আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি সালাহ উদ্দিনের
বিএনপির
যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে শিলংয়ে আসায়
রীতিমতো বিস্মিত সেখানকার পুলিশ ও গোয়েন্দারা। তার মতো একজন রাজনৈতিক নেতা
এমন কাজ করায় পুরো ঘটনাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখছে তারা। পাশাপাশি
পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন সালাহ উদ্দিন আহমেদ আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু
করেছেন। এ ব্যাপারে তার পরিবারের সদস্যরা সেখানকার একজন আইনজীবীর সঙ্গে
প্রয়োজনীয় পরামর্শ করেছেন।
বেসরকারি টেলিভিশন যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি মাহফুজ মিশু শিলং থেকে যুগান্তরকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। এছাড়া বিবিসি জানিয়েছে, সালাহ উদ্দিন আহমেদকে দুই মাস কোনো একটা জায়গায় ঘুপচি ঘরে রাখা হয়েছিল। তারপর বেশ কয়েকবার গাড়ি বদল করে শিলংয়ে নিয়ে আসা হয়।
শিলং থেকে মাহফুজ মিশু শুক্রবার টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, ঢাকা থেকে আসা বিএনপি নেতা জনি গতকাল সালাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। জনির উদ্ধৃতি দিয়ে মিশু জানান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ এখনও অসুস্থ। কোথাও যাওয়ার মতো শারীরির অবস্থা তার এখন নেই। তিনি স্বাভাবিকভাবে কথাও বলতে পারছেন না। সালাহ উদ্দিনকে দুই মাস একটি ছোট ঘরে বন্দি করে রাখা হয়। তার ওজন প্রায় ১৫ কেজি কমে গেছে। তাকে চোখ বেঁধে এখানে (শিলং) কেউ ফেলে দিয়ে গেছেন।
মিশু আরও জানান, জনি দাবি করেছেন, শিলংয়ে বিএনপির পক্ষে তিনি আসেননি। এসেছেন সালাহ উদ্দিনের পারিবারিক বন্ধু হিসেবে। তিনি (জনি) জানিয়েছেন, যদি কোনো জটিলতা না হয় তাহলে রোববার সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী ভিসা পেতে পারেন। আর রোববার আসতে না পারলেও সোমবার শিলংয়ে আসতে পারেন।
যমুনা টিভির মিশু বিভিন্ন সূত্রে জেনেছেন, শিলং সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সালাহ উদ্দিনকে দেখতে সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে নেতাকর্মীরা গোপনে দেখা করছেন। কিন্তু তারা নিজেদের পরিচয় দিচ্ছেন না।
এদিকে বিএসএফের কড়া নিরাপত্তা প্রহরা সত্ত্বেও সালাহ উদ্দিনের শিলং আসার ঘটনা রহস্য নিয়ে কাজ করছে সে দেশের আইনশৃংখলা বাহিনী। আর এ প্রসঙ্গে মেঘালয় রাজ্যের আইজিপি টাইম অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, বিএনপির এই নেতা অবৈধভাবে ভারতে আসার মতো লোক নন। তিনি একজন সাবেক প্রতিমন্ত্রী। তিনি কোনো সাধারণ লোক নন। শিলং হাসপাতালের চিকিৎসক ও পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, সালাহ উদ্দিনের ওষুধপত্র আনার লোকও নেই এখানে। আর যারা দেখা করার জন্য এসেছেন তাদেরও খোঁজ নেই।
বিবিসি বাংলা জানায়, বাংলাদেশে দুই মাসের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে আসা বিএনপি নেতা আবদুল লতিফ জনি দেখা করেছেন। কিন্তু তার সঙ্গে কী কথা হয়েছে তা জানা যায়নি। বিবিসি জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে প্রায় দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মেঘালয় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। পুলিশেরই অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, গোয়েন্দাদের তিনি জানিয়েছেন দুই মাস তাকে কোনো একটা জায়গায় ঘুপচি ঘরে রাখা হয়েছিল। তারপর বেশ কয়েকবার গাড়ি বদল করে শিলংয়ে নিয়ে আসা হয়।
বিবিসি আরও জানায়, গোয়েন্দাদের জেরা আর সালাহ উদ্দিন আহমেদ নিজে আত্মীয়দের যা বলেছেন তার মধ্যে বেশ মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। এর আগের দিন সালাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দুজন আত্মীয় তার সঙ্গে দেখা করে খাবার আর পোশাক দিয়ে গেছেন। কথাবার্তাও হয়েছে তাদের। সালাহ উদ্দিনকে উদ্ধৃত করে ওই আত্মীয়দের মধ্যে আইউব আলী নামে একজন জানিয়েছেন, যে ৬২ দিন তিনি বন্দি অবস্থায় কাটিয়েছেন। কোথায় ছিলেন, সেটা বলতে পারেননি। তারপর চোখ বেঁধে বেশ কয়েকবার গাড়ি বদল করে নিয়ে আসা হয়। গাড়ি থেকে নামানোর পর সালাহ উদ্দিন আহমেদ নিজেই খোঁজ করে জানতে পারেন, শিলংয়ের গল্ফ লিংক এলাকা এটি। পুলিশ যদিও এতদিন দাবি করে আসছিল তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাকে হেফাজতে নেয়। তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদ তার আত্মীয়কে জানিয়েছেন, তিনি নিজেই পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, বিএনপির এ নেতা জিজ্ঞাসাবাদকারী গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তাকে খাবার ও ওষুধপত্র দেয়া আছে। তার কাছে থাকা ওষুধগুলো বাংলাদেশেরই। আর শিলং পুলিশ ও সিভিল হাসপাতালের চিকিৎসকদের তথ্যও একই। তাদের মতে, ভারতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ ওষুধ কিনলে স্ট্রিপে বাংলা লেখা থাকত না। শিলং পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে তাকে সীমান্ত দিয়ে ভেতরে পাঠানো হয়েছে। আর কাজটি খুব জানাশোনা কেউ বা কারা করেছে। তারা সীমান্তে কিভাবে বিএসএফের চোখ ফাঁকি দেয়া যায় সেটিও জানে।
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের আইজিপি (অপারেশনস) জিএইচপি রাজু টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, সালাহ উদ্দিন আহমেদ কিভাবে ভারতে এলেন আমরা সে বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যেভাবে লোকজন অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে থাকে সালাহ উদ্দিন আহমেদ সে পর্যায়ের কোনো লোক নন।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় পুলিশ সদর দফতরের ইন্টারপোল শাখা যুগান্তরকে জানায়, দিল্লি পুলিশকে তারা অবহিত করেছে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ ভারতের একটি হাসপাতালে আছেন। তাকে ফেরত আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দিল্লি ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়া হয়েছে। শুক্রবার শিলং পুলিশ বিবিসি ও টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছে, ইন্টারপোলের কোনো চিঠি তাদের ইস্যু করা হয়নি। তাদের কাছে এ ধরনের চিঠির কোনো তথ্য জানা নেই।
শিলং হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ডি জে গোস্বামী জানিয়েছেন, সালাহ উদ্দিন আহমেদের শারীরিক পরীক্ষা করতে আরও দু-তিনদিন সময় লেগ যেতে পারে। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তারা পুলিশকে দেবেন।
শিলং পুলিশের এসপি জানিয়েছেন, সালাহ উদ্দিন যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন সেই হাসপাতালের চিকিৎসকের প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। এই প্রতিবেদন পেলে আমরা তাকে আদালতে নিয়ে যাব। তিনি বলেছেন, আমরা শুনেছি বাংলাদেশ থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দু’জন বিএনপি নেতা এসেছেন। কিন্তু তারা কোথায় আমি জানি না।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে চিকিৎসাধীন সালাহ উদ্দিন আহমেদের জন্য বাইরে থেকে যেসব ওষুধপত্র প্রয়োজন তা কেনারও লোক নেই। শিলংয়ের এসপির বক্তব্য হচ্ছে, যারা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন তাদের দেখা নেই। মনে হচ্ছে তারা নিজেরাই পালিয়ে আছেন।
এদিকে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনি প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে ভাবছে সরকার। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যুগান্তরকে বলেন, তার বিরুদ্ধে এ দেশে নাশকতা মামলা আছে। আইনি প্রক্রিয়ায় দেশে ফেরত এনে তাকে প্রচলিত আইনের মুখোমুখি করা হবে।
ভারতীয় আইন অনুযায়ী, বেআইনিভাবে কেউ দেশটির ভেতরে প্রবেশ করলে জেল-জরিমানার বিধান আছে। আর সে আইন অনুযায়ী সালাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানায় শিলং পুলিশ। ভারতে পাসপোর্ট আইন ১৯৫০-এর ৩ ও ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী, দেশটিতে অবৈধভাবে কোনোরকম কাগজপত্র ছাড়া প্রবেশ বা প্রবেশের চেষ্টা করলে তিন মাস বা তার বেশি কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড পেতে পারেন। ১৯৪৬ সালের ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪ ধারা অনুযায়ী, অন্য কোনো দেশের নাগরিক যদি অনুমোদিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ভারতে অবস্থান করেন, তাহলে তার পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হতে পারে। আর এতে করে সালাহ উদ্দিন আহমেদের দেশে ফেরার বিষয়টি সহজ নাও হতে পারে।
