জেলহত্যা দিবস -ন্যায্য বিচার ছাড়া কলঙ্কমোচন ঘটবে না
শোকাবহ জেলহত্যা দিবস আজ। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মধ্যরাতে অশুভ রাজনৈতিক শক্তির চক্রান্তে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বাংলাদেশের জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের কলঙ্কিত এক অধ্যায়। আমরা আজ চার জাতীয় নেতা স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।
এ হত্যাকাণ্ড ছিল বিরাট ট্র্যাজেডি, কিন্তু ঘটনার ২৯ বছর পরও বিচার সম্পন্ন না হওয়ায় বিচার-প্রক্রিয়াটি দৃশ্যত পরিহাস হয়ে উঠেছে। সন্দেহ নেই যে এ হত্যাকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ আলামত পরিকল্পিতভাবে নষ্ট করা হয়েছিল। ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকার দায়রা জজ মো. মতিউর রহমান দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারার অপরাধে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও এলডি দফাদার মো. আবুল হাশেম মৃধাকে আদালতের ভাষায় ‘নৃশংস, পৈশাচিক ও বর্বরোচিতভাবে গুলি করে হত্যা’র দায়ে মৃত্যুদণ্ড এবং ৩০২/১০৯ ধারার অপরাধে ফারুক-রশিদসহ ১৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া ষড়যন্ত্রের দায়ে অভিযুক্ত মেজর মো. খায়রুজ্জামানসহ চার রাজনীতিক তাহের উদ্দিন ঠাকুর, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, কে এম ওবায়েদুর রহমান ও নুরুল ইসলাম মঞ্জুর অভিযোগ ‘সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত’ না হওয়ায় খালাস পান। খায়রুজ্জামান ছাড়া বাকি অভিযুক্তদের মৃত্যু হয়েছে। লক্ষণীয় যে বিচারিক আদালতের ওই রায়ে ফারুক-রশিদসহ ২০ জনকে দণ্ডবিধির ১২০বি ধারার অভিযোগ থেকে ‘সম্পূর্ণ নির্দোষ গণ্যে প্রত্যেককে বেকসুর খালাস’ দেওয়া হয়।
মামলার মূল আসামিদের বেশির ভাগই ছাড়া পেয়ে যাওয়ায় রায়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ ওঠে। গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া এত বড় একটি হত্যাকাণ্ড সম্ভব কি না, সে প্রশ্নও বাস্তব। জাতীয় চার নেতার পরিবারের সদস্যরা এ রায় মেনে নেননি, সাধারণ মানুষের মনেও রয়েছে সংশয় ও ক্ষোভ। অনেক আইনবিদ মনে করেন, ওই ২০ জনকে ‘সম্পূর্ণ নির্দোষ’ ঘোষণার বিরুদ্ধে যথাসময়ে রিভিশন মামলা হওয়া উচিত ছিল। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল না করার বিষয়টিও বিস্ময়কর। উপরন্তু উচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের দণ্ড নিশ্চিতকরণের শুনানি তো দূরের কথা, আদালতের দৈনন্দিন কার্যক্রমের (কজলিস্ট) তালিকায়ও তা ঠাঁই পায়নি। এ মামলার প্রধান কৌঁসুলি আনিসুল হক মন্তব্য করেছিলেন, ‘রাষ্ট্রের উচিত আপিল করা। কারণ এ রায় সাক্ষ্য-প্রমাণ ও বাস্তবতাবিবর্জিত।’ সুতরাং যা করা হয়নি, তা করাটা জরুরী।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করেছিল, ‘জেলখানায় চার নেতার হত্যাকাণ্ডের পুনর্বিচার করা হবে।’ কিন্তু ইতিমধ্যে হাইকোর্ট কেবল রিসালদার মোসলেম উদ্দিন ছাড়া অন্য দুজনের ফাঁসি মওকুফ এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া ১৫ আসামিকেই খালাস দেন। এই হলো জেলহত্যা মামলার পরিহাসময় পরিণতি, যেখানে কেবল একজনের ফাঁসি ছাড়া বাকি সবাই রেয়াত পেয়ে গেছেন, যাঁদের বেশির ভাগই এখন পলাতক।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে আপিলের আবেদন মঞ্জুরের জন্য অনুমতি প্রার্থনা করেছে। আইনের শাসনের স্বার্থে দ্রুতই আপিল আবেদনের মাধ্যমে মামলার নিষ্পত্তির কোনো বিকল্প নেই। এবং এই প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের গাফিলতিতে ছাড় পাওয়া আসামিদের শাস্তির আওতায় আনার আইনি দিকগুলোও খতিয়ে দেখতে হবে।
