ইরানকে মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের ‘টিএইচএএডি’ অ্যান্টি মিসাইল পাচ্ছে ইসরাইল

ইরানকে মোকাবিলায়  যুক্তরাষ্ট্রের ‘টিএইচএএডি’ অ্যান্টি মিসাইল পাচ্ছে ইসরাইল। তেল আবিবকে লক্ষ্য করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এতে বলা হয়, ইসরাইলের আত্মরক্ষার্থেই এই অ্যান্টি-মিসাইল সরবরাহ করছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইসরাইলকে এসব অস্ত্রের চালান দেয়ার অর্থ হচ্ছে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এসব অস্ত্রের পাশাপাশি মার্কিন সামরিক সেনাও ইসরাইলে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ধারণা করা হচ্ছে এসব অ্যান্টি-মিসাইলের চালান হাতে পেলে ইরানকে লক্ষ্য করে প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে পারে ইসরাইল।

তবে মধ্যপ্রাচ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়াতে তেহরানের পারমাণবিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ইসরাইলকে হামলা না চালানোর আহ্বান জানিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, বাইডেন প্রশাসন ইরানে সরাসরি হামলার বিপক্ষে। কেননা ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে হামলা হলে ইরান সর্বাত্মক যুদ্ধের পথে আগাতে পারে যা গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে তুলবে। এছাড়া ইসরাইলের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন থাকায় ইরানের পাশে দাঁড়াতে পারে রাশিয়া ও চীন যার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে মস্কো ও বেইজিংয়ের সরাসরি উপস্থিতির সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে। মূলত এ কারণেই ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে হামলার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

পেন্টাগনের মুখপাত্র মেজর জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার বলেছেন, মূলত তারা ইরান ও তার সমর্থিত গ্রুপগুলোর হামলাকে প্রতিরোধ করতেই ইসরাইলে সেনা মোতায়েন করবে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন সেনারা ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। ইসরাইলের অভ্যন্তরে মার্কিন সেনা মোতায়েনের ঘটনা বিরল। মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইরান সমর্থিত গ্রুপগুলোর হামলার মুখে পড়ায় ইসরাইলকে সামরিক সহায়তা করেছে মার্কিন সেনারা। তবে সেটা ইসরাইলের ভূখণ্ডের বাইরে থেকে।

‘দ্য টার্মিনাল হাই অল্টিটিউিড এরিয়া ডিফেন্স সিস্টেম’ (টিএইচএএডি) হচ্ছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি আধুনিক সংস্করন। ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে জোরালো করতেই বিশেষ এই অ্যান্টি-মিসাইল দেবে যুক্তরাষ্ট্র।  

টিএইচএএডি ব্যাটারির মাধ্যমে পরিচালিত হয়, সাধারণত বিশেষভাবে তৈরি এই একটি অ্যান্টি-মিসাইল পরিচালনায় ১০০ সৈন্যের প্রয়োজন। এসব অ্যান্টি মিসাইলের একটি ভ্যান থেকে একসঙ্গে ছয়টি লঞ্চার ছোড়া সম্ভব, যার প্রতিটি লঞ্চারে আটটি করে ইন্টারসেপ্টর এবং শক্তিশালী রাডার রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের কড়া জবাব দিয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি রোববার যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে বলেছেন, তারা ইসরাইলকে ক্ষেপণাস্ত্র ও নিজেদের সেনা সহায়তা দিয়ে সেনাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। নিজের এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন, যদিও আমরা সর্বাত্মক যুদ্ধে থেকে নিজেদের বিরত রাখার চেষ্টা করছি কিন্তু আমি স্পষ্ট করে দিতে চাই- ইরানের জনগণ এবং তাদের স্বার্থ রক্ষায় অমাদের কোনো নির্দিষ্ট সীমানা নেই।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.