২৮ মিনিটেই ‘দর্শক’ শারমিন
দিল্লির মেট্রো রেল চোখের পলকে আসে আর যায়। শারমিন আক্তার (রত্না) শ্যুটিং করেন এর চেয়েও দ্রুত।
কতটা দ্রুত তা হিসাব করে দেখুন। মেয়েদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ৪০ শটের জন্য সময় সর্বোচ্চ ৭৫ মিনিট। কাল শারমিনের শ্যুটিং শেষ মাত্র ২৮ মিনিটে! এরপর তিনি দর্শক। তখনো বাকি ১৫ জনের অনেকে প্রথম গুলিই ছোড়েননি! এক বিচারক অবাক হয়ে শারমিনকে বললেন, ‘তোমার শেষ! অন্যরা দেখছি কেবল তৈরি হচ্ছে!’
শারমিন এভাবেই শ্যুটিং করতে অভ্যস্ত। কিন্তু এদিন বৈশাখী ঝড়ের মতো শুরুটা অ্যান্টি-ক্লাইমেক্সে রূপ নিল। দ্বিতীয় শটই লক্ষ্যচ্যুত, প্রথম দশ শটের তিনটি ৯। শেষ পর্যন্ত ৪০০-তে নিজের সেরা ৩৯৮ থেকে ৪ কম—৩৯৪। এই স্কোর করে কমনওয়েলথ গেমসের মঞ্চে দলীয় পদক জেতা অসম্ভব, অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে চুপ মেরে বসে থাকা শারমিনের তা ভালোই জানা ছিল।
পরিস্থিতির দাবিতে ভালো স্কোর করার তাগিদ ছিল সাদিয়া সুলতানার ওপর। কিন্তু চাপের মুখে এই কিশোরীর অবস্থা চিড়েচ্যাপ্টা। চার সিরিজের প্রথমটিতেই হারালেন ৪ পয়েন্ট! শেষ পর্যন্ত ঠেলে-ধাক্কিয়ে স্কোর নিতে পারলেন ৩৯০ পর্যন্ত।
৮০০-তে বাংলাদেশের দলীয় স্কোর ৭৮৪। ছেলেদের ‘ব্যর্থতার’ পর যে ইভেন্ট বাংলাদেশের শেষ ভরসা, সেটির দলীয় বিভাগে ওয়েলসের সঙ্গে সমান স্কোর। টাইয়ে বাংলাদেশ পঞ্চম। বাংলাদেশের চেয়ে মাত্র এক স্কোর বেশি নিয়ে শক্তিশালী ভারত পেল ব্রোঞ্জ। শেষ মিনিটে নিষ্পত্তি প্রথম দুটি স্থানের। মালয়েশিয়া সোনা, সিঙ্গাপুর রুপা।
আসিফ হোসেন খান ও আবদুল্লাহ হেল (বাকি) ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ব্রোঞ্জ আনলেও খুশি নয় শ্যুটিং দল। সবাই তাকিয়ে ছিল মেয়েদের ১০ মিটারের দিকে। গত ফেব্রুয়ারিতে এই ড. কারনি সিং শ্যুটিং রেঞ্জেই কমনওয়েলথ শ্যুটিংয়ে এই ইভেন্টে দলগত সোনা জিতেছিলেন শারমিন ও সাদিয়া। তাই কাল ‘একটা কিছু’ হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল।
মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুরই এটিকে কঠিন করে দিল। এই দুটি দলের অগ্রযাত্রা বুলেট ট্রেনের মতো। জানা গেল, কমনওয়েলথ শ্যুটিংয়ে মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর আসেইনি। নইলে কি বাংলাদেশ তখন সোনা জিততে পারত!
