ক্রাইম স্পট সিলেট মোটরসাইকেল ও ৩৭ চোর by চৌধুরী মুমতাজ আহমদ
সিলেটজুড়ে
মোটরসাইকেল চোরের তালিকা রয়েছে পুলিশের হাতে। ঠিকানাও রয়েছে; কিন্তু চোরের
দল দিব্যি তাদের কাজ করে যাচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই নগরীর কোথাও না কোথাও
মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটছে। চিহ্নিত ৩৭ চোর নগরজুড়ে মোটরসাইকেলের
মালিকদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে রেখেছে।
চোরদের হাত থেকে কারোরই নিস্তার নেই। গত বছরের ২৩শে অক্টোবর নগরীর শিবগঞ্জ থেকে চুরি হয়ে যায় স্থানীয় কাউন্সিলর আবদুর রকিব তুহিনের মোটরসাইকেল। শিবগঞ্জের হাতিম আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেদিন ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চলছিল। সে কাজ তদারকিতে ব্যস্ত ছিলেন কাউন্সিলর আবদুর রকিব তুহিন। স্কুলের ভেতরই রেখেছিলেন তার লাল রঙের হিরো গ্ল্যামার মোটরসাইকেলটি। দোতলায় উঠেছিলেন কাজ দেখতে, নিচে নেমে দেখেন তার সাইকেলটি আর নেই। আবদুর রকিব তুহিন জনপ্রতিনিধি হওয়ায় তার সাইকেল চুরির খবরটি কাগজের পাতায় এসেছিল, কিন্তু প্রতিদিনই এমন চুরির ঘটনা ঘটছে সিলেটের পথে পথে। সেসব খবর অগোচরেই রয়ে যায়। থাকে হয়তো শুধু থানার সাধারণ ডায়েরিতেই।
জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) ট্র্যাকার, ডিস্ক লক, সিকিউরিটি অ্যালার্ম কিংবা ইঞ্জিন ইমোবিলাইজার সেন্সর সিস্টেম-কোনো প্রযুক্তিই চুরি থামাতে পারছে না। এসব প্রযুক্তির বিপরীতে চোরদের হাতে রয়েছে আরো উন্নত প্রযুক্তি। তাদের কাছে রয়েছে মোটরসাইকেলের লক কাটার আধুনিক ছুরি, মোটরসাইকেলের রঙ পাল্টে নেয়ার উপকরণ, চেসিস ও ইঞ্জিন নাম্বার পরিবর্তন করার যন্ত্র, বিআরটিএ’র জাল কাগজপত্র ও নাম্বার প্লেট, গাড়ির মালিকানার জাল দলিল তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ ও উপকরণ। আর তাই কোথাও মোটরসাইকেল রেখে একটু বেখেয়াল হলেই মুহূর্তে হাওয়া হয়ে যায় সেটি। চলে যায় চোরদের নিজস্ব ‘হেফাজতে’। সূত্র বলছে, চুরি করা মোটরসাইকেল প্রথমে বিভিন্ন শপিং মল, হাসপাতালের আন্ডারগ্রাউন্ডে রাখা হয়। এর বাইরে চোরদের ‘নিজস্ব’ কিছু গ্যারেজ রয়েছে, সেগুলোতেও রাখা হয়। তারপর সুবিধামতো সময়ে তা অন্যের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। খরিদ্দারের অভাবে বেশি সময় মোটরসাইকেল রাখতে হলে চোরের দল বিভিন্ন অংশ খুলে নিয়ে সাইকেলটিকে টুকরো টুকরো করে ফেলে।
মোটরসাইকেল চোরদের তৎপরতা ভাবিয়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও। চোরদের আইনের আওতায় আনতে তারাও মাঠে নেমেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ইতিমধ্যে ৩৭ চোরকে চিহ্নিত করে একটি তালিকা তৈরি করেছে তারা। মূলত, এ ৩৭ চোরই সিলেট বিভাগজুড়ে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে।
