তিনজনের চেষ্টায় ধরা পড়ল ওরা দুজন
রফিক
হোসেনের এক হাত ভাঙা। কাঠ দিয়ে বেঁধে প্লাস্টার করা। নাশতার টেবিল থেকে
ছুট লাগিয়েছিলেন তিনি। নাশকতাকারী ভেবে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)
শাহীন মিয়া ছুটেছিলেন খুনিদের ধরতে। হাজারো মানুষের মধ্য দিয়ে যখন খুনিরা
ছুটে পালাচ্ছিল, পেছন থেকে রফিক আর শাহীন মিয়ার ‘ধর ধর’ চিৎকারেও কেউ এগিয়ে
আসছিলেন না, তখনই শুধু দুই হাত দিয়ে তাদের আটকে দেন হিজড়া লাবণ্য। গত ৩০
মার্চ ব্লগার ওয়াশিকুরকে হত্যার পর পালাতে থাকা দুই জঙ্গি আরিফুল ইসলাম ও
জিকরুল্লাহকে ধরতে এই তিনজনেরই ভূমিকাই ছিল সবচেয়ে আলোচিত। ঘটনা সম্পর্কে
আরও বিস্তারিত জানতে গতকাল শনিবার বেগুনবাড়ীর দীপিকার মোড়ে চায়ের দোকানে
অপেক্ষা করছিলাম রফিক হোসেনের জন্য। গলির মাথায় রফিককে দেখে একসঙ্গে
দু-তিনজন বলে উঠলেন, ‘ওই যে রফিক ভাই।’ জিজ্ঞেস করলাম, সবাই রফিককে চেনেন
কি না। এক নারী বললেন, ‘ও তো আমাগো সাকিব খান। এক হাতেই কত বড় জঙ্গি
ধাওয়াইছে।’ তবে রফিক আর তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা নিয়েও চিন্তিত এলাকাবাসী।
হিজড়া লাবণ্যর জন্যও তাঁর সহযোগীরা গর্বিত, একই সঙ্গে শঙ্কিতও। লাবণ্যকে
চোখে চোখে রাখছেন তাঁরা। আর হাতেনাতে খুনিদের ধরে পুলিশকে সমালোচনার হাত
থেকে বাঁচানোর কৃতিত্ব শাহীন মিয়ার।
তবে দক্ষিণ বেগুনবাড়ী এলাকাবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী, জঙ্গিদের কে, কীভাবে ধরলেন—এসবের কৃতিত্ব নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। পুলিশ না জনতা, লাবণ্য না রফিক—এসব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম বিভিন্ন পক্ষের ভাষ্য ছাপিয়েছে। তবে সবাই একবাক্যে স্বীকার করবেন, ভাঙা হাত নিয়েই জঙ্গিদের প্রথম ধাওয়া শুরু করেন রফিক। হোঁচট খেয়ে উল্টেপাল্টে পড়ে গিয়েও তিনি থামেননি। সেই রফিকের গল্প থেকেই শুরু করা যাক।
কাভার্ড ভ্যানের চালক রফিক হোসেনের বাঁ হাত কয়েক মাস আগে সড়ক দুর্ঘটনায় ভেঙে যায়। সোজা করতে কাঠের সঙ্গে ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে হাতটি। হাত অচল, তাই বেকার রফিক। ৩০ মার্চ সকালে সেই অচল হাতটি গামছা দিয়ে ঢেকে মোড়ের দোকানে নাশতা করতে এসেছিলেন তিনি। হঠাৎই শোনেন ‘মাইরা ফালাইল, মাইরা ফালাইল’ বলে নারীকণ্ঠের চিৎকার। পাতে নেওয়া পরোটা ফেলে রফিক দৌড় দেন। গিয়ে দেখেন ওয়াশিকুরের রক্তাক্ত লাশ পেছনে ফেলে তিন তরুণ সজোরে হেঁটে মূল সড়কের দিকে যাচ্ছে। ‘ধর ধর’ চিৎকার