বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি চায় by মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)

শিরোনামের উক্তিটি একাত্তরের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু দৃপ্ত কণ্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন। তারপর গত পরশুসহ ৪৫টি ৭ মার্চ পার হয়ে বাংলাদেশ আজ একবিংশ শতাব্দীর হাইটেক আল্ট্রা সুপারসোনিক যুগে পদচারণা করছে। কিন্তু আকাঙ্ক্ষিত মুক্তি বাংলাদেশের মানুষ পেয়েছে কি? এ প্রশ্নের উত্তর পেতে একদমই পিছনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। ২৬ ফেব্রুয়ারি শত শত মানুষ ও কয়েক ডজন পুলিশের সামনে তরুণ স্বাধীনচেতা লেখক অভিজিৎ রায়কে ধর্মান্ধ উগ্র জঙ্গিরা হত্যা করল। তারপর গত প্রায় দুই মাসের অধিককাল ধরে অবিরাম অবরোধ ও হরতালের নামে নিরীহ সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভয়ভীতির মাধ্যমে জোরপূর্বক মানুষকে জিম্মি করার চেষ্টা হচ্ছে, তাতে বলা যায় বঙ্গবন্ধুর আকাঙ্ক্ষিত মুক্তির কিনারায়ও আমরা পৌঁছতে পারিনি। অর্থনৈতিক ও কিছু কিছু সামাজিক ক্ষেত্রে গত কয়েক বছর আমাদের অগ্রগতি তুলনামূলকভাবে প্রশংসনীয় হলেও সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও আদর্শিক ক্ষেত্রের মুক্তির নিশানা বাংলাদেশের দিগন্তে আজও কেন দেখা যাচ্ছে না? লক্ষ্যের দূরত্ব কেন স্পষ্ট হচ্ছে না। আর কত দূর, কত বছর অপেক্ষা করতে হবে। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরেও মুক্তি অর্জনের পথ নিয়েই বা এত বিভ্রান্তি কেন? এসব প্রশ্ন ও আনুষঙ্গিক বিষয়ের ওপর আলোচনার জন্য আজকের নিবন্ধের সূত্রপাত। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু। তিনি বাঙালি জাতির মুক্তির সোপান রচনা করেছিলেন। কিন্তু তার শেষ দেখে যেতে পারলেন না। তৃণমূল পর্যায়ের প্রান্তিক মানুষের মধ্যে থেকে বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক সংগ্রামের সূত্রপাত করেছেন এবং স্বপ্নের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ চলার পথ নির্মাণের উপাদান সংগ্রহ করেছেন। বন্দুকের নলকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশের দুর্গম পথ ও প্রান্তে অবিরাম হেঁটেছেন এবং পদে পদে লক্ষ-কোটি দুঃখী মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছেন। সেই স্পর্শে অক্ষরজ্ঞানহীন মানুষের মনের অন্ধকার কোনে জ্বলে উঠেছে বাঙালি সত্তার চিরায়িত স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা। সাড়ে সাত কোটি মানুষ একবাক্যে বলেছে সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমরা বাঙালি। ১২ মাসে আমাদের ১৩ পার্বণ। এ পরিচয়ের ওপর যারা আঘাত করতে চায় তাদের থেকে আমরা মুক্তি চাই। ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে রাষ্ট্রীয় অঙ্গনে বৈষম্য সৃষ্টিকারী সব অপশক্তি থেকে আমরা মুক্ত হতে চাই। সবাই নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে স্বাধীনভাবে। ধর্মের কারণে আক্রমণের শিকার হতে বাঁচতে চাই। শুধু নারী হওয়ার জন্য সমাজের অর্ধেক জনশক্তিকে যারা চার দেয়ালের অন্ধকারে আটকে রাখতে উদ্যত তাদের খপ্পর থেকে বাঙালি মুক্তি চায়। নিজের স্বতন্ত্র মত ও পথকে ভালোবেসে শান্তির বারতা নিয়ে, হিংসা-বিদ্বেষহীন পরিবেশে মুক্ত