পুলিশের তৈরি করা তালিকার শীর্ষ নামটি হচ্ছে দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি গাঙু এলাকার ফারুক মিয়ার ছেলে মনির আহমদ ইমনের (২৬)। নামের তালিকায় মোটরসাইকেল চোরদের ‘দলনেতা’ হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছে তাকে। তার বিরুদ্ধে ৬টি মামলা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের চোখ এড়াতে সে কখনোই এক স্থানে অবস্থান করে না। কখনো নিজ জালালপুর এলাকার মিয়াজান আলীর বাড়ি, কখনো মামা আবদুর রহমান লন্ডনীর বাড়ি আবার কখনো নগরীর উপশহর এলাকায় থাকে সে।
চোরের লিস্টে টপ ফাইভে রয়েছে দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দির মৃত দুদু মিয়ার ছেলে মাইদুল (৩০), তার ভাই বদরুল, ছাতক উপজেলার গোবিন্দনগরের মৃত নজির আহমদের ছেলে তারেক আহমদ, কিশোরগঞ্জের নিকলী থানার রসুলপুরের মৃত ছেনু মিয়া মেরাজের ছেলে ও নগরীর মেন্দিবাগস্থ আলমগীরের কলোনির বাসিন্দা মোখলেছুর রহমান (৩৩)। এর মধ্যে মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে ৮টি, তারেক আহমদের বিরুদ্ধে ৬টি এবং মাইদুল ও বদরুলের বিরুদ্ধে তিনটি করে মামলা রয়েছে।
তালিকায় ৬ নম্বরে রয়েছে দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকর পূর্বপাড়ার শহীদ আলীর ছেলে কয়েস আহমদ (৩০)। সে মোটরসাইকেল চুরি করতে গিয়ে কয়েকবার গণধোলাইয়েরও শিকার হয়েছে। জেলও খেটেছে কয়েকবার। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ২ মামলা। তালিকার ৭ নম্বরে রয়েছে নগরীর পাঠানটুলার মোহনা ব্লকের এ ২৯/৫ নং বাসার তাহের আলী পাখি মিয়ার ছেলে সেলিম আহমদ (৩০)। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৪টি। তালিকার ৮ নম্বরে রয়েছে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানাধীন কদিমঙ্গল এলাকার স্বপন মিয়ার ছেলে ও নগরীর উপশহর এলাকায় একটি কলোনির বাসিন্দা মেহেদি হাসান। তার বিরুদ্ধে ৩ মামলা রয়েছে। তালিকার ৯ নম্বরে থাকা জৈন্তাপুরের রাইরাখেলের মৃত আলকাছ মির্জার ছেলে মো. সাব্বীর মির্জা (৩০) ও ১০ নম্বরে থাকা বিশ্বনাথের রশিদপুর এলাকার আবদুস সালিকের ছেলে রাসেল আহমদের বিরুদ্ধে ১টি করে মামলা রয়েছে।
তালিকায় ১১ থেকে ১৫ নম্বরে থাকা নামগুলো হচ্ছে যথাক্রমে- জালালাবাদ থানা এলাকার হাইদরপুরের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে সোহেল, শাহপরাণ থানা এলাকার খাদিমপাড়ার সফিক হোসেনের ছেলে আখতার হোসেন, মৌলভীবাজার সদরের ভৈরববাজার গিয়াসনগর এলাকার মেহের আলীর ছেলে ও নগরীর আখালিয়া নতুনবাজারের শাহেদের কলোনির বাসিন্দা লিটন ওরফে শাহীন (৩০), সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার দশঘর এলাকার সিরাজের ছেলে আউয়াল হোসেন, উপশহরের তেররতন সাদারপাড়ার ৪৮/এ’র মৃত ওহাব আলীর ছেলে আবদুল মালেক (৩৫)। এদের মধ্যে আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে রয়েছে ২টি মামলা আর বাকিদের বিরুদ্ধে রয়েছে ১টি করে মামলা।
