার জন্য আপনাকে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ তুরস্কের জনগণকে আনন্দের সাথে অভিনন্দন জানাচ্ছি।’ জিবুতির প্রেসিডেন্ট ইসমাইল ওমর গেলি জানান, এই ফলাফল দেখে তিনি অভিভূত এবং এটা তুরস্কের গণতন্ত্রের বিজয়। হামাস নেতাদের একজন ইজ্জত এর-রিসা টুইটারে মাধ্যমে একটি অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন। এতে তিনি এরদোগান, প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইলদিরাম এবং তুরস্কের রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ‘নতুনভাবে সাফল্য অর্জনের পথে তুরস্ক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’ প্যারেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন ভোটের ফলাফল নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, এ ফলাফল তুরস্কের স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং ফিলিস্তিনি ইস্যুতে সমর্থনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুড নেতা তালাত ফাহমি আনাদোলু সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, এর মাধ্যমে তুরস্ক গণতান্ত্রিক বিশ্বকে শিখিয়েছে, ‘জনগণের সমর্থন থাকলে নেতারা সব সমস্যাই সমাধান করতে পারে।’ বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকসেনকো গতকাল সোমবার একটি বিবৃতি পাঠিয়ে বলছেন, গণভোটের ফলাফল তুরস্কের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সংহত করতে ভূমিকা রাখবে। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
No comments