বিসিআইএম-ইসি’র পুনরুত্থান নিয়ে আলোচনায় শি-হাসিনা by অতুল আনেজা
গত মাসে কিরগিজস্তানের রাজধানী বিশকেকে
বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমার নিয়ে গঠিত আঞ্চলিক অর্থনৈতিক করিডোরের
(বিসিআইএম-ইসি) পুনরুত্থানের বিষয়ে একমত হন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপর নয়া দিল্লির সমর্থন নিয়ে
প্রকল্পটি ত্বরান্বিত করার বিষয়ে গত ৫ জুলাই শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে
আলোচনা করেছেন জিনপিং। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে তাদের
আলোচনা নিয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোরের
নির্মাণ কাজের অগ্রগতি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শেখ হাসিনা। গত ৪ জুলাই বৃহস্পতিবার
চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং বলেন, এই অঞ্চলের প্রায় ৩০০ কোটি মানুষের
বাজারটি যুক্ত করতে বিসিআইএম-ইসি নির্মাণে যৌথভাবে কাজ করা উচিত ঢাকা ও
বেইজিংয়ের।
বিসিআইএম-ইসি নির্মাণে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে চীনের আগ্রহ প্রতীয়মান হয় গত বছরের এপ্রিলেই। সেসময় অনানুষ্ঠানিক উহান সম্মেলনে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করে দুই দেশের সম্পর্ক। তখনই করিডোর নির্মাণের প্রকল্পটিকে আলাদা করে উপস্থাপন করেছিলেন শি। এরপর গত মাসে বিশকেকে সাংহাই কর্পোরেশন সম্মেলনের (এসসিও) ফাঁকেও এ বিষয়ে আলোচনা হয় দুই নেতার।
করিডোরটি নির্মাণে ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার কথা উল্লেখ করে শি ও হাসিনা স্বীকার করেছেন যে, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ভারতের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে তাদের। এ ছাড়া, উহান সম্মেলনের পর থেকে ‘চীন-ভারত প্লাস’ সহযোগিতার দিকে জোর দিচ্ছে চীন। এর অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা সংকট, নেপাল, আফগানিস্তান ও ইরানের মধ্যে সম্ভাব্য প্রকল্পের বিষয়ে যৌথ পদক্ষেপ নেয়ার লক্ষ্যেই এই স¤পর্কের দিকে জোর দেয়া হচ্ছে।
এদিকে, গত ৫ জুলাই শুক্রবার হাসিনার সঙ্গে আলোচনাকালে ঢাকার অনুরোধে রোহিঙ্গা সংকট দ্রুত সমাধানের দিকে জোর দিয়েছে চীনা পক্ষ। আলোচনা শেষে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আন্তর্জাতিক বিষয়ক মন্ত্রী সং টাও বলেন, রোহিঙ্গা সংকটটি আপসে সমাধান করতে ও যথাসম্ভব দ্রুত রোহিঙ্গাদের প্রথম ব্যাচের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আমরা অং সান সুচি সহ মিয়ানমারের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করব। দুই পক্ষের আলোচনায় এ ছাড়া চীনের বিআরআই মিত্রদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বিনিয়োগসহ অন্যান্য বিষয়ে দেশটির উপদেশমূলক পদক্ষেপের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
ঋণ চুক্তির শর্ত শিথিল করার আবেদন হাসিনার
স্থানীয় গণমাধ্যম অনুসারে, আলোচনায় চীনা প্রেসিডেন্টকে ২০১৬ সালে স্বাক্ষরিত ঋণ প্রদান চুক্তির শর্ত কিছুটা শিথিল করতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি বাংলাদেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ওই অঞ্চলগুলোতে ‘বাইব্যাক’ ব্যবস্থার আওতায় চীনা বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির প্রসঙ্গেও কথা বলেন তিনি। তার আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। চলতি বছরের বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামের (বিআরএফ) বক্তব্য টেনে তিনি জানান, বিআরআই প্রকল্পে অর্থায়ন করার জন্য বিআরএফের অর্থায়ন মডেলটি উন্নীত করা হয়েছে। তবে অভিযোগ উঠেছে এই ধরনের অর্থায়নে ঋণগ্রহণকারী দেশগুলো চীনের ফাঁদে আটকা পড়ছে। কিন্তু জিনপিং ওই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন ও একটি ডিজিটাল বেল্ট রোড নির্মাণে বাংলাদেশের সহযোগিতা চান।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প বিআরআই দেশগুলোতে চীনের অত্যাধুনিক ফাইভ জি প্রযুক্তির আওতায় নিয়ে আসতে পারে। সেসব দেশের মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। উল্লেখ্য, ডিজিটাল বেল্ট রোড হচ্ছে উচ্চ-গতির ইন্টারনেট দ্বারা বিআরআই দেশগুলোকে স্থল, জল ও আকাশসীমায় সংযুক্ত করার একটি প্রকল্প। এতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যকার ডিজিটাল বিভক্তি দূর হবে বলে দাবি করছে চীনা পরিকল্পনাকারীরা।
