জাতীয় নির্বাচনের ড্রেস রিহার্সেল মনে করে বিএনপি by কাফি কামাল
বর্তমানে
নির্বাচন তার অর্থ হারিয়ে ফেলেছে বলে মনে করে বিএনপি। নেতারা বলছেন,
বর্তমান সরকারের কাছে নির্বাচন একটি প্রকল্প। যে প্রকল্পের লক্ষ্য ও
উদ্দেশ্য হচ্ছে, জনগণকে ভোটাধিকার প্রয়োগের বাইরে রেখে নির্বাচনী প্রহসনের
মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে রাখা ও দীর্ঘায়িত করা। এ নির্বাচন প্রকল্প নিয়ে
সরকারের একটি নীলনকশা আছে। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল
খেলোয়াড় একাট্টা হয়ে সে নীলনকশায় বাস্তবায়ন করে। নেতারা মনে করেন, খুলনা
সিটি নির্বাচনে সরকার নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করলেও রাজনৈতিকভাবে পরাজয়
ঘটেছে। গণতন্ত্র ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডসহ নির্বাচনের সমস্ত পূর্বশর্ত
যেখানে অনুপস্থিত, উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ভোটের আগের দিন যেখানে
বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়, ভোটের দিন সকালেই কেন্দ্র দখল ও
প্রশাসনের সহায়তায় জাল ভোটের মহোৎসব হয় সেখানে জয়-পরাজয় নিয়ে আলোচনার কিছু
নেই। তবে এরকম পরিস্থিতি দেখার পর যাদের মস্তিষ্ক ন্যূনতম সুস্থ আছে, তারা এ
সরকারের অধীনে আর কোনো দিন ভোটের নাম নেবে না। নেতারা বলছেন, বর্তমান
সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ফলাফল কেমন
হবে তার একটি আগাম ঝলক দেখা গেছে খুলনায়। ড্রেস রিহার্সেলও হয়ে গেছে। এখন
জনগণেরও উপলব্ধির সময় এসেছে তারা বারবার অধিকার বঞ্চিত হবে, নাকি অধিকার
হরণকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শরিক হবে। ভোটাধিকার ও মৌলিক অধিকার হরণ মেনে
নেবে, নাকি অধিকার আদায় করে নেবে। খুলনা সিটি নির্বাচন পর্যালোচনায় এমন
মন্তব্য করেছেন বিএনপির নীতিনির্ধারক ফোরামের সদস্যসহ দলটির সিনিয়র নেতারা।
এ সরকারের অধীনে কেউ ভোটের নাম নেবে না: গয়েশ্বর
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকে ১১ই মে আড়াই সপ্তাহ টানা খুলনায় অবস্থান করে প্রচারণাসহ সার্বিক নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের তদারক করেছেন তিনি। খুলনা সিটি নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থীর বিজয়ের ব্যাপারে ছিলেন শতভাগ আশাবাদী। কিন্তু গতকাল নির্বাচনের পরিবেশ, ক্ষমতাসীনদের ভোটকেন্দ্র দখল, প্রশাসনের সহায়তায় জাল ভোটের মহোৎসব ও নির্বাচন কমিশনের নির্লিপ্ততা দেখে চরম হতাশ তিনি। গয়েশ্বর রায় হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যা-ই হওয়ার কথা তা-ই হয়েছে। তার অধীনে নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ আশা করাই বোকামি। ভোটারদের ভোটাধিকার বঞ্চিত করতে যা করা দরকার পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ও সরকার মিলে তাণ্ডবের মাধ্যমে তাই করেছে। খুলনায় নির্বাচনের নামে একটি প্রহসন হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বিগত ১৫ দিন ধরে খুলনা বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। হাইকোর্টের নির্দেশনা সত্ত্বেও ভোটের আগের রাতে সেখানে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কালো মুখোশ পরে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দিয়েছে সরকার দলীয় লোকজন। ভোটের দিন সকাল থেকেই কেন্দ্রে যেতে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের বাধা দান, মারধর করা হয়েছে। সরকার সমর্থকদের ভয়ভীতির কারণে ভোটাররা কেন্দ্রমুখীই হতে পারেননি। কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব কিছু দেখেও দেখেনি নির্বাচন কমিশন। প্রশাসনের সহায়তায় সরকার দলীয় লোকজন কেন্দ্র দখল করে সিল মেরেছে। কিন্তু সেগুলোর ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের যেন কোনো দায়িত্ব নেই। এরকম পরিস্থিতি দেখার পর যাদের মস্তিষ্ক ন্যূনতম সুস্থ আছে তারা আর এ সরকারের অধীনে আর কোনো ভোটের নাম নেবে না। গয়েশ্বর রায় বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনের পরিবেশ এর চেয়েও জঘন্য হতে পারে। আর জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল হয়তো আগের দিনই ঘোষণা দিয়ে দেবে এ সরকার।
আরেকটি প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হলো খুলনায়: নজরুল
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশে এখন গণতন্ত্র বলতে কিছু নেই। সরকার জাতীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোও ধ্বংস করে ফেলেছে। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না তার আরেকটি প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হলো খুলনায়। তিনি বলেন, আমরা শুনেছি- পুলিশের পাহারায় দুপুরের মধ্যেই বেশিরভাগ কেন্দ্র দখল করে নিয়ে জাল ভোটের মহোৎসব চালিয়েছে সরকার সমর্থকরা। খুলনার মানুষ সেটা খুব ভালো করেই দেখেছে। দেশের মানুষও কিছু কিছু দেখেছে গণমাধ্যমের সৌজন্য। ফলে আগামী নির্বাচন এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত হলে ফলাফল কেমন হবে তার একটি আগাম ঝলকও তারা দেখতে পেয়েছেন। এখানে বিএনপির আশা-নিরাশার তেমন কিছুই নেই।
এ সরকারের কাছে নির্বাচন একটি প্রকল্প মাত্র: খসরু
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ নির্বাচনে আমাদের বড় কোনো প্রত্যাশা ছিল না। আশা যেখানে ছিল না, সেখানে নিরাশার তো প্রশ্নই আসে না। কারণ, আমরা খুব ভালো করেই জানি, এ সরকারের কাছে নির্বাচন তার অর্থ হারিয়ে ফেলেছে। নির্বাচনকে এ সরকার একটি প্রকল্প হিসেবে নিয়েছে। প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, জনগণকে বাইরে রেখে নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে রাখা ও দীর্ঘায়িত করা। এ নির্বাচনী প্রকল্প নিয়ে সরকারের একটি নীলনকশা আছে। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সব খেলোয়াড় একাট্টা হয়ে সে নীলনকশায় বাস্তবায়ন করে। ফলে এগুলোকে নির্বাচন বলা যাবে না। বিএনপির এ নীতিনির্ধারক বলেন, যেখানে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক স্পেস নেই, লেভেল প্লেলিং ফিল্ড নেই, নির্বাচনের সকল পূর্বশর্ত অনুপস্থিতি- সেখানে খুলনা বলুন আর গাজীপুর বলুন সবখানেই একই পরিস্থিতি দাঁড় করবে সরকার। তাদের যেখানে যেমন ইচ্ছা তেমনটাই দৃশ্যায়ণ ও বাস্তবায়ন করবে। যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নেই সেখানে এসব নির্বাচনী প্রহসনের হারজিত নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। আর যতদিন সরকারের এ নির্বাচনী প্রকল্প ভেঙে দেয়া যাবে না ততদিন জনগণ ভোটাধিকার বঞ্চিত হতেই থাকবে। আর ব্যক্তিগতভাবে আমার বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যূনতম আস্থা নেই।
রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হলো আওয়ামী লীগ: নোমান
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে জিতিয়েছে সরকার। তাদের এ জয় প্রকাশ্য অনিয়ম ও ভোট জালিয়াতির জয়। এর মাধ্যমে ব্যক্তি প্রার্থী বিজয় পেয়েছে সত্যি, কিন্তু রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে আওয়ামী লীগ। সামগ্রিক রাজনীতিতে জনবিচ্ছিন্ন বাড়ার পাশাপাশি তাদের নতুন সমালোচনার মুখে পড়তে হবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ দেখেছে সরকার দলীয় লোকজনের হুমকি-ধমকির কারণে ভিত সন্ত্রস্ত্র সাধারণ ভোটারদের বেশিরভাগই কেন্দ্রে যায়নি। বিএনপি সমর্থক ভোটারদের বড় অংশটিও কেন্দ্রে যেতে পারেনি। যারা ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে কেন্দ্রে গিয়েছেন তারাও ভোট দিতে পারেননি। আমরা খবর পাচ্ছিলাম, সকাল আটটার মধ্যেই বেশিরভাগ কেন্দ্র নিজেদের দখলে নিয়েছে সরকার দলীয় প্রার্থীর লোকজন। সরকার দলীয় প্রার্থীর সহযোগীর ভূমিকা ছিল প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন। ফলে নির্বাচনের নামে খুলনায় একটি প্রহসন মঞ্চস্থ হয়েছে। আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ভোট জনগণের মৌলিক অধিকার। আমরা সে অধিকার রক্ষার জন্য আন্দোলন করছি। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে আমাদের যে দাবি, তা আবারও প্রমাণ হয়েছে খুলনায়। এখন জনগণেরও উপলব্ধির সময় এসেছে তারা বারবার অধিকার বঞ্চিত হবে, নাকি অধিকার হরণকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শরিক হবে।
