আফ্রিদিময় ম্যাচে বড় জয় পাকিস্তানের

এমন ফর্মে থাকলে অধিনায়কত্ব নিয়ে কে মাথা ঘামায়? অধিনায়কত্বের আশৈশব আকাঙ্ক্ষা আর ইউনুস খানের সঙ্গে বিবাদের গুজব—সব মিলিয়ে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক অধিনায়কত্ব বিতর্কে শহীদ আফ্রিদির হাত দেখছিলেন অনেকেই। আবুধাবিতে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে আফ্রিদির অলরাউন্ড পারফরম্যান্স আর ইউনুসের ‘শূন্য’ প্রায় স্তিমিত বিতর্কটিকে আরও এক দফা উসকে দিতে পারে। কিন্তু যেভাবে খেলছেন, তাতে অযথা অধিনায়কত্বের বোঝা এই অলরাউন্ডার হয়তো নিজেও আর নিতে চাইবেন না!
নিউজিল্যান্ডকে ১৩৮ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেছে পাকিস্তান। পাকিস্তান ইনিংসের মাঝামাঝি থেকে দিনটি ছিল শুধুই আফ্রিদির। টস জিতে ইউনুস বলেছিলেন, এই উইকেটে জিততে ২৭০-২৮০ রান প্রয়োজন। ইনিংসের প্রথম ৯ বল শেষে পাকিস্তানের রান ২ উইকেটে ০! ২৩.২ ওভারে যখন ৭৫ রানে নেই ৪ উইকেট, দুই শকেও মনে হচ্ছিল অসম্ভব। আফ্রিদি-বীরত্বের শুরু এর পরই। ওয়ানডে অভিষেকের প্রায় দুই বছর পর দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা খালিদ লতিফের (৬৪) সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে গড়েছেন ১০১ রানের জুটি, যাতে আফ্রিদিরই ৭০! ৫০ বলের ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা। সবচেয়ে ইতিবাচক দিক, এদিন তাঁর ইনিংসটি ছিল নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসনের অপূর্ব প্রদর্শনী, ছিল না সব বলে তেড়েফুঁড়ে আক্রমণ করার প্রবণতা। টি-টোয়েন্টিতে সর্বশেষ তিন ম্যাচেই ফিফটি করেছেন, কিন্তু ওয়ানডে ফিফটি পেলেন প্রায় ২২ মাস পর!
আফ্রিদির কাছ থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়ে কামরান আকমল ও আব্দুর রাজ্জাক অধিনায়ককে এনে দেন কাঙ্ক্ষিত স্কোর। সপ্তম উইকেটে মাত্র ৪৩ বলে দুজন গড়েন ৮৬ রানের জুটি, স্ট্রাইক রেট ২০০! বেশি আগ্রাসী ছিলেন আকমল, উইকেটের চারদিকে শট খেলে কিউই বোলারদের নাজেহাল করে ছেড়েছেন এই উইকেটকিপার। ৪৩ বলে ৬৭ রান করেছেন আকমল, রাজ্জাক ২০ বলে ২৬।
কিউই ইনিংসে দুই অঙ্কের দেখা পেয়েছেন মাত্র তিন ব্যাটসম্যান। প্রায় ১১ ওভার বাকি থাকতেই নিউজিল্যান্ড শেষ ১৪৯ রানে। ইনিংসের শুরুতে উমর গুলের জোড়া আঘাতের ধাক্কা আর সামলাতে পারেনি ভেট্টোরির দল। দুই ওপেনার অ্যারন রেডমন্ড (৫১) ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের (২১) পর কিছুটা প্রতিরোধ গড়তে পেরেছেন কেবল ভেট্টোরি (৩৮)। কিউই অধিনায়কেরটিসহ এক ওভারেই ২ উইকেট নিয়েছেন ম্যাচসেরা আফ্রিদি। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন সাঈদ আজমল ও রাজ্জাকও। তবে সেরা বোলার ছিলেন নিঃসন্দেহে মোহাম্মদ আমির। ৭ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ১ উইকেট পেয়েছেন, কিন্তু এই ১৭ বছর বয়সীর পেস ও বাউন্সে হাঁসফাস করতে হয়েছে কিউই ব্যাটসম্যানদের।
তারপরও ম্যাচটি ছিল শুধুই আফ্রিদির। ম্যাচ শেষে দুই অধিনায়কও বলেছেন, ‘পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন আফ্রিদিই।

No comments

Powered by Blogger.