আলোচনায় ‘অবকাঠামোগত নির্মাণ’কে একটি অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন জিনপিং ও হাসিনা। তবে বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে চীনা বিনিয়োগের ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি। বর্তমানে কক্সবাজারের কাছে মাতারবাড়িতে জাপানের অর্থায়নে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরি করছে বাংলাদেশ। এর কাছেই সোনাদিয়া বন্দরে অর্থায়নে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে চীন। কিন্তু সেদিকে জোর দিচ্ছে না বাংলাদেশি কর্মকর্তারা।
বিসিআইএম-ইসি নির্মাণে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে চীনের আগ্রহ প্রতীয়মান হয় গত বছরের এপ্রিলেই। সেসময় অনানুষ্ঠানিক উহান সম্মেলনে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করে দুই দেশের সম্পর্ক। তখনই করিডোর নির্মাণের প্রকল্পটিকে আলাদা করে উপস্থাপন করেছিলেন শি। এরপর গত মাসে বিশকেকে সাংহাই কর্পোরেশন সম্মেলনের (এসসিও) ফাঁকেও এ বিষয়ে আলোচনা হয় দুই নেতার।
করিডোরটি নির্মাণে ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার কথা উল্লেখ করে শি ও হাসিনা স্বীকার করেছেন যে, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য ভারতের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে তাদের। এ ছাড়া, উহান সম্মেলনের পর থেকে ‘চীন-ভারত প্লাস’ সহযোগিতার দিকে জোর দিচ্ছে চীন। এর অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা সংকট, নেপাল, আফগানিস্তান ও ইরানের মধ্যে সম্ভাব্য প্রকল্পের বিষয়ে যৌথ পদক্ষেপ নেয়ার লক্ষ্যেই এই স¤পর্কের দিকে জোর দেয়া হচ্ছে।
এদিকে, গত ৫ জুলাই শুক্রবার হাসিনার সঙ্গে আলোচনাকালে ঢাকার অনুরোধে রোহিঙ্গা সংকট দ্রুত সমাধানের দিকে জোর দিয়েছে চীনা পক্ষ। আলোচনা শেষে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) আন্তর্জাতিক বিষয়ক মন্ত্রী সং টাও বলেন, রোহিঙ্গা সংকটটি আপসে সমাধান করতে ও যথাসম্ভব দ্রুত রোহিঙ্গাদের প্রথম ব্যাচের প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আমরা অং সান সুচি সহ মিয়ানমারের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করব। দুই পক্ষের আলোচনায় এ ছাড়া চীনের বিআরআই মিত্রদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বিনিয়োগসহ অন্যান্য বিষয়ে দেশটির উপদেশমূলক পদক্ষেপের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
ঋণ চুক্তির শর্ত শিথিল করার আবেদন হাসিনার
স্থানীয় গণমাধ্যম অনুসারে, আলোচনায় চীনা প্রেসিডেন্টকে ২০১৬ সালে স্বাক্ষরিত ঋণ প্রদান চুক্তির শর্ত কিছুটা শিথিল করতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি বাংলাদেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ওই অঞ্চলগুলোতে ‘বাইব্যাক’ ব্যবস্থার আওতায় চীনা বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতির প্রসঙ্গেও কথা বলেন তিনি। তার আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট। চলতি বছরের বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামের (বিআরএফ) বক্তব্য টেনে তিনি জানান, বিআরআই প্রকল্পে অর্থায়ন করার জন্য বিআরএফের অর্থায়ন মডেলটি উন্নীত করা হয়েছে। তবে অভিযোগ উঠেছে এই ধরনের অর্থায়নে ঋণগ্রহণকারী দেশগুলো চীনের ফাঁদে আটকা পড়ছে। কিন্তু জিনপিং ওই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন ও একটি ডিজিটাল বেল্ট রোড নির্মাণে বাংলাদেশের সহযোগিতা চান।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্প বিআরআই দেশগুলোতে চীনের অত্যাধুনিক ফাইভ জি প্রযুক্তির আওতায় নিয়ে আসতে পারে। সেসব দেশের মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে। উল্লেখ্য, ডিজিটাল বেল্ট রোড হচ্ছে উচ্চ-গতির ইন্টারনেট দ্বারা বিআরআই দেশগুলোকে স্থল, জল ও আকাশসীমায় সংযুক্ত করার একটি প্রকল্প। এতে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যকার ডিজিটাল বিভক্তি দূর হবে বলে দাবি করছে চীনা পরিকল্পনাকারীরা।
আলোচনায় ‘অবকাঠামোগত নির্মাণ’কে একটি অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করেছেন জিনপিং ও হাসিনা। তবে বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে চীনা বিনিয়োগের ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি। বর্তমানে কক্সবাজারের কাছে মাতারবাড়িতে জাপানের অর্থায়নে একটি গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরি করছে বাংলাদেশ। এর কাছেই সোনাদিয়া বন্দরে অর্থায়নে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে চীন। কিন্তু সেদিকে জোর দিচ্ছে না বাংলাদেশি কর্মকর্তারা।
No comments