একতরফা সিদ্ধান্ত ভারতের জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে
ভারতের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর রোববার চীন সফর শুরু করেছেন।
সফরের পরিকল্পনা আগেই ছিল। কিন্তু ভারত সম্প্রতি একতরফাভাবে
ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছে এবং মুসলিম
সংখ্যাগুরু এই রাজ্যটির স্বায়ত্বশাসনের স্ট্যাটাস বাতিল করেছে। নয়াদিল্লীর
ঘোষণার আওতায় ভারত-চীনের মধ্যে অমীমাংসিত এলাকাও পড়েছে এবং এ কারণে
প্রতিক্রিয়াও ব্যক্ত করেছে চীন। অনেকেই এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে এবং
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশির সাম্প্রতিক সফরের সাথে
জড়িত হিসেবে মনে করছেন।
পাকিস্তান ঘোষণা দিয়েছে যে, ভারতের সাথে তারা কূটনৈতিক তৎপরতা কমিয়ে আনবে এবং বাণিজ্য সম্পর্ক স্থগিত করেছে তারা। কাশ্মীর ইস্যু অত্যন্ত জটিল এবং ভারতের পদক্ষেপে চীনের স্বার্থেরও ক্ষতি হবে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশ্যেই বলেছে যে, ভারতের সিদ্ধান্ত ‘গ্রহণযোগ্য নয়’।
সীমান্ত ইস্যুতে নয়াদিল্লি খুবই বেপরোয়া। তারা একতরফা পদক্ষেপ নেয়া অব্যাহত রেখেছে এবং এর মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ভঙ্গ করছে এবং আঞ্চলিক পরিস্থিতির উপর প্রভাব পড়ছে। তাদের পদক্ষেপে আশেপাশের দেশের স্বার্থের ক্ষতি হচ্ছে, কিন্তু তারা চাচ্ছে যাতে এই দেশগুলো তাদের উসকানিকে সহ্য করে এবং ভারতের সিদ্ধান্তগুলো মেনে নেয়।
যে কোন দেশেই একটা জাতিগত বা ধর্মভিত্তিক অঞ্চলের স্বায়ত্বশাসনকে বদলে কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে নিয়ে যাওয়াটা একটা চরম স্পর্শকাতর বিষয়। কাশ্মীর একটি বিতর্কিত এলাকা, যেটা নিয়ে বিংশ শতাব্দীতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তিন তিনবার যুদ্ধ হয়েছে। ভারতের পদক্ষেপে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকিস্তান। এটা ভাবাই যায় না যে, পাকিস্তান এখানে পাল্টা পদক্ষেপ না নিয়ে চুপ থাকবে।
পাকিস্তান এবং ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মুসলিমদের বিরোধিতার হয়তো বাস্তব পরিণতি রয়েছে। মুসলিমরা যদি সঙ্ঘবদ্ধভাবে ভারতের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা ভারতের পক্ষে কঠিন হয়ে যাবে। এই ধরনের পরিস্থিতি সামলানোর মতো রাজনৈতিক ও অন্যান্য সম্পদ ভারতের আছে বলে মনে হয় না।
নয়াদিল্লী অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাসী। ভারতের ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচন মোদি প্রশাসনের ক্ষমতা ও স্ট্যাটাসকে সংহত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোও ভারতের সাথেই রয়েছে। ভারত আরও মনে করেছে চীন যেহেতু বাণিজ্য যুদ্ধ এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নিয়ে ব্যস্ত, আর সে কারণেই সীমান্ত ইস্যুতে পদক্ষেপ নেয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।
