আফগান শান্তি প্রক্রিয়ায় ছায়াপাত করে আছে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহাররের প্রশ্ন by উমাইর জামাল
মাত্র
কয়েক দিন আগে তালেবানদের রাজনৈতিক শাখার প্রধান মোল্লা আব্দুল গনি বারদার
চীন ঘুরে এসেছেন। আফগান শান্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানের মধ্যে আরেক
দফা আলোচনার আগে এই সফর অনুষ্ঠিত হলো। এই অগ্রগতির প্রেক্ষাপটে বিষয়গুলোর
বৃহত্তর তাৎপর্য বিশ্লেষণ করা উচিত হবে।
ব্যাপকভাবে বলতে গেলে চলমান আফগান শান্তি প্রক্রিয়া দেশটির সরকারের ব্যাপারে তালেবানের মনোভাব পরিবর্তন করতে পারেনি বা আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতির ব্যাপারে তাদেরকে অবস্থান থেকে টলানো যায়নি। বেশ কয়েক মাসের লবিং ও অসংখ্য বৈঠক করেও তালেবানদের কাছ থেকে কোন ছাড় আদায় করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। তারা এখনো বলছে যে আফগান সরকার অবৈধ এবং যেকোন শান্তি চুক্তির পূর্ব শর্ত হিসেবে অবিলম্বে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার দাবি করছে।
অন্যদিকে, আফগান সরকার ও যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা ছাড় দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তাদের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক বাহিনী প্রত্যাহারের ব্যাপারে স্পষ্ট কোন পরিকল্পনা পাওয়া যায় না। ফলে স্পষ্টতই শান্তি প্রক্রিয়ায় বর্তমান অচলাবস্থার জন্য মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের প্রশ্নটি বড় কারণ হয়ে উঠেছে।
দুটি বড় ও অনেকগুলো ছোট কারণে বর্তমান অচলাবস্থা সহসা নিরসন হবে বলে মনে হয় না। প্রথমত, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক প্রশ্নে আফগানিস্তানে বড় দুটি রাজনৈতিক গ্রুপের উত্থান ঘটেছে। রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকার জন্য আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি ব্যাপকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। তিনি জানেন মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা মাত্র তার নেতৃত্বাধীন সরকারের উপর বড় ধরনের আঘাত আসবে এবং তার টিকে থাকা কঠিন হবে।
তালেবানরা আলোচনায় আফগান সরকারকে রাখতে রাজি না হওয়ায় তাদেরকে বাদ দিয়েই যুক্তরাষ্ট্র তালেবানের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা আলোচনা করে ফেলেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রেরও তেমন সুবিধা হয়নি কারণ শান্তি প্রক্রিয়া থেকে বাইরে রাখার কারণে ওয়াশিংটনের উপর চাপ সৃষ্টি করছে আফগান সরকার। সম্প্রতি একজন শীর্ষ আফগান কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জালমি খলিলজাদকে অভিযুক্ত করেন আফগান সরকারকে ‘অবৈধ’ করার চেষ্টা চালানোর জন্য। তিনি এমনও বলেন যে খলিলজাদ ভাইসরয়ের মতো কাজ করছেন। এরই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান সরকার শান্তি প্রক্রিয়ায় ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করলেও যুক্তরাষ্ট্র তালেবানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরে সফলতা আনতে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে আফগানিস্তানের অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করতে চাচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, আফগান তালেবান ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল ব্যাপকভাবে কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু করেছে। তারা বিশেষ করে চীন ও রাশিয়া এবং পাকিস্তান ও ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে তালেবানরা মস্কোতে অন্যান্য আফগান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এক সম্মেলনে অংশ নেয়। সেখানে অবিলম্বে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়েছে।
তাছাড়া এমন এক সময় তালেবানরা চীন সফরে গেলো যখন যুক্তরাষ্ট্র আরেক দফা আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। চীনে তালেবানের রাজনৈতিক মুখপাত্র বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র সেনাপ্রত্যাহারের সময়সীমা ঘোষণা করলেই আন্ত:আফগান আলোচনা পথ খুলে যাবে। তখনই আমরা ভবিষ্যৎ সরকার ও আন্ত:আফগান আলোচনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।
এই সফরের মধ্য দিয়ে বুঝা যায় আফগানিস্তানের রাজনীতির উপর বেইজিংয়ের প্রভাব শুধু বৃদ্ধিই পায়নি, তালেবানদের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক জোরদার হয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো কোন পক্ষকে সমর্থন দেবে সেটাও স্পষ্ট হয়ে গেছে। আফগানিস্তানের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বুঝতে পারছে যে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই তাদের দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিদায় নেবে। তাই ক্ষমতায় যেতে হলে আঞ্চলিক শক্তিকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা জরুরি।
