মুখে টেপ লাগিয়ে ঘুমান এ গায়িকা!
মুখে
স্কচটেপ লাগিয়ে ঘুমানো- ব্যাপারটি আপনার কাছে হাস্যকর বা উদ্ভটই মনে হতে
পারে। তবে এ কাজটিই করছেন সযতনে করে যাচ্ছেন ইন্দোনেশিয়ার একজন জনপ্রিয়
গায়িকা। শুধু তিনিই নন, স্বামী-সন্তানকেও অভ্যন্ত করেছেন এ কাজে। গত তিন
মাস ধরে চলছে তাদের এ চর্চা।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে ঘুমাতে যাওয়া ওই গায়িকার নাম এনদিয়েন। সম্প্রতি ঘুমানোর এই পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত লিখে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেন তিনি। জনপ্রিয় এই গায়িকার পোস্ট নিয়ে এরপর থেকেই তোলপাড় শুরু হয়।
এনদিয়েন জানান, তারা ঘুমানোর সময় নিয়মিত যেটি অনুশীলন করছেন এর নাম বুতেইকো। গত তিন মাস ধরে ব্যতিক্রমী এই কাজটি করছেন তারা। ঘুমানোর সময় মুখে স্কচটেপ দিয়ে রাখার অর্থ হলো নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নেয়া।
এনদিয়েন দাবি করছেন, এভাবে ঘুমানোর কারণে তার ঘুম আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়। এছাড়া মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে ঘুমালে গলা শুকায় না এবং মুখ থেকে দুর্গন্ধও বের হয় না। সব মিলিয়ে তিনি এটাকে বেশ উপকারী বলছেন।
তার এই দাবি কি আসলেই সত্যি? কিংবা এটা কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?
চিকিৎসকরা বলছেন, যতটা উপকারী বলা হচ্ছে এটা ঠিক ততটা উপকারী নয়। মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে ঘুমানো খুবই বিপজ্জনক। বিশেষ করে শিশুদের জন্য। তাদের যেকোনো কারণে নাকে নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। আর তখন মুখ টেপ দিয়ে বন্ধ থাকলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে।
বুতেইকো কী?
জানা যায়, বুতেইকো পদ্ধতি ১৯৫০ সালে প্রথম মানুষের সামনে আনেন কোনস্টানটিন পেভলোভিচ বোতেইকো নামে একজন সোভিয়েত চিকিৎসক। বিশেষ করে অ্যাজমার চিকিৎসায় শ্বাসপ্রশ্বাসভিত্তিক এ পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন তিনি। তার নামেই এটির নামকরণ করা হয়।
আন্তর্জাতিক বুতেইকো ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা প্যাট্রিক ম্যাককেউন জানান, ঘুমের সমস্যা—বিশেষ করে অ্যাপনিয়া, যাতে ঘুমের সময় মানুষের শ্বাসনালিতে নিশ্বাস আটকে যায় ও ঘুমের সমস্যা হয়, নাক ডাকা তৈরি হয়—এসব সমস্যায় বুতেইকো কার্যকর।
কী বলছেন চিকিৎসকরা
এ পদ্ধতির ব্যাপারে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন অন্য চিকিৎসকরা। মিশিগানের নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ক্যাথলিন ইয়ারেমচাক বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি কেবল নাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে পারছেন কি না, সেটা আগে দেখতে হবে। বেশিরভাগ মানুষই নাক দিয়ে শ্বাসকার্য চালাতে অসুবিধা না হলে, নিজ থেকে কখনো মুখ খোলে না। মুখ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালানোর মানে হলো, তাদের নাকে সমস্যা আছে।’
এ রকম ক্ষেত্রে মুখ বন্ধ রাখলেই নাকের সমস্যা দূর হবে না বলে জানান এ চিকিৎসক।
