থাইল্যান্ডে ৮১ মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে পরোয়ানা
থাইল্যান্ডে ৮১ মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫১ জনকে। ওদিকে সমুদ্র থেকে মিয়ানমার উদ্ধার করে ৭২৭ অভিবাসীকে। তাদেরকে রাখা হয়েছে তামি হ্লা দ্বীপে। সেখানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে সাংবাদিকদের প্রবেশ। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক বলেছেন, তিনি অন্য দেশগুলোর সঙ্গে পাচারকারী চক্রের হোতাদের ধরতে অব্যাহতভাবে কাজ করে যাবেন। সাংবাদিকরা গতকাল মিয়ানমারের ইরাবতীমুখে তামি হ্লা দ্বীপে প্রবেশের চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদেরকে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। উল্লেখ্য, উদ্ধার করা ৭২৭ অভিবাসীর মধ্যে ৭৪ জনই নারী, ৪৫টি শিশু। ওদিকে, সমুদ্রপথে বাংলাদেশী ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা অভিবাসীদের মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডে পাচারের সঙ্গে জড়িত চক্রের সদস্য ও মূল হোতাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। থাইল্যান্ডে এ পর্যন্ত সন্দেহভাজন ৮১ মানব পাচারকারীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। শনিবার ৪ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সন্দেহভাজন প্রায় ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকি ৩০ সন্দেহভাজন পাচারকারীকে ধরতে সঙ্খলা, সাতুন ও রানোং প্রদেশে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। থাইল্যান্ডভিত্তিক অনলাইন সংবাদপত্র ‘দ্য নেশন’ এ খবর দিয়েছে। শনিবার পুলিশ মানব পাচারকারীদের শিবির শনাক্তে ১২ রোহিঙ্গা অভিবাসীকে সঙ্খলা প্রদেশের সাদাও জেলার গ্লাস মাউন্টেন এলাকায় নিয়ে যায়। পাহাড়ি জঙ্গলে শিবির স্থাপন করে ওই অভিবাসীদের আটক রেখেছিল পাচারকারী চক্রের সদস্যরা। অভিবাসীরা বন্দি-শিবিরের পথ মনে রাখতে পেরেছিলেন। ওই বন্দি-শিবিরগুলোর বিস্তারিত তথ্য তারা পুলিশকে দেন। পুলিশকে ওই শিবিরগুলোতে নিয়ে যান অভিবাসীরা এবং সন্দেহভাজনদের চিহ্নিতও করেন তারা। পুলিশ বিভিন্ন বন্দি-শিবিরের ছবি তুলে সেগুলো সন্দেহভাজন মানব পাচারকারীদের দেখায়। তারা তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকার করে এবং কোন শিবিরে তারা কাজ করতো, ওই ছবিগুলোর মধ্য থেকে সেটি শনাক্ত করে। সম্প্রতি একটি ২ শতাধিক অভিবাসীসহ একটি বোট উদ্ধার করে মিয়ানমার নৌবাহিনী। ওই বোটের মালিক এক থাই নাগরিককেও সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে আটক রাখা হয়েছে। তবে কখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে কি ধরনের অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, তা প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। ওদিকে বার্তা সংস্থা এএফপি লিখেছে, শনিবার উদ্ধার করা ৭২৭ অভিবাসীকে যে তামি হ্লা দ্বীপে রাখা হয়েছে গতকাল সেখানে প্রবেশ করার চেষ্টা করেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। এএফপির এক সাংবাদিক ছিলেন তাদের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, তারা ওই দ্বীপের কাছাকাছি গেলে তাদেরকে ফেরত পাঠায় নৌবাহিনীর সদস্যরা। এ সময় তাদের মেমরি কার্ড থেকে সব ফুটেজ মুছে ফেলতে নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে তাদেরকে ফের ওই দ্বীপে না যেতে নির্দেশ দেয়া হয়। তবে এ বিষয়ে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে একটি স্পর্শকাতর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বোটের ভাসমান মানুষ। সাম্প্রতিক সময়ে এমন দুটি নৌযান উদ্ধার করার পর প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে পাল্টাপাল্টি গভীর হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে বসবাস করে ১৩ লাখ রোহিঙ্গা। তাদেরকে নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে মিয়ানমার।
No comments