পুলিশের তৈরি করা তালিকায় ১৬ থেকে ২০ নম্বরে থাকা নামগুলো হচ্ছে- ছাতকের দশঘর এলাকার আবু লেইছের ছেলে আবু তাহের (১৬), একই এলাকার তাজ উদ্দিনের ছেলে হোসাইন আহমদ (১৬), সিলট নগরীর জালালাবাদ আবাসিক এলাকার গোয়াবাড়ির মন্তাজ মিয়ার ছেলে কবির আহমদ (২৬), জালালাবাদ থানা এলাকার মদিনা মার্কেট নির্বাসী ৩১নং বাসার মৃত আবদুল মতলিবের ছেলে গোলাম রব্বানী (৩৫), ছাতকের দিখালীর মৃত এখলাছ মিয়ার ছেলে এমরান হোসেন (২৭)। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ১টি করে মামলা রয়েছে।
মোটরসাইকেল চোরের শীর্ষ ৩০ জনের তালিকায় থাকা অন্য নামগুলো হচ্ছে যথাক্রমে- নগরীর জালালাবাদ থানা এলাকার হাওলাদারপাড়ার কালিয়ারা-৯ এর মুর্শেদ আলীর ছেলে আঙুর মিয়া (২৯), মোগলাবাজার থানা এলাকার গোটাটিকরের হারুনুর রশিদের ছেলে হাবিবুর রহমান, শাহপরাণ থানা এলাকার সৈয়দপুরের তোতা মিয়ার ছেলে রুবেল, একই এলাকার ইসলামপুরের একটি কলোনির জামাল মিয়ার ছেলে কামরুল ওরফে কব্বুল, এয়ারপোর্ট থানা এলাকার বাইশটিলার মো. হানিফের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (১৬), মৌলভীবাজারের রাজনগরের গালিমপুর এলাকার মৃত সিদ্দিক আলীর ছেলে করিম আহমদ, দক্ষিণ সুরমার দক্ষিণ বলদি রাজবাড়ির রাজু আহমদের ছেলে সানজিদ আহমদ হাসান, দক্ষিণ সুরমার কৃষ্ণপুরের লোকমানের ছেলে লিটন, শাহপরাণ থানা এলাকার শান্তিবাগের মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. এরশাদ (২৬), একই এলাকার সবুজবাগের আবদুল জলিলের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২১)। এ ১০ জনের বিরুদ্ধেও একটি করে মামলা রয়েছে।
৩৭ চোরের তালিকায় ৩১ থেকে ৩৭ নম্বর পর্যন্ত স্থান দখল করে আছে জকিগঞ্জ উপজেলার পীরনগর কাজী বাড়ির মৃত কাজী আবদুল খালিকের ছেলে কবির আহমদ (৩২), নগরীর সওদাগরটুলা-৭২ এর আনোয়ার হোসেন আনা মিয়ার ছেলে ইকবাল হোসেন (৩৪), জালালাবাদ থানা এলাকার পাঠানটুলার মাজেদ, দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকার দিলু (২৪), হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার নয়নী এলাকার লেবু মিয়ার ছেলে নয়ন (২৮), মোগলাবাজার থানা এলাকার শিববাড়ির একটি কলোনির হাসন আলীর ছেলে আরশ আলী (২৭), সুনামগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জের দুর্গাপুর গ্রামের আজিম উল্লার ছেলে ফরিদুল আলম ওরফে কুটি মেম্বার (৩৭)। এর মধ্যে কুটি মেম্বারের বিরুদ্ধে ২টি কবির আহমদ ও ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে ১টি করে মামলা রয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে মামলা না থাকলেও চোরচক্রের সক্রিয় সদস্য হিসেবেই এরা পরিচিত।