নাক-কান-গলা বিষয়ক ব্রিটিশ মেডিকেল সংস্থা ইএনটির সভাপতি নির্মল কুমার বলেন, ‘চিকিৎসাশাস্ত্রে বুতেইকো পদ্ধতির কার্যকারিতা সম্বন্ধে সন্তুষ্ট হওয়ার মতো প্রমাণ বা তথ্য-উপাত্ত নেই। তবে শুধু বুতেইকো নয়, শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের অন্য যেকোনো পদ্ধতিই অ্যাজমা ও শ্বাসনালি-সংক্রান্ত জটিলতার জন্য বিভিন্ন মাত্রায় উপকারী। ফলে স্বাভাবিকভাবে কেউ বুতেইকো করে উপকার পেতেই পারেন। কিন্তু এটি বুতেইকোর কৃতিত্ব নয়।’
দুই চিকিৎসকই টেপ দিয়ে মুখ আটকে এভাবে ঘুমানো বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে করেন।
তবে বুতেইকো ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা ম্যাককেউন জানান, কেউ যদি অসুস্থ হয়, আর তার বমি করার দরকার পড়ে, তখন কিন্তু মুখে টেপ লাগিয়ে রাখলে তা করা সম্ভব হবে না। এতে করে শ্বাসরোধ হয়ে মারা যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
শিশুদের ক্ষেত্রে বুতেইকো পদ্ধতি ব্যবহার না করার ব্যাপারে আরো বেশি করে সতর্ক করেন এ চিকিৎসক।
নির্মল কুমার বলেন, ‘কেবল নাক দিয়ে শ্বাসকাজ চালানো শিশুর জন্য অনেক কঠিন। এতে করে সে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। এ থেকে শিশুর মৃত্যুঝুঁকিও তৈরি হতে পারে।’
এ ছাড়া সমস্যা বোধ করলে বড়রা হয়তো ঘুম ভেঙে নিজের মুখ থেকে টেপ খুলে ফেলতে পারবে, কিন্তু শিশুরা তা পারবে না। আবার এমন অনেক সমস্যাও থাকে শিশুদের, যেসব ক্ষেত্রে তাদের মুখ দিয়েই কেবল শ্বাসকার্য চলে। এমন শিশুদের ক্ষেত্রে বুতেইকো পদ্ধতি ব্যবহার করা হলে, তারা মারাও যেতে পারে।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে ঘুমাতে যাওয়া ওই গায়িকার নাম এনদিয়েন। সম্প্রতি ঘুমানোর এই পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত লিখে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেন তিনি। জনপ্রিয় এই গায়িকার পোস্ট নিয়ে এরপর থেকেই তোলপাড় শুরু হয়।
এনদিয়েন জানান, তারা ঘুমানোর সময় নিয়মিত যেটি অনুশীলন করছেন এর নাম বুতেইকো। গত তিন মাস ধরে ব্যতিক্রমী এই কাজটি করছেন তারা। ঘুমানোর সময় মুখে স্কচটেপ দিয়ে রাখার অর্থ হলো নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নেয়া।
এনদিয়েন দাবি করছেন, এভাবে ঘুমানোর কারণে তার ঘুম আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়। এছাড়া মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে ঘুমালে গলা শুকায় না এবং মুখ থেকে দুর্গন্ধও বের হয় না। সব মিলিয়ে তিনি এটাকে বেশ উপকারী বলছেন।
তার এই দাবি কি আসলেই সত্যি? কিংবা এটা কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো?
চিকিৎসকরা বলছেন, যতটা উপকারী বলা হচ্ছে এটা ঠিক ততটা উপকারী নয়। মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে ঘুমানো খুবই বিপজ্জনক। বিশেষ করে শিশুদের জন্য। তাদের যেকোনো কারণে নাকে নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। আর তখন মুখ টেপ দিয়ে বন্ধ থাকলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে।
বুতেইকো কী?