কিন্তু বড় কোন দেশের জন্য এটা আদর্শ কৌশল হতে পারে না। নিজেদের উত্থানের জন্য ভারতের বন্ধুসুলভ প্রতিবেশী দরকার। ভারত যদি ভূ-রাজনৈতিক কূটকৌশল ও একতরফা নীতিতে এমনকি পার পেয়েও যায়, এর পরও তাদের পদক্ষেপ প্রচুর ঘৃণার জন্ম দেবে। আর দক্ষিণ এশিয়ায় একতরফা নীতি যে বিপজ্জনক, এটার উল্লেখ না হয় না-ই করলাম।
পাকিস্তান একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ এবং তাদের স্থানীয় শক্তিগুলোর উপর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর এক ধরনের কর্তৃত্বও রয়েছে। প্রতিবেশী সঙ্কুচিত করার চেষ্টা না করাটাই ভারতের জন্য বিজ্ঞের কাজ হবে। ভারত হয়তো মনে করেছে যে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মেরামতের আগের চেষ্টায় স্থানীয় ইসলামী চরমপন্থী গ্রুপগুলোর সহিংস হামলা বন্ধ হয়নি। আর সে কারণেই পূর্ণমাত্রায় কঠোর পদক্ষেপের দিকে তারা এগিয়েছে। কিন্তু একটি বিষয় নিশ্চিত: ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা থাকলে একটা স্পর্শকাতর পরিস্থিতি আরও জটিলই হয়ে উঠবে।
কাশ্মীরে আঞ্চলিক, জাতিগত ও ধর্মীয় বিবাদগুলো একত্র হয়েছে। এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ অঞ্চল নয়। কাশ্মীরের স্ট্যাটাস নিয়ে প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘ। এই অঞ্চলকে পরিবর্তনের জন্য ভারতের বলপ্রয়োগকারী পদক্ষেপ অত মসৃণভাবে চলে যাবে না। নয়াদিল্লীর একতরফা সিদ্ধান্তের ব্যাপারে পুরনো ও নতুন ঘৃণার কারণে তাদের চলার পথে ফাঁদ তৈরি হবে।
নয়াদিল্লী যদি তাদের বেপরোয়া কূটনৈতিক পদক্ষেপকে সমর্থনের জন্য জাতীয়তাবাদকে ব্যবহার করে, তাহলে একটা অশুভ চক্রের জন্ম হবে। ভারতকে ক্রমাগত মৌলবাদী হয়ে উঠতে হবে সেক্ষেত্রে।
জাতীয়তাবাদী ভারতের কোন ভবিষ্যৎ নেই। এশিয়ার সাধারণ ভূ-রাজনৈতিক প্যাটার্ন এ ধরনের ভারতকে মেনে নেবে না। বন্ধুপ্রতীম ও যৌক্তিক শক্তির মতো আচরণ করলে ভারতের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে।
পাকিস্তান ঘোষণা দিয়েছে যে, ভারতের সাথে তারা কূটনৈতিক তৎপরতা কমিয়ে আনবে এবং বাণিজ্য সম্পর্ক স্থগিত করেছে তারা। কাশ্মীর ইস্যু অত্যন্ত জটিল এবং ভারতের পদক্ষেপে চীনের স্বার্থেরও ক্ষতি হবে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশ্যেই বলেছে যে, ভারতের সিদ্ধান্ত ‘গ্রহণযোগ্য নয়’।
সীমান্ত ইস্যুতে নয়াদিল্লি খুবই বেপরোয়া। তারা একতরফা পদক্ষেপ নেয়া অব্যাহত রেখেছে এবং এর মাধ্যমে স্থিতিশীলতা ভঙ্গ করছে এবং আঞ্চলিক পরিস্থিতির উপর প্রভাব পড়ছে। তাদের পদক্ষেপে আশেপাশের দেশের স্বার্থের ক্ষতি হচ্ছে, কিন্তু তারা চাচ্ছে যাতে এই দেশগুলো তাদের উসকানিকে সহ্য করে এবং ভারতের সিদ্ধান্তগুলো মেনে নেয়।
যে কোন দেশেই একটা জাতিগত বা ধর্মভিত্তিক অঞ্চলের স্বায়ত্বশাসনকে বদলে কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে নিয়ে যাওয়াটা একটা চরম স্পর্শকাতর বিষয়। কাশ্মীর একটি বিতর্কিত এলাকা, যেটা নিয়ে বিংশ শতাব্দীতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তিন তিনবার যুদ্ধ হয়েছে। ভারতের পদক্ষেপে বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকিস্তান। এটা ভাবাই যায় না যে, পাকিস্তান এখানে পাল্টা পদক্ষেপ না নিয়ে চুপ থাকবে।