বিহঙ্গের মতো চলার পথে চাপাতির কোপ থেকে বাঁচতে চাই। এই অপশক্তি থেকে মুক্তি চাই। নিজেদের জাতীয় স্বার্থের জন্য লড়াই করলে আমাদের অন্য দেশের দালাল বলে যারা গালি দেয় তাদের কবল থেকে আমরা মুক্তি চাই। গণমানুষের মুক্তিকামী এসব আকাঙ্ক্ষাকে চলার পথে বঙ্গবন্ধু নিজের হৃদয়ে ধারণ করেছেন। সেগুলো পরিমার্জিত করে নিজ হৃদয়ের আলোতে পরিপক্ব ও পরিস্ফুটিত করে রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে বঙ্গবন্ধু জনগণের কাছে উপস্থাপন করেছেন। মানুষের আনুষ্ঠানিক ম্যান্ডেট নিয়েছেন। তারপর সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলে মুক্তির আকাঙ্ক্ষাগুলোকে রাষ্ট্রীয় চরিত্রে প্রোথিত করা এবং সেগুলোর বাস্তবায়নের পথকে কণ্ঠকহীন করার জন্য রাষ্ট্রের মূল দলিল সংবিধানে যথাযথ অনুচ্ছেদ সনি্নবেশিত করেছেন। এ জন্যই একাত্তরের ৯ মাসের যুদ্ধকে বলা হয় মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধু বুঝেছিলেন স্বাধীনতা অর্জন মানেই মুক্তি অর্জন নয়। তাই তিনি বাহাত্তরের সংবিধানে একেবারে প্রথম পৃষ্ঠার দ্বিতীয় লাইনে লিখলেন- "জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করেছি"। মুক্তির পথকে নিষ্কণ্টক রাখার জন্য যথারীতি সংবিধানের অন্যান্য জায়গায় রক্ষাকবচ জুড়ে দিলেন। বাহাত্তরের মূল সংবিধানের ১২ ও ৩৮ অনুচ্ছেদ পড়লে যে কেউ এ কথার সত্যতা বুঝতে পারবেন।
কিন্তু পঁচাত্তরের মর্মান্তিক ঘটনার জের ধরে জেনারেল জিয়াউর রহমান একাধারে রাষ্ট্রপতি, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও সেনা বাহিনী প্রধান হলেন। এত ব্যাপক ক্ষমতার জোরে জনগণ, নির্বাচন, সংসদ কোনো কিছুর অপেক্ষা না করে ১৯৭৮ সালে সামরিক ফরমান বলে সংবিধানের উলি্লখিত ওই দ্বিতীয় লাইন থেকে মুক্তি এবং সংগ্রাম এ দুটি শব্দ উঠিয়ে দিলেন। বাতিল করলেন সংবিধানের ১২ ও ৩৮ অনুচ্ছেদ। মুক্তি শব্দটি বাদ দেওয়ার ফলে উপরে বর্ণিত মুক্তির আকাঙ্ক্ষাগুলোর মৃত্যু হলো আর সংগ্রাম বাদ দেওয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আবেদন সৃষ্টিকারী ঐতিহাসিক উজ্জ্বল ঘটনাগুলো নেই হয়ে গেল। এভাবেই জামায়াত-শিবির, তালেবানি আদর্শ এবং উগ্র ধর্মান্ধ জঙ্গিদের উত্থানের মূল বীজ রোপিত হলো সংবিধানের ভিতরে। এ বীজ থেকে যে বিষবৃক্ষের জন্ম হলো, সেটি আজ বহু শাখা-প্রশাখা বিস্তৃত করে ডালপালা এবং পত্র-পল্লবে ভরপুর। এ বিষবৃক্ষের এক ডালের বাহ্যিক রূপ ধর্মান্ধ উগ্র জঙ্গিদের গ্রেনেড-বোমা হামলা এবং হুমায়ুন আজাদ, রাজীব হায়দার ও সর্বশেষ অভিজিৎ হত্যা। আরেক ডালের স্বরূপ জামায়াত-শিবির ও তালেবানি আদর্শধারীদের রাজনীতি এবং বিএনপির সঙ্গে তাদের সখ্য। পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে নিরীহ সাধারণ মানুষ হত্যা এ বিষবৃক্ষের অপর শাখার বীভৎস চেহারা। এগুলো একই সূত্রে গাঁথা। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রাক্কালে তা প্রতিহত করার নামে প্রায় ২০০ নিরীহ মানুষ হত্যা এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেড়শর অধিক সংসদ সদস্যের নির্বাচনও ওই একই অপশক্তির প্রতিক্রিয়ার ফল। যারা বলেন, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হওয়ায় বর্তমান সংকট সৃষ্টি হয়েছে তারা গোষ্ঠী বা ব্যক্তিগত স্বার্থ রক্ষার জন্য সংকটের মূলে যেতে চান না। তারা জেনেশুনে সত্য গোপন এবং সত্যের সঙ্গে মিথ্যাকে মিশ্রিত করেন। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংঘাত-সংঘর্ষের কোনো সমাধান দিতে পারেনি, সেটা তো বিগত দিনের অভিজ্ঞতাই আমাদের বলে দিচ্ছে। আবার একদল সুশীল আছেন তারা জাতীয় সংলাপ, জাতীয় সনদ, চার্টার তৈরির কথা বলছেন। কিন্তু বাহাত্তরের মতো একটি প্রশংসনীয় সংবিধান ও স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রের মতো একটি অমূল্য দলিল থাকার পরেও যারা অন্য কিছু বলেন তাদের মতলব নিয়ে সন্দেহ জাগা অস্বাভাবিক নয়। স্বাধীনতার অব্যবহিত পর দেশের সব মানুষের সম্মতিতে নিষ্পত্তি হওয়া একটা বিষয়কে পাশ কাটিয়ে অন্য কিছু তৈরি করতে গেলে বর্তমানের বাস্তবতায় পুনরায় কি সব মানুষের ঐক্যবদ্ধ সম্মতি পাওয়া সম্ভব? ১৯৪৮-১৯৭১ পর্যন্ত মুক্তি সংগ্রামের বাঁকে বাঁকে সংঘটিত উজ্জ্বল ঘটনাগুলো আন্তরিকভাবে কেউ যদি মনের মধ্যে ধারণ না করে, তাহলে তাদের ভিতর কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সৃষ্টি হবে? চেতনা তো হাওয়া থেকে সৃষ্টি হতে পারে না। ঐতিহাসিক উজ্জ্বল আকর্ষণীয় ঘটনাপ্রবাহ হৃদয়ে দোলা দিলেই একজনের মনে সেই ঘটনাপ্রসূত চেতনার সৃষ্টি হতে পারে। সুতরাং রাজনৈতিক ও উগ্রবাদী উপদ্রব থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে ১৯৭৮ সালে রোপিত বিষবৃক্ষ শেকড়সহ সবার মন থেকে উপড়ে ফেলতে হবে এবং বাহাত্তরের মূল সংবিধানের ফান্ডামেন্টালের ওপর সব পক্ষকে নিঃশর্তভাবে ঐকমত্যে আসতে হবে। কিন্তু দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জঞ্জাল ও আবর্জনায়পূর্ণ পথে আজ বহুমুখী চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি হয়েছে।
এক. আকাঙ্ক্ষিত মুক্তির পথে প্রধান বাধা একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামায়াত এবং তাদের সহযোগী দল ও জঙ্গি সংগঠন। জামায়াত এবং তাদের সহযোগী উগ্র ধর্মান্ধ দলগুলো আজ ধনে-জনে দেশব্যাপী এক বিশাল সাম্রাজ্যের সৃষ্টি করেছে। তারা সৃষ্টি করেছে আন্ডারগ্রাউন্ড সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠী, যাদের সঙ্গে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর নিবিড় সংযোগ রয়েছে। দেশি-বিদেশি বহু নামিদামি সংগঠন, মিডিয়া ও ব্যক্তিকে নিজেদের পক্ষে মাঠে নামিয়েছে অর্থের বিনিময়ে, নানা ছদ্মবেশে ও অজুহাতে।
দুই. বিএনপি বাংলাদেশের একটি বড় রাজনৈতিক দল। ১৬ কোটি মানুষের ভিতর তাদের বড় একটি সমর্থন আছে। তাই বিএনপির সঙ্গে জামায়াত ও উগ্র ধর্মান্ধ দলের মিত্রতা বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষিত মুক্তির পথে একটি কঠিন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ বিএনপির কাঁধে চড়ে তারা আজ বহুমুখী সক্ষমতার অধিকারী। হেফাজতের ১৩ দফা ও তাণ্ডব এবং তার প্রতি বিএনপির সরাসরি সমর্থন লক্ষ্য অর্জনের পথকে আরও দুর্গম করেছে।
তিন. গোষ্ঠী, শ্রেণি ও ব্যক্তিস্বার্থের সমীকরণে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে একটি শক্তিশালী সুশীল সমাজের উৎপত্তি ঘটেছে, যারা মুক্তিযুদ্ধ ও সংগ্রামের উজ্জ্বল ঘটনাকে পাশ কাটিয়ে, অনুচ্চারিত রেখে সব পক্ষকে একই পাল্লায় মাপতে চায়, যার ফলে সংকটের মূল জায়গাগুলো সম্পর্কে মানুষের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে এবং জাতীয় ঐকমত্যের পথ খুঁজে পেতে কষ্ট হচ্ছে।