দিয়ে রফিক ধাওয়া করা শুরু করলেন। ওই তরুণেরা দৌড়াতে শুরু করলে রফিকও পেছনে পেছনে দৌড় শুরু করেন। এবার চিৎকার করতে থাকেন ‘ডাকাত ডাকাত’। দীপিকার মোড় পেরিয়ে হোটেল আজমিরের সামনে তখন পুলিশের একটি দল অবস্থান করছিল। পুলিশ দেখে জঙ্গি তিন তরুণও ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে চেঁচাতে চেঁচাতে পুলিশকে পেরিয়ে গেলে রফিক পুলিশ সদস্যদের তাদের ধরার জন্য ছুটতে বলেন। তখন একজন পুলিশ সদস্য বলেন, ‘তুই ডাকাইত ডাকাইত চিল্লাস, হ্যারাও (তিন জঙ্গি) চিল্লায়।’ তখন রফিক ও অন্যরা আশ্বস্ত করেন যে আগে ধরা হোক, পরে সাব্যস্ত হবে কে ডাকাত। তখন পুলিশও দৌড়াতে শুরু করে। তখন সহকারী উপপরিদর্শক শাহীন মিয়া ও তাঁর পেছনে আরেক পুলিশ সদস্য দৌড়াতে থাকেন।
এএসআই শাহীন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, টহল ডিউটির মাঝে আজমিরের সামনে একটি চায়ের দোকানে বসে পান খাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ দেখেন পেছন থেকে কয়েকটি ছেলে দুটি ছেলেকে ধাওয়া করছে। তিনি বলেন, ‘আমি ভাবছি হয় শিবির, নাইলে নাশকতাকারী কিছু একটা হবে। অস্ত্র-গোলাবারুদও থাকতে পারে। পেছন থেকে ওরা বলতাছে ডাকাত ডাকাত। তারপর আমিও দৌড় দিলাম।’
রফিক বলেন, পুলিশ দৌড় শুরু করার পরে সাতরাস্তার মূল সড়ক দিয়ে মগবাজারের দিকে দৌড়াতে থাকে জঙ্গিরা। এফডিসি সিগন্যালের আগে উত্তরা সেন্টারের সামনে গিয়ে তারা ধরা পড়ে। তিনি বলেন, ‘আমি কিছু না ভাইবাই দৌড়াইতাছি। হঠাৎই চিকনাটা (আরিফুল) ব্যাগ থিকা চাপাতি বাইর করল। এই সময় ওই হিজড়ারা হ্যাগো থামায়।’
হিজড়া লাবণ্য প্রথম আলোকে বলেন, মগবাজার যাওয়ার জন্য উত্তরা সেন্টারের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন তিনিসহ তিনজন। এ সময় দেখেন, লোকজন দুই তরুণকে ধাওয়া করছে আর ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করছে। রাস্তা তখন যানজটে থমকে আছে, কিন্তু কেউই এগিয়ে আসছে না তাদের ধরার জন্য। এ সময়ই লাবণ্য পেছন থেকে দুজনকে ধরে ফেলেন। দুজনের গেঞ্জির পেছনের অংশ ধরে তাদের আটকে দেন লাবণ্য। তখন ওরা হাঁপাচ্ছিল। ওই দুজন নিজেদের ছাড়ানোর জন্য পেছনে ঘুরে কিল-ঘুষি মারলেও লাবণ্য ছাড়েননি। পরে পুলিশ ও জনতা এসে তাদের ধরে নিয়ে যায় বলে লাবণ্যর দাবি। এ ঘটনার পরে ভয় পেয়ে লাবণ্য এলাকা ছেড়ে তাঁর কাজে চলে যান।