পাকিস্তান এবং ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মুসলিমদের বিরোধিতার হয়তো বাস্তব পরিণতি রয়েছে। মুসলিমরা যদি সঙ্ঘবদ্ধভাবে ভারতের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে, তাহলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা ভারতের পক্ষে কঠিন হয়ে যাবে। এই ধরনের পরিস্থিতি সামলানোর মতো রাজনৈতিক ও অন্যান্য সম্পদ ভারতের আছে বলে মনে হয় না।
নয়াদিল্লী অতিমাত্রায় আত্মবিশ্বাসী। ভারতের ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচন মোদি প্রশাসনের ক্ষমতা ও স্ট্যাটাসকে সংহত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোও ভারতের সাথেই রয়েছে। ভারত আরও মনে করেছে চীন যেহেতু বাণিজ্য যুদ্ধ এবং বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নিয়ে ব্যস্ত, আর সে কারণেই সীমান্ত ইস্যুতে পদক্ষেপ নেয়ার এখনই উপযুক্ত সময়।
কিন্তু বড় কোন দেশের জন্য এটা আদর্শ কৌশল হতে পারে না। নিজেদের উত্থানের জন্য ভারতের বন্ধুসুলভ প্রতিবেশী দরকার। ভারত যদি ভূ-রাজনৈতিক কূটকৌশল ও একতরফা নীতিতে এমনকি পার পেয়েও যায়, এর পরও তাদের পদক্ষেপ প্রচুর ঘৃণার জন্ম দেবে। আর দক্ষিণ এশিয়ায় একতরফা নীতি যে বিপজ্জনক, এটার উল্লেখ না হয় না-ই করলাম।
পাকিস্তান একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ এবং তাদের স্থানীয় শক্তিগুলোর উপর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর এক ধরনের কর্তৃত্বও রয়েছে। প্রতিবেশী সঙ্কুচিত করার চেষ্টা না করাটাই ভারতের জন্য বিজ্ঞের কাজ হবে। ভারত হয়তো মনে করেছে যে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মেরামতের আগের চেষ্টায় স্থানীয় ইসলামী চরমপন্থী গ্রুপগুলোর সহিংস হামলা বন্ধ হয়নি। আর সে কারণেই পূর্ণমাত্রায় কঠোর পদক্ষেপের দিকে তারা এগিয়েছে। কিন্তু একটি বিষয় নিশ্চিত: ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা থাকলে একটা স্পর্শকাতর পরিস্থিতি আরও জটিলই হয়ে উঠবে।
কাশ্মীরে আঞ্চলিক, জাতিগত ও ধর্মীয় বিবাদগুলো একত্র হয়েছে। এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ অঞ্চল নয়। কাশ্মীরের স্ট্যাটাস নিয়ে প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘ। এই অঞ্চলকে পরিবর্তনের জন্য ভারতের বলপ্রয়োগকারী পদক্ষেপ অত মসৃণভাবে চলে যাবে না। নয়াদিল্লীর একতরফা সিদ্ধান্তের ব্যাপারে পুরনো ও নতুন ঘৃণার কারণে তাদের চলার পথে ফাঁদ তৈরি হবে।
নয়াদিল্লী যদি তাদের বেপরোয়া কূটনৈতিক পদক্ষেপকে সমর্থনের জন্য জাতীয়তাবাদকে ব্যবহার করে, তাহলে একটা অশুভ চক্রের জন্ম হবে। ভারতকে ক্রমাগত মৌলবাদী হয়ে উঠতে হবে সেক্ষেত্রে।
জাতীয়তাবাদী ভারতের কোন ভবিষ্যৎ নেই। এশিয়ার সাধারণ ভূ-রাজনৈতিক প্যাটার্ন এ ধরনের ভারতকে মেনে নেবে না। বন্ধুপ্রতীম ও যৌক্তিক শক্তির মতো আচরণ করলে ভারতের ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হবে।
No comments