হাঙ্গামার শঙ্কা, গ্রেপ্তার ৮
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের শেষ সময়ে এসে হাঙ্গামার আশঙ্কা করা হচ্ছে। হাঙ্গামার চেষ্টায় জড়িত থাকা ও টাকা বিলানোর অভিযোগে এর মধ্যে র্যাব ও পুলিশ আটজনকে আটক করেছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোট গ্রহণ। সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হবে, চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। গতকাল বুধবার রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন সাংবাদিকদের বলেছেন, ভোট গ্রহণের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণেও প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা
নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নাশকতার চেষ্টার সঙ্গে জড়িত দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। ভোটের দিন নাশকতার আশঙ্কাকে নির্বাচন কমিশন গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।
বিএনপি থেকে অব্যাহতি নিয়ে সম্মিলিত নাগরিক কমিটি ব্যানারে মেয়র পদপ্রার্থী মনিরুল হক গতকাল তাঁর বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন, বহিরাগতদের জমায়েত করে একটি পক্ষ ভোটকেন্দ্রে হাঙ্গামার প্রস্তুতি নিয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ তাঁর অনুসারীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
মনিরুল হক মনে করেন, সদর দক্ষিণ এলাকার ২৩টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। সেখানে হাঙ্গামা হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, চিহ্নিত সন্ত্রাসীসহ আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে পারে এমন লোকদের নজরদারিতে রেখেছে র্যাব-পুলিশ।
আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আফজল খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মনে করি, নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু হবে।’ তিনি দাবি করেন, তাঁর বেশি টাকাপয়সা নেই। প্রতিপক্ষের হাতে প্রচুর অর্থ। তাঁরা ভোটারদের কেনার চেষ্টা করছেন।
মনিরুল হক অভিযোগ করেন, প্রশাসনের কাছে তালিকা দিয়ে তাঁর লোকদের হয়রানি করা হচ্ছে।
তবে স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেছেন, তাঁদের কাছে সরকারের ওপর মহল থেকে এমন কোনো তালিকা দেওয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র জানায়, প্রভাবশালী একটি মহল ২৬ জনের একটি তালিকা স্থানীয় পুলিশকে দিয়েছে। এই তালিকায় প্রায় অর্ধেক মনিরুল হকের অনুসারীদের নাম। বাকিরা আগে থেকে স্থানীয় পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা দাবি করেন, এই তালিকা ধরে গ্রেপ্তার অভিযানের চাপ থাকলেও পুলিশ তা করেনি।
জানতে চাইলে কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. মোখলেছুর রহমান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, মনিরুল হকের কোনো লোককে লক্ষ্য করে অভিযান চালানো হয়নি। পুলিশ তালিকাভুক্ত ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে।
পুলিশ সুপার বলেন, ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্র ও আশপাশে টহলে পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও আনসারের দুই হাজার ৩২৪ জন সদস্য থাকবেন।
র্যাব-১১-এর কুমিল্লা ক্যাম্পের অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মোস্তফা কামাল বলেন, র্যাবের ৮০০ সদস্য কেন্দ্রের আশপাশসহ নির্বাচনী এলাকায় টহলে থাকবেন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৩৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবেন।
আটক ও সাজা: পুলিশ ও র্যাব গত মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত আটজনকে আটক করেছে। এর মধ্যে দুজনকে নাশকতা চেষ্টার জন্য ছয় মাস করে এবং একজনকে টাকা বিলানোর অভিযোগে দুই মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
