বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে আইএমএফ উদ্বিগ্ন
চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতির সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ৮০ শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। মন্দা কাটিয়ে বিশ্ব অর্থনীতি অনেকটা জোরালোভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রভাবে প্রবৃদ্ধির এই হারের পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি।
তবে এই প্রবণতা অব্যাহত থাকার বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহে রয়েছে আইএমএফ। যে কারণে আগামী বছর অর্থাৎ ২০১১ সালে এসে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার কমে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ হবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে।
বিশ্ব অর্থনীতির এই প্রবৃদ্ধিকে যথেষ্ট যৌক্তিক মনে করলেও বড় ধরনের ভারসাম্যহীনতা ও কাঠামোগত দুর্বলতা যে রয়ে যাচ্ছে, তাও উল্লেখ করেছে আইএমএফ। পাশাপাশি মুদ্রার দর নামিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন দেশের মধ্যে একটি মুদ্রা লড়াই আসন্ন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিষ্ঠানটির ‘বিশ্ব অর্থনৈতিক পূর্বাভাস’ (ডব্লিউইও) প্রতিবেদনে এসব আশা ও শঙ্কার কথা বলা হয়েছে। এতে আরেক দফা মন্দার কোনো আশঙ্কা করা হয়নি, যা ইতিবাচকভাবে দেখছেন অনেক বিশ্লেষক। তবে সার্বিকভাবে আইএমএফ যে উদ্বিগ্ন, তার স্পষ্ট প্রতিফলন রয়েছে এই প্রতিবেদনে।
আবার অনেকে মনে করছেন, প্রতিষ্ঠানটি অতিমাত্রায় উদ্বিগ্ন, যার তেমন কোনো ভিত্তি নেই। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, সুদের হার নিম্ন পর্যায়ে আছে, বাজেট ঘাটতি চাহিদা বাড়াতে সহায়তা করছে, সরকারগুলোও প্রণোদনার জন্য আরেক দফা অর্থ খরচ করতে প্রস্তুত।
অন্যদিকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো মন্দার সময় লোক ছাঁটাই করেছিল এবং মজুরি কমিয়েছিল। ফলে এখন তাদের হাতেও প্রচুর অর্থ আছে। সুতরাং, উদ্বিগ্ন হওয়ার তেমন প্রয়োজন নেই।
কিন্তু আইএমএফ মূলত দুটি কারণে উদ্বিগ্ন। প্রথমত, পশ্চিমা উন্নত বিশ্বের দেশগুলোয় বেসরকারি খাত এখনো দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। তারা ভোগ-চাহিদা যথেষ্ট শক্তিশালী না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকে রাখা অর্থ ব্যয় করতে রাজি নয়। অথচ গণব্যয় কমিয়ে ও কর বাড়িয়ে বিরাট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকারি প্রয়াস এগিয়ে নিতে হলে বেসরকারি খাতকে সক্রিয় হয়ে উঠতে হবে। এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন রপ্তানি বাড়ানো। আর এখানেই রয়েছে দ্বিতীয় সমস্যাটি।
কারণ প্রধানত, যেসব দেশে পণ্য রপ্তানি করা হবে, সেসব দেশের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে বড় ধরনের উদ্বৃত্ত রয়েছে। চীন, জাপান, জার্মানিসহ তেল উৎপাদক দেশগুলো অধিকতর আমদানি করে এই উদ্বৃত্তাবস্থা কমিয়ে আনতে তেমন আগ্রহী নয়। এ জন্য তাদের তেমন চাপ দেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই।
আর তাই আইএমএফের প্রতিবেদনে বিরাট মজুদ গড়ে তোলার পরিবর্তে চীনা মুদ্রা ইউয়ানের দর বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কারণ, আইএমএফ বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে চীনের ওপর সে রকম কোনো চাপ তৈরি করা সম্ভব নয়।
আর বিশ্বমন্দার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক শক্তির ভারসাম্য পশ্চিম থেকে পুবের দিকে স্থানান্তরিত হওয়ার প্রক্রিয়াটি জোরালো হয়েছে। এই পরিস্থিতিকে আইএমএফ ভারসাম্যহীনতা বলে মনে করছে।
আইএমএফের পূর্বাভাস অনুসারে চলতি বছর উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর সমন্বিত মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ১০ শতাংশ হবে, যা আগামী বছর কমে ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ হতে পারে। অন্যদিকে উন্নত বিশ্বের ক্ষেত্রে এই হার প্রাক্কলন করা হয়েছে যথাক্রমে ২ দশমিক ৭০ শতাংশ ও ২ দশমিক ২০ শতাংশ।
প্রতিষ্ঠানটির শঙ্কা, পশ্চিমা উন্নত অর্থনীতিগুলোয় নতুনভাবে যে দুর্বলতা দেখা দিয়েছে, তা আবার এশিয়াসহ উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি: আইএমএফের পূর্বাভাস অনুসারে চলতি অর্থবছর (২০১০-১১) বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হবে ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। সরকার অবশ্য চলতি অর্থবছর সাড়ে ছয় শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে।
অন্যদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকও (এডিবি) চলতি অর্থবছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ হবে, যা গত মাসে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে পূর্বাভাস দিয়েছে।
আইএমএফের পূর্বাভাস অনুসারে, চলতি অর্থবছর বাংলাদেশের বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়াবে ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ।
