সবার ওপরে ফুটবল সত্য!
ছোট্ট এই দেশটিকে বলা হয় ‘লাতিন আমেরিকার সুইজারল্যান্ড’। দক্ষিণ আমেরিকায় সাক্ষরতার হার সবচেয়ে বেশি তাদের, সবচেয়ে কম দুর্নীতিপরায়ণ তারা। দেশটিতে মানবসম্পদ উন্নয়নের হার দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। আয়ের সমবণ্টনে তারা পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে।
দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম ধর্মনিরপেক্ষ ক্ষুদ্র এই দেশর নাম উরুগুয়ে। ৩৪ লাখ মানুষের এই ছোট্ট দেশেতে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি নেই। তবে একটা বিষয় নিয়ে উন্মাদনা আছে—ফুটবল। উরুগুয়ের মানুষ ফুটবল ভালোবাসে। ফুটবলে জাগে তারা, ফুটবলে বাঁচে।
এবার সেই উরুগুয়ের হাতে লাতিন আমেরিকার পতাকা। ভৌগোলিক দিক থেকে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার মাঝে অবস্থান উরুগুয়ের। দক্ষিণ আমেরিকাই শুধু নয়, বিশ্ব ফুটবলেরই বড় দুটি নাম ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা। ফুটবলেও যেন এই দুই দেশের চাপে পিষ্ট উরুগুয়ে।
এবার বিশ্বকাপের বাছাইপর্বেও তা-ই ছিল—সেরা চার দলের একটি হয়ে বিশ্বকাপে আসতে পারেনি তারা। বিশ্বকাপে আসতে হয়েছে প্লে-অফ খেলে, লাতিন আমেরিকার শেষ দল হিসেবে। এরই মধ্যে সেই ‘লাস্ট’ দল একটা ব্যাপারে ‘ফার্স্ট’ হয়ে গেছে। চার লাতিন শক্তির, এমনকি আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের বিদায়ের পরও টিকে আছে তারা।
এখন সেই ‘লাস্ট’ দল উরুগুয়ে বিশ্ব ফুটবলের ‘ফার্স্ট’ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। শুধু নিজেদের দেশের জন্য নয়, নিজেদের মহাদেশের জন্যই লড়তে চান স্ট্রাইকার এডিনসন কাভানি, ‘বিশ্বকাপে শেষ দল হিসেবে বাছাইপর্ব পার হয়েছি আমরা। ফলে আমরা জানি, খারাপ সময়ে কীভাবে সামনে এগোতে হয়। এখন আমাদের ওপর অনেক দায়িত্ব। আমরা একটা মহাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি।’
আপাতত কাভানিদের এই প্রতিনিধিত্ব একটু বিস্ময়কর। আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল থাকতে উরুগুয়ে লাতিন আমেরিকার প্রতিনিধিত্ব করবে, এটা আজকের দিনে আর ঠিক স্বাভাবিক মনে হয় না। অথচ ফুটবল-পাগল এই দেশটির ইতিহাস বলে তারাই প্রথম লাতিন ‘পরাশক্তি’।
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা একটিও বিশ্বকাপ জেতার আগেই দুটি বিশ্বকাপ (১৯৩০ ও ১৯৫০) জিতে ফেলেছে উরুগুয়ে। উরুগুয়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ ফুটবলের ইতিহাস অবশ্য আরও পুরোনো। কুড়ির দশকের অলিম্পিক ফুটবল তো শাসন করেছে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটিই। ১৯২৪ ও ১৯২৮, পরপর দুটি অলিম্পিকের সোনা জিতেছে তারা। ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজনের ভারও তাই দেওয়া হয় তাদের।
