শ্রীলংকায় অস্থিরতা, আতংকে দিন কাটছে মুসলমানদের by টেলর ডিবার্ট
ইস্টার
বোমা হামলার পর শ্রীলংকার মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ ও সহিংসতা
এখনো বড় ধরনের উদ্বেগ হিসেবে বিরাজ করছে। মনে রাখা প্রয়োজন যে এই
মুসলিম-বিরোধী সহিংসতা শুধু ইস্টার হামলাকে নিয়েই ঘটেনি; পুঞ্জিভূত ক্ষোভ ও
অতীতের ঘৃণা এই বৈষম্যমূলক আচরণের পেছনে ভূমিকা রাখছে।
বিশেষ করে এই কঠিন সময়ে, সরকারি কর্মকর্তাদের উচিত ছিলো সামাজিক সংহতি জোরদার এবং জাতিগত ও ধর্মীয় উত্তেজনা কমিয়ে আনতে কাজ করা। তাদের উচিত মুসলিমদের কাছে যাওয়া। কলম্বো বারবার বলছে যে শ্রীলংকার মুসলিম সম্প্রদায়ই সমাধানের বড় অংশ। সহিংস চরমপন্থা খর্ব করা এবং ইসলামী সন্ত্রাসবাদের হুমকি যাতে তৈরি না হয় তা নিশ্চিত করতে এর বিকল্প নেই। কিন্তু স্পষ্টতই এই কাজটি করা হচ্ছে না।
মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কি মাত্রার সহিংসতা হয়েছে তা নথিবদ্ধ করে একটি চমৎকার প্রতিবেদন গত মাসে প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইট ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। এতে নির্বিচার গ্রেফতার, উশৃঙ্খল জনতার হামলা, বৈষম্য ও ধর্মীয় স্বাধীনতা সংশ্লিষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর হামলা পরিব্যাপক ও নিয়মতান্ত্রিক। আরো খারাপ বিষয় হলো, সিনহলা আধিপত্যের রাষ্ট্র একে সমর্থন দেয়।
এইচআরডব্লিউ প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি নেতারা মুসলিম নাগরিকদের রক্ষার দায়িত্ব পালন না করে প্রায়ই বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী লোকজনের সঙ্গে যোগ দেয়। নয় জন মুসলিম মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলো যখন ইসলামী জঙ্গিদের সমর্থন করার অভিযোগ তোলে তখন অনেককে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখে।
গত কয়েক মাসে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যেসব সহিংসতা হয়েছে তাতে সরকারি নটদের জড়িত থাকা কোন গোপন বিষয় নয়। দু:খজনক হলো শ্রীলংকায় জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ঐতিহাসিক রীতিতে পরিণত হয়েছে। সাধরণভাবে বলতে গেলে, ব্যাপক দায়মুক্তির উদাহরণ থাকায় সহিংস নটদের সহিংসতা চালানোর পরিণতি নিয়ে ভাবতে হয় না।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সামাজিক গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে মুসলিম বিরোধী বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানোর অভিযোগ করেন বিশ্লেষক ও মুসলিম নেতারা। সম্প্রচার ও প্রিন্ট মিডিয়ার একটি অংশও এ কাজটি করে। অনেক ভিত্তিহীন অভিযোগে এসব ঘৃণা ছড়ানো হয়। যেমন, মুসলমানরা নাকি দেশের ৭০ ভাগ সিনহলা জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।
সামাজিক গণমাধ্যমে ছড়ানো বিদ্বেষবাক্যগুলোতে শ্রীলংকা থেকে মুসলিমদের নিশ্চিহ্ন করার আহ্বান জানানো হচ্ছে এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার প্রশংসা করা হচ্ছে।
গভীরভাবে বিভক্ত শ্রীলংকায় সন্ত্রাসী হামলার পর কয়েক মাস পার না হতেই দেশটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের দৃষ্টির আড়ালে চলে গেছে। অথচ সেখানে মুসলিমদের বিরুদ্ধে অব্যাহত সহিংসতা চলছে এবং দিনে দিনে তা বাড়ছে।
শ্রীলংকা সরকার খুবই দুর্বল ও অযোগ্য। প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনা ও প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমাসিঙ্গের দৃষ্টি এখন চলতি বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিবদ্ধ। নির্বাচনের এই বছরে সবাই সংখ্যাগুরু সিনহলা জনগণের আশীর্বাদ পেতে সিনহলা-বৌদ্ধ জাতীয়তাবকে ব্যবহার করছে। ফলে বড় মাপের রাজনৈতিক এ্যাক্টরদের মধ্যে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উপেক্ষা করা বা মওকুফ করে দেয়ার প্রবণতা দেখা যায় । জাতীয় নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস দমনের বিষয়টি সিনহলা-বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
সম্প্রতি গোটাবায়া রাজাপাকসা আনুষ্ঠাকিভাবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত নেন তার ভাই ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসা। দুই জনই গভীরভাবে জাতীয়তাবাদের সমর্থক। তারা দেশটিকে আরো স্বৈরতান্ত্রিক অবস্থায় নিয়ে যেতে পিছপা হবেন না।
বছরের পর বছর অযোগ্যতা ও বিশৃঙ্খলার পর পরিবর্তনের জন্য জনগণ প্রস্তুত। ফলে মনে হচ্ছে শ্রীলংকার ভোটাররা ভাবছেন না রাজাপাকসারা দেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর হবেন। সেটা হলে মুসলিম বিরোধী সহিংসতা কমে আসবে বলে ভাবার কারণ নেই। তামিল ও খ্রিস্টানদেরও সেজন্য ভুগতে হবে।
ইস্টার হামলার বিপর্যয় অব্যাহত থাকবে। আতংকের মধ্যে দিন কাটছে মুসলমানদের। দায়মুক্তির ঘটনা ঘটছে অহরহ। সরকার দিশাহারা, আর দীর্ঘদিনের বর্ণবাদীরা ক্ষমতা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত। তাই এখনই যদি কেউ শ্রীলংকার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন না হয়, তাহলে কখন হবে?