চার. আন্তর্জাতিক পরাশক্তি ও পশ্চিমা বিশ্ব এই অঞ্চলে তাদের কৌশলগত সমীকরণের হিসাব-নিকাশে অনেক সময় যে অবস্থান নেয় তাতে উগ্র ধর্মান্ধ জঙ্গিবাদের কবল থেকে মুক্ত হওয়ার পথ আরও কঠিন হয়ে যায়। বিশ্ব গ্রামের দর্শনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও সংস্থাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে চলার পথ সহজ নয়। এখানে উল্লেখ্য, অপার সম্ভাবনার হাতছানিতে বিশ্বের শক্তিবলয় এখন চুম্বকের মতো বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে।
পাঁচ. বাঙালি সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তির কবল থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য আদর্শগত অবস্থান থেকে শক্তিশালী রাজনৈতিক ক্যাম্পেইনের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তা এখন বাংলাদেশে চরমভাবে অনুপস্থিত। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রধান রাজনৈতিক শক্তির সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের ভিতরে ভয়ানক আদর্শগত পদঙ্খলনের কারণে মাঠ-পর্যায়ে জঙ্গি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিক দীক্ষা হচ্ছে না, তার কোনো ব্যবস্থাও নেই। তারপর অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষুদ্র স্বার্থ ও নেতৃত্বের কোন্দলে বহু ভাগে বিভক্ত। কখনো কখনো তারা একে অপরের শত্রু হিসেবে মাঠে নামছে। পক্ষান্তরে শক্তিশালী হচ্ছে সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদী শক্তি। কিন্তু এতসব চ্যালেঞ্জ দেখে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তবে লক্ষ্য অর্জনের জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন চ্যালেঞ্জগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করা। সশস্ত্র বিপ্লবের পর প্রতিবিপ্লব যদি সফল হয়, তাহলে পুনরায় প্রগতিশীল বিপ্লবী শক্তির যুদ্ধের ময়দানে ফিরে আসার ঘটনা বিশ্বে খুব একটা নেই। পঁচাত্তরের প্রতি বিপ্লবের ফলে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী শক্তি পরাজিত হয়েছিল।
প্রায় নব্বই দশকের শুরু পর্যন্ত প্রতিবিপ্লবী শক্তির একচেটিয়া প্রাধান্য ছিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় অঙ্গনে। কিন্তু তারপর থেকে আবার পরিবর্তন শুরু হয়। আজ আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে তাতে বলা যায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় কতখানি উদ্বুদ্ধ ও উদ্যত সেটি দেখা গেছে ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চের আবির্ভাবে। নতুন প্রজন্ম বসে নেই, তারা যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর জয় অবধারিত। এখন শুধু ভোর হওয়ার অপেক্ষায়। মোরগের ডাক শোনা যাচ্ছে। গ্রেনেড-বোমা মেরে উদীচী ও বাংলা নববর্ষের উৎসবকে তারা দাবিয়ে রাখতে পারেনি। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে নির্মিত মুক্তির পথ বাঙালি পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করবে। সেদিন আর বেশি দূরে নয়।
লেখক : কলামিস্ট ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।
sikder52@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.