জনগণের ভোটে আমরাই জিতেছি: মর্তুজা
খুলনা সিটি নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি সাহারুজ্জামান মর্তুজা বলেন, খুলনায় কোনো নির্বাচন হয়নি, এখানে একটি প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। এ ধরনের প্রহসন না করে সরকার খালেক ভাইকে (তালুকদার আবদুল খালেক) মেয়রের চেয়ারে বসিয়ে দিলে আমরা কোনো আপত্তি করতাম না। তিনি বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচনে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেননি, কেন্দ্রে গেলেও ভোট দিতে পারেনি। কেন্দ্র দখল করে দিনভর জাল ভোট দিয়েছে নৌকার লোকজন। ফলে মেয়রের চেয়ারে যিনিই বসুন না কেন, জনগণের ভোটে আমরাই বিজয়ী হয়েছি।
এ সরকারের অধীনে কেউ ভোটের নাম নেবে না: গয়েশ্বর
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকে ১১ই মে আড়াই সপ্তাহ টানা খুলনায় অবস্থান করে প্রচারণাসহ সার্বিক নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের তদারক করেছেন তিনি। খুলনা সিটি নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থীর বিজয়ের ব্যাপারে ছিলেন শতভাগ আশাবাদী। কিন্তু গতকাল নির্বাচনের পরিবেশ, ক্ষমতাসীনদের ভোটকেন্দ্র দখল, প্রশাসনের সহায়তায় জাল ভোটের মহোৎসব ও নির্বাচন কমিশনের নির্লিপ্ততা দেখে চরম হতাশ তিনি। গয়েশ্বর রায় হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যা-ই হওয়ার কথা তা-ই হয়েছে। তার অধীনে নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ আশা করাই বোকামি। ভোটারদের ভোটাধিকার বঞ্চিত করতে যা করা দরকার পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ও সরকার মিলে তাণ্ডবের মাধ্যমে তাই করেছে। খুলনায় নির্বাচনের নামে একটি প্রহসন হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বিগত ১৫ দিন ধরে খুলনা বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। হাইকোর্টের নির্দেশনা সত্ত্বেও ভোটের আগের রাতে সেখানে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কালো মুখোশ পরে ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দিয়েছে সরকার দলীয় লোকজন। ভোটের দিন সকাল থেকেই কেন্দ্রে যেতে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের বাধা দান, মারধর করা হয়েছে। সরকার সমর্থকদের ভয়ভীতির কারণে ভোটাররা কেন্দ্রমুখীই হতে পারেননি। কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এসব কিছু দেখেও দেখেনি নির্বাচন কমিশন। প্রশাসনের সহায়তায় সরকার দলীয় লোকজন কেন্দ্র দখল করে সিল মেরেছে। কিন্তু সেগুলোর ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের যেন কোনো দায়িত্ব নেই। এরকম পরিস্থিতি দেখার পর যাদের মস্তিষ্ক ন্যূনতম সুস্থ আছে তারা আর এ সরকারের অধীনে আর কোনো ভোটের নাম নেবে না। গয়েশ্বর রায় বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনের পরিবেশ এর চেয়েও জঘন্য হতে পারে। আর জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল হয়তো আগের দিনই ঘোষণা দিয়ে দেবে এ সরকার।
আরেকটি প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হলো খুলনায়: নজরুল
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশে এখন গণতন্ত্র বলতে কিছু নেই। সরকার জাতীয় প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোও ধ্বংস করে ফেলেছে। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই যে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে না তার আরেকটি প্রমাণ প্রতিষ্ঠিত হলো খুলনায়। তিনি বলেন, আমরা শুনেছি- পুলিশের পাহারায় দুপুরের মধ্যেই বেশিরভাগ কেন্দ্র দখল করে নিয়ে জাল ভোটের মহোৎসব চালিয়েছে সরকার সমর্থকরা। খুলনার মানুষ সেটা খুব ভালো করেই দেখেছে। দেশের মানুষও কিছু কিছু দেখেছে গণমাধ্যমের সৌজন্য। ফলে আগামী নির্বাচন এ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত হলে ফলাফল কেমন হবে তার একটি আগাম ঝলকও তারা দেখতে পেয়েছেন। এখানে বিএনপির আশা-নিরাশার তেমন কিছুই নেই।
