পিছিয়ে পড়াদের জন্য কিছু করতে চান নাদিরা
প্রচার
শুরু হতে না হতেই রংপুর সিটি কর্পোরেশন (রসিক) নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা
আসনের প্রার্থী নাদিরা খানম ভোটারদের দৃষ্টি কাড়তে সক্ষম হয়েছেন। সিটি
কর্পোরেশনের ১৮, ২০ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃতীয় লিঙ্গের এ প্রার্থীর প্রচার
কৌশলও ভিন্ন। দিনাজপুর আদর্শ কলেজ থেকে অনার্স এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স করা উচ্চ শিক্ষিত এ প্রার্থী স্থানীয়দের কাছে
দীর্ঘ দিন ধরেই ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। হিজড়াদের অধিকার আদায়ের
আন্দোলনের নেত্রী নাদিরা খানমকে সবসময় পাওয়া যেত মানুষের বিপদে-আপদে।
সমগোত্রের সমর্থক ছাড়াও নানা শ্রেণী-পেশার লোকদের সঙ্গে নিয়ে তিনি
প্রতিদিনই ‘মোবাইল’ প্রতীকে ভোট চেয়ে ছুটছেন দ্বারে দ্বারে। সারাও পাচ্ছেন
বেশ। সংরক্ষিত আসনে নাদিরা ছাড়াও কাউন্সিলর পদে আরও সাতজন নারী প্রার্থী
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রিপ্রাপ্ত
নাদিরা খানমের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরের কাছে তার স্বপ্ন পূরণে প্রার্থী
হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করলেন। তিনি বলেছেন, আমি পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য কিছু
করতে চাই। সমাজের আর দশটা মানুষের মতো নই। নির্বাচিত হতে পারলে আমার মূল
কাজ হবে এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখা। মানুষের সেবা করা। একই সঙ্গে তৃতীয়
লিঙ্গ সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠাও কিছু করতে চাই। তা করতে হলে একটা
প্লাটফর্ম দরকার। সেই চিন্তা থেকেই প্রার্থী হওয়া। তিনি বলেন, নির্বাচিত
হলে নাগরিক জীবন মানের উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের মধ্যে বিদ্যমান বিভাজন
দূর করতে চাই। ভোটের মাঠে সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে বেশ সাড়া পাচ্ছি-
উল্লেখ করে নাদিরা খানম বলেন, আমার ডাকে সাড়া দিয়ে অনেকেই প্রচারে যোগ
দিয়েছেন। আমাকে উৎসাহ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
মুস্তাকিন আহমেদ নামের এক ভোটার জানান, নাদিরাকে ছোটবেলা থেকেই এলাকায়
দেখছি। তিনি সবার বিপদে এগিয়ে আসেন। তাই তাকে নির্বাচনে প্রার্থী করিয়েছি।
বিজয়ী হলে তিনি অবশ্যই ভালো কাজ করবেন এলাকার উন্নয়নে। মিজানুর রহমান নামে
আরেক ভোটার জানান, অতীতে অনেক প্রার্থীকে নির্বাচিত করেছি, তাতে কোনো কাজ
হয়নি। তারা নিজেদের উন্নয়নে ব্যস্ত ছিলেন। সে ক্ষেত্রে নাদিরার কোনো
চাওয়া-পাওয়া নেই। তাই সবাই তাকে সমর্থন দেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
রংপুর নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার জানান,
সাংবিধানিক ক্ষমতা বলেই তিনি অন্যান্য প্রার্থীর মতো ভোটে প্রার্থী হয়েছেন।
তাই নির্বাচন কমিশন থেকে সবার মতো তিনি সমান সুযোগ সুবিধা পাবেন নির্বাচনী
প্রচারণায়। নাদিরা ১৯৯৫ সালে দিনাজপুর আদর্শ কলেজ থেকে অনার্স শেষ করে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৯ সালে ইংরেজিতে মাস্টার্স করেছেন। তার মা
জিন্নাতুননেসা একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা। নাদিরা রংপুর সদরে হিজড়া
সম্প্রদায়ের সঙ্গে বসবাস করছেন।
No comments