সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান যা দিলেন by রজার কোহেন
অন্য এশীয়দের মতো ভিয়েতনামিরাও ঝাঁকে
ঝাঁকে কেনাকাটা করতে আসে সিঙ্গাপুরে। অর্চার্ড রোডের শীতল সুবাসিত
বিপণিবিতানগুলোয় তারা ভিড় করে। যারা কিছুটা অবস্থাপন্ন তারা ডাক্তার
দেখাতে কিংবা বাচ্চা প্রসব করতেও এসে থাকে। সিঙ্গাপুর তাদের টানে আরও এক
কারণে, সেটা হলো সমৃদ্ধি ও দক্ষতার আবহ। যেন জাদুবলে সুইজারল্যান্ডের
শৃঙ্খলা ও পরিচ্ছন্নতা এ গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে দেখা দিয়েছে। আধুনিক এশিয়ার
কর্কশ জীবন থেকে মুক্ত হয়ে সিঙ্গাপুরের কৈশোরিক শান্তির মধ্যে এসে তাদের
মনে হয়, এখানে কোনো কিছুই ভুল হতে পারে না।
সিঙ্গাপুরকে পছন্দ না করেও এই স্বস্তি আপনাকে টানবে। একবার একে পছন্দ করা শুরু করলে আপনি দেখবেন, আপনার মধ্যে গোপনে এর প্রতি আকর্ষণের জন্ম হচ্ছে। ৯১ বছর বয়সী সদ্য প্রয়াত লি কুয়ান ইউয়ের অর্জন অসামান্য। তিনিই এই রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা পিতা। বিশ শতকে তাঁর মতো রাষ্ট্রনায়ক খুব কম, তাঁর মতো বাস্তববাদীও আর কেউ ছিলেন না।
বিপর্যয়ের যথেষ্ট মালমশলা থাকা সত্ত্বেও সিঙ্গাপুর টিকে আছে; এটাই তাঁর অর্জনের পরিমাপক। ২০০৭ সালে নিউইয়র্ক টাইমস-এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে লি বলেছিলেন, ‘সিঙ্গাপুরের টিকে থাকার কথাও নয়, টিকতে পারেও না।’ তিনি বলেন, ‘জাতি হয়ে ওঠার আবশ্যকীয় উপাদান, যেমন: সমধর্মী জনসংখ্যা, একই ভাষা, একই সংস্কৃতি এবং একই নিয়তি সিঙ্গাপুরে নেই।’ বিপরীতে এটি জাতিগত ও ধর্মীয় গোলমালের জ্বলনক্ষেত্র। চীনা, মালয়ী ও ভারতীয়রা এই নগররাষ্ট্রে জড়ো হয়েছে এবং এর কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ নেই।
এ রকম অবস্থাতেও সিঙ্গাপুর সফল হয়েছে, যেখানে এর থেকে বেশি জাতি-যোগ্যতার উপাদানে সমৃদ্ধ দেশ ব্যর্থ হয়েছে, আর্জেন্টিনা তাদের মধ্যে অন্যতম। যেখানে বলকান অঞ্চল থেকে মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত গোষ্ঠীগত ভেদাভেদ দূর করা খুবই কঠিন বলে প্রমাণিত হয়েছে এবং যার কারণে প্রায়ই এখানে যুদ্ধ ও জাতীয় বিপর্যয় ঘটে যাচ্ছে।
