কাটছাঁট করে বাজেট পাস হচ্ছে আজ
অর্থমন্ত্রীর
২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পক্ষে-বিপক্ষে ব্যাপক আলোচনার পর
অবশেষে বেশকিছু প্রস্তাব কাটছাঁট করে চূড়ান্ত বাজেট পাস হচ্ছে আজ। গতকাল
বাজেটের ওপর বেশ কিছু প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। নিয়ম অনুযায়ী বাজেট পাসের আগে
রাজস্ব অংশের আলোচিত-সমালোচিত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে কিছু বিষয়ে পরিবর্তন
প্রয়োজন হলে প্রধানমন্ত্রী তা সংশোধন করতে অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। পরে
অর্থমন্ত্রী তা সংশোধন করে নিলে অর্থ বিল সংসদে পাস হয়। ‘সমৃদ্ধ আগামীর’
প্রত্যাশা সামনে রেখে আওয়ামী লীগের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বছরে ৫ লাখ ২৩
হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট ১৩ই জুন জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী
আ হ ম মুস্তফা কামাল। এরপর থেকে প্রস্তাবিত বাজেটের বেশকিছু বিষয় নিয়ে
সংসদের ভেতরে ও বাইরে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
বিষয়গুলোর মধ্যে প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় কোম্পানিগুলোকে ক্যাশ ডিভিডেন্ডে উৎসাহিত করার জন্য স্টক ডিভিডেন্ডের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, এ বিষয়ে ব্যবসায়ী সমাজের কেউ কেউ আপত্তি জানিয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের চাহিদা অনুযায়ী পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর জন্য ব্যাংকগুলো নগদ লভ্যাংশ দিতে পারে না। তিনি বলেন, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের এরূপ মন্তব্যের পাশাপাশি পুঁজিবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ আমাদের ভাবতে হবে। কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীও নগদ লভ্যাংশ প্রত্যাশা করে।
তাই নতুন প্রস্তাবে স্টক ডিভিডেন্ডের সঙ্গে সমান হারে নগদ লভ্যাংশও দেয়ার প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী।
বলেন, এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমি প্রস্তাব করছি, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি যে পরিমাণ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করবে, কমপক্ষে তার সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করতে হবে। যদি কোম্পানির ঘোষিত স্টক লভ্যাংশের পরিমাণ নগদ লভ্যাংশের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে স্টক লভ্যাংশের উপর ১০ শতাংশ হারে কর প্রস্তাব করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, নগদ লভ্যাংশ উৎসাহিত করায় আমরা আরো প্রস্তাব করেছিলাম, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি রিটেইন আর্নিং, রিজার্ভ থাকলে অতিরিক্ত রিটেইন আর্নিং, রিজার্ভের উপর অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।
এ বিষয়েও ব্যবসায়ী উদ্যোক্তারা কেউ কেউ আপত্তি করেছেন, মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেই প্রেক্ষাপটে এই ধারাটির আংশিক সংশোধনপূর্বক আমি প্রস্তাব করছি, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি কোনো অর্থবছরে কর পরবর্তী নিট লাভের সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ রিটেইন আর্নিং, ফান্ড, রিজার্ভে স্থানান্তর করতে পারবে। অর্থাৎ কমপক্ষে ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে। যদি কোনো কোম্পানি এরূপ করতে ব্যর্থ হন তাহলে প্রতিবছরে রিটেইন আর্নিং, ফান্ড, রিজার্ভের মোট অর্থের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, উপরোক্ত বিষয়গুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত আয়কর আইনের প্রস্তাবিত ধারাগুলো আমরা বিবেচনা করবো।
ভ্যাটের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু পরিবর্তনের সুপারিশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় পর্যায়ে একাধিক মূসক হার প্রবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। ১৫ শতাংশের নিম্নহারের উপকরণ কর রেয়াত দেয়ার সুযোগ না থাকায় ব্যবসায়ীরা হ্রাসকৃত হারের পরিবর্তে উপকরণ কর গ্রহণ করে ১৫ শতাংশ হারে কর প্রদানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য দাবি করেছে।
হ্রাসকৃত হারের পাশাপাশি কেউ চাইলে যেন ১৫ শতাংশ কর দিয়ে রেয়াত পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারে আইনে সেই বিধান আনার প্রস্তাব করছি।
দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে তাঁত শিল্পে ব্যবহৃত সুতা শিল্পের উপর ৫ শতাংশ মূসকের পরিবর্তে প্রতি কেজি সুতায় ৪ টাকা হারে সুনির্দিষ্ট করের প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশীয় শিল্পের প্রতিরক্ষণ, প্রণোদনা প্রদানে প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে শুল্কহার হ্রাস-বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে এর ফলে দেশীয় কাগজ ও গ্যাস উৎপাদনকারী শিল্পসহ অন্যান্য শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। দেশীয় মুদ্রণ শিল্পের প্রণোদনা প্রদান ও বন্ড ব্যবস্থার অপব্যবহার রোধকল্পে দেশে উৎপন্ন হয় না এমন পেপারগুলোর শুল্কহার যৌক্তিক করা হবে। এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানি পর্যায়ে কিছু ক্ষেত্রে শুল্কহার পুননির্ধারণ করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
জানা গেছে, নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকের টিআইএন (কর শনাক্তকরণ নম্বর) নেয়ার বাধ্যবাধকতা তুলে নেয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর আবেদনের পর সরকার এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এছাড়া আরো কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব পরিবর্তন আনা হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে অগ্রিম কর বাবদ যে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিলো তা বাদ দেয়া হচ্ছে। বাতিল নয়, কিছুটা কমিয়ে নির্ধারণ করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যবসা) ও ভার্চুয়াল বিজনেস বা অনলাইনে পণ্য বেচাকেনাসহ বেশকিছু খাতের ভ্যাট। নতুন বাজেটে এসব খাতে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে সিমেন্টের কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১৫ শতাংশের পাশাপাশি ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ধরা হয়েছে। ফলে এ খাতে নতুন করে ভ্যাট দাঁড়াবে ২০ শতাংশ। এতে ব্যাগপ্রতি সিমেন্টের দাম ৪২ টাকা বাড়বে। বাজেটে রড শিল্পের ওপর ৬৫০ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এর প্রভাবে টনপ্রতি রডের দাম বাড়বে প্রায় ১২ হাজার টাকা। এতে মধ্যবিত্তের গৃহনির্মাণে খরচ বাড়বে, একই সঙ্গে সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প বিশেষ করে সরকারের মেগা প্রকল্প ও আবাসন খাত সমস্যায় পড়বে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এবং একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশার কথা ভেবে এ খাতে অগ্রিম আয়কর তুলে নেয়া হতে পারে।
জানা গেছে, ব্যাপক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সঞ্চয়পত্রে বর্ধিত উৎসে কর প্রত্যাহার করা হতে পারে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এবারের বাজেটে সবচেয়ে সমালোচিত বিষয় এটি। বাড়তি এই কর আরোপের ফলে সমাজের মধ্যবিত্ত, অবসরভোগী ও ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের আয়ের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়বে। এটি নিয়ে সংসদে সরকার দলীয় সদস্যরাও ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা ও দাবি উত্থাপন করেছেন যাতে এটি চূড়ান্তভাবে আরোপ করা না হয়। তাই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর বর্ধিত উৎসে কর প্রত্যাহার করা হতে পারে।
বিষয়গুলোর মধ্যে প্রস্তাবিত বাজেটে পুঁজিবাজারের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষায় কোম্পানিগুলোকে ক্যাশ ডিভিডেন্ডে উৎসাহিত করার জন্য স্টক ডিভিডেন্ডের ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, এ বিষয়ে ব্যবসায়ী সমাজের কেউ কেউ আপত্তি জানিয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের চাহিদা অনুযায়ী পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর জন্য ব্যাংকগুলো নগদ লভ্যাংশ দিতে পারে না। তিনি বলেন, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের এরূপ মন্তব্যের পাশাপাশি পুঁজিবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ আমাদের ভাবতে হবে। কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীও নগদ লভ্যাংশ প্রত্যাশা করে।
তাই নতুন প্রস্তাবে স্টক ডিভিডেন্ডের সঙ্গে সমান হারে নগদ লভ্যাংশও দেয়ার প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী।
বলেন, এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আমি প্রস্তাব করছি, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি যে পরিমাণ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করবে, কমপক্ষে তার সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করতে হবে। যদি কোম্পানির ঘোষিত স্টক লভ্যাংশের পরিমাণ নগদ লভ্যাংশের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে স্টক লভ্যাংশের উপর ১০ শতাংশ হারে কর প্রস্তাব করতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, নগদ লভ্যাংশ উৎসাহিত করায় আমরা আরো প্রস্তাব করেছিলাম, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি রিটেইন আর্নিং, রিজার্ভ থাকলে অতিরিক্ত রিটেইন আর্নিং, রিজার্ভের উপর অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।