এ হত্যাকাণ্ড ছিল বিরাট ট্র্যাজেডি, কিন্তু ঘটনার ২৯ বছর পরও বিচার সম্পন্ন না হওয়ায় বিচার-প্রক্রিয়াটি দৃশ্যত পরিহাস হয়ে উঠেছে। সন্দেহ নেই যে এ হত্যাকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ আলামত পরিকল্পিতভাবে নষ্ট করা হয়েছিল। ২০০৪ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকার দায়রা জজ মো. মতিউর রহমান দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারার অপরাধে রিসালদার মোসলেম উদ্দিন, দফাদার মারফত আলী শাহ ও এলডি দফাদার মো. আবুল হাশেম মৃধাকে আদালতের ভাষায় ‘নৃশংস, পৈশাচিক ও বর্বরোচিতভাবে গুলি করে হত্যা’র দায়ে মৃত্যুদণ্ড এবং ৩০২/১০৯ ধারার অপরাধে ফারুক-রশিদসহ ১৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া ষড়যন্ত্রের দায়ে অভিযুক্ত মেজর মো. খায়রুজ্জামানসহ চার রাজনীতিক তাহের উদ্দিন ঠাকুর, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, কে এম ওবায়েদুর রহমান ও নুরুল ইসলাম মঞ্জুর অভিযোগ ‘সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত’ না হওয়ায় খালাস পান। খায়রুজ্জামান ছাড়া বাকি অভিযুক্তদের মৃত্যু হয়েছে। লক্ষণীয় যে বিচারিক আদালতের ওই রায়ে ফারুক-রশিদসহ ২০ জনকে দণ্ডবিধির ১২০বি ধারার অভিযোগ থেকে ‘সম্পূর্ণ নির্দোষ গণ্যে প্রত্যেককে বেকসুর খালাস’ দেওয়া হয়।
মামলার মূল আসামিদের বেশির ভাগই ছাড়া পেয়ে যাওয়ায় রায়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ ওঠে। গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া এত বড় একটি হত্যাকাণ্ড সম্ভব কি না, সে প্রশ্নও বাস্তব। জাতীয় চার নেতার পরিবারের সদস্যরা এ রায় মেনে নেননি, সাধারণ মানুষের মনেও রয়েছে সংশয় ও ক্ষোভ। অনেক আইনবিদ মনে করেন, ওই ২০ জনকে ‘সম্পূর্ণ নির্দোষ’ ঘোষণার বিরুদ্ধে যথাসময়ে রিভিশন মামলা হওয়া উচিত ছিল। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল না করার বিষয়টিও বিস্ময়কর। উপরন্তু উচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের দণ্ড নিশ্চিতকরণের শুনানি তো দূরের কথা, আদালতের দৈনন্দিন কার্যক্রমের (কজলিস্ট) তালিকায়ও তা ঠাঁই পায়নি। এ মামলার প্রধান কৌঁসুলি আনিসুল হক মন্তব্য করেছিলেন, ‘রাষ্ট্রের উচিত আপিল করা। কারণ এ রায় সাক্ষ্য-প্রমাণ ও বাস্তবতাবিবর্জিত।’ সুতরাং যা করা হয়নি, তা করাটা জরুরী।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করেছিল, ‘জেলখানায় চার নেতার হত্যাকাণ্ডের পুনর্বিচার করা হবে।’ কিন্তু ইতিমধ্যে হাইকোর্ট কেবল রিসালদার মোসলেম উদ্দিন ছাড়া অন্য দুজনের ফাঁসি মওকুফ এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া ১৫ আসামিকেই খালাস দেন। এই হলো জেলহত্যা মামলার পরিহাসময় পরিণতি, যেখানে কেবল একজনের ফাঁসি ছাড়া বাকি সবাই রেয়াত পেয়ে গেছেন, যাঁদের বেশির ভাগই এখন পলাতক।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে আপিলের আবেদন মঞ্জুরের জন্য অনুমতি প্রার্থনা করেছে। আইনের শাসনের স্বার্থে দ্রুতই আপিল আবেদনের মাধ্যমে মামলার নিষ্পত্তির কোনো বিকল্প নেই। এবং এই প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের গাফিলতিতে ছাড় পাওয়া আসামিদের শাস্তির আওতায় আনার আইনি দিকগুলোও খতিয়ে দেখতে হবে।
No comments