তালিকায় সবার শেষে নাম থাকলেও চোরচক্রের ‘গুরুত্বপূর্ণ’ সদস্য হচ্ছেন কুটি মেম্বার। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, চুরি হওয়া অধিকাংশ মোটরসাইকেলই কুটি মেম্বারের মাধ্যমে বিক্রি হয়। তালিকার সবার উপরে থাকা ইমন আর সবার নিচে থাকা কুটি মেম্বার- দুজনে মিলে এক সুতোয় বেঁধে রেখেছেন পুরো চোরের সিন্ডিকেটটিকে।
চোরদের হাত থেকে কারোরই নিস্তার নেই। গত বছরের ২৩শে অক্টোবর নগরীর শিবগঞ্জ থেকে চুরি হয়ে যায় স্থানীয় কাউন্সিলর আবদুর রকিব তুহিনের মোটরসাইকেল। শিবগঞ্জের হাতিম আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেদিন ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চলছিল। সে কাজ তদারকিতে ব্যস্ত ছিলেন কাউন্সিলর আবদুর রকিব তুহিন। স্কুলের ভেতরই রেখেছিলেন তার লাল রঙের হিরো গ্ল্যামার মোটরসাইকেলটি। দোতলায় উঠেছিলেন কাজ দেখতে, নিচে নেমে দেখেন তার সাইকেলটি আর নেই। আবদুর রকিব তুহিন জনপ্রতিনিধি হওয়ায় তার সাইকেল চুরির খবরটি কাগজের পাতায় এসেছিল, কিন্তু প্রতিদিনই এমন চুরির ঘটনা ঘটছে সিলেটের পথে পথে। সেসব খবর অগোচরেই রয়ে যায়। থাকে হয়তো শুধু থানার সাধারণ ডায়েরিতেই।
জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) ট্র্যাকার, ডিস্ক লক, সিকিউরিটি অ্যালার্ম কিংবা ইঞ্জিন ইমোবিলাইজার সেন্সর সিস্টেম-কোনো প্রযুক্তিই চুরি থামাতে পারছে না। এসব প্রযুক্তির বিপরীতে চোরদের হাতে রয়েছে আরো উন্নত প্রযুক্তি। তাদের কাছে রয়েছে মোটরসাইকেলের লক কাটার আধুনিক ছুরি, মোটরসাইকেলের রঙ পাল্টে নেয়ার উপকরণ, চেসিস ও ইঞ্জিন নাম্বার পরিবর্তন করার যন্ত্র, বিআরটিএ’র জাল কাগজপত্র ও নাম্বার প্লেট, গাড়ির মালিকানার জাল দলিল তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ ও উপকরণ। আর তাই কোথাও মোটরসাইকেল রেখে একটু বেখেয়াল হলেই মুহূর্তে হাওয়া হয়ে যায় সেটি। চলে যায় চোরদের নিজস্ব ‘হেফাজতে’। সূত্র বলছে, চুরি করা মোটরসাইকেল প্রথমে বিভিন্ন শপিং মল, হাসপাতালের আন্ডারগ্রাউন্ডে রাখা হয়। এর বাইরে চোরদের ‘নিজস্ব’ কিছু গ্যারেজ রয়েছে, সেগুলোতেও রাখা হয়। তারপর সুবিধামতো সময়ে তা অন্যের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। খরিদ্দারের অভাবে বেশি সময় মোটরসাইকেল রাখতে হলে চোরের দল বিভিন্ন অংশ খুলে নিয়ে সাইকেলটিকে টুকরো টুকরো করে ফেলে।
মোটরসাইকেল চোরদের তৎপরতা ভাবিয়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও। চোরদের আইনের আওতায় আনতে তারাও মাঠে নেমেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ইতিমধ্যে ৩৭ চোরকে চিহ্নিত করে একটি তালিকা তৈরি করেছে তারা। মূলত, এ ৩৭ চোরই সিলেট বিভাগজুড়ে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটাচ্ছে।
