পুলিশকে দায়মুক্তি না দিতে অ্যামনেস্টির আহ্বান
যেসব
পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্যাতনে জড়িত থাকার পর্যাপ্ত ও গ্রহণযোগ্য
প্রমাণ রয়েছে তাদের বিচারের হাত থেকে রক্ষা না করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি
আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যামনেস্টি
ইন্টারন্যাশনাল। পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচারের আওতামুক্ত রাখার এ সংক্রান্ত
যে প্রস্তাব বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী সরকারকে দিয়েছে তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান
করতেও সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে তারা। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল
বাংলাদেশ সরকারকে ওই আহ্বানে বলেছে, নির্যাতনের সকল অভিযোগ ও প্রতিবেদন কোন
ব্যতিক্রম ছাড়াই তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং জড়িতদের বিচারের
মুখোমুখি করতে হবে। ১০ই মার্চ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নিজস্ব ওয়েবসাইটে
প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলেছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের একটি
পত্রিকা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যে, পুলিশ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশী আইনের একটি
ধারা বাতিলের প্রস্তাব করেছে। ওই আইনে, যে কোন পরিস্থিতিতে জেলহাজতে কাউকে
নির্যাতন অপরাধ হিসেবে গণ্য করে জড়িতদের শাস্তির বিধান রয়েছে। পুলিশ
কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে টর্চার অ্যান্ড কাস্টোডিয়াল ডেথ (প্রিভেনশন) অ্যাক্ট,
২০১৩ (নির্যাতন ও কারা হেফাজতে মৃত্যু প্রতিরোধ আইন)-এর পুনর্বিবেচনা চায়।
নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের পূর্বের আইনসমূহকে শক্তিশালী করেছে এ
আইনটি। পুলিশ কর্তৃপক্ষ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ওই আইনের ১২
অনুচ্ছেদটি বিলুপ্তির প্রস্তাব করেছে। তারা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন
(র্যাব), ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি), সেপশাল ব্রাঞ্চ,
ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চের মতো পুলিশের বিশেষ শাখাসমূহকেও ওই আইনের অধীনে বিচারের
আওতামুক্ত রাখার প্রস্তাব করেছে। আইনটির ১২ অনুচ্ছেদ অনুসারে যুদ্ধ,
যুদ্ধের হুমকি, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, যে কোন জরুরি অবস্থা
কিংবা নিজেদের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বা সরকারি কর্তৃপক্ষের নির্দেশসহ কোন
পরিস্থিতিই নির্যাতনের অজুহাত হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিধান যে কোন
নির্যাতন নিষিদ্ধ করেছে ও আইনের যে কোন ধরনের ব্যত্যয়কে প্রত্যাখ্যান
করেছে। নির্যাতন ও অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক এবং মর্যাদাহানিকর শাস্তি বা
আচরণের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের কনভেনশনের নিবন্ধ-২ মোতাবেক আইনটি প্রণয়ন করা
হয়েছিল। জাতিসংঘের ওই কনভেনশনটি ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ অনুমোদন করে।
অ্যামনেস্টি আরও বলেছে, এ প্রস্তাব দিয়ে পুলিশ যেন এটা স্বীকার করে নিলো যে, তাদের কর্মকর্তারা নির্যাতন করে আটককৃতদের কাছ থেকে তথ্য আদায় করে। অথচ এ ধরনের চর্চা প্রতিরোধ, বন্ধ এবং জড়িতদের শাস্তি ও ক্ষতিগ্রস্তদের জরিমানা দেয়ার ব্যাপারে জাতিসংঘ কনভেনশন ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ আইনগতভাবে বাধ্য। বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রকৃতি বোঝাতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও বাংলাদেশের অন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো পুলিশের দ্বারা বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনাসমূহ উদাহরণ হিসেবে সংরক্ষণ করে আসছে। কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন নির্যাতন বিচারের আওতামুক্ত রয়েছে। এমনকি এ ধরনের অনেক ঘটনায় যথেষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয় না। অ্যামনেস্টি বলেছে, এমনকি বর্তমান নির্যাতন ও কারা হেফাজতে মৃত্যু প্রতিরোধের আইনটি বলবৎ থাকা সত্ত্ব্বেও, দেশজুড়ে বিস্তৃত আকারে সংঘটিত হতে থাকা বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের মুখোমুখি হবার ঘটনা খুবই বিরল। এ ধরনের নির্যাতনের শিকার বিভিন্ন ব্যক্তি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে বলেছেন যে, পুলিশ স্টেশনের কর্মকর্তারা এ আইনের অধীনে নির্যাতনের অভিযোগ গ্রহণে খুবই অনাগ্রহী। কিন্তু যখন মানুষ প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে, সেসব ক্ষেত্রেই কেবল বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আইনটি পাস হওয়ার ১৭ মাস পরেও, এখন পর্যন্ত কোন পুলিশ কর্মকর্তার বিচারই এ আইনের অধীনে সফলভাবে করা হয়নি। অ্যামনেস্টি বলেছে, বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই সরাসরিভাবে পুলিশের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে হবে। ওই প্রস্তাব নির্যাতনের বিরুদ্ধে আইনি সুরক্ষার অবমাননাস্বরূপ। বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, ওই রক্ষাকবচগুলো যথেষ্ট কার্যকরী, যার মাধ্যমে নির্যাতনে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশে নির্যাতন ও অন্যান্য নিষ্ঠুর আচরণ অনেকদিন ধরেই করে আসছে পুলিশ। নির্যাতনের উপায়সমূহের মধ্যে রয়েছে মারাত্মকভাবে পিটুনি, সিলিংয়ে ঝুলিয়ে রাখা, প্রজননতন্ত্রে বৈদ্যুতিক শক দেয়া, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে আটককৃতদের পায়ে গুলি করা। সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ, ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩৩০ ধারা এবং নির্যাতন ও কারা হেফাজতে মৃত্যু প্রতিরোধ আইন অনুসারে সুরক্ষার ব্যবস্থা সত্ত্ব্বেও এ ধরনের নির্যাতনের ঘটনা এখনও বাংলাদেশে ঘটে। বাংলাদেশে নির্যাতনের ঘটনা এতই বিস্তৃত যে, এসবের শিকার ব্যক্তিদের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। এর আগে যাদেরকে আটক করা হয়েছিল তাদের সঙ্গে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কথা বলেছে সামপ্রতিক বছরগুলোতে। তারা প্রায় সবাই সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, পুলিশ হেফাজতে তাদের নির্যাতন কিংবা নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, হাজার হাজার মানুষ প্রতিবছর পুলিশি নির্যাতন ও অন্যান্য নিষ্ঠুর আচরণের ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্তমানে যারা এ ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছেন, তারা হচ্ছেন এ বছরের ৫ই জানুয়ারির পর আটক বিরোধীদলীয় শ’ শ’ সমর্থক। ৫ই জানুয়ারির পর বিরোধীরা সড়ক অবরোধের ঘোষণা দেয়ার পর থেকে তাদের আটক করা হয়েছে। আরও হাজারো কর্মী ও সমর্থককে আটক করা হয়েছে, পরে আবার মুক্তি দেয়া হয়েছে। শ’ শ’ বাস ও অন্যান্য যানবাহনে পেট্রলবোমা হামলা হয়েছে। এর ফলে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে কয়েক ডজন মানুষের। আরও শ’ শ’ মানুষ বিভিন্ন মাত্রায় আহত হয়েছে। এ ধরনের ঘটনাসমূহে জড়িতদের বিচারের সম্মুখীন করা সরকারের দায়িত্ব। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুসারে, কোন অবস্থাতেই নির্যাতন ও নিষ্ঠুর আচরণ বিরোধী আইনসমূহের লঙ্ঘন করা যাবে না। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলতে বাধ্য।