উরুগুয়ের ফুটবল যে ধর্ম-বর্ণের ওপরে তা জানিয়েছেন সে দেশের ফুটবল ঐতিহাসিক লুইস পার্টস, ‘১৯১৬ সালে উরুগুয়ে দলে দুজন কালো খেলোয়াড় ছিল। এ দুজন উরুগুয়ের কোপা আমেরিকা জয় করা দলেও খেলেছে। উরুগুয়ের মানুষকে সংঘবদ্ধ করার মূল উপাদান হচ্ছে ফুটবল। ফুটবল উরুগুয়ের মানুষকে অনেক কিছুই দিয়েছে।’
হঠাৎ করে উরুগুয়ের সেই সোনালি দিন যেন হারিয়ে গিয়েছিল। তবে এবার আবার ডিয়েগো ফোরলানরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন—উরুগুয়ে আসলে ফুটবলেরই দেশ। উরুগুয়ের এই প্রত্যাবর্তনের পেছনে বড় অবদান আছে একজন বিশেষ মানুষের। তিনি হুলিও মারিয়া সাঙ্গুইনেত্তি। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ এবং ১৯৯৫ থেকে ২০০০, দুই দফায় এই ১০ বছর উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। বর্তমানে উরুগুয়ের প্রোগ্রেসো ফুটবল ক্লাবের সম্মানসূচক সভাপতি। উরুগুয়ের প্রতিটি ম্যাচের আগে অধিনায়ক ডিয়েগো লুগানোকে ডেকে পরামর্শ আর আশীর্বাদ দেন সাঙ্গুইনেত্তি। ম্যাচের শেষেও উরুগুয়ে অধিনায়ককে ডেকে বাহবা দেন।
মাঠের বাইরে সাঙ্গুইনেত্তি আর পুরো দেশ, ডাগ-আউটে অস্কার তাবারেজ। এঁদের প্রেরণা আর ভালোবাসায় মাঠে লুগানো-ফোরলানরা এগিয়ে চলছেন তরতর করে। আর সেই এগিয়ে যেতে দেখে তাবারেজের মনে হয়, ‘উরুগুয়ে এখনো দারুণ ফুটবল সংস্কৃতির দেশই আছে। আমাদের আবেগপ্রবণ সমর্থকদের জন্যই ফুটবলটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফুটবল গুরুত্বপূর্ণ আমাদের মানুষের জন্য।’
দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম ধর্মনিরপেক্ষ ক্ষুদ্র এই দেশর নাম উরুগুয়ে। ৩৪ লাখ মানুষের এই ছোট্ট দেশেতে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি নেই। তবে একটা বিষয় নিয়ে উন্মাদনা আছে—ফুটবল। উরুগুয়ের মানুষ ফুটবল ভালোবাসে। ফুটবলে জাগে তারা, ফুটবলে বাঁচে।
এবার সেই উরুগুয়ের হাতে লাতিন আমেরিকার পতাকা। ভৌগোলিক দিক থেকে ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনার মাঝে অবস্থান উরুগুয়ের। দক্ষিণ আমেরিকাই শুধু নয়, বিশ্ব ফুটবলেরই বড় দুটি নাম ব্রাজিল আর আর্জেন্টিনা। ফুটবলেও যেন এই দুই দেশের চাপে পিষ্ট উরুগুয়ে।
এবার বিশ্বকাপের বাছাইপর্বেও তা-ই ছিল—সেরা চার দলের একটি হয়ে বিশ্বকাপে আসতে পারেনি তারা। বিশ্বকাপে আসতে হয়েছে প্লে-অফ খেলে, লাতিন আমেরিকার শেষ দল হিসেবে। এরই মধ্যে সেই ‘লাস্ট’ দল একটা ব্যাপারে ‘ফার্স্ট’ হয়ে গেছে। চার লাতিন শক্তির, এমনকি আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলের বিদায়ের পরও টিকে আছে তারা।