পুলিশের তৈরি করা তালিকার শীর্ষ নামটি হচ্ছে দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি গাঙু এলাকার ফারুক মিয়ার ছেলে মনির আহমদ ইমনের (২৬)। নামের তালিকায় মোটরসাইকেল চোরদের ‘দলনেতা’ হিসেবেই চিহ্নিত করা হয়েছে তাকে। তার বিরুদ্ধে ৬টি মামলা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের চোখ এড়াতে সে কখনোই এক স্থানে অবস্থান করে না। কখনো নিজ জালালপুর এলাকার মিয়াজান আলীর বাড়ি, কখনো মামা আবদুর রহমান লন্ডনীর বাড়ি আবার কখনো নগরীর উপশহর এলাকায় থাকে সে।
চোরের লিস্টে টপ ফাইভে রয়েছে দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দির মৃত দুদু মিয়ার ছেলে মাইদুল (৩০), তার ভাই বদরুল, ছাতক উপজেলার গোবিন্দনগরের মৃত নজির আহমদের ছেলে তারেক আহমদ, কিশোরগঞ্জের নিকলী থানার রসুলপুরের মৃত ছেনু মিয়া মেরাজের ছেলে ও নগরীর মেন্দিবাগস্থ আলমগীরের কলোনির বাসিন্দা মোখলেছুর রহমান (৩৩)। এর মধ্যে মোখলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে ৮টি, তারেক আহমদের বিরুদ্ধে ৬টি এবং মাইদুল ও বদরুলের বিরুদ্ধে তিনটি করে মামলা রয়েছে।
তালিকায় ৬ নম্বরে রয়েছে দক্ষিণ সুরমার গোটাটিকর পূর্বপাড়ার শহীদ আলীর ছেলে কয়েস আহমদ (৩০)। সে মোটরসাইকেল চুরি করতে গিয়ে কয়েকবার গণধোলাইয়েরও শিকার হয়েছে। জেলও খেটেছে কয়েকবার। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ২ মামলা। তালিকার ৭ নম্বরে রয়েছে নগরীর পাঠানটুলার মোহনা ব্লকের এ ২৯/৫ নং বাসার তাহের আলী পাখি মিয়ার ছেলে সেলিম আহমদ (৩০)। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৪টি। তালিকার ৮ নম্বরে রয়েছে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ থানাধীন কদিমঙ্গল এলাকার স্বপন মিয়ার ছেলে ও নগরীর উপশহর এলাকায় একটি কলোনির বাসিন্দা মেহেদি হাসান। তার বিরুদ্ধে ৩ মামলা রয়েছে। তালিকার ৯ নম্বরে থাকা জৈন্তাপুরের রাইরাখেলের মৃত আলকাছ মির্জার ছেলে মো. সাব্বীর মির্জা (৩০) ও ১০ নম্বরে থাকা বিশ্বনাথের রশিদপুর এলাকার আবদুস সালিকের ছেলে রাসেল আহমদের বিরুদ্ধে ১টি করে মামলা রয়েছে।
তালিকায় ১১ থেকে ১৫ নম্বরে থাকা নামগুলো হচ্ছে যথাক্রমে- জালালাবাদ থানা এলাকার হাইদরপুরের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে সোহেল, শাহপরাণ থানা এলাকার খাদিমপাড়ার সফিক হোসেনের ছেলে আখতার হোসেন, মৌলভীবাজার সদরের ভৈরববাজার গিয়াসনগর এলাকার মেহের আলীর ছেলে ও নগরীর আখালিয়া নতুনবাজারের শাহেদের কলোনির বাসিন্দা লিটন ওরফে শাহীন (৩০), সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার দশঘর এলাকার সিরাজের ছেলে আউয়াল হোসেন, উপশহরের তেররতন সাদারপাড়ার ৪৮/এ’র মৃত ওহাব আলীর ছেলে আবদুল মালেক (৩৫)। এদের মধ্যে আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে রয়েছে ২টি মামলা আর বাকিদের বিরুদ্ধে রয়েছে ১টি করে মামলা।