এএসআই শাহীন মিয়া বলেন, ‘দৌড়াতে দৌড়াতে উত্তরা সেন্টারের সামনে চলে এলাম। আমি খালি চিল্লাইতাছি—ধরেন ধরেন। রাস্তায় অনেক মানুষ, কিন্তু কেউ ধরে না। এ সময় একজন ব্যাগ থেকে চাপাতি বাইর করল। তখন ওইখানে কয়েকজন হিজড়া ছিল। একজন সাহস করে দুই হাতে ওদের আটকানোর চেষ্টা করলে ওরা বাধা পায়া পইড়া যায়। চাপাতিটাও রাস্তায় পইড়া যায়। পরে আমি গিয়া চাপাতিটা কুড়ায় নিয়া কনস্টেবলের হাতে দিলাম। দুইজনরে ধরলাম। পরে লোকজনে কইল, ওরা মার্ডার কইরা পালাইতাছিল। আমি ওসি স্যাররে জানাইলাম।’ তিনি জানান, দৌড়ানোর সময় তাঁর কোমরে একটি পিস্তল ছিল। আর তাঁর পেছনে কনস্টেবলের হাতে ছিল শটগান।
রফিক বলেন, ‘রাস্তার মইদ্দে তহন মেলা লোক, কেউ আগায় না। ৮-১০ জন থাকলে তিনজনরে ধইরা এইহানেই কব্বর দিয়া দিতাম। মানুষডারে পশুর মতো মারছে।’
স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, যে ব্যবসায়ীরা ও বাড়ির বাসিন্দারা ঘটনাটা প্রত্যক্ষ করেছেন, তাঁরা এখন কেউ কোনো কথাই বলছেন না। এমনকি ঘটনার পর থেকে নিয়মিত দোকানও খুলছেন না। প্রতিদিনই কোনো না কোনো গণমাধ্যমের কর্মীরা খোঁজখবর করতে যান। আর সবাই তথ্যের জন্য দেখিয়ে দেন রফিককে। এখন রফিকের পরিবার নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত।
তবে রফিক বলেন, ‘এহন সবাই আমারে দেখায় দেয়। একটা লোক কুনো কথা কয় না। তয় আমি কাউরে ভয় পাই না। খুনি ধরতে গিয়া আমার লুঙ্গি ছিঁড়ছে, কোচায় ৩৬০টা ট্যাকা ছিল, তাও গেছে। এহন আবার মাইনষে কয় হ্যারা (জঙ্গিরা) নাকি ব্যাপক শক্তিশালী, সরকারও নাকি হ্যাগো লগে পারে না। খালি সরকাররে কন, আমি যেন আমার মায়রে নিয়া দুইডা ডাইল-ভাত খাইয়া বাঁইচা থাকপার পারি। আর কিছু চাই না আমি।’
লাবণ্যর জন্য চিন্তিত তাঁর সহযোগীরা। তাঁর গুরুমা স্বপ্না বলেন, লাবণ্যর জন্য হিজড়া সমাজ গর্বিত। কিন্তু হিজড়ারা পথেঘাটে টাকাপয়সা সংগ্রহ করে চলেন। এ অবস্থায় তাঁরা সবাই লাবণ্যর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। স্বপ্নার দাবি, ‘এখন সময় এসেছে হিজড়াদের মূলধারায় নিয়ে আসার। আমাদের লাবণ্য দেখিয়ে দিয়েছে।’
তবে দক্ষিণ বেগুনবাড়ী এলাকাবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী, জঙ্গিদের কে, কীভাবে ধরলেন—এসবের কৃতিত্ব নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। পুলিশ না জনতা, লাবণ্য না রফিক—এসব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম বিভিন্ন পক্ষের ভাষ্য ছাপিয়েছে। তবে সবাই একবাক্যে স্বীকার করবেন, ভাঙা হাত নিয়েই জঙ্গিদের প্রথম ধাওয়া শুরু করেন রফিক। হোঁচট খেয়ে উল্টেপাল্টে পড়ে গিয়েও তিনি থামেননি। সেই রফিকের গল্প থেকেই শুরু করা যাক।