বিশেষ করে এই কঠিন সময়ে, সরকারি কর্মকর্তাদের উচিত ছিলো সামাজিক সংহতি জোরদার এবং জাতিগত ও ধর্মীয় উত্তেজনা কমিয়ে আনতে কাজ করা। তাদের উচিত মুসলিমদের কাছে যাওয়া। কলম্বো বারবার বলছে যে শ্রীলংকার মুসলিম সম্প্রদায়ই সমাধানের বড় অংশ। সহিংস চরমপন্থা খর্ব করা এবং ইসলামী সন্ত্রাসবাদের হুমকি যাতে তৈরি না হয় তা নিশ্চিত করতে এর বিকল্প নেই। কিন্তু স্পষ্টতই এই কাজটি করা হচ্ছে না।
মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কি মাত্রার সহিংসতা হয়েছে তা নথিবদ্ধ করে একটি চমৎকার প্রতিবেদন গত মাসে প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইট ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। এতে নির্বিচার গ্রেফতার, উশৃঙ্খল জনতার হামলা, বৈষম্য ও ধর্মীয় স্বাধীনতা সংশ্লিষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর হামলা পরিব্যাপক ও নিয়মতান্ত্রিক। আরো খারাপ বিষয় হলো, সিনহলা আধিপত্যের রাষ্ট্র একে সমর্থন দেয়।
এইচআরডব্লিউ প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি নেতারা মুসলিম নাগরিকদের রক্ষার দায়িত্ব পালন না করে প্রায়ই বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী লোকজনের সঙ্গে যোগ দেয়। নয় জন মুসলিম মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলো যখন ইসলামী জঙ্গিদের সমর্থন করার অভিযোগ তোলে তখন অনেককে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখে।
গত কয়েক মাসে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যেসব সহিংসতা হয়েছে তাতে সরকারি নটদের জড়িত থাকা কোন গোপন বিষয় নয়। দু:খজনক হলো শ্রীলংকায় জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ঐতিহাসিক রীতিতে পরিণত হয়েছে। সাধরণভাবে বলতে গেলে, ব্যাপক দায়মুক্তির উদাহরণ থাকায় সহিংস নটদের সহিংসতা চালানোর পরিণতি নিয়ে ভাবতে হয় না।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সামাজিক গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে মুসলিম বিরোধী বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানোর অভিযোগ করেন বিশ্লেষক ও মুসলিম নেতারা। সম্প্রচার ও প্রিন্ট মিডিয়ার একটি অংশও এ কাজটি করে। অনেক ভিত্তিহীন অভিযোগে এসব ঘৃণা ছড়ানো হয়। যেমন, মুসলমানরা নাকি দেশের ৭০ ভাগ সিনহলা জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে।
সামাজিক গণমাধ্যমে ছড়ানো বিদ্বেষবাক্যগুলোতে শ্রীলংকা থেকে মুসলিমদের নিশ্চিহ্ন করার আহ্বান জানানো হচ্ছে এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার প্রশংসা করা হচ্ছে।
গভীরভাবে বিভক্ত শ্রীলংকায় সন্ত্রাসী হামলার পর কয়েক মাস পার না হতেই দেশটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের দৃষ্টির আড়ালে চলে গেছে। অথচ সেখানে মুসলিমদের বিরুদ্ধে অব্যাহত সহিংসতা চলছে এবং দিনে দিনে তা বাড়ছে।
শ্রীলংকা সরকার খুবই দুর্বল ও অযোগ্য। প্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনা ও প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমাসিঙ্গের দৃষ্টি এখন চলতি বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিবদ্ধ। নির্বাচনের এই বছরে সবাই সংখ্যাগুরু সিনহলা জনগণের আশীর্বাদ পেতে সিনহলা-বৌদ্ধ জাতীয়তাবকে ব্যবহার করছে। ফলে বড় মাপের রাজনৈতিক এ্যাক্টরদের মধ্যে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উপেক্ষা করা বা মওকুফ করে দেয়ার প্রবণতা দেখা যায় । জাতীয় নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস দমনের বিষয়টি সিনহলা-বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
সম্প্রতি গোটাবায়া রাজাপাকসা আনুষ্ঠাকিভাবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত নেন তার ভাই ও সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসা। দুই জনই গভীরভাবে জাতীয়তাবাদের সমর্থক। তারা দেশটিকে আরো স্বৈরতান্ত্রিক অবস্থায় নিয়ে যেতে পিছপা হবেন না।
বছরের পর বছর অযোগ্যতা ও বিশৃঙ্খলার পর পরিবর্তনের জন্য জনগণ প্রস্তুত। ফলে মনে হচ্ছে শ্রীলংকার ভোটাররা ভাবছেন না রাজাপাকসারা দেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর হবেন। সেটা হলে মুসলিম বিরোধী সহিংসতা কমে আসবে বলে ভাবার কারণ নেই। তামিল ও খ্রিস্টানদেরও সেজন্য ভুগতে হবে।
ইস্টার হামলার বিপর্যয় অব্যাহত থাকবে। আতংকের মধ্যে দিন কাটছে মুসলমানদের। দায়মুক্তির ঘটনা ঘটছে অহরহ। সরকার দিশাহারা, আর দীর্ঘদিনের বর্ণবাদীরা ক্ষমতা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত। তাই এখনই যদি কেউ শ্রীলংকার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন না হয়, তাহলে কখন হবে?
No comments