তাইবি নূর সুরানির ৩৯৮, সতীর্থ হালিম নূর আউনির ৩৯৫—সোনাজয়ী মালয়েশিয়ার স্কোর ৭৯৩। জিয়ান ৩৯৪ ও জিয়াং উইং জেসমিনের ৩৯৬ নিয়ে সিঙ্গাপুর ৭৯০। ৪০০-তে ৪০০ করে ২০০৪ এশিয়ান এয়ারগান শ্যুটিংয়ে রেকর্ড গড়া ভারতের সোমা সিদ্ধার্থ এদিন করেছেন ৩৯৭। সতীর্থ যাদব কবিতা খুব খারাপ করায় (৩৮৮) সোমার লড়াই বিফলে গেছে।
নিজের পারফরম্যান্সে অবশ্য খুশি সোমা। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় উচ্ছ্বসিত ছিলেন, ‘৩৯৭ ভালো স্কোর। চেষ্টা করছিলাম রেকর্ড ছুঁতে। হলো না, তবে আমি খুশি।’ বাংলাদেশের শ্যুটারদের ব্যাপারে জানতে চাইলে হেসে উঠলেন হো হো করে, ‘তারা খুবই ভালো। দু-তিন বছর ধরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাওয়ার মতো মান অর্জন করেছে।’
কথাটা হয়তো ঠিক। কিন্তু প্রতিযোগিতা মঞ্চে বাংলাদেশের শ্যুটাররা যে স্নায়ুচাপ ধরে রাখতে পারছেন না! নিজেদের সেরা থেকে দুজনই ছিলেন বেশ দূরে। আরও ২-৩ স্কোর অবলীলায় করতে পারতেন শারমিন-সাদিয়া। তাহলে দলীয় ব্রোঞ্জ অন্তত জুটত।
সাদিয়া সুলতানার আক্ষেপ, ‘শুরু থেকে আমি ছন্দ পাচ্ছিলাম না। প্রথম দুই সিরিজেই ৭ পয়েন্ট নষ্ট। অনুশীলনে ৩৯৬-৯৭-ও হয়, কিন্তু কম্পিটিশনে এসে বিরাট চাপ অনুভব করছিলাম।’
শ্যুটিং রেঞ্জে বাংলাদেশ দলের এই হতাশার অংশীদার ছিলেন শেফ দ্য মিশন নূরুল ফজল (বুলবুল)। নিজেই বললেন, ‘ভবিষ্যতে এদের আরও ঘষেমেজে ভালো ট্রেনিং দিয়ে আনতে হবে। ভালো কোচ লাগবে। একটু চেষ্টা করলেই পদক আসবে। দেশে গিয়ে এসব ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতেই হবে। নইলে যেনতেনভাবে গেমসে এসে লাভ নেই।’
লাভক্ষতির হিসাব পরে। আজ ব্যক্তিগত বিভাগে ১৬ জন শ্যুটার আজ ৪০টি করে শট নেবেন। সেরা ৮ জন যাবেন ফাইনালে। শেষ আশা হিসেবে ফাইনালে যদি কিছু হয়, নইলে যমুনায় হবে সব আশার জলাঞ্জলি!
কতটা দ্রুত তা হিসাব করে দেখুন। মেয়েদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ৪০ শটের জন্য সময় সর্বোচ্চ ৭৫ মিনিট। কাল শারমিনের শ্যুটিং শেষ মাত্র ২৮ মিনিটে! এরপর তিনি দর্শক। তখনো বাকি ১৫ জনের অনেকে প্রথম গুলিই ছোড়েননি! এক বিচারক অবাক হয়ে শারমিনকে বললেন, ‘তোমার শেষ! অন্যরা দেখছি কেবল তৈরি হচ্ছে!’
শারমিন এভাবেই শ্যুটিং করতে অভ্যস্ত। কিন্তু এদিন বৈশাখী ঝড়ের মতো শুরুটা অ্যান্টি-ক্লাইমেক্সে রূপ নিল। দ্বিতীয় শটই লক্ষ্যচ্যুত, প্রথম দশ শটের তিনটি ৯। শেষ পর্যন্ত ৪০০-তে নিজের সেরা ৩৯৮ থেকে ৪ কম—৩৯৪। এই স্কোর করে কমনওয়েলথ গেমসের মঞ্চে দলীয় পদক জেতা অসম্ভব, অন্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে চুপ মেরে বসে থাকা শারমিনের তা ভালোই জানা ছিল।
পরিস্থিতির দাবিতে ভালো স্কোর করার তাগিদ ছিল সাদিয়া সুলতানার ওপর। কিন্তু চাপের মুখে এই কিশোরীর অবস্থা চিড়েচ্যাপ্টা। চার সিরিজের প্রথমটিতেই হারালেন ৪ পয়েন্ট! শেষ পর্যন্ত ঠেলে-ধাক্কিয়ে স্কোর নিতে পারলেন ৩৯০ পর্যন্ত।
৮০০-তে বাংলাদেশের দলীয় স্কোর ৭৮৪। ছেলেদের ‘ব্যর্থতার’ পর যে ইভেন্ট বাংলাদেশের শেষ ভরসা, সেটির দলীয় বিভাগে ওয়েলসের সঙ্গে সমান স্কোর। টাইয়ে বাংলাদেশ পঞ্চম। বাংলাদেশের চেয়ে মাত্র এক স্কোর বেশি নিয়ে শক্তিশালী ভারত পেল ব্রোঞ্জ। শেষ মিনিটে নিষ্পত্তি প্রথম দুটি স্থানের। মালয়েশিয়া সোনা, সিঙ্গাপুর রুপা।
আসিফ হোসেন খান ও আবদুল্লাহ হেল (বাকি) ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ব্রোঞ্জ আনলেও খুশি নয় শ্যুটিং দল। সবাই তাকিয়ে ছিল মেয়েদের ১০ মিটারের দিকে। গত ফেব্রুয়ারিতে এই ড. কারনি সিং শ্যুটিং রেঞ্জেই কমনওয়েলথ শ্যুটিংয়ে এই ইভেন্টে দলগত সোনা জিতেছিলেন শারমিন ও সাদিয়া। তাই কাল ‘একটা কিছু’ হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল।
মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুরই এটিকে কঠিন করে দিল। এই দুটি দলের অগ্রযাত্রা বুলেট ট্রেনের মতো। জানা গেল, কমনওয়েলথ শ্যুটিংয়ে মালয়েশিয়া-সিঙ্গাপুর আসেইনি। নইলে কি বাংলাদেশ তখন সোনা জিততে পারত!