কাভার্ড ভ্যানের চালক রফিক হোসেনের বাঁ হাত কয়েক মাস আগে সড়ক দুর্ঘটনায় ভেঙে যায়। সোজা করতে কাঠের সঙ্গে ব্যান্ডেজ দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে হাতটি। হাত অচল, তাই বেকার রফিক। ৩০ মার্চ সকালে সেই অচল হাতটি গামছা দিয়ে ঢেকে মোড়ের দোকানে নাশতা করতে এসেছিলেন তিনি। হঠাৎই শোনেন ‘মাইরা ফালাইল, মাইরা ফালাইল’ বলে নারীকণ্ঠের চিৎকার। পাতে নেওয়া পরোটা ফেলে রফিক দৌড় দেন। গিয়ে দেখেন ওয়াশিকুরের রক্তাক্ত লাশ পেছনে ফেলে তিন তরুণ সজোরে হেঁটে মূল সড়কের দিকে যাচ্ছে। ‘ধর ধর’ চিৎকার দিয়ে রফিক ধাওয়া করা শুরু করলেন। ওই তরুণেরা দৌড়াতে শুরু করলে রফিকও পেছনে পেছনে দৌড় শুরু করেন। এবার চিৎকার করতে থাকেন ‘ডাকাত ডাকাত’। দীপিকার মোড় পেরিয়ে হোটেল আজমিরের সামনে তখন পুলিশের একটি দল অবস্থান করছিল। পুলিশ দেখে জঙ্গি তিন তরুণও ‘ডাকাত ডাকাত’ বলে চেঁচাতে চেঁচাতে পুলিশকে পেরিয়ে গেলে রফিক পুলিশ সদস্যদের তাদের ধরার জন্য ছুটতে বলেন। তখন একজন পুলিশ সদস্য বলেন, ‘তুই ডাকাইত ডাকাইত চিল্লাস, হ্যারাও (তিন জঙ্গি) চিল্লায়।’ তখন রফিক ও অন্যরা আশ্বস্ত করেন যে আগে ধরা হোক, পরে সাব্যস্ত হবে কে ডাকাত। তখন পুলিশও দৌড়াতে শুরু করে। তখন সহকারী উপপরিদর্শক শাহীন মিয়া ও তাঁর পেছনে আরেক পুলিশ সদস্য দৌড়াতে থাকেন।
এএসআই শাহীন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, টহল ডিউটির মাঝে আজমিরের সামনে একটি চায়ের দোকানে বসে পান খাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ দেখেন পেছন থেকে কয়েকটি ছেলে দুটি ছেলেকে ধাওয়া করছে। তিনি বলেন, ‘আমি ভাবছি হয় শিবির, নাইলে নাশকতাকারী কিছু একটা হবে। অস্ত্র-গোলাবারুদও থাকতে পারে। পেছন থেকে ওরা বলতাছে ডাকাত ডাকাত। তারপর আমিও দৌড় দিলাম।’
রফিক বলেন, পুলিশ দৌড় শুরু করার পরে সাতরাস্তার মূল সড়ক দিয়ে মগবাজারের দিকে দৌড়াতে থাকে জঙ্গিরা। এফডিসি সিগন্যালের আগে উত্তরা সেন্টারের সামনে গিয়ে তারা ধরা পড়ে। তিনি বলেন, ‘আমি কিছু না ভাইবাই দৌড়াইতাছি। হঠাৎই চিকনাটা (আরিফুল) ব্যাগ থিকা চাপাতি বাইর করল। এই সময় ওই হিজড়ারা হ্যাগো থামায়।’