এখন সেই ‘লাস্ট’ দল উরুগুয়ে বিশ্ব ফুটবলের ‘ফার্স্ট’ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। শুধু নিজেদের দেশের জন্য নয়, নিজেদের মহাদেশের জন্যই লড়তে চান স্ট্রাইকার এডিনসন কাভানি, ‘বিশ্বকাপে শেষ দল হিসেবে বাছাইপর্ব পার হয়েছি আমরা। ফলে আমরা জানি, খারাপ সময়ে কীভাবে সামনে এগোতে হয়। এখন আমাদের ওপর অনেক দায়িত্ব। আমরা একটা মহাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি।’
আপাতত কাভানিদের এই প্রতিনিধিত্ব একটু বিস্ময়কর। আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল থাকতে উরুগুয়ে লাতিন আমেরিকার প্রতিনিধিত্ব করবে, এটা আজকের দিনে আর ঠিক স্বাভাবিক মনে হয় না। অথচ ফুটবল-পাগল এই দেশটির ইতিহাস বলে তারাই প্রথম লাতিন ‘পরাশক্তি’।
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা একটিও বিশ্বকাপ জেতার আগেই দুটি বিশ্বকাপ (১৯৩০ ও ১৯৫০) জিতে ফেলেছে উরুগুয়ে। উরুগুয়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ ফুটবলের ইতিহাস অবশ্য আরও পুরোনো। কুড়ির দশকের অলিম্পিক ফুটবল তো শাসন করেছে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটিই। ১৯২৪ ও ১৯২৮, পরপর দুটি অলিম্পিকের সোনা জিতেছে তারা। ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজনের ভারও তাই দেওয়া হয় তাদের।
উরুগুয়ের ফুটবল যে ধর্ম-বর্ণের ওপরে তা জানিয়েছেন সে দেশের ফুটবল ঐতিহাসিক লুইস পার্টস, ‘১৯১৬ সালে উরুগুয়ে দলে দুজন কালো খেলোয়াড় ছিল। এ দুজন উরুগুয়ের কোপা আমেরিকা জয় করা দলেও খেলেছে। উরুগুয়ের মানুষকে সংঘবদ্ধ করার মূল উপাদান হচ্ছে ফুটবল। ফুটবল উরুগুয়ের মানুষকে অনেক কিছুই দিয়েছে।’
হঠাৎ করে উরুগুয়ের সেই সোনালি দিন যেন হারিয়ে গিয়েছিল। তবে এবার আবার ডিয়েগো ফোরলানরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন—উরুগুয়ে আসলে ফুটবলেরই দেশ। উরুগুয়ের এই প্রত্যাবর্তনের পেছনে বড় অবদান আছে একজন বিশেষ মানুষের। তিনি হুলিও মারিয়া সাঙ্গুইনেত্তি। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ এবং ১৯৯৫ থেকে ২০০০, দুই দফায় এই ১০ বছর উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। বর্তমানে উরুগুয়ের প্রোগ্রেসো ফুটবল ক্লাবের সম্মানসূচক সভাপতি। উরুগুয়ের প্রতিটি ম্যাচের আগে অধিনায়ক ডিয়েগো লুগানোকে ডেকে পরামর্শ আর আশীর্বাদ দেন সাঙ্গুইনেত্তি। ম্যাচের শেষেও উরুগুয়ে অধিনায়ককে ডেকে বাহবা দেন।
মাঠের বাইরে সাঙ্গুইনেত্তি আর পুরো দেশ, ডাগ-আউটে অস্কার তাবারেজ। এঁদের প্রেরণা আর ভালোবাসায় মাঠে লুগানো-ফোরলানরা এগিয়ে চলছেন তরতর করে। আর সেই এগিয়ে যেতে দেখে তাবারেজের মনে হয়, ‘উরুগুয়ে এখনো দারুণ ফুটবল সংস্কৃতির দেশই আছে। আমাদের আবেগপ্রবণ সমর্থকদের জন্যই ফুটবলটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ফুটবল গুরুত্বপূর্ণ আমাদের মানুষের জন্য।’
No comments