অ্যামনেস্টি আরও বলেছে, এ প্রস্তাব দিয়ে পুলিশ যেন এটা স্বীকার করে নিলো যে, তাদের কর্মকর্তারা নির্যাতন করে আটককৃতদের কাছ থেকে তথ্য আদায় করে। অথচ এ ধরনের চর্চা প্রতিরোধ, বন্ধ এবং জড়িতদের শাস্তি ও ক্ষতিগ্রস্তদের জরিমানা দেয়ার ব্যাপারে জাতিসংঘ কনভেনশন ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ আইনগতভাবে বাধ্য। বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রকৃতি বোঝাতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও বাংলাদেশের অন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো পুলিশের দ্বারা বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনাসমূহ উদাহরণ হিসেবে সংরক্ষণ করে আসছে। কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন নির্যাতন বিচারের আওতামুক্ত রয়েছে। এমনকি এ ধরনের অনেক ঘটনায় যথেষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয় না। অ্যামনেস্টি বলেছে, এমনকি বর্তমান নির্যাতন ও কারা হেফাজতে মৃত্যু প্রতিরোধের আইনটি বলবৎ থাকা সত্ত্ব্বেও, দেশজুড়ে বিস্তৃত আকারে সংঘটিত হতে থাকা বিভিন্ন নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের মুখোমুখি হবার ঘটনা খুবই বিরল। এ ধরনের নির্যাতনের শিকার বিভিন্ন ব্যক্তি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে বলেছেন যে, পুলিশ স্টেশনের কর্মকর্তারা এ আইনের অধীনে নির্যাতনের অভিযোগ গ্রহণে খুবই অনাগ্রহী। কিন্তু যখন মানুষ প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে, সেসব ক্ষেত্রেই কেবল বিচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আইনটি পাস হওয়ার ১৭ মাস পরেও, এখন পর্যন্ত কোন পুলিশ কর্মকর্তার বিচারই এ আইনের অধীনে সফলভাবে করা হয়নি। অ্যামনেস্টি বলেছে, বাংলাদেশ সরকারকে অবশ্যই সরাসরিভাবে পুলিশের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে হবে। ওই প্রস্তাব নির্যাতনের বিরুদ্ধে আইনি সুরক্ষার অবমাননাস্বরূপ। বাংলাদেশী কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে, ওই রক্ষাকবচগুলো যথেষ্ট কার্যকরী, যার মাধ্যমে নির্যাতনে জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশে নির্যাতন ও অন্যান্য নিষ্ঠুর আচরণ অনেকদিন ধরেই করে আসছে পুলিশ। নির্যাতনের উপায়সমূহের মধ্যে রয়েছে মারাত্মকভাবে পিটুনি, সিলিংয়ে ঝুলিয়ে রাখা, প্রজননতন্ত্রে বৈদ্যুতিক শক দেয়া, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে আটককৃতদের পায়ে গুলি করা। সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ, ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩৩০ ধারা এবং নির্যাতন ও কারা হেফাজতে মৃত্যু প্রতিরোধ আইন অনুসারে সুরক্ষার ব্যবস্থা সত্ত্ব্বেও এ ধরনের নির্যাতনের ঘটনা এখনও বাংলাদেশে ঘটে। বাংলাদেশে নির্যাতনের ঘটনা এতই বিস্তৃত যে, এসবের শিকার ব্যক্তিদের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। এর আগে যাদেরকে আটক করা হয়েছিল তাদের সঙ্গে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কথা বলেছে সামপ্রতিক বছরগুলোতে। তারা প্রায় সবাই সাক্ষ্য দিয়েছেন যে, পুলিশ হেফাজতে তাদের নির্যাতন কিংবা নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, হাজার হাজার মানুষ প্রতিবছর পুলিশি নির্যাতন ও অন্যান্য নিষ্ঠুর আচরণের ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্তমানে যারা এ ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছেন, তারা হচ্ছেন এ বছরের ৫ই জানুয়ারির পর আটক বিরোধীদলীয় শ’ শ’ সমর্থক। ৫ই জানুয়ারির পর বিরোধীরা সড়ক অবরোধের ঘোষণা দেয়ার পর থেকে তাদের আটক করা হয়েছে। আরও হাজারো কর্মী ও সমর্থককে আটক করা হয়েছে, পরে আবার মুক্তি দেয়া হয়েছে। শ’ শ’ বাস ও অন্যান্য যানবাহনে পেট্রলবোমা হামলা হয়েছে। এর ফলে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে কয়েক ডজন মানুষের। আরও শ’ শ’ মানুষ বিভিন্ন মাত্রায় আহত হয়েছে। এ ধরনের ঘটনাসমূহে জড়িতদের বিচারের সম্মুখীন করা সরকারের দায়িত্ব। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুসারে, কোন অবস্থাতেই নির্যাতন ও নিষ্ঠুর আচরণ বিরোধী আইনসমূহের লঙ্ঘন করা যাবে না। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনে চলতে বাধ্য।
No comments