এতে সহজেই বুঝা যায়, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পাওয়ারব্রোকারদের মধ্যে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ওয়াশিংটন চলে যাওয়ার প্রস্তুতি জোরদার করার সঙ্গে সঙ্গে চীন, রাশিয়া ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলো স্থানীয় রাজনৈতিক গ্রুপগুলোর সঙ্গে কাজ করার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে, যাতে আসন্ন অন্তবর্তীকালটি শান্তিপূর্ণ হয়।
ব্যাপকভাবে বলতে গেলে চলমান আফগান শান্তি প্রক্রিয়া দেশটির সরকারের ব্যাপারে তালেবানের মনোভাব পরিবর্তন করতে পারেনি বা আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর উপস্থিতির ব্যাপারে তাদেরকে অবস্থান থেকে টলানো যায়নি। বেশ কয়েক মাসের লবিং ও অসংখ্য বৈঠক করেও তালেবানদের কাছ থেকে কোন ছাড় আদায় করতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। তারা এখনো বলছে যে আফগান সরকার অবৈধ এবং যেকোন শান্তি চুক্তির পূর্ব শর্ত হিসেবে অবিলম্বে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহার দাবি করছে।
অন্যদিকে, আফগান সরকার ও যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা ছাড় দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও তাদের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক বাহিনী প্রত্যাহারের ব্যাপারে স্পষ্ট কোন পরিকল্পনা পাওয়া যায় না। ফলে স্পষ্টতই শান্তি প্রক্রিয়ায় বর্তমান অচলাবস্থার জন্য মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের প্রশ্নটি বড় কারণ হয়ে উঠেছে।
দুটি বড় ও অনেকগুলো ছোট কারণে বর্তমান অচলাবস্থা সহসা নিরসন হবে বলে মনে হয় না। প্রথমত, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক প্রশ্নে আফগানিস্তানে বড় দুটি রাজনৈতিক গ্রুপের উত্থান ঘটেছে। রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকার জন্য আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি ব্যাপকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। তিনি জানেন মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা মাত্র তার নেতৃত্বাধীন সরকারের উপর বড় ধরনের আঘাত আসবে এবং তার টিকে থাকা কঠিন হবে।
তালেবানরা আলোচনায় আফগান সরকারকে রাখতে রাজি না হওয়ায় তাদেরকে বাদ দিয়েই যুক্তরাষ্ট্র তালেবানের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা আলোচনা করে ফেলেছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রেরও তেমন সুবিধা হয়নি কারণ শান্তি প্রক্রিয়া থেকে বাইরে রাখার কারণে ওয়াশিংটনের উপর চাপ সৃষ্টি করছে আফগান সরকার। সম্প্রতি একজন শীর্ষ আফগান কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত জালমি খলিলজাদকে অভিযুক্ত করেন আফগান সরকারকে ‘অবৈধ’ করার চেষ্টা চালানোর জন্য। তিনি এমনও বলেন যে খলিলজাদ ভাইসরয়ের মতো কাজ করছেন। এরই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও আফগান সরকার শান্তি প্রক্রিয়ায় ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করলেও যুক্তরাষ্ট্র তালেবানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরে সফলতা আনতে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে আফগানিস্তানের অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করতে চাচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, আফগান তালেবান ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল ব্যাপকভাবে কূটনৈতিক যোগাযোগ শুরু করেছে। তারা বিশেষ করে চীন ও রাশিয়া এবং পাকিস্তান ও ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিছুদিন আগে তালেবানরা মস্কোতে অন্যান্য আফগান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এক সম্মেলনে অংশ নেয়। সেখানে অবিলম্বে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়েছে।
তাছাড়া এমন এক সময় তালেবানরা চীন সফরে গেলো যখন যুক্তরাষ্ট্র আরেক দফা আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। চীনে তালেবানের রাজনৈতিক মুখপাত্র বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র সেনাপ্রত্যাহারের সময়সীমা ঘোষণা করলেই আন্ত:আফগান আলোচনা পথ খুলে যাবে। তখনই আমরা ভবিষ্যৎ সরকার ও আন্ত:আফগান আলোচনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।
এই সফরের মধ্য দিয়ে বুঝা যায় আফগানিস্তানের রাজনীতির উপর বেইজিংয়ের প্রভাব শুধু বৃদ্ধিই পায়নি, তালেবানদের সঙ্গেও তাদের সম্পর্ক জোরদার হয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো কোন পক্ষকে সমর্থন দেবে সেটাও স্পষ্ট হয়ে গেছে। আফগানিস্তানের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বুঝতে পারছে যে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই তাদের দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিদায় নেবে। তাই ক্ষমতায় যেতে হলে আঞ্চলিক শক্তিকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা জরুরি।
এতে সহজেই বুঝা যায়, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পাওয়ারব্রোকারদের মধ্যে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ওয়াশিংটন চলে যাওয়ার প্রস্তুতি জোরদার করার সঙ্গে সঙ্গে চীন, রাশিয়া ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলো স্থানীয় রাজনৈতিক গ্রুপগুলোর সঙ্গে কাজ করার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে, যাতে আসন্ন অন্তবর্তীকালটি শান্তিপূর্ণ হয়।
No comments