জানা যায়, বুতেইকো পদ্ধতি ১৯৫০ সালে প্রথম মানুষের সামনে আনেন কোনস্টানটিন পেভলোভিচ বোতেইকো নামে একজন সোভিয়েত চিকিৎসক। বিশেষ করে অ্যাজমার চিকিৎসায় শ্বাসপ্রশ্বাসভিত্তিক এ পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন তিনি। তার নামেই এটির নামকরণ করা হয়।
আন্তর্জাতিক বুতেইকো ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা প্যাট্রিক ম্যাককেউন জানান, ঘুমের সমস্যা—বিশেষ করে অ্যাপনিয়া, যাতে ঘুমের সময় মানুষের শ্বাসনালিতে নিশ্বাস আটকে যায় ও ঘুমের সমস্যা হয়, নাক ডাকা তৈরি হয়—এসব সমস্যায় বুতেইকো কার্যকর।
কী বলছেন চিকিৎসকরা
এ পদ্ধতির ব্যাপারে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন অন্য চিকিৎসকরা। মিশিগানের নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ ক্যাথলিন ইয়ারেমচাক বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি কেবল নাক দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে পারছেন কি না, সেটা আগে দেখতে হবে। বেশিরভাগ মানুষই নাক দিয়ে শ্বাসকার্য চালাতে অসুবিধা না হলে, নিজ থেকে কখনো মুখ খোলে না। মুখ দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালানোর মানে হলো, তাদের নাকে সমস্যা আছে।’
এ রকম ক্ষেত্রে মুখ বন্ধ রাখলেই নাকের সমস্যা দূর হবে না বলে জানান এ চিকিৎসক।
নাক-কান-গলা বিষয়ক ব্রিটিশ মেডিকেল সংস্থা ইএনটির সভাপতি নির্মল কুমার বলেন, ‘চিকিৎসাশাস্ত্রে বুতেইকো পদ্ধতির কার্যকারিতা সম্বন্ধে সন্তুষ্ট হওয়ার মতো প্রমাণ বা তথ্য-উপাত্ত নেই। তবে শুধু বুতেইকো নয়, শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের অন্য যেকোনো পদ্ধতিই অ্যাজমা ও শ্বাসনালি-সংক্রান্ত জটিলতার জন্য বিভিন্ন মাত্রায় উপকারী। ফলে স্বাভাবিকভাবে কেউ বুতেইকো করে উপকার পেতেই পারেন। কিন্তু এটি বুতেইকোর কৃতিত্ব নয়।’
দুই চিকিৎসকই টেপ দিয়ে মুখ আটকে এভাবে ঘুমানো বিপজ্জনক হতে পারে বলে মনে করেন।
তবে বুতেইকো ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা ম্যাককেউন জানান, কেউ যদি অসুস্থ হয়, আর তার বমি করার দরকার পড়ে, তখন কিন্তু মুখে টেপ লাগিয়ে রাখলে তা করা সম্ভব হবে না। এতে করে শ্বাসরোধ হয়ে মারা যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
শিশুদের ক্ষেত্রে বুতেইকো পদ্ধতি ব্যবহার না করার ব্যাপারে আরো বেশি করে সতর্ক করেন এ চিকিৎসক।
নির্মল কুমার বলেন, ‘কেবল নাক দিয়ে শ্বাসকাজ চালানো শিশুর জন্য অনেক কঠিন। এতে করে সে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। এ থেকে শিশুর মৃত্যুঝুঁকিও তৈরি হতে পারে।’
এ ছাড়া সমস্যা বোধ করলে বড়রা হয়তো ঘুম ভেঙে নিজের মুখ থেকে টেপ খুলে ফেলতে পারবে, কিন্তু শিশুরা তা পারবে না। আবার এমন অনেক সমস্যাও থাকে শিশুদের, যেসব ক্ষেত্রে তাদের মুখ দিয়েই কেবল শ্বাসকার্য চলে। এমন শিশুদের ক্ষেত্রে বুতেইকো পদ্ধতি ব্যবহার করা হলে, তারা মারাও যেতে পারে।
No comments