যে কারণে র্যাঙ্কিংয়ে ঢাবি’র পতন: নেই পর্যাপ্ত গবেষণা, বিদেশি শিক্ষার্থী, শিক্ষক রাজনীতি by মোহাম্মদ ওমর ফারুক
দুনিয়ার
সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় কেন নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় -হালজমানায়
বহুল আলোচিত এক প্রশ্ন। বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার তৈরি করা র্যাঙ্কিংয়ে
দিনে দিনে নিম্নমুখী প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাবি’র অবস্থান। সম্প্রতি
লন্ডনভিত্তিক শিক্ষাবিষয়ক সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশনের র্যাঙ্কিংয়ে
বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষ এক হাজারের মধ্যেও আসেত পারেনি। অথচ
এই তালিকায় পাশের দেশ ভারতের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে এক হাজারের মধ্যে।
এমনকি রাজনীতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে অস্থিতিশীল দেশ পাকিস্তানের
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থানও বাংলাদেশের চেয়ে ভালো। শিক্ষার পরিবেশ,
গবেষণার সংখ্যা ও সুনাম, সাইটেশন বা গবেষণার উদ্ধৃতি, এ খাত থেকে আয় এবং
আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বা সংশ্লিষ্টতাসহ ৫টি মানদণ্ড বিশ্লেষণ করে এই তালিকা
তৈরি করা হয় প্রতিবছর। র্যাঙ্কিংয়ে বিদেশি ছাত্রের ক্ষেত্রে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে শূন্য। হায়ার এডুকেশনের র্যাঙ্কিয়ে বিশ্বের ৯২টি
দেশের ১৩শ বিশ্ববিদ্যালয় অন্তুর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান এক হাজারের পরে। অথচ ২০১৬ সালে এই তালিকায় ঢাবির
অবস্থান ছিল ৬শ’তে। চার বছরে র্যাঙ্কিং পিছিয়েছে ৪শ’ ধাপ। বিশ্বসেরাদের
তালিকায় স্থান না পাওয়া নিয়ে সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা কাজ
করলেও এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথা নেই বললেই চলে। দেশের পাবলিক
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সবচেয়ে মেধাবীরা ভর্তি হন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন শিক্ষার পরিবেশ, পর্যাপ্ত গবেষণার অভাব, সাইটেশন বা গবেষণার উদ্ধৃতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ক্ষেত্রে দুর্বলতার কারণে এমনটা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা আরো করুণ বলে মনে করছেন তারা। বিশেষ করে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই গবেষণায় জোর দেয় না। গবেষণা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ৪৩তম বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, দেশের মোট ৬৫ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হয় না। গবেষণার বদলে চলে মুখস্থ-নির্ভর পড়াশোনা। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গবেষণা খাতে বরাদ্দের হারের চিত্রও বেশ করুণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাজেটের পরিমাণ ছিল ৮১০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। তবে মোট বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ৫.০৪ শতাংশ। গত বছর এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৬.৬২ শতাংশ। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও ছাত্র প্রতিনিধরা এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর জোর দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রায় সময় বিশ্ববিদ্যালয়টি গবেষণার এই বাজেটের অর্থও ব্যয় করতে পারে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে থাকার জন্য গবেষণার এই করুণ দশাই যথেষ্ট। যেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ হওয়ার কথা গবেষণা, সেখানে গবেষণার এমন দশা। শুধু তাই নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদেশে কোনো গবেষণাপত্র উপস্থাপনের জন্য শিক্ষকদের বরাদ্দ মাত্র ৭৫০ টাকা। যা দিয়ে বহির্বিশ্বে কখনো গবেষণা উপস্থাপন করা সম্ভব নয় এবং হাস্যকর বটে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পিছিয়ে থাকার মূল কারণ হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা প্রকল্প প্রদানে স্বজনপ্রীতি, ভালো ল্যাব না থাকা, গবেষণায় বরাদ্দে অপ্রতুলতা, ভালো গবেষণার স্বীকৃতি না পাওয়া, পদোন্নতিতে গবেষণার চেয়ে রাজনৈতিক মতাদর্শকে প্রাধান্য দেয়া, মেধাবী শিক্ষকদের গবেষণাবিমুখ হওয়া, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যোগাযোগ না থাকা, বিশ্বদ্যিালয়ের ওয়েবসাইটগুলো ভুল তথ্যে ভরা বা আপডেট না থাকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আনুষ্ঠানিক উপস্থিতি না থাকা। ফলে দেশের বাইরে থেকে কেউ যদি জানতে চান বাংলাদেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে, ওয়েবসাইট থেকে প্রায় কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।
এ ব্যাপারে ঢাবির শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, নানান বিষয় যাচাই-বাছাই করে আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংটা হয়। এখন যদি প্রশ্নপত্র ফাঁস করে বা জালিয়াতি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যায় সেই বিষয়ে কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থাকে ক্ষমতাসীন ছাত্রদের দখলে। যার কারণে শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ পায় না। শুনলাম শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ নিয়ে খুব কম নম্বর পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। সেটার অন্যতম কারণ অপরাজনীতি। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হয় না বললেই চলে। আন্তর্জাতিক জার্নালে নেই কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর লেখা। তাহলে কীভাবে র্যাঙ্কিংয়ে জায়গা করে নিবে বিশ্ববিদ্যালয়- প্রশ্ন এই শিক্ষার্থী প্রতিনিধির।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, এটা এক কথায় বলা যায় যোগাযোগের অভাব। টাইমস হায়ার এডুকেশনের সঙ্গে এবার আমিই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করেছি। তারা যেসব তথ্য চেয়েছে, আমরা তা দেয়ার চেষ্টা করেছি। আগামীবার থেকে অবশ্যই আমাদের একটা অবস্থান হবে। তবে তারা যেসব বিষয় আমাদের কাছে জানতে চায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমন বিদেশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী আছে, পিএইচডি এবং এমফিলের শিক্ষার্থী পার্সেন্টেজ কেমন, গবেষণার অবস্থা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মূলত অনার্স মাস্টার্সের ওপর জোর দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। তার বাইরে শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় এমফিল বা পিএইচডি করানো হয়। গবেষণা আগের চেয়ে অনেক ভালো করছে। সব মিলিয়ে তো কিছু সংকট আছেই। আমরা চেষ্টা করছি- তাদের সূচকগুলো (পয়েন্ট) কীভাবে আরো বেশি মার্কস পাওয়া যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে। সবাই সেই প্রচেষ্টায় কাজ করে যাচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও গণযোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি নিয়ে কথা বলা আমার জন্য বিব্রতকর। তবে আমি যেটা বলবো, ২০১৬ সালে তো বিশ্ববিদ্যালয় এক হাজারের মধ্যেই ছিল। কিন্তু এখন তো সেটার মধ্যেও নেই। কেন নেই প্রশাসন বলতে পারবে। আগের তুলনায় বাজেট বেড়েছে, সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। এখন প্রশাসন বিষয়টি আমলে নিয়ে কাজ করলেই হয়তো ভালো কিছু হবে আশা করি।
বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আকতারুজ্জামান বলেন, আমরা বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে কেন আসতে পারছি না, তা খুঁজে বের করেছি। সংস্থাগুলো যে সূচকে বিশ্ববিদ্যালয় র্যাঙ্কিং করে সেই সূচকগুলোতে আমাদের পয়েন্ট ওঠে না। সে ক্ষেত্রে আমাদের অনেক সময় লাগবে। আরো বেশকিছু সংযোজন লাগবে। যেমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব আয়, অনেক মিলিয়ন লাগে। কিন্তু আমরা তো চলি এখনো সরকারের বাজেট দিয়ে। এর বাইরে বিভিন্ন তহবিল লাগে বিভিন্ন কাজে। আরেকটি বিদেশি ছাত্রের পরিমাণ জানতে চাওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি ছাত্রের পরিমাণ শুরু থেকেই অনেক কম। আরেকটা বড় বিষয়- যেখানে আমরা একশ’র মধ্যে পেয়েছি মাত্র ষোলো। যেটা সামগ্রিক শিক্ষার পরিবেশ। শ্রেণিকক্ষ সেমিনার, লাইব্রেরি, পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা আমাদের এখানে নেই। দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেসব সুবিধা দিতে পারে শিক্ষার্থীদের আমরা সেটা দিতে পারি না। গবেষণা বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, গবেষণা কম হচ্ছে না। এটা বিশ্ববিদ্যালয়কে অপমান করার জন্য অনেকে বলে। এ বিষয়গুলো কাটিয়ে উঠতে পারলেই আমরা র্যাঙ্কিংয়ে আসতে পারবো।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন শিক্ষার পরিবেশ, পর্যাপ্ত গবেষণার অভাব, সাইটেশন বা গবেষণার উদ্ধৃতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ক্ষেত্রে দুর্বলতার কারণে এমনটা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা আরো করুণ বলে মনে করছেন তারা। বিশেষ করে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ই গবেষণায় জোর দেয় না। গবেষণা নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ৪৩তম বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, দেশের মোট ৬৫ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হয় না। গবেষণার বদলে চলে মুখস্থ-নির্ভর পড়াশোনা। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গবেষণা খাতে বরাদ্দের হারের চিত্রও বেশ করুণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাজেটের পরিমাণ ছিল ৮১০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। তবে মোট বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মাত্র ৫.০৪ শতাংশ। গত বছর এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৬.৬২ শতাংশ। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও ছাত্র প্রতিনিধরা এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর জোর দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রায় সময় বিশ্ববিদ্যালয়টি গবেষণার এই বাজেটের অর্থও ব্যয় করতে পারে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে থাকার জন্য গবেষণার এই করুণ দশাই যথেষ্ট। যেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কাজ হওয়ার কথা গবেষণা, সেখানে গবেষণার এমন দশা। শুধু তাই নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদেশে কোনো গবেষণাপত্র উপস্থাপনের জন্য শিক্ষকদের বরাদ্দ মাত্র ৭৫০ টাকা। যা দিয়ে বহির্বিশ্বে কখনো গবেষণা উপস্থাপন করা সম্ভব নয় এবং হাস্যকর বটে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পিছিয়ে থাকার মূল কারণ হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা প্রকল্প প্রদানে স্বজনপ্রীতি, ভালো ল্যাব না থাকা, গবেষণায় বরাদ্দে অপ্রতুলতা, ভালো গবেষণার স্বীকৃতি না পাওয়া, পদোন্নতিতে গবেষণার চেয়ে রাজনৈতিক মতাদর্শকে প্রাধান্য দেয়া, মেধাবী শিক্ষকদের গবেষণাবিমুখ হওয়া, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যোগাযোগ না থাকা, বিশ্বদ্যিালয়ের ওয়েবসাইটগুলো ভুল তথ্যে ভরা বা আপডেট না থাকা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আনুষ্ঠানিক উপস্থিতি না থাকা। ফলে দেশের বাইরে থেকে কেউ যদি জানতে চান বাংলাদেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে, ওয়েবসাইট থেকে প্রায় কোনো তথ্য পাওয়া যায় না।
