কিউইদের উইলিয়ামসন-শিক্ষা
হেলমেটটা খুললেন তড়িঘড়ি। ব্যাটটা একটু উঁচিয়ে আবার দ্রুতই নামিয়ে নিলেন লাজুক ভঙ্গিতে। কার উদ্দেশে ব্যাট তুলবেন কেন উইলিয়ামসন? ভরা গ্যালারির একজন লোকও তো দাঁড়িয়ে অভিনন্দন জানায়নি, একটা তালির শব্দও শোনা যায়নি!
‘স্পোর্টিং’ হিসেবে বাংলাদেশের দর্শকের সুনাম আছে। প্রতিপক্ষের অর্জনকে স্বাগত জানাতে কুণ্ঠা নেই। কিন্তু দেশপ্রেম বলে কথা। দেশের সিরিজ জয়ের স্বপ্নে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে গেছেন যিনি, তাঁকে কেন অভিনন্দন জানানো! নিউজিল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েও তাই তেমন উদ্যাপন করা হলো না উইলিয়ামসনের। ছোট্ট ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জনটাও শেষ পর্যন্ত বিস্বাদ হয়ে গেল দল ম্যাচ ও সিরিজ হারায়।
উদ্যাপন করতে পারেননি, তবে নির্ভার হতে পেরেছেন। ২০ বছর বয়সী অলরাউন্ডারকে বলা হচ্ছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ। ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁর দল নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টের কোচ সাবেক টেস্ট অলরাউন্ডার গ্রান্ট ব্যাডবার্ন তাঁকে বলেছেন ‘ভবিষ্যৎ মাইকেল ক্লার্ক।’ সাবেক নিউজিল্যান্ড ওপেনার ও অকল্যান্ড কোচ ম্যাট হর্ন বলেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটে একরাশ তাজা বাতাস উইলিয়ামসন।’ তবে এই তাজা বাতাস অনেকটাই হারিয়ে গিয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসে। গত আগস্টে ডাম্বুলার ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে অভিষেক। যাঁকে নিয়ে এতে স্বপ্ন নিউজিল্যান্ডের, প্রথম দুই ওয়ানডেতেই কি না তিনি আউট শূন্য রানে!
সন্দেহাতীত প্রতিভাধর বলেই ওই টুর্নামেন্টের পরের দুটি ম্যাচেও সুযোগ পেলেন। তৃতীয় ম্যাচে ব্যাটিং পাননি, চতুর্থ ম্যাচে এসে পেলেন প্রথম আন্তর্জাতিক রান। তবে থেমে গেছেন ১৩ রানেই। নির্বাচকেরা তবু ধৈর্য হারালেন না। তিনি যে লম্বা দৌড়ের ঘোড়া! পাঠিয়ে দেওয়া হলো বাংলাদেশেও। সফরের শুরুর দিকেই বলেছিলেন, সব ম্যাচই খেলার আশা করছেন। কারণ কন্ডিশনটা তাঁর জন্য উপযোগী, ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অফ স্পিনটাও যে ভালো পারেন। সেই সুযোগ এল চতুর্থ ম্যাচে। কী দারুণভাবেই না সুযোগটাকে কাজে লাগালেন!
সিরিজ হারের পর নিজেদের আচরণও অনেকটা বদলে ফেলেছে কিউইরা। কাল নিজেদের নিরাপত্তার ঘেরাটোপে আটকে কঠোর অনুশীলন করলেন দলের সবাই। ম্যাচের আগের দিন এমন পরিশ্রম বিরল ঘটনা। তবে শেষ ম্যাচটা জিততে মরিয়া নিউজিল্যান্ড হয়তো প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখতে চায় না। এমন সিরিয়াস অনুশীলনের মাঝেও একটু ফুরফুরে লাগছিল উইলিয়ামসনকে। কারণটা ব্যাখ্যা করলেন নিজেই, ‘একটু নির্ভার তো লাগছেই। আমাকে যাঁরা সুযোগ দিয়েছেন, বারবার উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের আস্থার প্রতিদান দিতে পেরে ভালো লাগছে।’
আগের ম্যাচে উইলিয়ামসনের ইনিংসটা অনেককেই মনে করিয়ে দিয়েছে তাঁর এক পূর্বসূরির কথা। ২০০৩ সালে ভারতের বিপক্ষে মোহালি টেস্টে পায়ে ক্র্যাম্প নিয়েও ১৪৫ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেছিলেন ওপেনার মার্ক রিচার্ডসন। কুম্বলে, হরভজনদের সুইপ করতে গিয়ে পায়ের ব্যথায় বারবার রিচার্ডসনের গগনবিদারী চিৎকার ক্রিকেট রূপকথারই অংশ হয়ে গেছে। উইলিয়ামসন ব্যথায় চিৎকার করেননি, তবে ক্র্যাম্প নিয়েও খেলে গেছেন দলের আশাকে সঙ্গী করে। শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে ছয় রান নিয়ে দলকে প্রায় অসম্ভব এক জয়ের স্বপ্নও দেখিয়েছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত আর পারেননি।
জেতাতে না পারলেও দলকে কিছু একটা ঠিকই দিতে পেরেছেন। আগের ম্যাচ শেষে অধিনায়ক ড্যানিয়েল ভেট্টোরি বলেছিলেন, ‘কেন (উইলিয়ামস) আমাদের দেখিয়েছে, এই উইকেটে কীভাবে ব্যাটিং করতে হয়!’ দলের সবচেয়ে জুনিয়র সদস্যের কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষাটা আজ হয়তো কাজে লাগাতে চাইবেন ভেট্টোরিরা। তবে সাকিবরাও নিশ্চয়ই বসে থাকবেন না, তাঁদের যে পেয়ে বসেছে জয়ের নেশা!
