‘আবাহনী-মোহামেডান লড়াই হয়, মাঝখানে শেখ জামাল জিতে যায়’
পিএসসি’র
সাবেক চেয়ারম্যান ড. সা’দত হুসাইন রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপের মাধ্যমে
চলমান সঙ্কটের সুরাহার পরামর্শ দিয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাতে বেসরকারি টিভি
চ্যানেল ‘টোয়েন্টি ফোর’-এর একটি টক শো-তে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবাই
সংলাপের কথা বলছি। এবং সংলাপ সমঝোতার দাবি নিয়েই অবরোধ ডাকা হয়েছে। কিন্তু
এখন আমার সন্দেহ হচ্ছে দুই গ্রুপের মধ্যে যারা কট্টরপন্থি আছে তারা এই
যুদ্ধাবস্থা বজায় রেখে প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে ধ্বংস করে আধিপত্য
প্রতিষ্ঠা করতে চান। এসব কট্টরপন্থিরা আবার হটকারিও হয়ে থাকে, অসুবিধাটা
হচ্ছে এখানে। এরা যখন কোন মিটিংয়ে বক্তব্য রাখে তখন তারা সোচ্চার ও সরব
বেশি হয়। মিটিংয়ে অন্যদের কথা বলতে দেয় না বলে নানা রকম কটূক্তি করে। অনেক
সময় মিটিংয়ের যে সভাপতি থাকেন তিনিও এসব নিয়ে এতো ঘাঁটেন না। এই দুই গ্রুপ
যদি এই কট্টরপন্থিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় তাহলে আসলেই এটা যুদ্ধের মধ্যে
চলে যাবে। এবং যুদ্ধের মধ্যে চলে গেলে কোন নীতিবোধ, কোন নৈতিকতা, কোন
মানবিকতা বোধ এগুলো কিছু থাকে না। আমরা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে জড়িত ছিলাম।
আমরাও যে মুক্তিযুদ্ধে একদম সহিংসতা থেকে দূরে ছিলাম তাও না। আমাদের বন্ধু-
বান্ধবরা বলেছে আমরা অমানুষ হয়ে গেছি যুদ্ধের সময়। আমরা সকালে যার সঙ্গে
নাস্তা করেছি বিকালে হয়তো তাকে মেরে ফেলেছি। যুদ্ধ মানেই বীভৎস। এই যুদ্ধের
মানসিকতাটা দুই গ্রুপের মধ্যে এসেছে। আমার ভয় লাগছে, দেখছি সেই ১৯৭৪ সালের
ডিসেম্বর-নভেম্বরের দিকে এখন যারা মন্ত্রিসভায় আছেন তাদের গ্রুপ তখন
সাংঘাতিক ভাবে এই ধরনের কান্ড করছিল। আবার তাদেরকে সাংঘাতিক ভাবে অবদমিত করা
হচ্ছিল, প্রতিহত করা হচ্ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়
নাই। আমি অনুরোধ করবো ওই ধরনের পরিস্থিতিতে জাতিকে যেন নিয়ে যাওয়া না হয়।
একটা যুদ্ধাবস্থার মধ্য দিয়ে এটা যাতে সমাধানের চেষ্টা না করা হয়। নিজেদের
মধ্যে আলোচনা করে এটা সমাধান করতে হবে। এই জন্য দুই পক্ষকে ছাড় দিতে হবে।
কেউ যদি ছাড় না দেয় তাহলে হবে না। সেক্ষেত্রে ক্ষমতাধর একটি তৃতীয় গোষ্ঠী
লাগবে। আর যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে অনেক সময় দেখা যায়, আবাহনী-মোহামেডান
লড়াই হয়, মাঝখানে শেখ জামাল জিতে যায়। একই টক শো-তে সমাজ বিজ্ঞানী মীজানুর
রহমান শেলীও সংলাপের মাধ্যমে সঙ্কটের সমাধানের পক্ষে মত দেন। তিনি বলেন,
সারা দুনিয়াতেই দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সবসময়ই
আলোচনার পথ খোলা রাখা হয়। আমাদের এখানেও সংলাপের পথ খোলা রাখতে হবে।
No comments