এ ছাড়া আইএমএফ মনে করছে, চলতি অর্থবছর বাংলাদেশের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের উদ্বৃত্ত হবে জিডিপির ১ দশমিক ১০ শতাংশ। কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে বড় ধরনের উদ্বৃত্তাবস্থা বজায় রয়েছে।
তবে এই প্রবণতা অব্যাহত থাকার বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহে রয়েছে আইএমএফ। যে কারণে আগামী বছর অর্থাৎ ২০১১ সালে এসে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার কমে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ হবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে।
বিশ্ব অর্থনীতির এই প্রবৃদ্ধিকে যথেষ্ট যৌক্তিক মনে করলেও বড় ধরনের ভারসাম্যহীনতা ও কাঠামোগত দুর্বলতা যে রয়ে যাচ্ছে, তাও উল্লেখ করেছে আইএমএফ। পাশাপাশি মুদ্রার দর নামিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন দেশের মধ্যে একটি মুদ্রা লড়াই আসন্ন বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিষ্ঠানটির ‘বিশ্ব অর্থনৈতিক পূর্বাভাস’ (ডব্লিউইও) প্রতিবেদনে এসব আশা ও শঙ্কার কথা বলা হয়েছে। এতে আরেক দফা মন্দার কোনো আশঙ্কা করা হয়নি, যা ইতিবাচকভাবে দেখছেন অনেক বিশ্লেষক। তবে সার্বিকভাবে আইএমএফ যে উদ্বিগ্ন, তার স্পষ্ট প্রতিফলন রয়েছে এই প্রতিবেদনে।
আবার অনেকে মনে করছেন, প্রতিষ্ঠানটি অতিমাত্রায় উদ্বিগ্ন, যার তেমন কোনো ভিত্তি নেই। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, সুদের হার নিম্ন পর্যায়ে আছে, বাজেট ঘাটতি চাহিদা বাড়াতে সহায়তা করছে, সরকারগুলোও প্রণোদনার জন্য আরেক দফা অর্থ খরচ করতে প্রস্তুত।
অন্যদিকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো মন্দার সময় লোক ছাঁটাই করেছিল এবং মজুরি কমিয়েছিল। ফলে এখন তাদের হাতেও প্রচুর অর্থ আছে। সুতরাং, উদ্বিগ্ন হওয়ার তেমন প্রয়োজন নেই।
কিন্তু আইএমএফ মূলত দুটি কারণে উদ্বিগ্ন। প্রথমত, পশ্চিমা উন্নত বিশ্বের দেশগুলোয় বেসরকারি খাত এখনো দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। তারা ভোগ-চাহিদা যথেষ্ট শক্তিশালী না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংকে রাখা অর্থ ব্যয় করতে রাজি নয়। অথচ গণব্যয় কমিয়ে ও কর বাড়িয়ে বিরাট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকারি প্রয়াস এগিয়ে নিতে হলে বেসরকারি খাতকে সক্রিয় হয়ে উঠতে হবে। এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন রপ্তানি বাড়ানো। আর এখানেই রয়েছে দ্বিতীয় সমস্যাটি।
কারণ প্রধানত, যেসব দেশে পণ্য রপ্তানি করা হবে, সেসব দেশের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে বড় ধরনের উদ্বৃত্ত রয়েছে। চীন, জাপান, জার্মানিসহ তেল উৎপাদক দেশগুলো অধিকতর আমদানি করে এই উদ্বৃত্তাবস্থা কমিয়ে আনতে তেমন আগ্রহী নয়। এ জন্য তাদের তেমন চাপ দেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই।
আর তাই আইএমএফের প্রতিবেদনে বিরাট মজুদ গড়ে তোলার পরিবর্তে চীনা মুদ্রা ইউয়ানের দর বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কারণ, আইএমএফ বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে চীনের ওপর সে রকম কোনো চাপ তৈরি করা সম্ভব নয়।
আর বিশ্বমন্দার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক শক্তির ভারসাম্য পশ্চিম থেকে পুবের দিকে স্থানান্তরিত হওয়ার প্রক্রিয়াটি জোরালো হয়েছে। এই পরিস্থিতিকে আইএমএফ ভারসাম্যহীনতা বলে মনে করছে।
আইএমএফের পূর্বাভাস অনুসারে চলতি বছর উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর সমন্বিত মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ১০ শতাংশ হবে, যা আগামী বছর কমে ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ হতে পারে। অন্যদিকে উন্নত বিশ্বের ক্ষেত্রে এই হার প্রাক্কলন করা হয়েছে যথাক্রমে ২ দশমিক ৭০ শতাংশ ও ২ দশমিক ২০ শতাংশ।
প্রতিষ্ঠানটির শঙ্কা, পশ্চিমা উন্নত অর্থনীতিগুলোয় নতুনভাবে যে দুর্বলতা দেখা দিয়েছে, তা আবার এশিয়াসহ উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি: আইএমএফের পূর্বাভাস অনুসারে চলতি অর্থবছর (২০১০-১১) বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার হবে ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। সরকার অবশ্য চলতি অর্থবছর সাড়ে ছয় শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে।
অন্যদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকও (এডিবি) চলতি অর্থবছর বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ হবে, যা গত মাসে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকে পূর্বাভাস দিয়েছে।
আইএমএফের পূর্বাভাস অনুসারে, চলতি অর্থবছর বাংলাদেশের বার্ষিক মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়াবে ৭ দশমিক ৪০ শতাংশ।
এ ছাড়া আইএমএফ মনে করছে, চলতি অর্থবছর বাংলাদেশের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের উদ্বৃত্ত হবে জিডিপির ১ দশমিক ১০ শতাংশ। কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে বড় ধরনের উদ্বৃত্তাবস্থা বজায় রয়েছে।
No comments