তবুও খুশি নিউজিল্যান্ড

বৃষ্টিতে বিকেএসপির মাঠ খেলার অনুপযুক্ত থাকায় আজকের দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচটিও হচ্ছে না। সিরিজের আগে কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে না পারায় নিউজিল্যান্ড দলে হতাশা আছে। তবে কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে যে সুবর্ণ সুযোগ পাওয়া গেল, আফসোস তাতে কমেও যেতে পারে অনেকটা। দেশের বাইরে সিরিজ খেলতে গিয়ে যে এই প্রথম পাওয়া গেল সেন্টার উইকেটে প্র্যাকটিস করার সুযোগ!
উইকেট সম্পর্কে ধারণা হয়ে যায় বলে বিদেশি দলগুলোকে সাধারণত মাঠের মূল উইকেটগুলোয় অনুশীলনের সুযোগ দেওয়া হয় না। প্র্যাকটিস ম্যাচ না হওয়ায় এবার সে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটল। সফর আয়োজক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী আশরাফ হোসেন জানালেন, অনুরোধটা নিউজিল্যান্ড দল থেকেই ছিল, ‘মাঠ ভেজা থাকায় দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটা প্র্যাকটিস ম্যাচও খেলার সুযোগ পাচ্ছে না ওরা। সে জন্য নিউজিল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্ট সেন্টার উইকেটে প্র্যাকটিস করার অনুমতি চায়। আমরা সেন্টার উইকেটগুলোর একেবারে পাশের একটা উইকেটে তাদের প্র্যাকটিস করতে দিয়েছি।’
ড্যানিয়েল ভেট্টোরি-ব্রেন্ডন ম্যাককালামদের উইকেট সম্পর্কে ‘অন্ধকারে’ রেখে যে পাঁচ ওয়ানডের সিরিজে বাংলাদেশ দল বিরাট কিছু ঘটিয়ে ফেলবে, সে নিশ্চয়তা নেই। তা ছাড়া নিউজিল্যান্ড বোর্ডের সঙ্গে সুসম্পর্কের খাতিরেও বিসিবিকে এই সৌজন্যটা দেখাতে হয়েছে। নিউজিল্যান্ড দলের বোলিং কোচ শেন ইয়ুর্গেনসেন তো কাল প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলতে না পারার হতাশাও ভুলে গেলেন সেন্টার উইকেটে প্র্যাকটিস করতে পেরে, ‘আবহাওয়ার ওপর কারও হাত নেই। এখানে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা থাকলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটা হচ্ছে না। কিছুটা হতাশ তো অবশ্যই, তবে আজ (গতকাল) সেন্টার উইকেটে খুব ভালো প্র্যাকটিস হয়েছে। সিরিজ শুরুর আগে এটা হওয়ায় আমরা খুশি। আমাদের জন্য এখানকার আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
আবহাওয়া না হোক, কাল উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কাজটা ভালোই হলো। সেন্টার উইকেটে প্র্যাকটিসের সুযোগ পেয়ে সবাই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের মাঝখানেই থাকলেন, ফিল্ডিং বা অন্য কোনো প্র্যাকটিসে আগ্রহ দেখা গেল না কারও। ভেট্টোরির দলের খেলোয়াড়দের জন্য এটা স্বাভাবিকও। গত আগস্টে শ্রীলঙ্কা সফরের পর এক মাস বলতে গেলে বিশ্রামেই ছিলেন সবাই। মাঠে ফেরার তাড়না তো থাকবেই। বোলিং কোচ বললেন, ‘চার সপ্তাহ বিশ্রামের পর আমরা আবার মাঠে ফিরছি। ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করছে, সবাই খেলার অপেক্ষায় আছে এখন।’
বাংলাদেশের গত নিউজিল্যান্ড সফরে অভিষেক হয়েছিল পেসার অ্যান্ডি ম্যাকাইর। এবার অভিষেকের অপেক্ষায় হামিশ বেনেট। ভেট্টোরির ভাষ্যমতে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে বল করতে পারে, এমন বোলারদের একটা গ্রুপই নাকি তৈরি করতে চাচ্ছে নিউজিল্যান্ড দল। কিন্তু উপমহাদেশের উইকেটে কেবল গতি দিয়েই কি সব হয়? বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলার দায়িত্ব তাই নির্দিষ্ট কারও ওপরে চাপিয়ে দিতে চাচ্ছেন না ইয়ুর্গেনসেন, ‘আমাদের কিছু বোলার আছে যারা ভালো উচ্চতায় বল তুলতে পারে, অনেকে ভালো সুইংও করাতে পারে। পেসারদের সঙ্গে ড্যানিয়েল (ভেট্টোরি), ন্যাথান (ম্যাককালাম) আছে...। অলরাউন্ডারসহ দশ জনই বল করতে পারে। কে বল করল সেটা তাই গুরুত্বপূর্ণ না। ব্যাটসম্যানদের চাপে ফেলাই মূল লক্ষ্য।’
সেন্টার উইকেটে খেলতে পারলেও আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জটা কিউদের থাকছেই। পূর্বাভাস অনুযায়ী আজ ঢাকার আকাশ রোদ ঝলমলে হওয়ার কথা থাকলেও আগামীকাল এবং পরশু প্রথম ওয়ানডের দিনও নাকি ভারী বর্ষণ হবে। খেয়ালি শরৎকাল নিউজিল্যান্ডকে হয়তো একটু বিভ্রান্তিতেই ফেলছে।

No comments

Powered by Blogger.