টাকা বিলানো এবং নাশকতা ছাড়াও গত মঙ্গলবার রাতে আবদুস শহিদ নামের একজনকে আটক করা হয় ভোটারদের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করার অভিযোগে। শহিদ ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আবদুস সালামের ভাই।
ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটাতে পারে, এই আশঙ্কায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে শহরের রানীরবাজার এলাকা থেকে তৌহিদ হাসান ও ইমরান নামের দুজনকে নাশকতার অভিযোগে কুমিল্লার রিটার্নিং কর্মকর্তার উপস্থিতিতে র্যাব আটক করেছে। তৌহিদ হাসান নিজেকে ঢাকার এবং ইমরান কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাসিন্দা বলে র্যাবকে জানিয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার রাতে তিনি শহরের পরিবেশ দেখার জন্য বেরিয়েছিলেন। গভীর রাতে দুই যুবক একটি সাদা গাড়িতে ‘প্রেস’ স্টিকার লাগিয়ে ঘোরাঘুরি করছিলেন। সন্দেহ হওয়ায় তিনি গাড়ি দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। যুবকেরা প্রথমে দাবি করেন, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস শাখার লোক। পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তাঁরা তা দেখাতে পারেননি। এরপর র্যাব ডেকে ওই গাড়ি তল্লাশি করে প্রচুর কাগজ পাওয়া যায়। এসব কাগজে মেয়র-কাউন্সিলরসহ বিভিন্ন প্রার্থীর নামের তালিকা ছিল। এ ছাড়া ছিল কোতোয়ালি থানার সন্ত্রাসীদের নামের তালিকা, বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিভিন্ন ব্যক্তির নাম-ঠিকানা, শারীরিক বর্ণনাসংবলিত তালিকা। কিছু তালিকায় থাকা নামের পাশে টিক চিহ্ন, কোনোটাতে তারকা চিহ্ন ও কোনোটাতে নামের আগে ক্রস চিহ্ন দেওয়া।
আবদুল বাতেন বলেন, ‘আমাদের ধারণা, নাশকতা করার জন্যই এরা মাঠে নেমেছিল।’
প্রার্থী ও ভোট: মোট ভোটার এক লাখ ৬৯ হাজার ২৭৯ জন। ভোটকেন্দ্র ৬৫টি। সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ এবং গণনা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে ওয়েব ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন এবং ২৭ ওয়ার্ডে ২৮৭ জন কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদপ্রার্থীদের মধ্যে আফজল খান (প্রতীক-আনারস), মনিরুল হক (হাঁস), নূর-উর-রহমান মাহমুদ (চশমা), এয়ার আহমেদ (টেলিভিশন), আনিসুর রহমান (জাহাজ), শিরিন আখতার (তালা), সালমান সাঈদ (দোয়াত-কলম) ও চঞ্চল কুমার ঘোষ (ঘোড়া)।
বিএনপি থেকে অব্যাহতি নিয়ে সম্মিলিত নাগরিক কমিটি ব্যানারে মেয়র পদপ্রার্থী মনিরুল হক গতকাল তাঁর বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন, বহিরাগতদের জমায়েত করে একটি পক্ষ ভোটকেন্দ্রে হাঙ্গামার প্রস্তুতি নিয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ তাঁর অনুসারীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
মনিরুল হক মনে করেন, সদর দক্ষিণ এলাকার ২৩টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ। সেখানে হাঙ্গামা হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, চিহ্নিত সন্ত্রাসীসহ আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে পারে এমন লোকদের নজরদারিতে রেখেছে র্যাব-পুলিশ।
আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী আফজল খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মনে করি, নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু হবে।’ তিনি দাবি করেন, তাঁর বেশি টাকাপয়সা নেই। প্রতিপক্ষের হাতে প্রচুর অর্থ। তাঁরা ভোটারদের কেনার চেষ্টা করছেন।
মনিরুল হক অভিযোগ করেন, প্রশাসনের কাছে তালিকা দিয়ে তাঁর লোকদের হয়রানি করা হচ্ছে।
তবে স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেছেন, তাঁদের কাছে সরকারের ওপর মহল থেকে এমন কোনো তালিকা দেওয়া হয়নি।
সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র জানায়, প্রভাবশালী একটি মহল ২৬ জনের একটি তালিকা স্থানীয় পুলিশকে দিয়েছে। এই তালিকায় প্রায় অর্ধেক মনিরুল হকের অনুসারীদের নাম। বাকিরা আগে থেকে স্থানীয় পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা দাবি করেন, এই তালিকা ধরে গ্রেপ্তার অভিযানের চাপ থাকলেও পুলিশ তা করেনি।
জানতে চাইলে কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. মোখলেছুর রহমান গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, মনিরুল হকের কোনো লোককে লক্ষ্য করে অভিযান চালানো হয়নি। পুলিশ তালিকাভুক্ত ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে।
পুলিশ সুপার বলেন, ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্র ও আশপাশে টহলে পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও আনসারের দুই হাজার ৩২৪ জন সদস্য থাকবেন।
র্যাব-১১-এর কুমিল্লা ক্যাম্পের অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার মোস্তফা কামাল বলেন, র্যাবের ৮০০ সদস্য কেন্দ্রের আশপাশসহ নির্বাচনী এলাকায় টহলে থাকবেন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিচারিক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ৩৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবেন।
আটক ও সাজা: পুলিশ ও র্যাব গত মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত আটজনকে আটক করেছে। এর মধ্যে দুজনকে নাশকতা চেষ্টার জন্য ছয় মাস করে এবং একজনকে টাকা বিলানোর অভিযোগে দুই মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
টাকা বিলানো এবং নাশকতা ছাড়াও গত মঙ্গলবার রাতে আবদুস শহিদ নামের একজনকে আটক করা হয় ভোটারদের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করার অভিযোগে। শহিদ ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আবদুস সালামের ভাই।
ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটাতে পারে, এই আশঙ্কায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে শহরের রানীরবাজার এলাকা থেকে তৌহিদ হাসান ও ইমরান নামের দুজনকে নাশকতার অভিযোগে কুমিল্লার রিটার্নিং কর্মকর্তার উপস্থিতিতে র্যাব আটক করেছে। তৌহিদ হাসান নিজেকে ঢাকার এবং ইমরান কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাসিন্দা বলে র্যাবকে জানিয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার রাতে তিনি শহরের পরিবেশ দেখার জন্য বেরিয়েছিলেন। গভীর রাতে দুই যুবক একটি সাদা গাড়িতে ‘প্রেস’ স্টিকার লাগিয়ে ঘোরাঘুরি করছিলেন। সন্দেহ হওয়ায় তিনি গাড়ি দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। যুবকেরা প্রথমে দাবি করেন, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস শাখার লোক। পরিচয়পত্র দেখতে চাইলে তাঁরা তা দেখাতে পারেননি। এরপর র্যাব ডেকে ওই গাড়ি তল্লাশি করে প্রচুর কাগজ পাওয়া যায়। এসব কাগজে মেয়র-কাউন্সিলরসহ বিভিন্ন প্রার্থীর নামের তালিকা ছিল। এ ছাড়া ছিল কোতোয়ালি থানার সন্ত্রাসীদের নামের তালিকা, বিভিন্ন ওয়ার্ডের বিভিন্ন ব্যক্তির নাম-ঠিকানা, শারীরিক বর্ণনাসংবলিত তালিকা। কিছু তালিকায় থাকা নামের পাশে টিক চিহ্ন, কোনোটাতে তারকা চিহ্ন ও কোনোটাতে নামের আগে ক্রস চিহ্ন দেওয়া।
আবদুল বাতেন বলেন, ‘আমাদের ধারণা, নাশকতা করার জন্যই এরা মাঠে নেমেছিল।’
প্রার্থী ও ভোট: মোট ভোটার এক লাখ ৬৯ হাজার ২৭৯ জন। ভোটকেন্দ্র ৬৫টি। সব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ এবং গণনা হবে। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে ওয়েব ক্যামেরা বসানো হয়েছে।
নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন এবং ২৭ ওয়ার্ডে ২৮৭ জন কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদপ্রার্থীদের মধ্যে আফজল খান (প্রতীক-আনারস), মনিরুল হক (হাঁস), নূর-উর-রহমান মাহমুদ (চশমা), এয়ার আহমেদ (টেলিভিশন), আনিসুর রহমান (জাহাজ), শিরিন আখতার (তালা), সালমান সাঈদ (দোয়াত-কলম) ও চঞ্চল কুমার ঘোষ (ঘোড়া)।
No comments