সিঙ্গাপুর প্রমাণ করেছে বিপর্যয়ের উপাদানে ভরপুর থাকা মানেই বিপর্যয়ের অনিবার্যতা নয়। লি এটা এমন এক সময়ে করে দেখিয়েছেন, যে সময়ে বিশ্বজুড়েই চলছিল সার্বিক বিশৃঙ্খলা। তিনি প্রতিটি রাজনৈতিক মুহূর্তকে কাজে লাগিয়েছেন ও ফল বের করে এনেছেন, যখন রাষ্ট্রনায়কতা করাও ছিল খুবই কঠিন। সিঙ্গাপুরের এই ব্যতিক্রমী পথযাত্রার মূল উপাদান হলো নেতৃত্ব। আর নেতৃত্ব মানে সবকিছুর ওপরে নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা, লক্ষ্যে অবিচলতা, সামগ্রিক স্বার্থে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা এবং দূরদর্শিতা।
লির একমাত্র ধর্ম হলো বাস্তববাদিতা আর ধর্মগুলো একে শত্রু মনে করে। কেননা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা এমন অবতীর্ণ সত্য হাজির করে, যা বাস্তবতাবিরুদ্ধ। যে মতাদর্শ বাস্তবিক ঘটনাকে অস্বীকার করে, তা সমস্যাজনক (ধরেন কেউ বিশ্বাস করে যে ভূমির মালিক আপনি কারণ আপনার ধর্মগ্রন্থে তা দলিল করে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু ধরুন, সেখানে শত শত বছর ধরে অন্য মানুষেরা বসবাস করে আসছে। এখন আপনার এই বিশ্বাস নিজেই সহিংসতার সম্ভাবনা ধারণ করে)। কোনো কাজের বেলায় লির একমাত্র মানদণ্ড হলো: এটা কি কার্যকর? এটাই হলো এক সম্ভাবনামুখী মানুষের বৈশিষ্ট্য, যিনি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেন কিন্তু তার মধ্যে আটকে থাকেন না। তিনি আক্রান্তের ভাব ধরে থাকা (এটা পঙ্কিল চিন্তা ও জাতীয়তাবাদী খেয়ালের অজুহাত) এবং দুর্নীতি অপছন্দ করতেন। তিনি সুযোগ, যোগ্যতা, অভিবাসীদের কর্মনৈতিকতা এবং শিক্ষাকে পুরস্কৃত করতেন।
পশ্চিমা গণতন্ত্র তাঁর জন্য নয়। যে জাতিকে সংগঠিত করে সমৃদ্ধির পথে দ্রুত ছোটাতে হবে তার জন্য এটা পিচ্ছিল পথ। তিনি কর্তৃত্ববাদী এবং প্রয়োজনমাফিক কঠোর। তাঁর সময়ে মতপ্রকাশের অধিকার ও রাজনৈতিক বিরোধিতা দমন করা হয়েছিল। একমাত্র অর্থনীতির বিভিন্ন ধরনের বেলাতেই তিনি উদার ছিলেন। লি এশীয় ও কনফুসীয় মনোভাবে এমনভাবে আচ্ছন্ন ছিলেন, যেখানে ব্যক্তির চেয়ে সমষ্টির মঙ্গলকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এবং তিনি সিঙ্গাপুরের জনগণকে ভয়ের মধ্যে রাখতেন। কিন্তু মোটের ওপর এই পদ্ধতি কাজ করেছিল। সিঙ্গাপুর পরিণত হয় বিকাশমান বাণিজ্যিক ও ব্যাংকিং কেন্দ্রে। সমৃদ্ধি ভেদাভেদ মুছে দেয়, যদিও সারা দুনিয়ার মতো সিঙ্গাপুরেও ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বাড়া উদ্বেগের বিষয় হয়ে আছে।
যদিও মুক্তি ও তা অর্জনের আকাঙ্ক্ষা বিশ্বজনীন, তবু সমগ্র মানবজাতির জন্য অভিন্ন কোনো মডেল নেই। প্রাযুক্তিক নিবিড় যোগাযোগ রাজনৈতিক মতৈক্য তৈরি করে না। বাস্তববাদিতা অবশ্য মন্দের সাপেক্ষে ভালোর গুণ বিচার করে, যদিও তা দাঁড়ায় নিকৃষ্টতমের বিরুদ্ধে এবং চর্চা করে ধৈর্যের।