হিজড়া লাবণ্য প্রথম আলোকে বলেন, মগবাজার যাওয়ার জন্য উত্তরা সেন্টারের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন তিনিসহ তিনজন। এ সময় দেখেন, লোকজন দুই তরুণকে ধাওয়া করছে আর ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করছে। রাস্তা তখন যানজটে থমকে আছে, কিন্তু কেউই এগিয়ে আসছে না তাদের ধরার জন্য। এ সময়ই লাবণ্য পেছন থেকে দুজনকে ধরে ফেলেন। দুজনের গেঞ্জির পেছনের অংশ ধরে তাদের আটকে দেন লাবণ্য। তখন ওরা হাঁপাচ্ছিল। ওই দুজন নিজেদের ছাড়ানোর জন্য পেছনে ঘুরে কিল-ঘুষি মারলেও লাবণ্য ছাড়েননি। পরে পুলিশ ও জনতা এসে তাদের ধরে নিয়ে যায় বলে লাবণ্যর দাবি। এ ঘটনার পরে ভয় পেয়ে লাবণ্য এলাকা ছেড়ে তাঁর কাজে চলে যান।
এএসআই শাহীন মিয়া বলেন, ‘দৌড়াতে দৌড়াতে উত্তরা সেন্টারের সামনে চলে এলাম। আমি খালি চিল্লাইতাছি—ধরেন ধরেন। রাস্তায় অনেক মানুষ, কিন্তু কেউ ধরে না। এ সময় একজন ব্যাগ থেকে চাপাতি বাইর করল। তখন ওইখানে কয়েকজন হিজড়া ছিল। একজন সাহস করে দুই হাতে ওদের আটকানোর চেষ্টা করলে ওরা বাধা পায়া পইড়া যায়। চাপাতিটাও রাস্তায় পইড়া যায়। পরে আমি গিয়া চাপাতিটা কুড়ায় নিয়া কনস্টেবলের হাতে দিলাম। দুইজনরে ধরলাম। পরে লোকজনে কইল, ওরা মার্ডার কইরা পালাইতাছিল। আমি ওসি স্যাররে জানাইলাম।’ তিনি জানান, দৌড়ানোর সময় তাঁর কোমরে একটি পিস্তল ছিল। আর তাঁর পেছনে কনস্টেবলের হাতে ছিল শটগান।
রফিক বলেন, ‘রাস্তার মইদ্দে তহন মেলা লোক, কেউ আগায় না। ৮-১০ জন থাকলে তিনজনরে ধইরা এইহানেই কব্বর দিয়া দিতাম। মানুষডারে পশুর মতো মারছে।’
স্থানীয় এক দোকানদার বলেন, যে ব্যবসায়ীরা ও বাড়ির বাসিন্দারা ঘটনাটা প্রত্যক্ষ করেছেন, তাঁরা এখন কেউ কোনো কথাই বলছেন না। এমনকি ঘটনার পর থেকে নিয়মিত দোকানও খুলছেন না। প্রতিদিনই কোনো না কোনো গণমাধ্যমের কর্মীরা খোঁজখবর করতে যান। আর সবাই তথ্যের জন্য দেখিয়ে দেন রফিককে। এখন রফিকের পরিবার নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত।
তবে রফিক বলেন, ‘এহন সবাই আমারে দেখায় দেয়। একটা লোক কুনো কথা কয় না। তয় আমি কাউরে ভয় পাই না। খুনি ধরতে গিয়া আমার লুঙ্গি ছিঁড়ছে, কোচায় ৩৬০টা ট্যাকা ছিল, তাও গেছে। এহন আবার মাইনষে কয় হ্যারা (জঙ্গিরা) নাকি ব্যাপক শক্তিশালী, সরকারও নাকি হ্যাগো লগে পারে না। খালি সরকাররে কন, আমি যেন আমার মায়রে নিয়া দুইডা ডাইল-ভাত খাইয়া বাঁইচা থাকপার পারি। আর কিছু চাই না আমি।’
লাবণ্যর জন্য চিন্তিত তাঁর সহযোগীরা। তাঁর গুরুমা স্বপ্না বলেন, লাবণ্যর জন্য হিজড়া সমাজ গর্বিত। কিন্তু হিজড়ারা পথেঘাটে টাকাপয়সা সংগ্রহ করে চলেন। এ অবস্থায় তাঁরা সবাই লাবণ্যর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। স্বপ্নার দাবি, ‘এখন সময় এসেছে হিজড়াদের মূলধারায় নিয়ে আসার। আমাদের লাবণ্য দেখিয়ে দিয়েছে।’
No comments