তাইবি নূর সুরানির ৩৯৮, সতীর্থ হালিম নূর আউনির ৩৯৫—সোনাজয়ী মালয়েশিয়ার স্কোর ৭৯৩। জিয়ান ৩৯৪ ও জিয়াং উইং জেসমিনের ৩৯৬ নিয়ে সিঙ্গাপুর ৭৯০। ৪০০-তে ৪০০ করে ২০০৪ এশিয়ান এয়ারগান শ্যুটিংয়ে রেকর্ড গড়া ভারতের সোমা সিদ্ধার্থ এদিন করেছেন ৩৯৭। সতীর্থ যাদব কবিতা খুব খারাপ করায় (৩৮৮) সোমার লড়াই বিফলে গেছে।
নিজের পারফরম্যান্সে অবশ্য খুশি সোমা। এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় উচ্ছ্বসিত ছিলেন, ‘৩৯৭ ভালো স্কোর। চেষ্টা করছিলাম রেকর্ড ছুঁতে। হলো না, তবে আমি খুশি।’ বাংলাদেশের শ্যুটারদের ব্যাপারে জানতে চাইলে হেসে উঠলেন হো হো করে, ‘তারা খুবই ভালো। দু-তিন বছর ধরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাওয়ার মতো মান অর্জন করেছে।’
কথাটা হয়তো ঠিক। কিন্তু প্রতিযোগিতা মঞ্চে বাংলাদেশের শ্যুটাররা যে স্নায়ুচাপ ধরে রাখতে পারছেন না! নিজেদের সেরা থেকে দুজনই ছিলেন বেশ দূরে। আরও ২-৩ স্কোর অবলীলায় করতে পারতেন শারমিন-সাদিয়া। তাহলে দলীয় ব্রোঞ্জ অন্তত জুটত।
সাদিয়া সুলতানার আক্ষেপ, ‘শুরু থেকে আমি ছন্দ পাচ্ছিলাম না। প্রথম দুই সিরিজেই ৭ পয়েন্ট নষ্ট। অনুশীলনে ৩৯৬-৯৭-ও হয়, কিন্তু কম্পিটিশনে এসে বিরাট চাপ অনুভব করছিলাম।’
শ্যুটিং রেঞ্জে বাংলাদেশ দলের এই হতাশার অংশীদার ছিলেন শেফ দ্য মিশন নূরুল ফজল (বুলবুল)। নিজেই বললেন, ‘ভবিষ্যতে এদের আরও ঘষেমেজে ভালো ট্রেনিং দিয়ে আনতে হবে। ভালো কোচ লাগবে। একটু চেষ্টা করলেই পদক আসবে। দেশে গিয়ে এসব ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতেই হবে। নইলে যেনতেনভাবে গেমসে এসে লাভ নেই।’
লাভক্ষতির হিসাব পরে। আজ ব্যক্তিগত বিভাগে ১৬ জন শ্যুটার আজ ৪০টি করে শট নেবেন। সেরা ৮ জন যাবেন ফাইনালে। শেষ আশা হিসেবে ফাইনালে যদি কিছু হয়, নইলে যমুনায় হবে সব আশার জলাঞ্জলি!
No comments