পুলিশের তৈরি করা তালিকায় ১৬ থেকে ২০ নম্বরে থাকা নামগুলো হচ্ছে- ছাতকের দশঘর এলাকার আবু লেইছের ছেলে আবু তাহের (১৬), একই এলাকার তাজ উদ্দিনের ছেলে হোসাইন আহমদ (১৬), সিলট নগরীর জালালাবাদ আবাসিক এলাকার গোয়াবাড়ির মন্তাজ মিয়ার ছেলে কবির আহমদ (২৬), জালালাবাদ থানা এলাকার মদিনা মার্কেট নির্বাসী ৩১নং বাসার মৃত আবদুল মতলিবের ছেলে গোলাম রব্বানী (৩৫), ছাতকের দিখালীর মৃত এখলাছ মিয়ার ছেলে এমরান হোসেন (২৭)। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ১টি করে মামলা রয়েছে।
মোটরসাইকেল চোরের শীর্ষ ৩০ জনের তালিকায় থাকা অন্য নামগুলো হচ্ছে যথাক্রমে- নগরীর জালালাবাদ থানা এলাকার হাওলাদারপাড়ার কালিয়ারা-৯ এর মুর্শেদ আলীর ছেলে আঙুর মিয়া (২৯), মোগলাবাজার থানা এলাকার গোটাটিকরের হারুনুর রশিদের ছেলে হাবিবুর রহমান, শাহপরাণ থানা এলাকার সৈয়দপুরের তোতা মিয়ার ছেলে রুবেল, একই এলাকার ইসলামপুরের একটি কলোনির জামাল মিয়ার ছেলে কামরুল ওরফে কব্বুল, এয়ারপোর্ট থানা এলাকার বাইশটিলার মো. হানিফের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (১৬), মৌলভীবাজারের রাজনগরের গালিমপুর এলাকার মৃত সিদ্দিক আলীর ছেলে করিম আহমদ, দক্ষিণ সুরমার দক্ষিণ বলদি রাজবাড়ির রাজু আহমদের ছেলে সানজিদ আহমদ হাসান, দক্ষিণ সুরমার কৃষ্ণপুরের লোকমানের ছেলে লিটন, শাহপরাণ থানা এলাকার শান্তিবাগের মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. এরশাদ (২৬), একই এলাকার সবুজবাগের আবদুল জলিলের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২১)। এ ১০ জনের বিরুদ্ধেও একটি করে মামলা রয়েছে।
৩৭ চোরের তালিকায় ৩১ থেকে ৩৭ নম্বর পর্যন্ত স্থান দখল করে আছে জকিগঞ্জ উপজেলার পীরনগর কাজী বাড়ির মৃত কাজী আবদুল খালিকের ছেলে কবির আহমদ (৩২), নগরীর সওদাগরটুলা-৭২ এর আনোয়ার হোসেন আনা মিয়ার ছেলে ইকবাল হোসেন (৩৪), জালালাবাদ থানা এলাকার পাঠানটুলার মাজেদ, দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকার দিলু (২৪), হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার নয়নী এলাকার লেবু মিয়ার ছেলে নয়ন (২৮), মোগলাবাজার থানা এলাকার শিববাড়ির একটি কলোনির হাসন আলীর ছেলে আরশ আলী (২৭), সুনামগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জের দুর্গাপুর গ্রামের আজিম উল্লার ছেলে ফরিদুল আলম ওরফে কুটি মেম্বার (৩৭)। এর মধ্যে কুটি মেম্বারের বিরুদ্ধে ২টি কবির আহমদ ও ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে ১টি করে মামলা রয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে মামলা না থাকলেও চোরচক্রের সক্রিয় সদস্য হিসেবেই এরা পরিচিত।
তালিকায় সবার শেষে নাম থাকলেও চোরচক্রের ‘গুরুত্বপূর্ণ’ সদস্য হচ্ছেন কুটি মেম্বার। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, চুরি হওয়া অধিকাংশ মোটরসাইকেলই কুটি মেম্বারের মাধ্যমে বিক্রি হয়। তালিকার সবার উপরে থাকা ইমন আর সবার নিচে থাকা কুটি মেম্বার- দুজনে মিলে এক সুতোয় বেঁধে রেখেছেন পুরো চোরের সিন্ডিকেটটিকে।
No comments