এ ব্যাপারে ঢাবির শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, নানান বিষয় যাচাই-বাছাই করে আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংটা হয়। এখন যদি প্রশ্নপত্র ফাঁস করে বা জালিয়াতি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যায় সেই বিষয়ে কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থাকে ক্ষমতাসীন ছাত্রদের দখলে। যার কারণে শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত শিক্ষার পরিবেশ পায় না। শুনলাম শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ নিয়ে খুব কম নম্বর পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। সেটার অন্যতম কারণ অপরাজনীতি। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হয় না বললেই চলে। আন্তর্জাতিক জার্নালে নেই কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর লেখা। তাহলে কীভাবে র্যাঙ্কিংয়ে জায়গা করে নিবে বিশ্ববিদ্যালয়- প্রশ্ন এই শিক্ষার্থী প্রতিনিধির।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, এটা এক কথায় বলা যায় যোগাযোগের অভাব। টাইমস হায়ার এডুকেশনের সঙ্গে এবার আমিই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করেছি। তারা যেসব তথ্য চেয়েছে, আমরা তা দেয়ার চেষ্টা করেছি। আগামীবার থেকে অবশ্যই আমাদের একটা অবস্থান হবে। তবে তারা যেসব বিষয় আমাদের কাছে জানতে চায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমন বিদেশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী আছে, পিএইচডি এবং এমফিলের শিক্ষার্থী পার্সেন্টেজ কেমন, গবেষণার অবস্থা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মূলত অনার্স মাস্টার্সের ওপর জোর দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। তার বাইরে শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় এমফিল বা পিএইচডি করানো হয়। গবেষণা আগের চেয়ে অনেক ভালো করছে। সব মিলিয়ে তো কিছু সংকট আছেই। আমরা চেষ্টা করছি- তাদের সূচকগুলো (পয়েন্ট) কীভাবে আরো বেশি মার্কস পাওয়া যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে। সবাই সেই প্রচেষ্টায় কাজ করে যাচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও গণযোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি নিয়ে কথা বলা আমার জন্য বিব্রতকর। তবে আমি যেটা বলবো, ২০১৬ সালে তো বিশ্ববিদ্যালয় এক হাজারের মধ্যেই ছিল। কিন্তু এখন তো সেটার মধ্যেও নেই। কেন নেই প্রশাসন বলতে পারবে। আগের তুলনায় বাজেট বেড়েছে, সুযোগ-সুবিধা বেড়েছে। এখন প্রশাসন বিষয়টি আমলে নিয়ে কাজ করলেই হয়তো ভালো কিছু হবে আশা করি।
বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আকতারুজ্জামান বলেন, আমরা বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে কেন আসতে পারছি না, তা খুঁজে বের করেছি। সংস্থাগুলো যে সূচকে বিশ্ববিদ্যালয় র্যাঙ্কিং করে সেই সূচকগুলোতে আমাদের পয়েন্ট ওঠে না। সে ক্ষেত্রে আমাদের অনেক সময় লাগবে। আরো বেশকিছু সংযোজন লাগবে। যেমন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব আয়, অনেক মিলিয়ন লাগে। কিন্তু আমরা তো চলি এখনো সরকারের বাজেট দিয়ে। এর বাইরে বিভিন্ন তহবিল লাগে বিভিন্ন কাজে। আরেকটি বিদেশি ছাত্রের পরিমাণ জানতে চাওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি ছাত্রের পরিমাণ শুরু থেকেই অনেক কম। আরেকটা বড় বিষয়- যেখানে আমরা একশ’র মধ্যে পেয়েছি মাত্র ষোলো। যেটা সামগ্রিক শিক্ষার পরিবেশ। শ্রেণিকক্ষ সেমিনার, লাইব্রেরি, পর্যাপ্ত ল্যাব সুবিধা আমাদের এখানে নেই। দেশের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেসব সুবিধা দিতে পারে শিক্ষার্থীদের আমরা সেটা দিতে পারি না। গবেষণা বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, গবেষণা কম হচ্ছে না। এটা বিশ্ববিদ্যালয়কে অপমান করার জন্য অনেকে বলে। এ বিষয়গুলো কাটিয়ে উঠতে পারলেই আমরা র্যাঙ্কিংয়ে আসতে পারবো।
No comments