এ বিষয়েও ব্যবসায়ী উদ্যোক্তারা কেউ কেউ আপত্তি করেছেন, মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেই প্রেক্ষাপটে এই ধারাটির আংশিক সংশোধনপূর্বক আমি প্রস্তাব করছি, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি কোনো অর্থবছরে কর পরবর্তী নিট লাভের সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ রিটেইন আর্নিং, ফান্ড, রিজার্ভে স্থানান্তর করতে পারবে। অর্থাৎ কমপক্ষে ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে। যদি কোনো কোম্পানি এরূপ করতে ব্যর্থ হন তাহলে প্রতিবছরে রিটেইন আর্নিং, ফান্ড, রিজার্ভের মোট অর্থের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, উপরোক্ত বিষয়গুলো বিচার-বিশ্লেষণ করে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত আয়কর আইনের প্রস্তাবিত ধারাগুলো আমরা বিবেচনা করবো।
ভ্যাটের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু পরিবর্তনের সুপারিশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় পর্যায়ে একাধিক মূসক হার প্রবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। ১৫ শতাংশের নিম্নহারের উপকরণ কর রেয়াত দেয়ার সুযোগ না থাকায় ব্যবসায়ীরা হ্রাসকৃত হারের পরিবর্তে উপকরণ কর গ্রহণ করে ১৫ শতাংশ হারে কর প্রদানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য দাবি করেছে।
হ্রাসকৃত হারের পাশাপাশি কেউ চাইলে যেন ১৫ শতাংশ কর দিয়ে রেয়াত পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারে আইনে সেই বিধান আনার প্রস্তাব করছি।
দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে তাঁত শিল্পে ব্যবহৃত সুতা শিল্পের উপর ৫ শতাংশ মূসকের পরিবর্তে প্রতি কেজি সুতায় ৪ টাকা হারে সুনির্দিষ্ট করের প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, দেশীয় শিল্পের প্রতিরক্ষণ, প্রণোদনা প্রদানে প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে শুল্কহার হ্রাস-বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে এর ফলে দেশীয় কাগজ ও গ্যাস উৎপাদনকারী শিল্পসহ অন্যান্য শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। দেশীয় মুদ্রণ শিল্পের প্রণোদনা প্রদান ও বন্ড ব্যবস্থার অপব্যবহার রোধকল্পে দেশে উৎপন্ন হয় না এমন পেপারগুলোর শুল্কহার যৌক্তিক করা হবে। এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানি পর্যায়ে কিছু ক্ষেত্রে শুল্কহার পুননির্ধারণ করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
জানা গেছে, নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকের টিআইএন (কর শনাক্তকরণ নম্বর) নেয়ার বাধ্যবাধকতা তুলে নেয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর আবেদনের পর সরকার এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এছাড়া আরো কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব পরিবর্তন আনা হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে অগ্রিম কর বাবদ যে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিলো তা বাদ দেয়া হচ্ছে। বাতিল নয়, কিছুটা কমিয়ে নির্ধারণ করা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যবসা) ও ভার্চুয়াল বিজনেস বা অনলাইনে পণ্য বেচাকেনাসহ বেশকিছু খাতের ভ্যাট। নতুন বাজেটে এসব খাতে সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে সিমেন্টের কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১৫ শতাংশের পাশাপাশি ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ধরা হয়েছে। ফলে এ খাতে নতুন করে ভ্যাট দাঁড়াবে ২০ শতাংশ। এতে ব্যাগপ্রতি সিমেন্টের দাম ৪২ টাকা বাড়বে। বাজেটে রড শিল্পের ওপর ৬৫০ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। এর প্রভাবে টনপ্রতি রডের দাম বাড়বে প্রায় ১২ হাজার টাকা। এতে মধ্যবিত্তের গৃহনির্মাণে খরচ বাড়বে, একই সঙ্গে সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রকল্প বিশেষ করে সরকারের মেগা প্রকল্প ও আবাসন খাত সমস্যায় পড়বে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এবং একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশার কথা ভেবে এ খাতে অগ্রিম আয়কর তুলে নেয়া হতে পারে।
জানা গেছে, ব্যাপক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সঞ্চয়পত্রে বর্ধিত উৎসে কর প্রত্যাহার করা হতে পারে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এবারের বাজেটে সবচেয়ে সমালোচিত বিষয় এটি। বাড়তি এই কর আরোপের ফলে সমাজের মধ্যবিত্ত, অবসরভোগী ও ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের আয়ের ওপর সরাসরি প্রভাব পড়বে। এটি নিয়ে সংসদে সরকার দলীয় সদস্যরাও ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা ও দাবি উত্থাপন করেছেন যাতে এটি চূড়ান্তভাবে আরোপ করা না হয়। তাই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর বর্ধিত উৎসে কর প্রত্যাহার করা হতে পারে।
No comments