গত ১০ মার্চ রাতে ঢাকার উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়ির দোতলার ফ্ল্যাট থেকে তাকে অপহরণ করা হয় বলে তার পরিবার প্রথম থেকে দাবি করে আসছে।
বেসরকারি টেলিভিশন যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি মাহফুজ মিশু শিলং থেকে যুগান্তরকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। এছাড়া বিবিসি জানিয়েছে, সালাহ উদ্দিন আহমেদকে দুই মাস কোনো একটা জায়গায় ঘুপচি ঘরে রাখা হয়েছিল। তারপর বেশ কয়েকবার গাড়ি বদল করে শিলংয়ে নিয়ে আসা হয়।
শিলং থেকে মাহফুজ মিশু শুক্রবার টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, ঢাকা থেকে আসা বিএনপি নেতা জনি গতকাল সালাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। জনির উদ্ধৃতি দিয়ে মিশু জানান, সালাহ উদ্দিন আহমেদ এখনও অসুস্থ। কোথাও যাওয়ার মতো শারীরির অবস্থা তার এখন নেই। তিনি স্বাভাবিকভাবে কথাও বলতে পারছেন না। সালাহ উদ্দিনকে দুই মাস একটি ছোট ঘরে বন্দি করে রাখা হয়। তার ওজন প্রায় ১৫ কেজি কমে গেছে। তাকে চোখ বেঁধে এখানে (শিলং) কেউ ফেলে দিয়ে গেছেন।
মিশু আরও জানান, জনি দাবি করেছেন, শিলংয়ে বিএনপির পক্ষে তিনি আসেননি। এসেছেন সালাহ উদ্দিনের পারিবারিক বন্ধু হিসেবে। তিনি (জনি) জানিয়েছেন, যদি কোনো জটিলতা না হয় তাহলে রোববার সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী ভিসা পেতে পারেন। আর রোববার আসতে না পারলেও সোমবার শিলংয়ে আসতে পারেন।
যমুনা টিভির মিশু বিভিন্ন সূত্রে জেনেছেন, শিলং সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সালাহ উদ্দিনকে দেখতে সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে নেতাকর্মীরা গোপনে দেখা করছেন। কিন্তু তারা নিজেদের পরিচয় দিচ্ছেন না।
এদিকে বিএসএফের কড়া নিরাপত্তা প্রহরা সত্ত্বেও সালাহ উদ্দিনের শিলং আসার ঘটনা রহস্য নিয়ে কাজ করছে সে দেশের আইনশৃংখলা বাহিনী। আর এ প্রসঙ্গে মেঘালয় রাজ্যের আইজিপি টাইম অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, বিএনপির এই নেতা অবৈধভাবে ভারতে আসার মতো লোক নন। তিনি একজন সাবেক প্রতিমন্ত্রী। তিনি কোনো সাধারণ লোক নন। শিলং হাসপাতালের চিকিৎসক ও পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, সালাহ উদ্দিনের ওষুধপত্র আনার লোকও নেই এখানে। আর যারা দেখা করার জন্য এসেছেন তাদেরও খোঁজ নেই।
বিবিসি বাংলা জানায়, বাংলাদেশে দুই মাসের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে আসা বিএনপি নেতা আবদুল লতিফ জনি দেখা করেছেন। কিন্তু তার সঙ্গে কী কথা হয়েছে তা জানা যায়নি। বিবিসি জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে প্রায় দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মেঘালয় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। পুলিশেরই অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, গোয়েন্দাদের তিনি জানিয়েছেন দুই মাস তাকে কোনো একটা জায়গায় ঘুপচি ঘরে রাখা হয়েছিল। তারপর বেশ কয়েকবার গাড়ি বদল করে শিলংয়ে নিয়ে আসা হয়।
বিবিসি আরও জানায়, গোয়েন্দাদের জেরা আর সালাহ উদ্দিন আহমেদ নিজে আত্মীয়দের যা বলেছেন তার মধ্যে বেশ মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। এর আগের দিন সালাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দুজন আত্মীয় তার সঙ্গে দেখা করে খাবার আর পোশাক দিয়ে গেছেন। কথাবার্তাও হয়েছে তাদের। সালাহ উদ্দিনকে উদ্ধৃত করে ওই আত্মীয়দের মধ্যে আইউব আলী নামে একজন জানিয়েছেন, যে ৬২ দিন তিনি বন্দি অবস্থায় কাটিয়েছেন। কোথায় ছিলেন, সেটা বলতে পারেননি। তারপর চোখ বেঁধে বেশ কয়েকবার গাড়ি বদল করে নিয়ে আসা হয়। গাড়ি থেকে নামানোর পর সালাহ উদ্দিন আহমেদ নিজেই খোঁজ করে জানতে পারেন, শিলংয়ের গল্ফ লিংক এলাকা এটি। পুলিশ যদিও এতদিন দাবি করে আসছিল তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাকে হেফাজতে নেয়। তবে সালাহ উদ্দিন আহমেদ তার আত্মীয়কে জানিয়েছেন, তিনি নিজেই পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, বিএনপির এ নেতা জিজ্ঞাসাবাদকারী গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তাকে খাবার ও ওষুধপত্র দেয়া আছে। তার কাছে থাকা ওষুধগুলো বাংলাদেশেরই। আর শিলং পুলিশ ও সিভিল হাসপাতালের চিকিৎসকদের তথ্যও একই। তাদের মতে, ভারতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ ওষুধ কিনলে স্ট্রিপে বাংলা লেখা থাকত না। শিলং পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে তাকে সীমান্ত দিয়ে ভেতরে পাঠানো হয়েছে। আর কাজটি খুব জানাশোনা কেউ বা কারা করেছে। তারা সীমান্তে কিভাবে বিএসএফের চোখ ফাঁকি দেয়া যায় সেটিও জানে।
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের আইজিপি (অপারেশনস) জিএইচপি রাজু টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, সালাহ উদ্দিন আহমেদ কিভাবে ভারতে এলেন আমরা সে বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যেভাবে লোকজন অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে থাকে সালাহ উদ্দিন আহমেদ সে পর্যায়ের কোনো লোক নন।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় পুলিশ সদর দফতরের ইন্টারপোল শাখা যুগান্তরকে জানায়, দিল্লি পুলিশকে তারা অবহিত করেছে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ ভারতের একটি হাসপাতালে আছেন। তাকে ফেরত আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দিল্লি ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়া হয়েছে। শুক্রবার শিলং পুলিশ বিবিসি ও টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছে, ইন্টারপোলের কোনো চিঠি তাদের ইস্যু করা হয়নি। তাদের কাছে এ ধরনের চিঠির কোনো তথ্য জানা নেই।
শিলং হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ডি জে গোস্বামী জানিয়েছেন, সালাহ উদ্দিন আহমেদের শারীরিক পরীক্ষা করতে আরও দু-তিনদিন সময় লেগ যেতে পারে। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তারা পুলিশকে দেবেন।
শিলং পুলিশের এসপি জানিয়েছেন, সালাহ উদ্দিন যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন সেই হাসপাতালের চিকিৎসকের প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। এই প্রতিবেদন পেলে আমরা তাকে আদালতে নিয়ে যাব। তিনি বলেছেন, আমরা শুনেছি বাংলাদেশ থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দু’জন বিএনপি নেতা এসেছেন। কিন্তু তারা কোথায় আমি জানি না।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে চিকিৎসাধীন সালাহ উদ্দিন আহমেদের জন্য বাইরে থেকে যেসব ওষুধপত্র প্রয়োজন তা কেনারও লোক নেই। শিলংয়ের এসপির বক্তব্য হচ্ছে, যারা বাংলাদেশ থেকে এসেছেন তাদের দেখা নেই। মনে হচ্ছে তারা নিজেরাই পালিয়ে আছেন।
এদিকে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আইনি প্রক্রিয়ায় ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে ভাবছে সরকার। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যুগান্তরকে বলেন, তার বিরুদ্ধে এ দেশে নাশকতা মামলা আছে। আইনি প্রক্রিয়ায় দেশে ফেরত এনে তাকে প্রচলিত আইনের মুখোমুখি করা হবে।
ভারতীয় আইন অনুযায়ী, বেআইনিভাবে কেউ দেশটির ভেতরে প্রবেশ করলে জেল-জরিমানার বিধান আছে। আর সে আইন অনুযায়ী সালাহ উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানায় শিলং পুলিশ। ভারতে পাসপোর্ট আইন ১৯৫০-এর ৩ ও ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী, দেশটিতে অবৈধভাবে কোনোরকম কাগজপত্র ছাড়া প্রবেশ বা প্রবেশের চেষ্টা করলে তিন মাস বা তার বেশি কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড পেতে পারেন। ১৯৪৬ সালের ফরেনার্স অ্যাক্টের ১৪ ধারা অনুযায়ী, অন্য কোনো দেশের নাগরিক যদি অনুমোদিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ভারতে অবস্থান করেন, তাহলে তার পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হতে পারে। আর এতে করে সালাহ উদ্দিন আহমেদের দেশে ফেরার বিষয়টি সহজ নাও হতে পারে।
গত ১০ মার্চ রাতে ঢাকার উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়ির দোতলার ফ্ল্যাট থেকে তাকে অপহরণ করা হয় বলে তার পরিবার প্রথম থেকে দাবি করে আসছে।
No comments