এ সরকারের কাছে নির্বাচন একটি প্রকল্প মাত্র: খসরু
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ নির্বাচনে আমাদের বড় কোনো প্রত্যাশা ছিল না। আশা যেখানে ছিল না, সেখানে নিরাশার তো প্রশ্নই আসে না। কারণ, আমরা খুব ভালো করেই জানি, এ সরকারের কাছে নির্বাচন তার অর্থ হারিয়ে ফেলেছে। নির্বাচনকে এ সরকার একটি প্রকল্প হিসেবে নিয়েছে। প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, জনগণকে বাইরে রেখে নির্বাচনী প্রহসনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে রাখা ও দীর্ঘায়িত করা। এ নির্বাচনী প্রকল্প নিয়ে সরকারের একটি নীলনকশা আছে। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সব খেলোয়াড় একাট্টা হয়ে সে নীলনকশায় বাস্তবায়ন করে। ফলে এগুলোকে নির্বাচন বলা যাবে না। বিএনপির এ নীতিনির্ধারক বলেন, যেখানে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক স্পেস নেই, লেভেল প্লেলিং ফিল্ড নেই, নির্বাচনের সকল পূর্বশর্ত অনুপস্থিতি- সেখানে খুলনা বলুন আর গাজীপুর বলুন সবখানেই একই পরিস্থিতি দাঁড় করবে সরকার। তাদের যেখানে যেমন ইচ্ছা তেমনটাই দৃশ্যায়ণ ও বাস্তবায়ন করবে। যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ নেই সেখানে এসব নির্বাচনী প্রহসনের হারজিত নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। আর যতদিন সরকারের এ নির্বাচনী প্রকল্প ভেঙে দেয়া যাবে না ততদিন জনগণ ভোটাধিকার বঞ্চিত হতেই থাকবে। আর ব্যক্তিগতভাবে আমার বিচার বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যূনতম আস্থা নেই।
রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হলো আওয়ামী লীগ: নোমান
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে জিতিয়েছে সরকার। তাদের এ জয় প্রকাশ্য অনিয়ম ও ভোট জালিয়াতির জয়। এর মাধ্যমে ব্যক্তি প্রার্থী বিজয় পেয়েছে সত্যি, কিন্তু রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে আওয়ামী লীগ। সামগ্রিক রাজনীতিতে জনবিচ্ছিন্ন বাড়ার পাশাপাশি তাদের নতুন সমালোচনার মুখে পড়তে হবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষ দেখেছে সরকার দলীয় লোকজনের হুমকি-ধমকির কারণে ভিত সন্ত্রস্ত্র সাধারণ ভোটারদের বেশিরভাগই কেন্দ্রে যায়নি। বিএনপি সমর্থক ভোটারদের বড় অংশটিও কেন্দ্রে যেতে পারেনি। যারা ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে কেন্দ্রে গিয়েছেন তারাও ভোট দিতে পারেননি। আমরা খবর পাচ্ছিলাম, সকাল আটটার মধ্যেই বেশিরভাগ কেন্দ্র নিজেদের দখলে নিয়েছে সরকার দলীয় প্রার্থীর লোকজন। সরকার দলীয় প্রার্থীর সহযোগীর ভূমিকা ছিল প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন। ফলে নির্বাচনের নামে খুলনায় একটি প্রহসন মঞ্চস্থ হয়েছে। আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ভোট জনগণের মৌলিক অধিকার। আমরা সে অধিকার রক্ষার জন্য আন্দোলন করছি। বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে আমাদের যে দাবি, তা আবারও প্রমাণ হয়েছে খুলনায়। এখন জনগণেরও উপলব্ধির সময় এসেছে তারা বারবার অধিকার বঞ্চিত হবে, নাকি অধিকার হরণকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শরিক হবে।
জনগণের ভোটে আমরাই জিতেছি: মর্তুজা
খুলনা সিটি নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ও মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি সাহারুজ্জামান মর্তুজা বলেন, খুলনায় কোনো নির্বাচন হয়নি, এখানে একটি প্রহসনের নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে। এ ধরনের প্রহসন না করে সরকার খালেক ভাইকে (তালুকদার আবদুল খালেক) মেয়রের চেয়ারে বসিয়ে দিলে আমরা কোনো আপত্তি করতাম না। তিনি বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচনে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেননি, কেন্দ্রে গেলেও ভোট দিতে পারেনি। কেন্দ্র দখল করে দিনভর জাল ভোট দিয়েছে নৌকার লোকজন। ফলে মেয়রের চেয়ারে যিনিই বসুন না কেন, জনগণের ভোটে আমরাই বিজয়ী হয়েছি।
No comments