সিঙ্গাপুরের উত্থান এখন এশীয় দৃষ্টান্ত হয়ে গেছে। এশিয়া যদি সংঘাতের প্রশ্নে বাস্তববাদী হয়ে থাকে, বিশেষ করে চীন ও ভারতের মধ্যকার রেষারেষি বিষয়ে, তবে তারা লির কাছে ঋণী। চীনের মডেল—কর্তৃত্ববাদিতা, মুক্তবাজার, অর্থনৈতিকভাবে খোলামেলা কিন্তু রাজনৈতিকভাবে বদ্ধ—সরাসরি লির সিঙ্গাপুর দেখে উদ্বুদ্ধ। লির বিশালতার একটা পরিমাপ বিষয়ে আমাকে বলেছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের সাবেক রাষ্ট্রদূত টমি কোহ। তাঁর কথায়, ‘তাঁর প্রস্থান সিঙ্গাপুরের ভবিষ্যতের ওপর মন্দ প্রভাব ফেলবে না।’
সমৃদ্ধিশালী এশীয়রা খোলামেলা রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিষয়ে কতটা সোচ্চার হতে পারেন? ভবিষ্যৎই তা বলে দেবে, তবে আমি রাতারাতি পরিবর্তনের পক্ষে বাজি ধরব না। যা কাঙ্ক্ষিত তা সর্বদা অপরিহার্য নাও হতে পারে, অন্তত এখন পর্যন্ত না। লি আরেকটি এশীয় অবদানের জনক: তিনি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে মূল্য দিতেন। তিনি রাজনীতিবিজ্ঞানী জোসেফ নাইয়ের মতো বিশ্বাস করতেন না যে আমেরিকা পতনশীল। জোসেফ বলেছিলেন, চীন ১৩০ কোটি মেধাপুঞ্জ থেকে যা নেওয়ার নেয়। কিন্তু আমেরিকা বিশ্বের ৭০০ কোটি মানুষের থেকে এমনভাবে নেয় এবং তাদের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির মধ্যে আবার এমনভাবে মেশায়; যা থেকে নির্গত হয় সৃষ্টিশীলতা, চীনের হান জাতীয়তাবাদ যা সেভাবে পারে না।
ইংরেজি থেকে অনূদিত, নিউইয়র্ক টাইমস থেকে নেওয়া
রজার কোহেন: নিউইয়র্ক টাইমস-এর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনীতিবিষয়ক কলাম লেখক।
সিঙ্গাপুরকে পছন্দ না করেও এই স্বস্তি আপনাকে টানবে। একবার একে পছন্দ করা শুরু করলে আপনি দেখবেন, আপনার মধ্যে গোপনে এর প্রতি আকর্ষণের জন্ম হচ্ছে। ৯১ বছর বয়সী সদ্য প্রয়াত লি কুয়ান ইউয়ের অর্জন অসামান্য। তিনিই এই রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা পিতা। বিশ শতকে তাঁর মতো রাষ্ট্রনায়ক খুব কম, তাঁর মতো বাস্তববাদীও আর কেউ ছিলেন না।
বিপর্যয়ের যথেষ্ট মালমশলা থাকা সত্ত্বেও সিঙ্গাপুর টিকে আছে; এটাই তাঁর অর্জনের পরিমাপক। ২০০৭ সালে নিউইয়র্ক টাইমস-এ দেওয়া সাক্ষাৎকারে লি বলেছিলেন, ‘সিঙ্গাপুরের টিকে থাকার কথাও নয়, টিকতে পারেও না।’ তিনি বলেন, ‘জাতি হয়ে ওঠার আবশ্যকীয় উপাদান, যেমন: সমধর্মী জনসংখ্যা, একই ভাষা, একই সংস্কৃতি এবং একই নিয়তি সিঙ্গাপুরে নেই।’ বিপরীতে এটি জাতিগত ও ধর্মীয় গোলমালের জ্বলনক্ষেত্র। চীনা, মালয়ী ও ভারতীয়রা এই নগররাষ্ট্রে জড়ো হয়েছে এবং এর কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ নেই।