‘স্পোর্টিং’ হিসেবে বাংলাদেশের দর্শকের সুনাম আছে। প্রতিপক্ষের অর্জনকে স্বাগত জানাতে কুণ্ঠা নেই। কিন্তু দেশপ্রেম বলে কথা। দেশের সিরিজ জয়ের স্বপ্নে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে গেছেন যিনি, তাঁকে কেন অভিনন্দন জানানো! নিউজিল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েও তাই তেমন উদ্যাপন করা হলো না উইলিয়ামসনের। ছোট্ট ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জনটাও শেষ পর্যন্ত বিস্বাদ হয়ে গেল দল ম্যাচ ও সিরিজ হারায়।
উদ্যাপন করতে পারেননি, তবে নির্ভার হতে পেরেছেন। ২০ বছর বয়সী অলরাউন্ডারকে বলা হচ্ছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ। ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁর দল নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টের কোচ সাবেক টেস্ট অলরাউন্ডার গ্রান্ট ব্যাডবার্ন তাঁকে বলেছেন ‘ভবিষ্যৎ মাইকেল ক্লার্ক।’ সাবেক নিউজিল্যান্ড ওপেনার ও অকল্যান্ড কোচ ম্যাট হর্ন বলেছেন, ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটে একরাশ তাজা বাতাস উইলিয়ামসন।’ তবে এই তাজা বাতাস অনেকটাই হারিয়ে গিয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসে। গত আগস্টে ডাম্বুলার ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে অভিষেক। যাঁকে নিয়ে এতে স্বপ্ন নিউজিল্যান্ডের, প্রথম দুই ওয়ানডেতেই কি না তিনি আউট শূন্য রানে!
সন্দেহাতীত প্রতিভাধর বলেই ওই টুর্নামেন্টের পরের দুটি ম্যাচেও সুযোগ পেলেন। তৃতীয় ম্যাচে ব্যাটিং পাননি, চতুর্থ ম্যাচে এসে পেলেন প্রথম আন্তর্জাতিক রান। তবে থেমে গেছেন ১৩ রানেই। নির্বাচকেরা তবু ধৈর্য হারালেন না। তিনি যে লম্বা দৌড়ের ঘোড়া! পাঠিয়ে দেওয়া হলো বাংলাদেশেও। সফরের শুরুর দিকেই বলেছিলেন, সব ম্যাচই খেলার আশা করছেন। কারণ কন্ডিশনটা তাঁর জন্য উপযোগী, ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অফ স্পিনটাও যে ভালো পারেন। সেই সুযোগ এল চতুর্থ ম্যাচে। কী দারুণভাবেই না সুযোগটাকে কাজে লাগালেন!
সিরিজ হারের পর নিজেদের আচরণও অনেকটা বদলে ফেলেছে কিউইরা। কাল নিজেদের নিরাপত্তার ঘেরাটোপে আটকে কঠোর অনুশীলন করলেন দলের সবাই। ম্যাচের আগের দিন এমন পরিশ্রম বিরল ঘটনা। তবে শেষ ম্যাচটা জিততে মরিয়া নিউজিল্যান্ড হয়তো প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখতে চায় না। এমন সিরিয়াস অনুশীলনের মাঝেও একটু ফুরফুরে লাগছিল উইলিয়ামসনকে। কারণটা ব্যাখ্যা করলেন নিজেই, ‘একটু নির্ভার তো লাগছেই। আমাকে যাঁরা সুযোগ দিয়েছেন, বারবার উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের আস্থার প্রতিদান দিতে পেরে ভালো লাগছে।’
আগের ম্যাচে উইলিয়ামসনের ইনিংসটা অনেককেই মনে করিয়ে দিয়েছে তাঁর এক পূর্বসূরির কথা। ২০০৩ সালে ভারতের বিপক্ষে মোহালি টেস্টে পায়ে ক্র্যাম্প নিয়েও ১৪৫ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেছিলেন ওপেনার মার্ক রিচার্ডসন। কুম্বলে, হরভজনদের সুইপ করতে গিয়ে পায়ের ব্যথায় বারবার রিচার্ডসনের গগনবিদারী চিৎকার ক্রিকেট রূপকথারই অংশ হয়ে গেছে। উইলিয়ামসন ব্যথায় চিৎকার করেননি, তবে ক্র্যাম্প নিয়েও খেলে গেছেন দলের আশাকে সঙ্গী করে। শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে ছয় রান নিয়ে দলকে প্রায় অসম্ভব এক জয়ের স্বপ্নও দেখিয়েছিলেন। যদিও শেষ পর্যন্ত আর পারেননি।
জেতাতে না পারলেও দলকে কিছু একটা ঠিকই দিতে পেরেছেন। আগের ম্যাচ শেষে অধিনায়ক ড্যানিয়েল ভেট্টোরি বলেছিলেন, ‘কেন (উইলিয়ামস) আমাদের দেখিয়েছে, এই উইকেটে কীভাবে ব্যাটিং করতে হয়!’ দলের সবচেয়ে জুনিয়র সদস্যের কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষাটা আজ হয়তো কাজে লাগাতে চাইবেন ভেট্টোরিরা। তবে সাকিবরাও নিশ্চয়ই বসে থাকবেন না, তাঁদের যে পেয়ে বসেছে জয়ের নেশা!
No comments