এ রকম অবস্থাতেও সিঙ্গাপুর সফল হয়েছে, যেখানে এর থেকে বেশি জাতি-যোগ্যতার উপাদানে সমৃদ্ধ দেশ ব্যর্থ হয়েছে, আর্জেন্টিনা তাদের মধ্যে অন্যতম। যেখানে বলকান অঞ্চল থেকে মধ্যপ্রাচ্য পর্যন্ত গোষ্ঠীগত ভেদাভেদ দূর করা খুবই কঠিন বলে প্রমাণিত হয়েছে এবং যার কারণে প্রায়ই এখানে যুদ্ধ ও জাতীয় বিপর্যয় ঘটে যাচ্ছে।
সিঙ্গাপুর প্রমাণ করেছে বিপর্যয়ের উপাদানে ভরপুর থাকা মানেই বিপর্যয়ের অনিবার্যতা নয়। লি এটা এমন এক সময়ে করে দেখিয়েছেন, যে সময়ে বিশ্বজুড়েই চলছিল সার্বিক বিশৃঙ্খলা। তিনি প্রতিটি রাজনৈতিক মুহূর্তকে কাজে লাগিয়েছেন ও ফল বের করে এনেছেন, যখন রাষ্ট্রনায়কতা করাও ছিল খুবই কঠিন। সিঙ্গাপুরের এই ব্যতিক্রমী পথযাত্রার মূল উপাদান হলো নেতৃত্ব। আর নেতৃত্ব মানে সবকিছুর ওপরে নিষ্ঠা, শৃঙ্খলা, লক্ষ্যে অবিচলতা, সামগ্রিক স্বার্থে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা এবং দূরদর্শিতা।
লির একমাত্র ধর্ম হলো বাস্তববাদিতা আর ধর্মগুলো একে শত্রু মনে করে। কেননা, কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা এমন অবতীর্ণ সত্য হাজির করে, যা বাস্তবতাবিরুদ্ধ। যে মতাদর্শ বাস্তবিক ঘটনাকে অস্বীকার করে, তা সমস্যাজনক (ধরেন কেউ বিশ্বাস করে যে ভূমির মালিক আপনি কারণ আপনার ধর্মগ্রন্থে তা দলিল করে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু ধরুন, সেখানে শত শত বছর ধরে অন্য মানুষেরা বসবাস করে আসছে। এখন আপনার এই বিশ্বাস নিজেই সহিংসতার সম্ভাবনা ধারণ করে)। কোনো কাজের বেলায় লির একমাত্র মানদণ্ড হলো: এটা কি কার্যকর? এটাই হলো এক সম্ভাবনামুখী মানুষের বৈশিষ্ট্য, যিনি ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেন কিন্তু তার মধ্যে আটকে থাকেন না। তিনি আক্রান্তের ভাব ধরে থাকা (এটা পঙ্কিল চিন্তা ও জাতীয়তাবাদী খেয়ালের অজুহাত) এবং দুর্নীতি অপছন্দ করতেন। তিনি সুযোগ, যোগ্যতা, অভিবাসীদের কর্মনৈতিকতা এবং শিক্ষাকে পুরস্কৃত করতেন।
পশ্চিমা গণতন্ত্র তাঁর জন্য নয়। যে জাতিকে সংগঠিত করে সমৃদ্ধির পথে দ্রুত ছোটাতে হবে তার জন্য এটা পিচ্ছিল পথ। তিনি কর্তৃত্ববাদী এবং প্রয়োজনমাফিক কঠোর। তাঁর সময়ে মতপ্রকাশের অধিকার ও রাজনৈতিক বিরোধিতা দমন করা হয়েছিল। একমাত্র অর্থনীতির বিভিন্ন ধরনের বেলাতেই তিনি উদার ছিলেন। লি এশীয় ও কনফুসীয় মনোভাবে এমনভাবে আচ্ছন্ন ছিলেন, যেখানে ব্যক্তির চেয়ে সমষ্টির মঙ্গলকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এবং তিনি সিঙ্গাপুরের জনগণকে ভয়ের মধ্যে রাখতেন। কিন্তু মোটের ওপর এই পদ্ধতি কাজ করেছিল। সিঙ্গাপুর পরিণত হয় বিকাশমান বাণিজ্যিক ও ব্যাংকিং কেন্দ্রে। সমৃদ্ধি ভেদাভেদ মুছে দেয়, যদিও সারা দুনিয়ার মতো সিঙ্গাপুরেও ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বাড়া উদ্বেগের বিষয় হয়ে আছে।
যদিও মুক্তি ও তা অর্জনের আকাঙ্ক্ষা বিশ্বজনীন, তবু সমগ্র মানবজাতির জন্য অভিন্ন কোনো মডেল নেই। প্রাযুক্তিক নিবিড় যোগাযোগ রাজনৈতিক মতৈক্য তৈরি করে না। বাস্তববাদিতা অবশ্য মন্দের সাপেক্ষে ভালোর গুণ বিচার করে, যদিও তা দাঁড়ায় নিকৃষ্টতমের বিরুদ্ধে এবং চর্চা করে ধৈর্যের।
সিঙ্গাপুরের উত্থান এখন এশীয় দৃষ্টান্ত হয়ে গেছে। এশিয়া যদি সংঘাতের প্রশ্নে বাস্তববাদী হয়ে থাকে, বিশেষ করে চীন ও ভারতের মধ্যকার রেষারেষি বিষয়ে, তবে তারা লির কাছে ঋণী। চীনের মডেল—কর্তৃত্ববাদিতা, মুক্তবাজার, অর্থনৈতিকভাবে খোলামেলা কিন্তু রাজনৈতিকভাবে বদ্ধ—সরাসরি লির সিঙ্গাপুর দেখে উদ্বুদ্ধ। লির বিশালতার একটা পরিমাপ বিষয়ে আমাকে বলেছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের সাবেক রাষ্ট্রদূত টমি কোহ। তাঁর কথায়, ‘তাঁর প্রস্থান সিঙ্গাপুরের ভবিষ্যতের ওপর মন্দ প্রভাব ফেলবে না।’
সমৃদ্ধিশালী এশীয়রা খোলামেলা রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিষয়ে কতটা সোচ্চার হতে পারেন? ভবিষ্যৎই তা বলে দেবে, তবে আমি রাতারাতি পরিবর্তনের পক্ষে বাজি ধরব না। যা কাঙ্ক্ষিত তা সর্বদা অপরিহার্য নাও হতে পারে, অন্তত এখন পর্যন্ত না। লি আরেকটি এশীয় অবদানের জনক: তিনি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে মূল্য দিতেন। তিনি রাজনীতিবিজ্ঞানী জোসেফ নাইয়ের মতো বিশ্বাস করতেন না যে আমেরিকা পতনশীল। জোসেফ বলেছিলেন, চীন ১৩০ কোটি মেধাপুঞ্জ থেকে যা নেওয়ার নেয়। কিন্তু আমেরিকা বিশ্বের ৭০০ কোটি মানুষের থেকে এমনভাবে নেয় এবং তাদের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির মধ্যে আবার এমনভাবে মেশায়; যা থেকে নির্গত হয় সৃষ্টিশীলতা, চীনের হান জাতীয়তাবাদ যা সেভাবে পারে না।
ইংরেজি থেকে অনূদিত, নিউইয়র্ক টাইমস থেকে নেওয়া
রজার কোহেন: নিউইয়র্ক টাইমস-এর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনীতিবিষয়ক কলাম লেখক।
No comments